![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আহা শান্তি! বড়ই প্রশান্তিময় একটি শব্দ। মহা সমারোহে প্রতি বছরের ২-রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামে পালিত হয় শান্তিচুক্তির বর্ষপূর্তি। এবারও ঠিক তাই। কার কাছে কেমন ঠেকে জানিনা, আমার কাছে তা নটাঘট কিংবা আদিখ্যেতা বলেই বোধহয়।
আজ হতে ঠিক আঠারো বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও অস্ত্রবাজী অবসানের ওয়াদা দিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, আসলেই কি তাতে পার্বত্য জনপদের শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? নাকি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপন আদায়, উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদান, বেপরোয়া চাঁদাবাজী ও নাশকতামূলক তৎপরতা আরও প্রকট হয়েছে?
এইতো আজ সকালেই খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের নয়মাইল এলাকায় অপরাজনীতির বলি হলো নিরপরাধ স্কুলছাত্র প্রানেশ্বর ত্রিপুরা। আমি তো এখনও পাহাড়ে স্পষ্ট শুনতে পাই অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, এখনো প্রায়শই বারুদের গন্ধ লাগে নাকে, মাঝে মাঝেই তো শোনা যায় ধর্ষিতা বোনের আত্মচিৎকার, এখনোতো দূর হলোনা পাহাড়ি-বাঙালি বিদ্বেষ, বীরদর্পে চলছে ভাইয়ে-ভাইয়ের রক্তক্ষয়ী সংঘাতও। দিনমজুর থেকে শুরু করে চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী কেউই তো চাঁদাবাজদের কবল থেকে মুক্ত নন। আর এতোকিছুর নামই যদি শান্তি হয়, তবে জানতে চাই অশান্তি কাকে বলে?
আপাতত আমি এই বিতর্ক তুলছিনা যে তুলনামূলকভাবে কোন সম্প্রদায় বেশী নির্যাতিত। আমার বলার কথা হলো এই যে, পাহাড়ি-বাঙালি কোন সম্প্রদায়ই আমরা ততোটা ভালো নেই। নানা কারণে পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের অসন্তোষের পাশাপাশি পাহাড়ি-পাহাড়ি দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিত্রও ক্রমেই পুষ্ট হচ্ছে। আর সবকিছু মিলিয়ে পাহাড়ি জনপদের শক্তি সন্ধানী মানুষদের মনে দিন দিন শঙ্কার দানা পোক্ত হয়ে উঠছে।
রাঙ্গামাটি-বাঘাইছড়ি-খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি আজো পার্বত্যবাসীকে শিহরিত করে। যখন ঐ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিলো তখন পার্বত্য রাজনীতির চেহারাটাও পুনর্বার প্রকট হয়ে উঠেছিল। বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতীয়মান যে, পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালি মিলিয়ে ৬টি আঞ্চলিক সংগঠন সক্রিয় থাকলেও উপদল রয়েছে আরও অনেক। আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব ও মতানৈক্য ক্রমেই বাড়ছে। আস্থা সংকটের পাশাপাশি বিদ্যমান পরিস্থিতি পাহাড়ের জনগণের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় জীবনকে আরো বিপন্ন করে তুলছে। একাধিক আঞ্চলিক সংগঠন কোন সমস্যা নয়, সমস্যা হলো সশস্ত্র সংঘাত। এ সংঘাতের ফলে অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ, আর তা পার্বত্যবাসীকে ক্রমেই ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চয়তার দিকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের এই দ্বন্দ্ব-সংঘাত যে একটি রাজনৈতিক সমস্যা, এ ব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশের কোন অবকাশ নেই।
স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকার অভাব ও কালক্ষেপণ বড় ধরনের অশুভ লক্ষণ আর অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি শান্তির পথে অন্তরায়। তাই অস্ত্র বহনকারীদের এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে সুস্থ ধারায় ফিরে আসতে হবে। অধিকার আদায়ের সবচেয়ে প্রশস্ত পথ হলো বহুপক্ষীয় আলোচনা এবং যোগাযোগ সক্রিয় করা। রাজনৈতিকভাবেই মীমাংসার পথ খুঁজতে হবে। আর যারা পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তি জিইয়ে রাখতে ইন্ধন জোগাচ্ছে তাদের চিহ্নিতকরণেও সরকারের জোরদার পদক্ষেপ দরকার।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৩
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সংকট নিরসনে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে