নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোটগল্প

Saad muhammad Sakib

ছাত্র,আমজনতা। নিজের ঢোল নিজে পিটাই, আরেকজন পিটালে ফেটে যেতে পারে।

Saad muhammad Sakib › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথমপ্রেম এবং মেয়েটি।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৫

কলেজ বন্ধ। ক্লাস নাই। পড়ালেখা নাই। সারাদিন বসে হয় কম্পিউটার গুতাই নাহলে ফেসবুকে থাকি। বিকালে খেলতে যাই, পরে টঙে বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা হয়। এক রাতে ফেসবুকে কোনো এক গ্রুপে দেখি এক মেয়ে বিড়াল নিয়ে পোষ্ট করছে, তার নাকি বিড়াল খুব ভালো লাগে, সে বিড়াল পালতে চায়। তাই সে ছোট্টো বিড়ালের বাচ্চা খুজচ্ছে। আমার বাসা একতলায় হওয়ায় বিড়ালের খুব আনাগোনা ছিলো। সেই বিড়াল খাটের তলায় বাচ্চা দিয়েছে। ভাবলাম ওই বিড়ালের বাচ্চাকে সে মেয়ের কাছে দিয়ে আপদ বিদায় করি। যেই ভাবা সেই কাজ, আমি এফবিতে বিড়ালের দুই-একটা ছবি মেয়েটাকে মেসেজ পাঠালাম। মেয়েটির বিড়াল খুব ভালো লাগছে। সে গ্রীনরোড থাকে, আমি যাতে একটু কষ্ট করে তার বাসার নিচে গিয়ে বিড়ালটি দিয়ে আসি। সে বের হতে পারবে না কারন তার স্কুল বন্ধ। আপদ বিদায় করার লক্ষ্যে রাজি হয়ে গেলাম। আমি থাকি ঝিগাতলা। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে তার বাসার নিচে গিয়ে দিয়ে আসলাম। মেয়েটা দেখতে বেশ সুন্দরী। চঞ্চল একটা ভাব আছে। বিড়াল দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি কেটে পড়লাম। বাসায় এসে ভদ্রতার খাতিরে আমি মেয়েটিকে আমি ফ্রেন্ড্র রিকুয়েস্ট পাঠাই। সে সাথে সাথে এক্সেপ্টও করে।
অনেকদিন পরের কথা, আমি সে মেয়ের কথা ভুলেও গেছি। হঠাত দেখি সেই মেয়ে আমাকে নক করল,"কেমন আছো?"। আমি তো ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম,এইটুকু মেয়ে আমাকে তুমি বলে ।তাও রিপ্লাই দিলাম,"এতো ভালো। তুমি কেমন আছো? বিড়ালটা কেমন আছো?" সে বলে,"টিমটিম তো খুব ভালো আছে। থ্যাংকইউ ভাই ওকে আমার কাছে দেয়ার জন্য। " আমি বললাম," আরে ব্যাপার না। " এইভাবে প্রায়ই কথা হতে থাকলো মেয়েটির সাথে। কথায় কথায় ওর ব্যাপারে অনেক কিছুই জানলাম। ওর মা-বাবা দুইজনই চাকরি করে। ওর এক বয়ফ্রেন্ড ছিলো,বেশ কিছুদিন হয়েছে ব্রেকআপ হয়ে। আমি ধীরেধীরে ওর ক্লোজ ফ্রেন্ড হয়ে গেলাম। আমরা বাইরেও দেখা করতে লাগলাম। ওর কোথাও যাওয়া লাগলে আমি সাথে যেতাম।প্রায়ই আমরা এখানে ওখানে খেতাম। আমি ভালোই লাগতো ওর চঞ্চলতা,আমি কেমন জানি দূর্বল হতে লাগছিলাম ওর প্রতি। মনে হয় সেও আমার প্রতি কিছু অনুভব করতো।
বিকাল ৫টা। ফোনে একটা কল ওর কল আসলো। রিসিভ করে শুনি ওর গলা," এই তুমি কই? "। আমি উত্তর দিলাম,"আমি বাসায়। " ও বলল," বাসায় কি করতেছো? তাড়াতাড়ি আমার বাসার নিচে আসো। কাজ আছে। " আমি কথা না বাড়িয়ে বললাম,"আসছি।" বাসার নিচে গিয়ে ফোন দিলে সে বলে উপরে আসতে। আমি উপরে গেলাম। সে দরজা খুলে দিয়ে আমাকে ভিতরে গিয়ে বসতে বলল। আমি ওকে জিজ্ঞাস করলাম, "কি ব্যাপার? এইভাবে হঠাত ডাকলে যে? " ও বলল," মা-বাবা কেউ বাসায় নাই আর আমিও বাসা খালি রেখে বের হতে পারবো না।একা একা বোর হচ্ছিলাম তাই তোমাকে ডাকলাম " এই কথা গুলো বলে সে আমার কাছাকাছি এসে বসলো। আমার কেনো যেন লজ্জা লাগছিল। আমি সরে বসলাম। আমি বলল," দেখ তোমাকে আমি একটা কথা অনেক দিন ধরে বলব বলব ভাবছিলাম। আজকে সাহস করে বলেই দেই। জানি না তুমি আমার সম্পর্কে কি ভাবো কিন্তু আমি যখন তোমার সাথে থাকি তখন আমি একী সাথে খুব সুখী আবার খুব দুখী অনুভব করি কারন আমি তোমার সাথে আছি কিন্তু জানি না কাল থাকতে পারবো কিনা। তুমি আমাকে খুব সবল কর, আবার তোমার সাথে নিজেকে খুব দুর্বলও মনে হয়। আমি মনে হয় তোমাকে বুঝাতে পারছি না আসলে আমি কি অনুভব করি তোমার জন্য। " এইসব শুনে ও বলে," আমি বুঝতে পারছি তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো। আসো আমার কাছে আসো " কথা গুলো বলতে বলতে ওর গলা ধরে আসে। তারপর আমাদের দিয়ে একটা ভুল হয়ে যায়।
সে দিনের পর কয়েকদিন ওর তেমন মেসেজ পেলাম না,কলও নাই কোনো। আমি বুঝতে পারলাম না কি হলো। কয়েকদিন পর আমি ওকে আরেকটা ছেলের সাথে ক্যাফে ম্যাংগোতে দেখলাম। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। কার সাথে ও বসে বসে গল্প করছে। আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম,"কি অবস্থা? ওই দিনের পর তো কোনো খোজই নাই। এই ছেলেটা কে? " ও বলল,"আরে ভাইয়া। কেমন আছেন? আসঅলে না ভাইয়া আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই আরকি। আর ভাইয়া ও হলো আমি খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। " আমি বললাম,"আচ্ছা আচ্ছা ক্লোজ ফ্রেন্ড। ঠিক আছে। আমি আর ডিস্টার্ব করলাম না। " কি করবো বুঝে উঠতে পারলাম না, ভবঘুরের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকলাম। পরের কয়েকদিন আর বাসায় যাওয়া হলো না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.