নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Oh Allah Plz Save Bangladesh

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু, থাকি ছিলট

সৈয়দ মবনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরআনিক ব্যাখ্যায় দয়াদর্শন : সূরা বাকারা, আয়াত : ৮, প্রসঙ্গ : মুনাফিক

১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০০

কোরআনিক ব্যাখ্যায় দয়াদর্শন : সূরা বাকারা, আয়াত : ৮

প্রসঙ্গ : মুনাফিক

{৮} وَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ آمَنَّا بِاللّهِ وَبِالْيَوْمِ الآخِرِ وَمَا هُم بِمُؤْمِنِينَ

উচ্চারণ : ওয়ামিনান নাসি মাইয়াকুলু আমান্না বিল্লাহি ওয়াবিল ইয়াওমিল আখিরি ওমাহুম বিমুমিনিন
অর্থ : আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ মোটেও তারা ঈমানদার নয়।

কোরআন মুত্তাকিদের জন্য আলো বা পথপ্রদর্শক-এ ঘোষণার পর মুত্তাকিদের ছয় বৈশিষ্ট্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, সত্য গোপনকারীদের বৈশিষ্ট্য এবং শাস্তি ইত্যাদি আলোচনা আমরা সুরা বাকারার ১ থেকে ৭ নম্বার রুকু পর্যন্ত পেয়েছি। অতঃপর ৮ থেকে শুরু হয় ঐ লোকদের সম্পর্কে আলোচনা যারা বলে আমরা আল্লাহ ও পরকালের বিশ্বাসী, প্রকৃত অর্থে তারা বিশ্বাসী নয়। এই আয়াত অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট যদিও মদিনার ইহুদি সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালূল, মা’তাব ইবনে কুশায়র, জাদ্দ ইবনে কায়স প্রমূখ এবং তাদের সঙ্গীরা (যাদের অধিকাংশ ইহুদি ছিলো), কিন্তু স্থান-কাল অতিক্রম করে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে প্রায় যুগেই মানুষের মধ্যে কিছু এমন চরিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। সমাজে সবসময়ই এমন কিছু লোক থাকে যারা সত্যকে সত্য বলে মনে-প্রাণে মেনে সত্যের উপর দৃঢ় থাকার মতো সাহস যেমন নেই, তেমনি নেই সত্যকে প্রকাশ্য অস্বীকার করার মতোও সাহস। তারা নেতৃত্বের লোভে প্রকাশ্য সত্যের উপর থাকার ঘোষণা দিলেও গোপনে গোপনে তারা মিথ্যার সাথে সন্ধি স্থাপন করে সুযোগ-সুবিধা হাসিল করে। পবিত্র কোরআনের ভাষায় তারা হলো মুনাফিক। ‘মুনাফিক’ বলে ‘নিফাক’ কার্যের কারককে। নিফাক হলো : মনে কপটতা, ভন্ডামি, কথা ও কাজের অমিল, একেক সময় একেক কথা বলা, দু’মুখি সাপের মতো ধোঁকা দিয়ে চলা। ইসলামি আইনে নিফাক দু ভাগে বিভক্ত, ১) নিফাকে ই’তিকাদি, ২) নিফাকে আমলি।

নিফাকে ই’তিকাদি
‘ই’তিকাদ’ অর্থ হলো বিশ্বাস। বিশ্বাসগত নিফাক বা কপটতা কুফরি থেকেও মারাত্মক খারাপ বলে ইসলামি আইনের শাস্ত্রিকেরা মনে করেন। কারণ, এই রকমের লোক প্রকাশ্য ইসলামের কাজ করে মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, আবার ইসলামের শত্র“দের সাথে যোগাযোগ রেখে মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী কাজেও বিভিন্ন রকমের তথ্য-উপাত্য যোগন দেয়। প্রকাশ্য শত্র“র কাছ থেকে আত্মরক্ষা খুবই সহজ, কিন্তু গোপন শত্র“ থেকে বাঁচা খুবই দুঃষ্কর। ই’তিকাদি মুনাফিক শ্রেণী কর্তৃক ইসলামের সবচে বেশি ক্ষতি অতীতে যেমন হয়েছে, আজও হচ্ছে। তাই পবিত্র কোরআনের অসংখ্য স্থানে ওদের সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। মুনাফিকদের চরিত্র বর্ণনায় ‘মুনাফিকুন’ নামে পবিত্র কোরআনে একটি পৃথক সুরাও রয়েছে।

নফাকে আমলী
‘আমল’ অর্থ-কর্ম। যে নিফাক বিশ্বাসে নয়, শুধু কর্মে থাকে তাকে নিফাকে আমলী বলে। যেমন বিভিন্ন প্রকারের আনুষ্ঠানিকতা। হযরত নবী করিম (স.) থেকে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত যে হাদিসে মুনাফিকদের চারটি দোষকে বড় করে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাও আমলী নিফাক। দোষগুলো হলো-১) তার কাছে কোন আমানত রাখা হলে সে এর খিয়ানত করে। ২) সে কথা বলে মিথ্যা। ৩) ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে। ৪) সে ঝগড়া করলে গালাগালি দেয়। এ হাদিসে হযরত নবী করিম (স.) বলেন : এই চারটি দোষ যার মধ্যে থাকে সে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এই চারটির একটি থাকে, সে তা ত্যাগ না-করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকির স্বভাব থেকে যায়। (সহীহ বোখারী, হাদিস নং ৩৪)।

মুনাফিক সম্পর্কে কোরআন-হাদিসের বক্তব্যগুলো পড়ে মিলিয়ে দেখতে হবে বর্তমানে আমরা এগুলোর মধ্যে আছি কি না। থাকলে তাওবাহ করতে হবে। কারণ কোরআনের ভাষ্যানুসারে মুনাফিকরা জাহান্নামের সবচে খারাপ স্থানে থাকবে। আল্লাহ বলছেন-

অর্থ : মুনাফিকরা তো জাহান্নামের নিম্নস্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য তুমি কোনও সহায়ক পাবে না। (সুরা নিসা, আয়াত-১৪৫)।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হযরত নবী করিম (স.) বলেছেন : কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচে নিকৃষ্ট মানুষ হিসেবে দেখতে পাবে দু’মুখো নীতি ওয়ালাকে। সে এমন লোক, যে একরূপ নিয়ে আসে ওদের নিকট এবং আরেকরূপ ধরে যায় ওদের নিকট। (সহীহ বোখারী, হাদিস নং ৬০৫৮)।

ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে, বিশ্বাসগত নিফাক কুফরি থেকেও মারাত্মক। কারণ, এই শ্রেণির মুনাফিক মূলত মুসলমান নয়, কিন্তু মুসলমান সেজে মুসলিম সামাজকে প্রতারিত করে। তারা এখানে মুসলমান সাজে বিভিন্ন স্বার্থিক কারণে। বিভিন্ন স্বার্থে তারা শত্রুকে মুসলমানদের গোপন বিষয়াদি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। ওদের চরিত্র হলো দু মুখি সাপের মতো। প্রকাশ্য যে শত্র“ তার থেকে আত্মরক্ষা সহজ হলেও মুনাফিকের কাছ থেকে সহজ নয়। অতীতে মুনাফিকদের কর্তৃক ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি হয়েছে বেশি এবং আজও হচ্ছে। ইসলামের দৃষ্টিতে কাফের থেকেও বেশি মারাত্মক মুনাফিক। কেন তারা মুনাফিক? পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলছেন, (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.