নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক খণ্ড সাদা পাতায় পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম ধরেছি। এক খণ্ড কাঁদা মাটিতে পুরো সবুজ ফলাবো বলে হাল বেয়েছি। এক খণ্ড রঙিন কাগজে পুরো বিশ্ব আঁকবো বলে রং তুলি এনেছি। এক খণ্ড হৃদয়ে পুরো দুনিয়া পুষবো বলে দৃঢ়প্রত্যয়ি হয়েছি।

সাইফ নাদির

এক টুকরো কাগজে পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম হাতে বসে আছি

সাইফ নাদির › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাশুড়ি মা না হলে

১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪০

হুট করে নাফি আর সুচির বিয়ে হয়ে গেলো। এটাকে দূর্ঘটনা বললে ভুল হবে না— এলাকার বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে বাধ্য হয়ে বিয়ে করাটা কোনো বিয়ে নই, দূর্ঘটনা বৈ আর কি। তবে সুচির দিক থেকে এটাই বিয়ে, এটাই সৌভাগ্য। এরেঞ্জ মেরেজ করলেও হয়ত অমন স্বর্ণ-টুকরো বর পেতো না; তার সবটাই সুচি জানতো। নাফি যে একেবারেই ভালোবাসতো না, তা নয়। অনলাইনে পরিচয় হওয়ার পর থেকে অনেক কথা হয়েছে, অনেক চ্যাটিং হয়েছে, বেশ ক’বার দেখাও হয়েছে। আরও কত কী— তা না হয় কলমের কালিতে তুললাম না। সুপ্তই রেখে দিলাম।

নাফি দু’বছর ধরে বাইরে থাকে। ভার্সিটিতে এই দু’টি বছর বেশ ভালোই কেটেছে। হলে না থেকে শহরতলির একটি মেসে থেকেই ক্লাস করতো। কয়েকটা টিউশনি করে কিছু টাকা পয়সাও ইনকাম করতো। বিয়ের পর শাশুড়ির অনুরোধে শশুড়বাড়িতে থাকা শুরু করলো। এখানে এসে জীবনের সবথেকে ভালো দিনগুলি কাটাতে লাগলো। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সব বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতো রিনিমা। শাশুড়ির এই আতিথেয়তায় নাফি মুগ্ধ না হয়ে পারেনি। মুহূর্তকালের জন্যও কোনোদিন মনে হয়নি যে, এটা তার নয় বরং ভিন্নের পরিবার। সবসময় আপনই মনে হয়েছে, একটিবারের জন্যও পর মনে হয়নি।

নাফির বাসায় বিয়ের বিষয়টি জানতো না। শশুড়বাড়ি থেকেও বিশেষ কোনো চাপ দেয়নি তাকে যে, এ ব্যাপারে বাসায় জানাতে হবে। সময় সুযোগ মত জানালেই হবে— এমনটাই ওদের ইচ্ছে ছিলো। ছাত্র মানুষ; অপ্রস্তুত অবস্থায় বিয়ে করেছে, এটাই বড় কথা। এখন যদি পরিবারকে জানিয়ে বিপাকে পড়ে যায় তাহলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। তাই বিচক্ষণ রিনিমা বানু জামাইকে কোনোপ্রকার চাপ দেননি যে, বাসায় জানাতে হবে। এভাবে চলতে চলতে তিন মাস কেটে যায়। মাঝে দু’একবার নাফি বাসায়ও এসেছে কিন্তু পরিবারের কাউকে বুঝতে দেয়নি যে, সে বিয়ে করেছে।

