![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রসঙ্গ: তাবি-কবজ ও ঝাঁড়-ফুঁক
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
প্রকাশ: ৯ আগষ্ট ২০০০ খ্রিস্টাব্দ,
সাপ্তাহিক ইসলামিক সমাচার, লন্ডন।
প্রসঙ্গ কথা
লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইসলামিক সমাচারের ৯আগষ্ট ২০০০ খ্রিস্টাব্দে তাবিজের পক্ষে ‘প্রসঙ্গ : তাবিজ-কবজ ও ঝাড়-ফুঁক’ শিরোনামে জনপ্রিয় ইসলামী ম্যাগাজিন মাসিক মদিনার সম্মানিত সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। আমরা এখানে প্রথমে খান সাহেবের এই লেখা পাঠ করবো, তারপর শ্রদ্ধার সাথে বিবেচনা করবো তাঁর বক্তব্যের সত্যতা।
আমাদের সমাজে ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ ইত্যাদির ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। বুজুর্গ আলেম ও পির-মাশায়েখগণ জানা-অজানা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকজনকে ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ দিয়ে থাকেন। আর বিপদগ্রস্ত লোকজন এসব ব্যবহার করে উপকার লাভ করেন। এসবের প্রচলন আবহমান কাল থেকেই চলে আসছে।
ইদানিং এক শ্রেণীর লোককে ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজকে হারাম, শেরেকী আমলরূপে সাব্যস্ত করতে তৎপর দেখা যায়। সুতরাং ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ-কবজের বৈধতা শরীয়তের দলীলদ্বারা প্রমাণ এবং তৎসঙ্গে যারা এগুলিকে হারাম সাব্যস্ত করে থাকেন ও এই চরম সিদ্ধান্তের অনুকূলে কিছু দলীল-প্রমাণ ও যুক্তির অবতারণা করেন, সেগুলি অবশ্যই পর্যালোচনার দাবি রাখে।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হালাল এবং হারামের দলীল আমাদিগকে কুরআন এবং সুন্নাহ্ থেকেই গ্রহণ করতে হবে। পবিত্র কুরআনে বা সুন্নায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ বা ইশারা-ইঙ্গিতেও যদি কোন বিষয়ের বৈধতার দলীল থাকে, তবে সে বিষয়টাকে সরাসরি হারাম বলা চরম ধৃষ্ঠতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। তাছাড়া যুগ পরম্পরায় নির্ভরযোগ্য আলেমগণের আমলও শরীয়তের একটি দলীলরূপে গণ্য। শেষোক্ত এই দলীলটিকে ‘এজমায়ে উম্মত’ বলা হয়।
পবিত্র কুরআনের অনেকগুলি আয়াতে বলা হয়েছে যে, ‘কুরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য শেফা ও হেদায়াতের উৎস।’ আলোচ্য আয়াতগুলোতে উল্লেখিত ‘শেফা’ শব্দের তফসীরে শাহ্ আব্দুল হক মোহাদ্দেস দেহলভী (রহ.) লিখেছেন, ‘কুরআন শরীফের চাইতে ব্যাপক উপকারী এবং মানবজাতির রোগ-ব্যাধি নিরাময়কারী আর কিছু নাযিল হয়নি।’ যেমন বলা হয়েছে, ‘আর আমি কুরআনে এমন কিছু আয়াত নাযিল করেছি যা মু’মিনদের জন্য শেফা এবং রহমত স্বরূপ।’ (বনী ইস্রাঈল: ৮২)
এতদসঙ্গে পবিত্র কুরআনের আয়াতে শেফা নামে পরিচিত আয়াতগুলোর কথা উল্লেখ করা যায়। আয়াতগুলো হচ্ছে :
১. সুরা তাওবার ১৪ নং আয়াত, ২. সুরা ইউনূসের ৫৭ নং আয়াত, ৩. ছুরা নাহ্লের ৬৯ নং আয়াত, ৪. সুরা বনী ইস্রাঈলের ৮২ নং আয়াত, ৫. সুরা আশ্-শোয়ারার ৮৫ নং আয়াত এবং ৬. সুরা হা-মীম ছাজদার ৪৪ নং আয়াত। উপরোক্ত প্রতিটি আয়াতেই কুরআনে মুমিনদের জন্য ‘শেফা’, ‘রহমত’ প্রভৃতির কথা উল্লেখিত হয়েছে। তফসীরবিদ ইমাম বায়হাকী (রহ.) ‘শেফা’ অর্থ আত্মা এবং দেহ উভয়ের শেফা বা নিরাময় বলেছেন। অর্থাৎ পবিত্র কুরআনে যেমন আত্মার যাবতীয় রোগ এবং মন্দ প্রবণতার চিকিৎসা রয়েছে, তেমনি দেহের যাবতীয় রোগ-ব্যাধীরও চিকিৎসা রয়েছে।
কুরআনের আয়াত দ্বারা রোগ-ব্যাধির চিকিৎসা হতে পারে এ কথা অনুধাবন করার জন্য শেষ দু’টি সুরার তফসীর ও শানে-নুযুল পাঠ করাই যথেষ্ট। উল্লেখ্য যে, এই দুইটি সুরা হযরত নবি করীম (সা.)-কে যাদু করার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছিল। আল্লাহ্পাক যাদুর প্রতিকার করার উদ্দেশ্যে সুরা দু’টি দান করেছিলেন।
ইমাম কুশাইরী (রহ.) তাঁর মারাত্মক অসুস্থ শিশুপুত্রের চিকিৎসার লক্ষ্যে যে আয়াতে ‘শেফা’ পাত্রে লেখে তা পানিতে ধুয়ে পান করিয়েছিলেন। ফলে মৃতকল্প শিশুটি আশ্চর্যজনকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছিল। ইমাম সাহেব এই তদবীরটি একটি মোবারক স্বপ্নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নির্দেশের ভিত্তিতে করেছিলেন। তারপর থেকে আয়াতে ‘শেফা’ গুরুতর অসুস্থতা নিরাময়ের লক্ষ্যে যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
শাফেয়ী মাযহাবের ইমাম তাজউদ্দীন সুবকী (রহ.) রোগ-ব্যাধী নিরাময়ের উদ্দেশ্যে আয়াতে শেফা এবং পবিত্র কুরআনের অন্য কয়েকটি আয়াতের ব্যবহার সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা শেষে মন্তব্য করেছেন যে, ‘আমাদের মাশায়েখগণ রোগ-ব্যাধী নিরাময়ের উদ্দেশ্যে পবিত্র কুরআনের আয়াত ব্যবহার করতেন।’
হাদিস শরীফের সহীহ্ বর্ণনায় বিচ্ছুর দংশনজনিত বিষ নিরাময়ের দোয়ার উল্লেখ আছে। সুতরাং ঝাড়-ফুঁক কুরআন-হাদিস পরিপন্থী, এমন কথা বলা মোটেও বাস্তবতা-সংগত নয়।
সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রা.) শিশুদিগকে সর্বপ্রকার ভয়-ভীতি ও আপদ-বালাই থেকে নিরাপদ থাকার একটি দোয়া শিক্ষা দিতেন। যারা দোয়াটি উচ্চারণ করতে সম হতো না তাদের জন্য দোয়াটি কাগজে লিখে তা ওদের গলায় ধারণ করতে দিতেন। [যাদুল-মাআদ]
হাদিস শরীফের কোনো কোনো বর্ণনায় ‘তাবিজ’ শব্দটিরও উল্লেখ পাওয়া যায়। সুতরাং সন্দেহাতীতভাবেই প্রমাণিত হয় যে, ঝাড়-ফুঁক যেমন একটি মছনূন আমল, তেমনি তাবিজ ব্যবহারও সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে প্রচলিত একটি বৈধ আমল।
