![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ চিঠি
বিজয়নগর
সকাল
২৬ জুলাই২০০৮
প্রিয় তানু,
তোমার এই সুন্দর জীবনে- এক হতভাগ্য পুরুষের বুকের রক্ত টুকু দিয়ে তোমার চলার পথ ধুয়ে দিতে ঢেলে দিলাম, ধুয়ে নিও নিজ হাতে অতি যতনে; আর বলিও,
"গরিবরা যেন ধনীদের ভাল না বাসে!"
আজ ২৬ জুলাই,
তোমার বিয়ের ২য় দিন। জানিনা এ চিঠিটা তোমার কাছে কবে পৌছাবে। হতেও পারে এ চিঠি কোন দিন প্রান পাবেনা; সারা জীবন আমার মত জীবন্ত লাশ হয়ে থাকবে। তাতে আমার বড় জোর দু:খ নেই!
কারন,দুখ তো আর আমার বুকে লাগে না।
লোহার আবার আঘাত কি!
জানো? আমার বড় কষ্ট হয়; খুব কষ্ট! খু-উ-ব..
গত কাল সকাল থেকে মনটা খুব ভারি্ দেয়ালে টানানো তোমার ছবিটা যেটা দেখে আমার প্রতিদিন শুরু হয়, সেটা শুধু শুধু পরে যায়অ অন্তত: পঞ্চাশ বার তুলেছি। শেষে দেয়ালের সাথে প্যারাক মেরে আটকে দিলাম। আটকানোর শেষ পর্যায় শুনতে পেলাম, আমার জীবনের সব চেয়ে প্রিয়, মূল্যবান জিনিস টা হারিয়ে ফেলেছি।
নি:স্ব হয়ে গেলাম চির তরে!
মনে হল আমার বুকের পাজর কে যেন হামার দিয়ে ভাঙ্গছে আর নিয়ে যাওয়ার আনন্দ করছে।
আমি কিছুক্ষন কাতরাতে থাকলাম!
বড় ব্যথা লাগছিল! বড় কষ্ট!
তোমার কথাই সত্যি।
তুমি ছোট ছিলে বলে কিছু বুঝতে না, ভুল করেই আমাকে ভাল বেশে ছিলে। আমিও যদি তোমার মত হতাম,ভুল করে ভালবাসতাম, তা হলে তো সব কিছু ভুল হত। ভুল করে তোমাকে ভুলে যেতাম।
তা হলে হয়তো এত ব্যথা পেতাম না!
তা হলে হয়তো দারিদ্রের জন্য বুকের হাড় দিতে হত না!
তানু, সর্বশ্রেষ্ঠ নারী তুমি, তুমি আমার মায়াবিনী, আর সে জন্যই তো যে যা বলুক সহ্য করি, যেন আমি বোবা হয়ে যাই। আর বোবা মানুষকে যতই মার সে তো জবাব দিতে পারে না।
সহ্য করা ছাড়া আর কি কোন উপায় আছে !
নাইরে নাই!
আমাকে রিমান্ডে নেয়া হল, মারা হল।
কি মারটা না মারল!
তবে লাগে নি। কারণ-
বাইরে আঘাতের চেয়ে ভেতরের আঘাতটা খুব বেশি ছিল যে!
আমি যে আর সহ্য করতে পারি না! সহ্য করতে পারি না!!
তানু, পৃথিবীর সকল নষ্ট মানুষ গুলোর যদি একটা তালিকা হয়; পৃথিবীর সকল অসভ্য মানুষ গুলোর যদি একটা তালিকা হয়; পৃথিবীর সকল ইতর মানুষ গুলোর যদি একটা তালিকা হয়; পৃথিবীর সকল বাজে মানুষ গুলোর যদি একটা তালিকা হয়; তবে আমি যে এক নম্বর হব, সেটা আমি জানি। আর যেনেই তো আল্লাহকে বলি,
"আল্লাহ তানুকে পাওয়ার যোগ্যতা আমার নাই সে আমি জানি, আমি যেন তাকে ভুলতে পারি।"
কজিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না, কারন- তানু নামটি যে আমার শিরায় উপশিরায় মিশে আছে, আমার রক্তে মিশে আছে।
দূধের সাথে পানি যেমন থাকে।
আমাকে ক্ষমা কর, তোমাকে ভুলতে পারলাম না বলে।
তোমার কথাই সত্যই।
তোমাকে দেখার জন্য; তোমাকে ভালবাসার জন্য তোমাদের দেয়া উপহার মনে - বিশেষ করে সারা দেহে নিয়ে যখন বাড়িতে হাজির হলাম তখন, এক বার লিখে ছিলাম।
লিখে ছিলাম-
"তুমি তো অনেক ভিক্ষুক কে দেখা দাও, আমি না হয় তোমার দ্বারে ভিক্ষুক হয়ে যাব, শুধু দেখা টুকু ভিক্ষা দিও। অনেক ভিক্ষুককেই তো দেখা দাও, আমি ও না হয় ভিক্ষুক।"
আমি আবারও লিখেছিলাম-
"তুমি তো অনেক ভিক্ষুক কে দেখা দাও, আমি না হয় তোমার দ্বারে ভিক্ষুক হয়ে যাব, শুধু দেখা টুকু ভিক্ষা দিও। অনেক ভিক্ষুককেই তো দেখা দাও, আমি ও না হয় ভিক্ষুক।"
কিন্তু দেওনি।দিলে হয়তো সকল উপহার ভুলে যেতাম।
নিজেকে প্রশ্ন কর-
এই চাওয়া টুকু কি বেশি ছিল?