কেটে যায় আরো দু'টি মাস। অপরের কাঁধে দিন-দিন বোঝা হয়ে পড়ে আছে; সেটা সে নিজেও বুঝতে পারছিলো। শশুড়বাড়ির লোকজনও সেটা কথায় না হলেও ইঙ্গিতে ঢের বুঝিয়ে দিয়েছে ইতোমধ্যে। এখান থেকে প্রস্থান করাই যে শ্রেয় তা নাফির বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। তাই সম্মান বাকি থাকাতেই সে নিজের জন্য এবং স্ত্রী সুচির জন্য একটা ব্যবস্থাও করে ফেলে। ইউনিভার্সিটির ছাত্র, চেষ্টা করলে যেকোনো একটা উপায় সে ঠিকই বার করতে পারবে; এতে সন্দেহ নেই। সে কিছু লিফলেট ছাপিয়ে স্কুল ও ইন্টার লেভেল কলেজের গেইটে সেগুলি বিলি করতে লাগলো। এরই মধ্য কিছু ফোন কলে সে সিউর হলো যে, দশ-বারোটা স্টুডেন্ট তার কাছে পড়তে আসতে ইচ্ছুক। তাই দিনক্ষণ ঠিক করে তাদের আসতে বলে দিলো। এভাবে জমে উঠলো ‘বিদ্যাপ্রেমি’ কোচিং সেন্টার।

শশুড়বাড়ি থেকে অনতিদূরে একটা বাসা ভাড়া নিলো নাফি। দু’দি রুম, একটি কিচেন, সাথে একটি করে এটাচড বাথরুম। একটি রুমে দু‘জনে সংসার পাতলো, অন্য রুমটিতে সকাল-সন্ধ্যা কোচিং করাতে লাগলো। ছোট্ট সংসারে ওদের সময়কাল বেশ ভাল কাটছিলো। সারাদিন খুনসুঁটি, দু'জনে দু'জনার সাথে দুষ্টুমি; আরও কত কী! জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে লাগলো দু’জনে। এখন আর বিয়েটাকে দূর্ঘটনা মনে হয় না। মনে হয়, জীবনের সেরা ভুল, সেরা জিৎ। দাম্পত্য জীবনে দু'টি দেহের সাথে দু'টি মন একই সুতোয় গেঁথে গেলে সুখের অন্ত থাকে না। আনন্দের উচ্ছ্বাসে জীবন রঙিন হয়ে যায়। এদের বেলায়ও তাই-ই হয়েছে।

একদিন হুট করে কিছু না জানিয়ে সুচিকে নিয়ে নাফি বাড়িতে এসে হাজির হলে, করিম সাহেব অবাক বিস্ময়ে অসাড় হয়ে যায়। নুবিনা বেগম অবস্থা বুঝে স্বামীকে বুঝায়— ‘‘ছেলে মানুষ; ভুল না হয় করে ফেলেছে, তাই বলে কী ওর পাশে না থেকে অন্ধকারে ঠেলে দিবে? ও ছেলে মানুষ, তুমি তো আর ছেলেমানুষ নও, তুমি ছেলের বাবা। পাগলামো না করে মেনে নাও তো! জানো, ছেলের বউকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। ভারী মিষ্টি মেয়ে।’’ আমাদের নাফির সাথে বেশ মানিয়েছে। করিম সাহেব আর কথা না বাড়িয়ে রাজী হয়ে যান৷ এই রাজী কি নিরুপায় হয়ে হয়েছিলেন নাকি নিজের ইচ্ছেতেই তা অবশ্য পরদিন সকাল বেলায়ই বোঝা গেলো। চা দেবার সময়, সুচিকে মা বলে সম্বোধন করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। আর বললেন, আমার পাগল ছেলেটাকে দেখে রেখো মা। সুচি মাথা নাড়ালো, যেন মাথা নেড়ে শশুড়ের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার প্রতিজ্ঞা করলো।