আবু দাউদ এবং ইবনে মাজাহ্ শরীফে ‘রোক্বা তামায়েম ও তোলা হারাম’ উল্লেখ করে যে হাদিসটি বর্ণনা করা হয়েছে, সে হাদিসের তিনটি শব্দ রোক্বা অর্থ-দুর্বোধ্য বা শেরেকী শব্দাবলী সম্বলিত ঝাড়-ফুঁক, তামায়েম অর্থ-তন্ত্রমন্ত্র লিখিত তাবিজ এবং তোলা অর্থ-তুক-তাক বা যাদুমন্ত্র। জাহেলিয়াতের যুগে যেমন এসবের প্রচলন রয়েছে। এসব কুফরী যাদুমন্ত্রের ব্যবহার যে হারাম তাতে কারো দ্বিমত নাই।
ইবনে মাজাহ্ শরীফে হযরত আলী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত এক হাদিসে আছে যে, সর্বাপো বড় নিরাময়কারী হচ্ছে কুরাআন। ইমাম বায়হাকী (রহ.) ও শাফী (রা.) আয়াতে শেফার তফসীরে পবিত্র কুরআনের আয়াত দ্বারা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কিত দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ ‘মাওয়াহেবে রাদুন্নিয়া’ নামক বিখ্যাত কিতাবে আলোচিত হয়েছে। এতদসঙ্গে একথাও বলা হয়েছে যে, কুরআনের আয়াত বা হাদিস শরীফে উল্লেখিত দোয়া কালাম পাঠ করে বা অন্যান্য প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করে সমান উপকার পাওয়া যায়।
ইমাম কুশাইরী (রাহ.) ঝাড়-ফুঁক এবং তাবিজকে দোয়ার বিকল্পরূপে উল্লেখ করেছেন। কারণ, দোয়া তাবিজ এবং ঝাড়-ফুঁক প্রভৃতি সবকিছুতেই আল্লাহর নামের ওছিলা গ্রহণ করে আল্লাহ্র নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করা হয়, যা অবৈধ হওয়ার কোন কারণ নেই। বরং এগুলিও একান্তভাবে আল্লাহ্র নিকটই সাহায্য প্রার্থনার একটি পদ্ধতিরূপে গ্রহণযোগ্য। এই গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিকে কুফুরী ও জাহেলিয়াত যুগের শেরেকী কালামের কুফুরী ও জাহেলিয়াত যুগের শেরেকী কালামের সাথে একাকার গণ্য করা মোটেও যুক্তিযুক্ত হতে পারে না।
----------------------------------------------------------------------------------
সৈয়দ মবনু
প্রসঙ্গ কথা
প্রিয় পাঠক, মাওলানা মুহিউদ্দিন খান আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রতি আমার প্রচুর শ্রদ্ধা থাকার পরও এই লেখাটির দুর্বল দিক পর্যালোচনা আমাকে করতেই হলো। ২৫ অক্টোবর এবং ৮ নভেম্বর ২০০০ খ্রিস্টাব্দের সাপ্তাহিক ইসলামিক সমাচারের দুই সংখ্যায় আমার ‘তাবিজ-কবজ ও ঝাড়-ফুঁক প্রসঙ্গে’ প্রকাশিত হয়।
১)
ব্রিটিশ শাসনের দুইশত বছরের প্রভাবে ভারতবর্ষের মুসলিম সমাজে যেমন ইসলামিশিক্ষা হ্রাস পেয়েছিলো তেমনি সহী-উল-আকায়েদ ইসলাম থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন ভণ্ডপির এমনকি মিথ্যা নবুওতের দাবিদারও জন্মে ছিলো। ওদেরই প্রভাবে একসময় পাক-ভারত-বাংলায় এক শ্রেণীর লোক জীবিকার মাধ্যম হিসেবে তাবিজ-কবজের ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে তা অনেকটা জমজমাট ভাবেই চলছে। পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপন দেখলেই ব্যাপারটা অনুমানে আসবে। তাবিজ-কবজের সাথে অনেকে কুফরী যাদু-মন্ত্র ও করছেন বলে শোনা যায়। অনেকে আবার ইসলামি চিকিৎসা পদ্ধতি বলে এগুলোর মহত্ব বর্ণনা করে থাকেন। এই প্রোপটে আজ থেকে দু-এক বছর পূর্বে লন্ডনের সাপ্তাহিক সুরমা ও সাপ্তাহিক ইসলামিক সমাচার পত্রিকায় ‘কুরআন-হাদিসের আলোকে তাবিজাত শিরক নয় কি?’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম। প্রবন্ধটি প্রকাশের পর আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিত পাঠকের সহযোগিতায় ঈদুল আযহা দুই হাজার সাল উপলে তা সিলেট থেকে গ্রন্থাকারে বের হয়। অন্যদিকে আমার বন্ধু-বান্ধব এবং শ্রদ্ধাভাজনেষু পরিচিতজনদের মধ্যে যারা প্রত্য বা পরো তাবিজ ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা বিভিন্নভাবে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন। অনেকে গালি-মন্দও দিয়েছেন। দু-চার জন এমনও আছেন যারা টাকার লোভ দেখিয়ে বলেছেন, তাবিজের বিরোধীতা না করতে। তাদের কোন কিছুই আমার হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি, কারণ এক্ষেত্রে আমি শায়খুল ইসলাম ইমাম তকিউদ্দিন ইবনে তায়মিয়া (রা.)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত। আমি তাদেরকে স্পষ্ট বলেছি, তাবিজের বিরুদ্ধে আমি যে হাদিসগুলো নকল করেছি সেগুলোকে যদি আপনারা সহী মনে না করেন তবে দলিল দিন। অথবা আপনারা তাবিজের পে সহী দলিল উপস্থাপন করুন। এই পর্যন্ত তারা তা পারেননি বা সে দিকে চেষ্টা না করে নানা কথার মালা গেঁথে মূল বিষয়কে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের বিশ্বাস, কোন ঈমানদারের সামনে সহী-উল-আকায়েদ ইসলাম উপস্থাপন করলে সে মানতে বাধ, যেহেতু তার মধ্যে রয়েছে আল্লাহর বিশ্বাস, রাসুলের আনুগত্য এবং বেহেস্তের প্রত্যাশা।
আমাদের সমাজে আবহমানকাল থেকে প্রচলিত বলেই কেউ কেউ তাবিজ-কবজের বৈধতা ঘোষণা করেন। তাদের অবশ্যই বুঝা উচিত যে, কোন কিছু যতই পুরাতন হোক যদি তা কুরআনে সুন্নায় প্রত্য-পরো বা ইশারা-ইঙ্গিতে না থাকে তবে তা দ্বীনি কাজ মনে করে পালন করা বিদআত। আর যদি তা কুরআন-হাদিসের বিধান পরিপন্থী হয় তবে হারাম। বিদআত কিংবা হারামে কিছু সাময়িক উপকার হলে তা বাস্তবিক দিকে প্রচুর তির কারণ। মহানবি (সা.) বলেছেন-‘সর্বোত্তম বক্তব্য আল্লাহর বক্তব্য। সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থা রাসুল (সা.)-এর জীবন ব্যবস্থা। সব চাইতে নিকৃষ্ট কাজ ইসলামের ভেতর নতুন কিছু (বিদআত) সৃষ্টি করা। প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা। (মুসলিম শরিফ)
স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালার ঘোষণা-
‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর আইন অমান্য করে তাকে জাহান্নামের আগুনে নিপে করা হবে।’ (সুরা নিসা- ১৪)
তাই আবহমান কাল থেকে প্রচলিত কাজ যদি কুরআন-হাদিস ভিত্তিক না হয়, তবে তা অবৈধ। অনেকে ঝাঁড়-ফুঁক এবং দোয়ার বিধান দিয়ে তাবিজ-কবজের কিয়াস করেন। কুরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াসের মাধ্যমে ইসলামের বিধান প্রণীত হয়। তবে ইজমা ও কিয়াস তখন-ই বৈধ হয় যখন কুরআন-হাদিস কিংবা হযরতে সাহাবা-এ-কিরামের আমলে পাওয়া যায়। আমাদের বুঝা উচিত যে, তাবিজ-কবজ আর ঝাঁড়-ফুঁক কিংবা দোয়া এক জিনিস নয়। ঝাঁড়-ফুঁক শিরক্ মুক্ত হলে অসুবিধা নেই তা স্বয়ং রাসুল (সা.) বলেছেন। আর দোয়া নিজের জন্য বা অন্যের জন্য তাতো বড়ই ফাজিলতের কাজ। নবি-রাসুল, সাহাবাসহ আল্লাহর প্রত্যেক নেক বান্দারা দোয়া করেছেন এবং তাদের অনুসারীগণ আজো করছেন । পবিত্র কুরআনে -হাদিসে বিভিন্ন বিষয়ে দোয়া রয়েছে, এসব পাঠ করলে উপকার হয়। তবে এগুলোর সাথে তাবিজ-কবজের কোন সম্পর্ক নেই। তাবিজ-কবজ বৈধ হয় কিভাবে যেহেতু এসবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট রাসুল (সা.)-এর হাদিস রয়েছে। (হাদিসগুলো দেখতে পারেন কুরআন হাদিসের আলোকে তাবিজাত র্শিক নয় কি? পর্বে)। অনেকে বলেন, ‘ইমান কুরাইশী (রা.) তাঁর অসুস্থ শিশু সন্তানের চিকিৎসা করেছেন একটি পাত্রে আয়াতে শিফা লিখে তা পানি দিয়ে ধুয়ে পান করিয়ে।’(মাওলানা মহিউদ্দিন খান, প্রসঙ্গ: তাবিজ-কবজ ও ঝাড়-ফুঁক, ইসলামিক সমাচার, লন্ডন, বর্ষ-২, সখ্যা-৬৫, পৃ. ৫)।
আমি বলবো, হয়তো তিনি করেছেন। কিন্তু তাঁর ঘটনা কি প্রামণ করে না যে তাবিজ-কবজ উচিত নয়? তিনি যদি আয়াতে শিফা কাগজে লিখে কবজে ডুকিয়ে তাগায় বেঁধে শরীরে ঝুলাতেন তবে একটা কথা ছিলো। তারপরও এই ঘটনা দলিল হতো না যেহেতু এর বিরুদ্ধে হাদিসে স্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে, হযরতে সাহাবা কিরাম (রা.)এর বিরোধীতা করেছেন এবং তিনি তা করেছেন শিশুবাচ্চার ক্ষেত্রে। বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) শিশুদেরকে ভয়-ভীতি ও আপদ-বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য একটি দোয়া শিক্ষা দিতেন। যারা দোয়া পাঠে অম হতো তাদের জন্য লিখে গলায় বেঁধে দিতেন।
(আবু দাউদ এবং যাদুল মাআদ)।
অনেকে এই ঘটনাকেও তাবিজের দলিল মনে করেন। এটা তাবিজ-কবজের দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ মা’জুর (যে কোনো কারণে অম) ব্যক্তিদের জন্য শরিয়তের বিধান সাধারণ বিধান থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই মা’জুরদের মাসআলা দিয়ে সাধারণ মাসআলার কিয়াস হয় না। বাচ্চাদের ব্যাপারে ও তাই। বোখারি শরিফে দুইটা হাদিস রয়েছে বাচ্চরা মহানবি (সা.) এর সামনে বাজনা বাজিয়ে গান গেয়েছে। একটা ছিলো ঈদের দিন, স্বয়ং হযরত আয়েশা (রা.)-এর কে। যে হযরত আবু বকর (রা.) এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করলে স্বয়ং রাসুল (সা.) এর উত্তরে বলেন, ‘আবুবকর তুমি ওদের প্রতি রাগ করো না। প্রত্যেক জাতিরই বিশেষ কিছু দিন থাকে আনন্দ-উৎসবের। আজ মুসলিম উম্মাহের সেই দিন।’
অন্য ঘটনাটি ঘটে হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (রা.)-এর বিয়ের মাহফিলে। কিছু বাচ্চা ছেলে-মেয়ে বাজনা বাজিয়ে গান গেয়ে গেয়ে মহানবি (সা.)-এর সামনে থমকে দাঁড়ালো। রাসুল (সা.) তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা বন্ধ হলে কেন? চালিয়ে যাও।’
এই দুই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে শরীয়তের বিধান মতো যারা বাচ্চা তারা বিয়ে কিংবা ঈদে বাজনা বাজিয়ে গান করতে পারে। তবে বয়স্কদের জন্য বাজনা হারাম। এখন যদি এই হাদিস দু’টি উপস্থাপন করে ফতোয়া দিয়ে বসেন যে, ইসলামে বাদ্যযন্ত্র বৈধ হবে, তবে তা চরম ধৃষ্টতা বলেই প্রমাণিত হবে। তেমনি তাবিজ-কবজের ব্যপারটাও। হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) কিংবা ইমাম কুরাইশী (রহ.) এর ঘটনা ছিলো শিশু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। তাই এই ঘটনাসমূহ সাধারণভাবে তাবিজের বৈধতা প্রমাণ করে না।
তাবিজের বৈধতা ঘোষণা করতে অনেকে পবিত্র কুরআনের যে সব আয়াতে প্রত্য-পরো শিফা শব্দ রয়েছে সেগুলো উপস্থাপন করে থাকেন। তারা ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে যে সব আয়াতের নম্বর আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন আসুন আমারা সে সব আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা, শানে নুজল খুলে দেখি কোথাও তাবিজ-কবজের কথা বলা হয়েছে কি?
লন্ডনের পাকি ইসলামিক সমাচার (বর্ষ-২, সংখ্যা- ৬৫) এ আমাদের অনেকেরই শ্রদ্ধাভাজনেষু হযরত মাওলানা মহিউদ্দিন খান তাবিজের পক্ষে যে সব আয়াতের নম্বর দিয়েছেন পাঠকদের সামনে সেগুলোর অর্থ-ব্যাখ্যা সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপনের চেষ্টা করছি।
১.সূরা তাওবার ১৪ নম্বর আয়াত
...........
অর্থ : ‘যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদের শাস্তি দিবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তর সমূহ শান্ত করবেন।’
এই আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে জিহাদের মাধ্যমে যে বিজয় আসবে তাতে মুসলমানদের অন্তর সমূহ শান্ত হবে।‘ এখানে তাবিজের কথা নয়। বলা হয়েছে জিহাদের কথা।
২. সূরা ইউনূসের ৫৭ নম্বর আয়াত
.......
