নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতার ৪৬ বছর

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০৮


আমাদের বাংলাদেশের ছোট বড় প্রায় সকলেরই কম বেশি জানা আছে আজকের দিনের তাৎপর্য। বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিককে জিজ্ঞাসা করলেই বলে দিবে আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু আমরা কতটুকু স্বাধীন? কিংবা বীরমুক্তি যোদ্ধারা জীবন দিয়ে যে উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৬ বছর পরেও আমরা কি সেই উদ্দেশ্য অর্জন করতে পেরেছি?
১৯৭১ সালে এশিয়া মহাদেশের চারটি দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বাংলাদেশ, কাতার, সংযুক্ত আবর আমিরাত এবং বাহরাইন। এবং একই মাসে বাংলাদেশ আর সংযুক্ত আবর আমিরাত স্বাধীনতা অর্জন করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এশিয়ার এই তিন দেশের সাথে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়? আসলে এই প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষের কাছে একটু জটিল।
অত্যান্ত দু:খের বিষয় হলেও সত্য বাংলাদেশ থেকে এখনো প্রতিনিয়ত কাজের জন্য বা জীবিকা অর্জনের জন্য উল্লেখিত দেশ গুলোতে গিয়ে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করছে এবং বাংলাদেশকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সাহায্য করছে এদেশের হতভাগা অসংখ্য মানুষ।
তাহলে আমরা এই ৪৬ বছরে কী পেয়েছি? পেয়েছি, দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিউন হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছি প্রতিহিংসার রাজনীতি। যে রাজনীতি বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। ১৯৭১ সালে এই খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে ছিলোই বলে আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর সেই স্বাধীনতাকে ২৬ মার্চ এলেই সামিয়ানার ছায়ায় বসে উৎযাপন করি। কিন্তু কোনোদিন কি ভেবেছি, দেশকে কতটুকু ভালোবাসি? দেশের কোনো ক্ষতি হলে কি বুকের ভিতর কেঁপে উঠে?
আসলে এসব ভাবার সময় কই? নীজের ভাবনাই তো ভেবে শেষ হয় না।
আমরা যতই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে "বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ" এমন স্বীকৃতি উদযাপন করি না কেন, আমাদের মনে রাখা উচিত স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৩৩৫ টাকা। আমাদের যেমন মাথাপিছু আয় বেড়েছে ঠিক তেমনি ভাবে বেড়েছে মাথাপিছু ঋণ। ঢাকা শহরেই যানজটের কারণে দৈনিক ৫০ লাখ কর্মঘন্টা নষ্ট হয় যার বার্ষিক ক্ষতি দাঁড়ায় প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। স্বাধীনতার ৪৬ বছরেরও কিন্তু আমরা আমাদের রাজধানীকে পরিকল্পিত পরিবেশবান্ধব বসবাসের যোগ্য শহরে পরিণত করতে পারি নি।
আমাদের দেশে উন্নয়নের অন্তরায় হলো নোংড়া রাজনীতি। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে বাংলাদেশে নোংড়া রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। ক্ষমতাশীনদের কোনো কাজে নেই কোনো জবাবদিহিতা, অপরাধের নেই তেমন সাজা। এসব-ই নোংড়া রাজনীতির কারণেই হয়। স্বার্থপরতার কারণেই এখন নোংড়া রাজনীতির চর্চা চলে। আর এই নোংড়া রাজনীতি বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে বিশ্বের শীর্ষ স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায়।
আসলে আমরা স্বার্থপর একটা জাতি। সবকিছুতেই নিজের লাভটাই বড় করে দেখি। তাই যদি না দেখতাম তাহলে নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিদের যোগ্য অযোগ্যের বিচার না করে টাকা খেয়ে ভোট দিতাম না। ঘুষ দিয়ে চাকুরি নিয়ে ঘুষ গ্রহণ করতাম না। খাদ্যে ভেজাল মিশাতে পারতাম না। সারকারী কোনো নির্মাণ কাজের টাকা চুরি করতে পারতাম না। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা নকল করতাম না।
আসলে, আমরা কেহই দেশকে ভালোবাসি না। সবাই দেশকে ভালোবাসার আড়ালে নীজেকে ভালোবাসি। দেশের চেয়ে নিজের স্বার্থকেই বড় করে দেখি।
দেশের স্বার্থকে বড় করে না দেখলে চাকুরির ক্ষেত্র ঘুষ লাগতো না। ডাক্তার মাসে একদিন হলেও দরিদ্র মানুষদের ফ্রী চিকিৎসা করতো। সরকারী কোনো নির্মাণ কাজের টাকা কোনো প্রকৌশলি অবৈধ ভাবে গ্রহণ করতো না।
একটা দেশ উন্নতি করতে জুতা শেলাই করার মুচি থেকে শুরু করে সচিবালয়ের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকলেরই কম বেশি অবদান রয়েছে।
সকলেই যদি প্রকৃতি ভাবে দেশ আর দেশের মানুষকে ভালোবেসে নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে তবে বাংলাদেশও হয়তো একদিন উন্নতির স্বর্ণ শিয়রে পৌঁছে যাবে। স্বাধীনতা দিবসে আজ দেশকে ভালোবাসার প্রত্যয় নিয়ে বীর শহীদের প্রতি সম্মান জানাতে হবে।

-সোহাগ তানভীর সাকিব
২৬/৩/২০১৮
তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

অর্ক বলেছেন: ভালো লাগলো। অনেক সমস্যা আমাদের দেশে। তবে এতো বিরাট জনসংখ্যা নিয়ে রাতারাতি কাতার বাহরাইন মালয়েশিয়া (তারা যেমন উন্নতি করেছে) হওয়া যাবে না! আমাদের দেশের মানুষের দেশপ্রেমে ঘাটতি আছে! এটাও এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অন্তরায়। তারপরও ভালো করছি আমরা। দারুণ উন্নয়ন হচ্ছে সার্বিকভাবে। এখন ধনী গরীব ব্যবধান দূর করে ভারসাম্য দরকার।

ধন্যবাদ।

০১ লা মে, ২০১৮ সকাল ৭:৩৮

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: উন্নয়ন যে একেবারে কিছুই হচ্ছে না এমন কথা আমি বলিনি। আর রাতারাতি কাতার মালয়েশিয়ার মত উন্নয়ন করার কথাও বলি নি।
হুম, কিছুটা উন্নয়ন হচ্ছে। তবে একে উন্নয়ন বলা যায় না। যেমন মনে করেন, ঢাকা শহরে মেট্টোরেল এর দরকার জলাবদ্ধতা নিরসন। সে বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্যণীয় নয়। এদেশের সাধারণ মানুষ স্যাটেলাইটের আগে লক্কর-ঝক্কর রাস্তার মেরামত চায়।
আর জনসংখ্যার কথা বলছেন তো। অধিক জনসংখ্যা তখন-ই সমস্যা যখন সেই জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা না যায়। স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আমরা পারছি না জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.