নাফি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। যাক্ তাহলে মা-বাবা সবকিছু মেনে নিয়েছে। এখন আর কোনো চিন্তা নেই। নুবিনা বেগম ছেলের শশুড়-শাশুড়ির সাথে ফোনে কথা বললেন। সময় করে করিম সাহেবও নানানটা কথা বললেন। বেয়াই বেয়ানিদের মধ্যে বেশ সখ্যতাও গড়ে উঠলো। পাঁচ-ছ’দিন বাড়িতে থেকে, নাফি সুচিকে নিয়ে দিনাজপুরে চলে গেলো। সেখানে পূর্বের মত মধুময় সময়ক্ষণ কেটে যেতে লাগলো। মাঝে মধ্যে শাশুড়িকে ফোন করে, ‘কেমন আছে-নাই’ এই সব খোঁজ খবর নিতে লাগলো। বাড়ি থেকে তেমন টাকা পয়সা নিতে হয় না, কোচিং থেকে যা আসতো তা দিয়ে ছোট্ট সংসার দিব্যি চলতো। কারো কাছে হাত পাততে হতো না।

এমন এক আনন্দঘেরা সময়ে চিনের উহান শহরে একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হলো। যার নাম করোনা ভাইরাস বা কভিড নাইন্টিন। যা অল্পসময়ের ব্যবধানে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লো। দিকদিগন্তে অসংখ্য মানুষ মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হতে লাগলো। পৃথিবী মৃত্যু-কান্নায় ভেসে গেলো। দেশের পর দেশ, শহরের পর শহর নিরুপায় হয়ে সেচ্ছায় লকডাউন হতে শুরু করলো। তবুও কমানো গেলো না মৃত্যুর মিছিল। দুনিয়া জুড়ে দুঃখের মাতম চরম আকার ধারণ করে বসলো। একযোগে পুরো বিশ্ব থমকে গেলো।

অবস্থা দৃষ্টে নাফি ভাড়া বাসা ছেড়ে নিজ শহরে নিজ বাড়িতে চলে আসে। করোনার আতঙ্কে প্রতিটি মানুষ দিশেহারা, দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে পাগলপারা। বাড়িতে এসে বেশ কিছুদিন ভালোই কাটলো। সুচিও বেশ আদর সমাদোর পেলো। কিন্তু তারপর শুরু হলো সাংসারিক কালোসময়। শাশুড় ননদের বিষচক্ষু গিয়ে পড়লো সুচির দিকে। আদর সমাদোর করা শাশুড়ি হঠাৎ এমনভাবে পাল্টে যাবে; সুচি কখনো তা ভাবতেও পারেনি। সকাল সন্ধ্যা অসংখ্য, অপ্রয়োজনীয় কাজে সুচিকে অস্থির করে রাখতে শুরু করলো। হাল্কা বয়সের একটা মেয়ে; সবেমাত্র ইন্টার ফার্ষ্ট ইয়ারে পড়ে। এই কাঁচা বয়সে এরকম নির্যাতন সয়ে থাকা তার পক্ষে বড্ড কঠিন। তবুও মেয়েটি স্বামীর চোখের আড়ালে শত কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করে যেতে লাগলো। নাফি দিনের অধিকাংশ সময় বাইরে কাটাতো। যদিও সরকারি নির্দেশ ছিলো; বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বেরোতে পারবে না। কিন্তু নাফি-রা প্রতিদিনই বেরোতো, বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতো। আড্ডা দেয়ার জন্য ওদের একটা বিশেষ জায়গা ছিলো; ওখানে শুধু ওরা তিন বন্ধু মেলেই সময় কাটাতো। সুচি সবকিছু স্বামীর অগোচরে সহ্য করে যেতে লাগলো। তবে নাফি একটা বিষয় খেয়াল করলো, দিনের পর দিন সুচি কেমন যেন শুঁকে যাচ্ছে। ও আর আগের মত নেই, সারাক্ষণ মন মরা হয়ে বসে থাকে। রাতের বেলা আগের মত তেমন কোনো কথা বলে না, চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে। এছাড়াও বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করে এবং এর কারণ মনে মনে খুঁজতে থাকে।