অর্থ : হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশ বাণী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের প থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।’
এই আয়াতে ‘শিফা’ শব্দের সাথে ‘ছুদুর’ শব্দ যুক্ত হয়েছে। ‘ছুদুর’ হলো ‘ছদর’ শব্দের বহুবচন। আভিধানিক অর্থ-বুক, মুফাচ্ছেরগণ অর্থ উঠিয়েছেন-অন্তর।
হযরত হাসান বসরী (রাহ.) বলেন, ‘পবিত্র কুরআনের এই বৈশিষ্ট্যের দ্বারা বোঝা যায় যে এটি বিশেষত অন্তরের রোগের শিফা; দৈহিক রোগের চিকিৎসা নয়।
(রুহুল মা’আনী)।
শায়েখ ইমাদুদ্দিন ইবনে কসির (রাহ.) বলেন, ‘বান্দার উপর স্বীয় ইহসানের বর্ণনা দিতে আল্লাহ পাক এই আয়াত নাজেল করেন।...এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘এটা তোমাদের অন্তরের সন্দেহ, সংশয়, কালিমা ও অপবিত্রতা দূরকারী।’
(তফসীরে ইবেন কাসির)
৩. সুরা নহলের ৬৯ নম্বর আয়াত
অর্থ : এরপর প্রত্যেক ফল থেকে কিছু কিছু আহার কর। অতঃপর তোমাদের প্রতিপালকের সহজ পথ অনুসরণ কর; তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগমুক্তি; নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল স¤প্রদায়ের জন্যে।’
এই আয়াতে ‘ফি’হীস শিফা-উ-লিননাস’ বাক্য দিয়ে আল্লাহ পাক তাবিজ-কবজের কথা বলেননি। আয়াত দ্বারাই স্পষ্ট এখানে মধুর কথা বলা হচ্ছে। এত স্পষ্ট করে বলার পরও কেউ যদি মনে করেন এটা তাবিজ-কবজ সম্পর্কিত তবে তিনি ভুলে আছেন। কেউ কেউ অবশ্য এই আয়াতের ‘ফি হীশ শিফা-উ-লিননাস’ বাক্যে কুরআনের দিকে ইঙ্গিতের কথা মনে করেন। হাফেজ ইমাদুদ্দিন ইবনে কাসির (রা.) তা খণ্ডন করে বলেছেন, ‘কুরআনে শিফা রয়েছে তা সত্য কিন্তু এখানে শুধু মধুর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
৪. সূরা বনী ইসরাঈলের ৮২ নম্বর আয়াত
-------
অর্থ : আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত।’
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাচ্ছিরগণ একমত, এখানে যে শিফা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এর দ্বারা পাপ মুক্তি বুঝানো উদ্দেশ্য। যেমন, এই আয়াতেরই শেষ অংশে বলা হয়েছে ‘গোনাহগারদের তো এতে শুধু তিই বৃদ্ধি পায়।’ এখানে গোনাহকে একটা রোগ বলা হয়েছে এবং আর যারা কুরআনকে গ্রহণ করলো তারা সেই রোগ থেকে মুক্তি পেলো। আর যারা অমান্য করলো তারা তিগ্রস্ত হলো। যেমন সূরা বাকারায় বলা হয়েছে-‘এটা এমন এক কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই এবং তা পথ প্রদর্শক মুত্তাকীদের জন্যে। (সূরা বাকারা- ২)।
এই আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, যারা মুত্তাকী হতে চায় তারাই এই কিতাব অর্থাৎ কুরআন থেকে উপকৃত হয়ে থাকে। এবং যারা উপকৃত হতে চায় না তারা তিগ্রস্ত হয়। হাফেজ ইবনে কাসির (রা.) সূরা বনী ইসরাঈলের ৮২ নম্বর আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ তাঁর সেই কিতাব সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, পবিত্র কুরআন ঈমানদারদের অন্তরের রোগসমূহের জন্য শিফাস্বরূপ। সন্দেহ, কপটতা, শিরক, বক্রতা, মিথ্যার সংযোগ ইত্যাদি সবকিছু এর মাধ্যমে বিদূরিত হয়। ঈমান, হিকমতহ, কল্যাণ, করুণা, সৎকার্যের প্রতি উৎসাহ ইত্যাদি এর দ্বারা লাভ করা যায়। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
মুফতি শফি (রা.) বলেছেন, ‘কুরআন পাক অন্তরের ঔষুধ এবং শেরক, কুফর, কুচরিত্র ও আত্মিক রোগ সমূহ থেকে মনের মুক্তিদাতা।’ (মাআরেফুল কুরআন, বাংলা অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)। কোনো কোনো আলেম এই আয়াতের শিফা শব্দের শারীরিক রোগ মুক্তির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তারা উদাহরণ স্বরূপ হযরত আবু সাইদ খুদর্রী (রা.) কর্তৃক বর্ণিত ঐ হাদিস নকল করেল যে, ‘এক দল সাহাবি (রা.) সফর থেকে ফিরে হযরত নবি করিম (সা.)কে বললেন-‘এক গ্রামের সর্দারকে বিচ্চু দংশন করলে লোকেরা আমাদের কাছে আসে চিকিৎসার জন্য। আমরা সাতবার সূরা ফাতেহা পড়ে রোগীর গায়ে ফুঁ দিলে সে সুস্থ হয়ে যায়। রাসুল (সা.) এই কাজকে জায়েজ বলে স্বীকৃতি দিলেন।’ এই হাদিস দ্বারা তাবিজ-কবজের বৈধতা প্রমাণিত হয় না। শিরক মুক্ত ঝাঁড়-ফুঁক বৈধ হওয়ার ব্যাপারে তো কারো কোনো সন্দেহ নেই।
৫. সূরা আশ-শোআরা-৮৫ নম্বর আয়াত
..................
অর্থ : ‘আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর।’
এই আয়াত হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর দোয়ার একটি অংশ। দোয়া শুরু হয়েছে ৮৩ নম্বর আয়াত থেকে।
হযরত ইব্রাহীম (আ.) মুশরিকদের সামনে বক্তব্য শেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেনÑহে আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর।
(সূরা আশ-শোআরা-৮৩-৮৫)।
এখানে হযরত ইব্রাহীম (আ.) ‘নেয়ামত’ শব্দ দিয়ে অবশ্যই তাবিজ-কবজের দিকে ইঙ্গিত করেননি। আর নিয়ামত উদ্যানের অধিকারী বলতে তাবিজ-কবজ দাতাদের কথা বলেননি। তিনি আকাক্সা প্রকাশ করেছেন বেহেস্তের। এখানে নিয়ামত শব্দ দিয়ে বেহেস্ত বুঝানো হয়েছে।
৬. সূরা হা-মীম সেজদাহ-৪৪ নম্বর আয়াত
.........