ঈশ্বর স্বাক্ষী রইল।
ঈশ্বর আরও স্বাক্ষী,
ওই মুখ আর কোন দিন আমি দেখতে চাই ব না।
কোন দিন না;
কেন দিন না!!
পচা দেহ মন কি আর ভাল হয় !
তুমি বড় ভাগ্যবতি, বড় জায়গায়, ভাল ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে, নিজে সুখেই থাকবে। কিন্তু এক বার ও ভাবলে না - কি একটা জীবন, একটা দারিদ্র, নি:স্ব, অসহায় মানুষকে দিয়ে গেলে!
আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক। চির মঙ্গল।
জান তানু, আমি চেয়ে ছিলাম নারী (তুমি) আমাকে শাসন করবে; আমার ভাল কাজে উৎসাহ দিবে, আর আমি নারীর ( তোমার) আচঁল ধরে চির কাল বেচেঁ থাকব।
নারী (তুমি) আমাকে আচঁলে বেধে রাখবে, আমি আচঁল ধের বেচেঁ থাকব্
আমার স্বপ্ন-স্বপ্নই রয়ে গেল!
তোমাকে একবার বলে ছিলাম-
"আমার সাথে বিয়ে হলে আমাকে যৌতুক দিতে হবে।"
তুমি বলেছিলে,
"কি যৌতুক ?"
"যখন কোথাও বের হব এবং ফিরে আসব, তখন আমাকে জরিয়েধরে তোমাকে চুমু খেতে হবে; আর আমিও তেমন টি করব।"
তুমি বলে ছিলে,
"ঠিক পারব।"
অথচ আমার স্বপ্নগুলো......
তোমাকে নাকি কেউ ভালবাসে না। শুধু একটি লোক কিছু কিছু ভাসে। আর সে নির্বধ লোকটি চিরদিনই ভালবাসবে।
মনে রেখ।
আজ তো তোমাকে সবাই ভাল বাসে। অনেক ভালবাসা তোমার জন্য।
তুমি - তুমি বড় ভাগ্যবতি।
আমার মা- যারা আমাকে ভাল বাসে, সেই সকল মানুষজন বলে-
"তোর কপালে অনেক দু:খ আছে।"
সত্যি ই দেখছি, আমার অনেক দু:খ।
অ-নে-ক।
ঘর পোড়লে ছাই থাকে, কপাল পোড়লে নাকি ছাইও থাকে না।
আমার দারিদ্রতা আমাকে তোমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমাকে ঘৃনা করতে শিখিয়েছে।
তোমাকে পাই নি- আমার ব্যর্থতা; অন্তত ঘৃনা করনা।
তাহলে দু:ক রাখার জায়গা থাকবেনা। ঈশ্বর ও সইবেন না।
আমি কখন ও তোমার দোষ দেইনা, তোমাকে পাইনি- কিন্তু তোমার জন্য ভালবাসা কোন দিন ফুরাবেনা।
মনে রেখ।
তোমার মনে আছে- তুমি বলেছিলে-
"বিয়ের পর আমরা দুইটি বাচ্ছা নেব। প্রথমটি মেয়ে- যে হবে ডাক্তার, দ্বিতীয়টি ছেলে- যে হবে তোমার মত বই পড়ুয়া।"
সেটাই যেন হয় তোমার নতুন জীবনে।
বিয়ে পর আমার কাছে দুইশ পঞ্চাশ টাকা পোষাক চেয়ে ছিলে প্রতি মাসে। এখন তো আর সেই টানা টানি আর রইল না।
তুমি আমাকে ভাল না বাসলে ও তুমি আমার জণ্য অনেক কেদেঁছ। আমার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছ্। হয়তো এটাই হবে আমার জীবনে সর্বশ্রেষ্ট পাওয়া।
আমি এ কথা ভুলবনা যে, আমার প্রতিটি উৎথ্থানে তোমার স্পর্শ রয়েছে। তার জন্য চির ঋণী। চির দিন ই।
তার পর ও প্রশ্ন করি- আমাকে বিয়ে করে তোমার পোষাবে না, যদি তাই ই হয় তবে প্রেম করে পোষাল কি করে ?
তুমি তো ভুল করে ভাল বেসে ছিলে। তোমার ভুলের জন্য আমি কাঁদব কেন?
আমার কি অপরাধ ?
আমার চাওয়াটা কি বেশি ছিল!
খুব বেশি!!
তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
স্বামীর ভালবাসায় ধন্য হও, স্বামি তোমাকে ভালবাসুক তার জীবনের চেয়ে ও বেশি।
আমার চেয়েও বেশি।
নিজের দিক খেয়াল রেখ। আর বলিও গরিবের জন্য কারও বুকের হাড় দিতে না হয়।
আমার মরণ যাত্রা যে তোমার সাথেই হয়।
নিজের দিক খেয়াল রেখ।
আমাকে ক্ষমা করিও।
ভাল থেক। সুস্থ থেক।
©somewhere in net ltd.