‘‘এই সমাজে কিছু কিছু মেয়ে আছে, যারা অকাতরে সব কিছু সয়ে যায় এবং কিছু কিছু শাশুড়ি, জল্লাদ হয়ে এদের জীবনের বারোটা বাজিয়ে ছাড়ে। আবার কিছু কিছু মেয়ে এমনও আছে, যারা দূর্বল শাশুড়ির উপর কর্তৃত্ব খাটাতে উদ্যোত হয়, ছেলের থেকে মা’কে আলাদা করে ফেলে— এর কোনোটাই ঠিক নয়, কোনোটাই কাম্য নয়। কবে যে এমন একটা সময় আসবে, যখন শাশুড়িরা বউমাকে নিজের মেয়ে আর বউমারা শাশুড়িকে আপন মা হিসেবে দেখবে! এমন সুদিন দেখার অপেক্ষায় সারা জীবনই থাকবো।’’

পরিস্থিতির করুণ অবস্থা দেখে নাফি ভীষণ মন খারাপ করে, বেশ রাগও হয়। তবে কিছুই প্রকাশ করে না। এদিকে সুচিও বায়না ধরে বাপের বাড়ি যাওয়ার। তবে সবকিছু বন্ধ; সব ধরনের যানবাহন বন্ধ। এক শহরের মানুষের অন্য শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এমন অবস্থায় সুচির এ আবদার পূরণ করা পুরোপুরি অসম্ভব। তবুও বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রতিরাতে সুচি কাঁদে।

একদিন সকাল বেলা নাদিরকে সব ঘটনা খুলে বললে, নাদির সবকিছু শুনে নানানভাবে পজিটিভলি নাফিকে নানানকিছু বোঝায়। এবং দু’টো কাজ করতে বলে। সে বলে, নাফি যেন ওর মায়ের পছন্দের কিছু একটা হাদিয়া নিয়ে যায়। মায়ের হাতে সেটা তুলে দিয়ে হাসিমুখে বলে, ‘‘মা, সুচি তো এখনো অনেক ছোট, অনেক কিছুই বুঝে না। ওকে কাজ-কর্ম তুমি অবশ্যই করাবা, এটা তোমার ওর প্রতি অধিকার। তবে একটু খেয়াল রেখো মা, ও যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে— আমার তো ভয় করছে, যদি কিছু একটা হয়ে যায়।’’ এটা ছিলো নাদিরের দেয়া প্রথম পরামর্শ। এটা করলে হয়ত মায়ের মন নরম হলে কিছুটা কাজ কমিয়ে দিয়ে মেয়েটাকে স্বস্তি দিবে; এই আশাতেই নাফিকে এই বুদ্ধি দিয়েছে নাদির। দ্বিতীয় যে পরামর্শটি ছিলো সেটা হলো; প্রথম ওই বুদ্ধি যদি গোল্লায় যায় তাহলে নাফি যেন, সব কাজে সুচিকে সাহায্য করে। এতে সুচির কষ্টও কমে হবে। স্বামীর কাছাকাছি থাকতে পেরে মনও ভালো থাকবে। নাফি পরামর্শ অনুযায়ী মায়ের পছন্দের হাদিয়ে নিয়ে গিয়ে মায়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলে। কিন্তু মা প্রচন্ড রেগে যায়, মুখে যা আসে তা-ই বলা শুরু করে। মানবীয় স্বভাবের ভ্রষ্টে নাফিও মায়ের উপর রাগ করে বসে। এবং বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। সবকিছু গুছিয়েও ফেলে তবে সে ভালোকরেই জানে, এ বাড়ি থেকে হয়ত সে বেরোতে পারবে কিন্তু এ শহরের বাইরে যাওয়ার কোনো সাধ্য নেই। রেগেমেগে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বন্ধু নাদিরকে ফোন করে প্রিয় আড্ডানিকেতনে ডেকে আনে। নাদির অবস্থা বুঝতে পেরে, নাফিকে গ্রামের ফাঁকা উন্মুক্ত খোলা প্রান্তরে নিয়ে যায়।