অর্থ : আমি যদি অনারব ভাষায় কুরআন পাঠাতাম তবে অবশ্যই তারা বলতো-এর আয়াত সমূহ পরিষ্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষার আর রাসুল আরবি ভাষী। বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার এবং যারা মুমিন নয় তাদের কানে আছে ছিপি আর কুরআন তাদের জন্য অন্ধত্ব।’
এই আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কুরআন অস্বীকারকারীদের কানে ছিপি আর চোখ অন্ধ এবং যারা ঈমান এনেছে কুরআনে বিধান মতো নিজেদের জীবন পরিচালিত করেছে তারা এই রোগ থেকে মুক্ত। মুফাচ্ছিরগণ সবাই একমত যে, এই আয়াতে কুরআনের মাধ্যমে কুফর, শিরক, অহংকার, হিংসা, লোভ, লালসা ইত্যাদি আত্মিক রোগ নিরাময় হওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে। অবশ্য অনেকে বলেছেন, দৈহিক রোগের ও প্রতিকার কুরআনী দোয়া পাঠের দ্বারা সম্ভব। আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি ঝাঁড়Ñফুঁক দেয়ার ব্যাপারে কারো কোন সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হলো তাবিজ-কবজ নিয়ে। যে আয়াতগুলো আমরা দেখলাম তাতে কি তাবিজের পে প্রত্য বা পরো কোনো দলিল রয়েছে? ইহুদীরা নবি করিম (সা.) কে যাদু করে ছিলো। তা প্রতিকারের জন্য আল্লাহ পাক সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস প্রেরণ করেন। আমার অনেক শ্রদ্ধাভাজন হযরত মাওলানা এই ঘটনা দিয়ে তাবিজ-কবজের দলিল খুঁজেছেন। অথচ হযরত রাসুল (স.) এই সূরা দুটিকে তাবিজ-কবজ হিসেবে ব্যবহার করেননি। তিনি তা দোয়া হিসেবে পাঠ করে নিজের শরীরে ফুঁক দিয়েছেন। আজো সহী-উল-আকায়েদ প্রত্যেক উলামায়ে কিরাম ফজরের এবং মাগরিবের নামাজের পর আয়াতুল কুরসী এবং চার কুল পড়ে নিজেদের শরীরে ফুঁক দিয়ে থাকেন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ আমাদের মুসলিম সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতির ল্েয মানুষকে সহী-উল-আকায়েদ ইসলাম থেকে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যাচ্ছেন। আমার যে সকল প্রিয়জন ও শ্রদ্ধাভাজনরা ইসলামের পোশাক গায়ে দিয়ে তাবিজ-কবজের ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট, তাদের কাছে বিনীত নিবেদন এই যে, ‘সহী-উল-আকায়েদ’ চিন্তে করে অন্য কোনো ব্যবসা খুঁজে বের করুন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। আর ব্যবসাতো আমাদের নবি করিম (সা.) এর সুন্নত। অবশ্য বর্তমানে কিছু সংখ্যক আলেম তাবিজ-কবজের ব্যবসাকে লজ্জাজনক মনে না করলেও কলকারখানা কিংবা এই রকমের শ্রমিকের কাজকে লজ্জাজনক মনে করেন। আমি তাদেরকে প্রায়ই প্রশ্ন করি, আপনি কি রাসুল (সা.) কিংবা সাহাবা-এ কিরাম থেকে বড় আলেম? আপনি কি ওদের থেকে বড় পির? রাহমাতুল্লিল আলামীন হয়েও যদি রাসুল (সা.) ইহুদীর ঘরে মজুর হিসেবে চাকুরী করতে পারলেন, আর যে আলী (রা.)-এর কথা স্বয়ং রাসুল (সা.) বলছেন, ‘আমি যদি হই জ্ঞানের ঘর হবে আলী সেই ঘরের দরজা।’ সেই আলী অন্যের ঘরে চাকুরী করেছেন নিজের পরিবার চালাতে। আরো অসংখ্যা ঘটনা রয়েছে। ইসলাম কোনো পাদ্রীইজম কিংবা ব্রাহ্মণ্যবাদীতার নাম নয়। ইসলাম হলো কুরআন-সুন্নার প্রতিটি আদেশ-নিষেধকে সহী-উল-আকায়েদ বিশ্বাসের সাথে আমলের নাম। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন কুরআন-সুন্নার নীতিতে চলার তৌফিক দেন।
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪৪
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:০৮
আমি বিপ্লবী বলেছেন: ভালো প্রচেষ্টা +....।
বাংলাদেশের মুসলিমদের কুয়ার বাইরে বেরিয়ে ইসলামের বিশ্বটা দেখা উচিত! কুয়াকেই পৃথিবী জ্ঞান করা "কূপমন্ডুক" থাকতে থাকতে আমরা যে দ্বীন পালন করে থাকি, তা অনেকাংশেই deviated। আমাদের উচিত মূল সূত্র থেকে নিজেদের দ্বীন শুধরে নেয়া। প্রথম ৩ generation অর্থাৎ, - সাহাবা (রা.), তাবেয়ী (রহ.) এবং তাবে তাবেয়ী(রহ.) - তাঁরা দ্বীনকে যেভাবে জানতেন ও মানতেন, সেভাবে দ্বীন ইসলামকে জানা ও মানা!!
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪৩
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:০৮
মোঃ এনামুল কবীর বলেছেন: আমরা ছোট কালে যে সকল পবিত্র কোরআন শরিফ পড়তাম সেই নুরানি কোরআন শরিফের প্রথম কয়েক পাতায় বিভ্ন্নি সুরার ফজিলত ও নক্সা তাবিজ আকারে ব্যবহারের নির্দেশনা পাওয়া যায়। আমার প্রশ্ন হলো সেসকল নক্সা তাবিজ আকারে ব্যবহার করা কি যায়েজ হবে?
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:২৩
সৈয়দ মবনু বলেছেন: আপনি আমার সম্পূর্ণ লেখাটা পড়লে উত্তর পেয়ে যাবেন। সবপর্বগুলো পড়ুন।
৪| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:১৮
সিকদার বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে একটা কথাই মনে হলো। অল্প বিদ্যা ভয়ংকরে আপনি পতিত হয়েছেন। তানা হলে মাওলানা মুহিউদ্দীনের দোষ ঘাটতেন না। এভাবে লেখালেখি না করে সরাসরি উনাকে জিঘ্ঘাসা করলে ভাল হত।তারপর যদি উনার উত্তর আপনার পছন্দ না হত তখন না হয় লিখতেন।কারন উনি পরীখ্খিত আলেম।উনার ব্যাপারে আপনার থেকে সার্টিফিকেট দিতে হবে না।বল্গে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য আরও অনেক পলিসি আছে ওগুলো প্রয়োগ করুন।
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৫৩
সৈয়দ মবনু বলেছেন: আপনি আমার পূর্ণাঙ্গ লেখা না পড়ে মন্তব্য করে মূর্খতার পরিচয় দিলেন। পড়ুন এবং চিন্তা করুন।মাওলানা মুহিউদ্দিন খানকে আমি ভালো জানি, তিনিও আমাকে ভালো জানেন। তিনি যখন পত্রিকায় লিখলেন তখন আমাকেও পত্রিকায় লিখে জবাব দিতে হবে। রাগ করলেন মনে হয়। আপনারা-ই যখন জবাব দিতে পারেন না তখন আঘাত করেন মানুষের দেহে। কিন্তু জ্ঞানের জবাব জ্ঞান দিয়ে দিতে হয়। মাওলানা মুহিউদ্দীন খান আপনার দৃষ্টিতে নবী-রাসুল কি না জানিনা? আমার দৃষ্টিতে আমাদের মতোই ভুলে শুদ্ধে মানুষ। সামনে আরো কথা আসছে।
৫| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:২৫
রুচি বলেছেন: তাবিজ, কবজ বৈধ না অবৈধ সে বিতর্কে যাব না কিন্তু যে কাগজে পবিত্র কুরআনের আয়াত লিপিবদ্ধ আছে তা সার্বক্ষনিক ভাবে (পবিত্র বা অপবিত্র অবস্থায়) দেহে ধারন করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪১
সৈয়দ মবনু বলেছেন: অপবিত্র আবস্থায় জায়েজ হবে না।
৬| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৩৩
আহমাদ যাবেরী বলেছেন: সৃষ্টিকর্তার কাছে কোরানের আয়াত দ্বারা রোরমুক্তির জন্য দোয়া করা, আর তা গলায় বেধে রাখার মধ্যে আপনি কোনটিকে আপনি বেশি উপকারী মনে করেন?
২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪২
সৈয়দ মবনু বলেছেন: দোয়া করাকে। আমার পূর্ণাঙ্গ লেখা এবং আগের লেখাগুলো পড়েল বুঝতে পারবেন।
৭| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪৭
আহমাদ যাবেরী বলেছেন: সবাই যদি তাই বুঝত!
২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৩:৩৯
সৈয়দ মবনু বলেছেন: দাওয়াত দিলে, বুঝালে, সবাই না হোক কিছু মানুষে বুঝবে-ইনশাল্লাহ।
৮| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৪৭
ভাবসাধক বলেছেন: "পাকি" রা নিপাত যাক !
২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৩:৪২
সৈয়দ মবনু বলেছেন: পাকির সাথে এই লেখার কি সম্পর্ক?
৯| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:০২
মেরিনার বলেছেন: ভালো। পোস্টে +।
২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৩:৫০
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:২৮
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: ভাল লেখা...
২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৪:০০
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
১১| ২৪ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:৩৩
রাজসোহান বলেছেন: +
২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৪:১৬
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
১২| ২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৩:৩৮
ডিজিটালভূত বলেছেন: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান আমার শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু তাবীজ সম্পের্ক উনার গবেষণা মোটেই সঠিক নয়। এমনিভাবে অনেক বিষয়ে তিনি সুফীবাদি মতামত প্রকাশ করে থাকেন। যা গ্রহণযোগ্য নয়।
২৫ শে জুন, ২০১০ রাত ১২:২১
সৈয়দ মবনু বলেছেন: মাওলানা আমারও শ্রদ্ধেয়। এমার এই লেখা পত্রিকায় প্রকাশের পর তিনি পড়েছেন এবং আমাকে তাঁর অনুভতিও জানিয়েছেন। আমরা পরের লেখায় পাবেন।
১৩| ২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৩:৪১
ডিজিটালভূত বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা রইল।
১৪| ২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৪:৫৩
মুঘল সম্রাট বলেছেন: জ্ঞানগর্ভ লিখা। ধন্যবাদ।
২৬ শে জুন, ২০১০ রাত ১২:২৩
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ
১৫| ২৭ শে জুন, ২০১০ সকাল ৮:৩৪
আহমদ ময়েজ বলেছেন: Click This Link
১৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:০৮
সত্য সবার উপর বলেছেন: কোরআনের বিভিন্ন আয়াত পড়ে ফুক দেয়া বৈধ তবে তাবিজ কবজ নয়। আর আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় রোগমুক্তির রাস্তা।
১৭| ৩০ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৪৭
বাহলুল আহসান বলেছেন: েটে পাওয়া, কপি পেস্ট করলাম সবার জন্য,
প্রশ্ন : রোগমুক্তির জন্য কোন আলেমের দেওয়া তাবীয ব্যবহার করা যাবে কি?
উত্তরঃ শুধু রোগ মুক্তির জন্য নয়, যে কোন উদ্দেশ্যে তাবীয ব্যবহার করা হারাম। তা কুরআনের আয়াত ©র্লখে হোক আর অন্য কিছু দিয়ে তৈরি করা হোক। এর বিনিময়ে হাদিয়া গ্রহণ করাও হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকাল সে শিরক করল (আহমাদ হা/১৬৯৬৯; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৪৯২)।
ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজ-কবচের বিধান
আমাদের দেশে কতক পীর-ফকির, আলেম-জাহেল, কি শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত অনেকেই তাবিজ-কবচ, তাগা, কড়ি, সামুক, ঝিনুক ও গাছ-গাছালির শিকর-বাকর ইত্যাদি দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করেন এবং ইহা বৈধ ও জায়েজ মনে করেন। এ সম্পর্কে বাজারে কিছু বই পুস্তক পাওয়া যায়, সে সব বইয়ে নির্ধারিত বিষয়ে গ্রহণ যোগ্য কোন দলিল নেই, আছে কিছু মনগড়া কিচ্ছা-কাহিনী, অসংখ্য তদবিরের বর্ণনা ও তার বানোয়াট ফাজায়েল। এ সব বই পড়ে কেউ কেউ বিপদাপদ, দুঃখ-কষ্ট, অভাব-অনটন, রোগ, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি লাভের আশায় বিভিন্ন তদবির ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হয় ও তা গ্রহণ করে। তারা এ ধরণের চিকিৎসার মূল্যায়ন ও তার বৈধতা-অবৈধতা সম্পর্কে পুরোপুরি অজ্ঞ। আমি অত্র নিবন্ধের মাধ্যমে এ বিষয়টির তত্ত্ব ও স্বরূপ উদ্ঘাটন এবং ইসলামের দৃষ্টিতে তার হুকুম বর্ণনার প্রয়াস পেয়েছি।
এক. সাহাবি ইমরান বিন হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত :
أن النبي صلى الله عليه وسلم رأى رجلا في يده حلقة من صفر فقال ما هذه قال من الواهنة قال انزعها فإنها لا تزيدك إلا وهنا فإنك لو مت وهي عليك ما أفلحت أبدا (أحمد ابن ماجة و حاكم)
একদা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির হাতে তামার চুড়ি দেখে বললেন, এটা কি? সে বলল: এটা অহেনার অংশ। {অহেনার অর্থ এক প্রকার হাড়, যা থেকে কেটে ছোট ছোট তাবিজ আকারে দেয়া হয়।} তিনি বললেন: এটা খুলে ফেল, কারণ এটা তোমার দূর্বলতা বাড়ানো ভিন্ন কিছুই করবে না। যদি এটা বাঁধা অবস্থায় তোমার মৃত্যু হয়, তবে কখনও তুমি সফল হবে না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাকেম ও ইবনে মাজাহ) হাদিসটি সহিহ্।
দুই. উকবা বিন আমের রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে বলতে শুনেছি:
من تعلق تميمة فلا أتم الله له ومن تعلق ودعة فلا ودع الله له. (أحمد وحاكم)
‘যে ব্যক্তি তাবিজ লটকালো, আল্লাহ তাকে পূর্ণতা দেবেন না, আর যে কড়ি ব্যবহার করবে, আল্লাহ তাকে মঙ্গল দান করবেন না।’ আহমদ, হাকেম।
তিন. উকবা বিন আমের আল-জোহানি রাদিআল্লাহু আনহু বলেন :
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم أقبل إليه رهط فبايع تسعة وأمسك عن واحد فقالوا يا رسول الله بايعت تسعة وتركت هذا قال: إن عليه تميمة فادخل يده فقطعها فبايعه وقال من علق تميمة فقد أشرك. (أحمد وحاكم)
‘একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে একদল লোক উপস্থিত হল। তিনি দলটির নয়জনকে বায়আত করলেন একজনকে করলেন না। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! নয়জনকে বায়আত করলেন একজনকে করলেন না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তার সাথে তাবিজ রয়েছে। অতঃপর তিনি স্বহস্তে তা ছিড়ে ফেললেন এবং তাকে বায়আত করলেন, আর বললেন, যে ব্যক্তি তাবিজ ব্যবহার করল সে শিরক করল।’ সহিহ মুসনাদে আহমদ, হাকেম।
চার. একদা হুজায়ফা রাদিআল্লাহু আনহু এক ব্যক্তির হাতে জ্বরের একটি তাগা দেখতে পেয়ে তা কেটে ফেলেন। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করেন :
وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ ﴿106﴾يوسف: ١٠٦
তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, তবে শিরক করা অবস্থায়।’ {ইউসুফ : ১০৬} তাফসিরে ইবনে কাসির। এ থেকে প্রমাণিত হয়, সাহাবি হুজায়ফার মতে তাগা ব্যবহার করা শিরক।
পাঁচ. বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত, আবু বশির আনসারি রাদিআল্লাহু আনহু কোন এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী ছিলেন। সে সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে এ নিদের্শ দিয়ে পাঠালেন, ‘কোনও উটের গলায় ধনুকের ছিলা অথবা বেল্ট রাখবে না, সব কেটে ফেলবে।’
ছয়. আবু ওয়াহহাব রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
وارتبطوا الخيل وامسحوا بنواصيها وأكفالها وقلدوها ولا تقلدوها الأوتار. (النسائ )
ঘোড়া বেঁধে রাখ, তার মাথায় ও ঘাড়ে হাত বুলিয়ে দাও এবং লাগাম পরিয়ে দাও। তবে ধনুকের ছিলা ঝুলিয়ো না। সুনানে নাসায়ী।
সাত. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহর স্ত্রী জয়নব রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদিন আব্দুল্লাহ বাড়িতে এসে আমার গলায় তাগা দেখতে পান। তিনি বললেন, এটা কী? আমি বললাম, এটা পড়া তাগা। এতে আমার জন্য ঝাঁড়-ফুঁক দেয়া হয়েছে। তা নিয়ে তিনি কেটে ফেললেন এবং বললেন, আব্দুল্লাহর পরিবার শিরক থেকে মুক্ত। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি :
إن الرقى والتمائم والتولة شرك (أحمد ابن ماجة وحاكم)
ঝাড়-ফুঁক, সাধারণ তাবিজ ও ভালোবাসা সৃষ্টির তাবিজ ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে শিরক। আহমদ, হাকেম, ইবনে মাজাহ।
আট. তাবেয়ি আব্দুল্লাহ বিন উকাইম সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
من تعلق شيئا وكل إليه (أحمد ابن ماجة وحاكم)
যে ব্যক্তি কোন কিছু ধারণ করবে, তাকে ঐ জিনিসের কাছেই সোপর্দ করা হবে।’ আহমদ, তিরমিজি। এ সব দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, তাবিজ ব্যবহার করা হারাম ও শিরক।
তাবিজ ইত্যাদি ব্যবহার করা ছোট শিরক না বড় শিরক?
কেউ যদি তাবিজ-কবচ, মাদুলি-কড়ি, সামুক-ঝিনুক, গিড়া, হাঁড়, তাগা-তামা-লোহা বা অনুরূপ কোন ধাতব বস্তু গলায় বা শরীরের কোথায়ও ধারণ করে এবং এ ধারণা পোষণ করে যে, ঐ গুলো বালা-মুসিবত দূর করার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ ক্ষমতা রাখে, তবে তা বড় শিরক। আর যদি এ ধরনের ধারণা না হয়, তবে তা ছোট শিরক।
শায়খ সুলাইমান বিন আব্দুল্লাহ বলেছেন, বালা-মুসিবত দূর করার উদ্দেশ্যে গিড়া, তাগা পরিধান করা ছোট শিরক। অর্থাৎ যদি তা মাধ্যম বা উসিলা মনে করে ব্যবহার করা হয়।
শায়খ আব্দুল আজিজ বিন বাজ বলেছেন, শয়তানের নাম, হাড়, পূঁতি, পেরেক অথবা তিলিস্মা অর্থাৎ অর্থবিহীন বিদঘুটে শব্দ বা অক্ষর প্রভৃতি বস্তু দিয়ে তাবিজ বানানো ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত। ফাতহুল মাজিদ গ্রন্থের টীকায় তিনি আরো বলেছেন : তাবিজ ব্যবহার করা জাহেলি যুগের আমল।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তাবিজ-কবচ অনেক ধর্মের প্রতিকি চিহ্ন ছিল। যেমন হিন্দু পুরোহিতদের মাদুলী ধারণ করা, বিশেষ করে কালী শিবের পূজায়। উয়ারী সম্প্রদায়ের আকীদার অন্যতম প্রতিক ছিল বিভিন্ন ধরণের তাবিজ।
শায়খ হাফেজ হেকমি বলেন: ’কুরআন ও হাদিস ব্যতীত, ইহুদিদের তিলিসমাতি, মূর্তি পূজারী, নক্ষত্র পূজারী, ফেরেশতা পূজারী এবং জিনের খিদমত গ্রহণকারী বাতিল পন্থীদের তাবিজ ব্যবহার; অনুরূপভাবে পূঁতি, ধনুকের ছিলা, তাগা এবং লোহার ধাতব চুড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে শিরক। কারণ, এগুলো সমস্যা সমাধানের বৈধ উপায় কিংবা বিজ্ঞান সম্মত ঔষধ নয়।
এ হল সেসব তাবিজ কবচের হুকুম যাতে কুরাআনের আয়াত, হাদিসের দোয়া দরুদ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় না তার।
কুরআন-হাদিসের তাবিজ :
হ্যাঁ, যে সব তাবিজ-কবচে কুরআন হাদিস ব্যবহার করা হয় সে ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। এক শ্রেণীর আলেম কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দুআ সমূহের তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ মনে করেন। যেমন, সাঈদ বিন মুসাইয়িব, আতা আবু জাফর আল-বাকের, ইমাম মালেক। এক বর্ণনা মতে ইমাম আহমদ, ইবনে আব্দুল বার, বাইহাকি, কুরতুবি, ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়িম এবং ইবনে হাজারও রয়েছেন। তাদের দলিল, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآَنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ وَلَا يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إِلَّا خَسَارًا ﴿82﴾ الإسراء: ٨٢
আর আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করেছি যা রোগের সু-চিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত।’ {ইসরা:৮২}
كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ (ص 29)
এক কল্যাণময় কিতাব, ইহা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। {সাদ:২৯}
সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন আমরের ব্যক্তিগত আমল সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি নিজ ছোট বাচ্চা, যারা দোয়া মুখস্থ করতে অক্ষম, তাদেরকে অনিষ্ট থেকে রক্ষার জন্য গায়ে দোয়ার তাবিজ ঝুলিয়ে দিতেন। দোয়াটি এই:
بسم الله أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده ومن همزات الشياطين وأن يحضرون (أحمد والترمذي وأبوداود)
‘আল্লাহর নামে তাঁর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাঁর গজব ও শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্টতা থেকে এবং শয়তানদের কুমন্ত্রণা ও তাদের উপস্থিতি থেকে।’ (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ) হাদিসটি হাসান।
পক্ষান্তরে অধিকাংশ সাহাবি ও তাদের অনুসারীদের মতে কুরআন ও হাদিসের তাবিজ ব্যবহার করাও নাজায়েজ। তাদের মধ্যে রয়েছেন: আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ, ইবনে আব্বাস, হুযাইফা, উকবা বিন আমের, ইবনে উকাইম, ইব্রাহিম নখয়ি, একটি বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ, ইবনুল আরাবি, শায়খ আব্দুর রহমান বিন হাসান, শায়খ সুলাইমান বিন আব্দুল ওয়াহহাব, শায়খ আব্দুর রহমান বিন সাদি, হাফেজ আল-হেকমি এবং মুহাম্মদ হামিদ আলফাকি। আর সমসাময়ীক মনীষীদের মধ্যে আছেন শায়খ আলবানি ও শায়খ আব্দুল আজিজ বিন বাজ।
তারা বলেন, উল্লেখিত আয়াত দ্বারা তাবিজের বৈধতা প্রমাণিত হয় না। উপরন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের দ্বারা চিকিৎসা করার স্বরূপ স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, আর তা হচ্ছে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। এ ছাড়া কুরআনের আয়াত তাবিজ আকারে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন প্রমাণ নেই, এমনকি সাহাবাদের থেকেও।
তা ছাড়া ইমাম আবু দাউদ বলেছেন, সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন আমেরের বর্ণিত হাদিসের সূত্র (সনদ) হাদিস বিশারদদের নিকট বিশুদ্ধ নয়। আর শুদ্ধ হলেও এটা তার একার আমল, যা অসংখ্য সাহাবির বিপরীত হওয়ার ফলে এবং এর স্বপক্ষে কোন দলিল না থাকার কারণে আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
আরেকটি কারণ, যেসব দলিলের মাধ্যমে তাবিজ নিষিদ্ধ প্রমাণিত হয়েছে, সেসব দলিলে পৃথক করে কুরআন-হাদিসের তাবিজ বৈধ বলা হয়নি। যদি বৈধ হত, তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই তা বলে দিতেন। যেমন তিনি শিরক মুক্ত ঝাড়-ফুকের ব্যাপারটি অনুমতি দিয়েছেন। মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
قال اعرضوا علي رقاكم لا بأس بالرقى مالم يكن فيها شرك (رواه مسلم)
‘তোমাদের ঝাড়-ফুঁক আমার কাছে পেশ কর, ওটা শিরকের আওতাধীন না হলে তাতে কোন বাধা নেই।’ মুসলিম। পক্ষান্তরে তিনি তাবিজ সম্পর্কে এরূপ কিছু বলেননি। দ্বিতীয়ত. সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের ছাত্র ইব্রাহিম নখয়ি বলেন, তারা অর্থাৎ আব্দুল্লাহ বিন মাসউদের সঙ্গী-সাথী ও শিষ্যগণ কুরআন বা কুরআনের বাইরের সব ধরণের তাবিজ অপছন্দ করতেন। যেমন আলকামা, আসওয়াদ, আবু ওয়ায়েল, হারেস বিন সোয়ায়েদ, ওবায়দা সালমানি, মাসরুক, রাবি বিন খায়সাম এবং সোয়ায়েদ বিন গাফলাহ প্রমুখ তাবেয়িগণ।
{ফতহুল মজিদ} তৃতীয়ত. অবৈধ পন্থার পথ রুদ্ধ করার জন্য শরিয়ত অনেক বৈধ কাজও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সে হিসেবে নিষিদ্ধ তাবিজ থেকে উম্মতকে হিফাজত করার লক্ষ্যে বৈধ তাবিজও নিষিদ্ধ করা উচিত। কারণ এ পথ খোলা রাখলে বাতিল তাবিজপন্থীরা সাধারণ মানুষের মন আল্লাহর ওপর ভরসা থেকে বিমুখ করে, তাদের লিখিত তাবিজের প্রতি আকৃষ্ট করে ফেলার সুযোগ পাবে। শুধু তাই নয়, ঐ সব শয়তানদের প্ররোচনার কারণে কতক সাধারণ মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আর তারা মানুষের আসক্তি দেখে তাদের সহায়-সম্পদ লুটে নেয়ার ফন্দি আটে। যেমন, তাদেরকে বলে, তোমাদের পরিবারে, ধন সম্পত্তিতে বা তোমার ওপর এরূপ বিপদ আসবে। অথবা বলে, তোমার পিছনে জিন লেগে আছে ইত্যাদি। এভাবে এমন কতগুলো শয়তানি কথা-বার্তা তুলে ধরে যা শুনে সে মনে করে, এ লোক ঠিকই বলছে। সে যথেষ্ট দয়াবান বলেই আমার উপকার করতে চায়। এভাবেই সরলমনা মূর্খ লোকেরা তাদের কথায় বিশ্বাস করে ও অতঃপর ভয়ে অস্থির হয়ে যায়, আর তার কাছে সমাধান তলব করে। তাই তাবিজ কুরআন-হাদিসের হলেও ব্যবহার করা, রুগির বালিশের নীচে রাখা বা দেয়ালে ঝোলানো নাজায়েজ বলাই অধিকতর শ্রেয়।
একটি সংশয় : অনেকে বলে থাকেন, তাবিজ, কবচ ইত্যাদি আমরা দোয়া-দরুদ ও প্রাকৃতিক ঔষধের ন্যায় ব্যবহার করি। যদি তার অনুমোদন থাকে তবে তাবিজ কবচ নিষিদ্ধ কেন? এর উত্তর হচ্ছে : অসুখ-বিসুখ ও বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি পাওয়ার পদ্ধতি দুইটি :
এক. যা সরাসরি কুরআনের আয়াত বা রাসূলের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। একে শরিয়তি উপায় বা চিকিৎসা বলা যেতে পারে। যেমন ঝাঁড় ফুক ইত্যাদি, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে দেখিয়েছেন এবং যার বর্ণনা হাদিসের বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে। এ গুলো আল্লাহর ইচ্ছায় বান্দার মঙ্গল সাধন বা অমঙ্গল দূর করে।
দুই. প্রাকৃতিক চিকিৎসা অর্থাৎ বস্তু ও তার প্রভাবের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক, যা খুবই স্পষ্ট এমনকি মানুষ সেটা বাস্তবে অনুভব ও উপলব্ধি করতে পারে। যেমন: বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা ঔষধ। ইসলামি শরিয়ত এগুলো ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেছে। কারণ, এগুলো ব্যবহার করার অর্থই হচ্ছে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা, যিনি এ সব জিনিসে নির্দিষ্ট গুণাবলি দান করেছেন এবং তিনি ইচ্ছা করলে যে কোন সময় এসব বস্তুর গুন ও ক্রিয়া বাতিল করে দিতে পারেন। যেমন তিনি বাতিল করেছিলেন ইব্রাহিমের আলাইহিস সালামের জন্য প্রজ্বলিত আগ্নির দাহন ক্রিয়া। কিন্তু তাবিজ ইত্যাদির মধ্যে আদৌ কোন ফলদায়ক প্রভাব নেই এবং তা কোন অমঙ্গল দূর করতে পারে না। এতে জড় বস্তুর কোন প্রভাবও নেই। তাছাড়া, মহান আল্লাহ এগুলোকে কোন শরয়ি মাধ্যম হিসেবে নির্ধারণ করেননি। মানুষও স্বাভাবিকভাবে এগুলোর কোন প্রভাব প্রতিক্রিয়া দেখে না, অনুভবও করতে পারে না। এ জন্য অনেকে বলেছেন, এগুলোর ওপর ভরসা করা, মুশরিকদের ন্যায় মৃত ব্যক্তি ও মূর্তির ওপর ভরসা করার সমতুল্য; যারা শুনে না, দেখে না, কোন উপকারও করতে পারে না, আর না পারে কোন ক্ষতি করতে। কিন্তু তারা মনে করে, এগুলো আল্লাহর কাছ থেকে তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে, অথবা অমঙ্গল প্রতিহত করবে।
উদাত্ত আহব্বান : এখনো যে সব আলেম-ওলামা তাবিজ-কবচ নিয়ে ব্যস্ত তাদের দরবারে আমার সবিনয় অনুরোধ, এর থেকে বিরত থাকুন। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগ, সাধারণ মানুষ খুব সহজেই টিবি চ্যানেল, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারছে যে, তাবিজ-কবচ বৈধ নয় বা ইসলামে এর কোন স্বীকৃতিও নেই। এমতাবস্থায় যারা তাবিজ-কবচ করেন বা বৈধ বলেন তাদের ব্যাপারে তারা বিব্রতকর অবস্থায় পতিত হন। আল-হামদু লিল্লাহ, বর্তমান সময়ে আরবি শিক্ষিত ও সাধারণ শিক্ষিত অনেক ব্যক্তি, বিশেষ করে তরুন প্রজন্ম তাবিজ-কবজের অসারতা বুঝতে পেরে এর বিরোদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। নিজে রিবত থাকছেন এবং অপরকে বিরত থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। যেহেতু এটা আকীদার বিষয়, তাই এখানে শিথিলতার কোন সুযোগ নেই। অতএব, এ থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। আল্লাহ সহায়।
১৮| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
সিবাক বলেছেন: মুসলিম মানে, মহান আল্লাহ'তালার উপর পূর্ন আস্থা ও বিস্সাস, এবং সুধুমাত্র আল্লাহ'তালারই এবাদত করা
যদি কেউ কোন তাবিজ, কোরআনের আয়াত লেখা কোন কিছু অথবা 'আল্লাহ' লেখা নাম ফলক তার কাছে রাখে এবং ভাবে যে এটা তার কোন উপকারে দিতে পারে, তাহলে সে এক প্রকার শিরক্ করল,
কেননা, এতে করে সে তাবিজ অথবা কোরআনের আয়াত লেখা কোন কিছুর উপর নির্ভশীল হল আর সে এটা বিস্সাস করে নিল যে এটাই তাকে রক্ষা করবে, আল্লাহ'তালা নন।
যখন কোরআান তেলাআত করি এবং কোন সূরা পরে কোন কিছু প্রার্থনা করি, তখন কিন্তু এই কোরআনের আয়াত, সূরার উপর নির্ভশীল হইনা, বরং
কোরআান তেলাআত ও সূরা পড়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ'তালার প্রসংসা করি ও আল্লাহ'তালার কাছেই সাহায্য চাই, কারন আমি আল্লাহ'তালার উপরই নির্ভশীল।
তাই তাবিজ-কবজ ধারন করা মানেই শিরক্ করা
মনে রাখতে হবে, সর্বদাই আল্লাহ'তালা সবকিছু দেখছেন, তিনি সবকিছু জানেন ও শোনেন।
তাই শুধুমাত্র আল্লাহ'তালার উপরই নির্ভশীল হতে হবে, তিনিই একমাত্র সাহায্যকারী।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুন, ২০১০ সকাল ১১:৫৭
লালসালু বলেছেন: সহমত