নাদির বিয়ে করে নাই তবে বড় দুই ভাবির সাথে তার মা’র শাশুড়ি সুলভ আচরণ; তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। নাফিকে শান্ত করে নানানভাবে বুঝাতে লাগলো— ‘নাফি, একসাথে বাস করতে গেলে হাজারটা সমস্যা হবে, ঝগড়া-বিবাদ হবে তাই বলে কি সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে! শোন, এভাবে চলে যাওয়াটা বোকামো ছাড়া কিছুই হবে না। এরকম করে কতবার পালাবি তুই, কতবার মনোমালিন্য করে দূরে সরে যাবি! তুই কি ভাবছিস, তোর মা তোকে ভালোবাসে না? হলফ করে বলছি, জীবনের থেকেও বেশি তোর মা তোকে ভালোবাসে। তবে নারী স্বভাবের কাছে আমরা জিম্মি, বুঝলি। ওরা অনেক কিছু না ভেবে না বুঝে করে। অকারণে মনের মধ্যে হিংসে লালন করে। তাই বলে কি মায়ের উপর রাগ করে চলে যাবি! হাজার হলেও তিনি তোর মা; এটা কখনো ভুলে যাস না বন্ধু। সুতরাং বউ নিয়ে কষ্ট হলেও, এখানেই থাক ভাই। পাগলামি করিস না। আর যাবিই বা কই, সবকিছু বন্ধ, সবকিছু লকডাউন। অতএব মায়ের ভুল না ধরে বউয়ের কাজে সাহায্য কর। দেখবি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। টানা দু’ঘণ্টা বোঝানোর পর নাফি শান্ত হলো এবং বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছেটা দমন করলো।

এখানে একটা বিষয় আমি কোড করতে চাই— ‘‘মায়ের হাজারটা ভুল থাকলেও মাকে কষ্টা দেয়া কোনো সন্তানের জন্যই শোভা পায় না। বরং এটা তার দুর্গতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিয়ের পর এই জায়গাটিতে বড় সতর্কতার সাথে পা ফেলার অনুরোধ করছি। পাছে মা’কে হারিয়ে জীবন যুদ্ধেই না হেরে যান, তাই এই বিশেষ অনুরোধ রইলো সবার প্রতি। মনে রাখবেন, সারা জীবন আপনার মা, আপনাকে রান্নাবান্না করে খাওয়াতে পারবে, কোনো দিন কোনো আপত্তি করবে না। কিন্তু যখনই আপনি বিয়ে করে ঘরে বউ আনবেন, তখনই আপনার মা সামান্য এই রন্ধনকার্যটা পর্যন্ত ভাগাভাগি করে নিতে চাইবে— এটা তার দোষ নয়, এটা নারী-স্বভাব। তাই বলছি— এই সময় আপনাকে বড় চালাকির পরিচয় দিতে হবে ভাই, নইলে বড্ড বিপদে পড়বেন।’’

এখন নাফি দ্বিতীয় বুদ্ধিটা এপলাই করছে। বেশ ফলও পাচ্ছে। সুচিও বেশ আনন্দে দিন পার করছে। সবকাজে স্বামী পাশে থাকলে কোনো কিছুই খারাপ লাগে না। নুবিনা বেগমও বেশ আছে; পায়ের উপর পা তুলে শাশুড়ির অধিকার আদায় করে নিচ্ছেন। তিনি যেন তার প্রাপ্য ধুয়ে-মুছে নিংড়িয়ে চুষে চুষে খাচ্ছেন। জানি না, নিজের মেয়ে হলে তিনি কি করতেন?

তবে নাফি মায়ের সম্মানের সামান্যতমও কমতি করে না। যথাযথ ভাবেই তা পালন করে। আবার ভয়ও পায়, না জানি— আবারো কোনো অসাধ্য সাধনে সুচির ঘাড়ে দৈত্যের আকারে শাশুড়ির কালো থাবা এসে পড়ে! কারণ, ‘শুধু শাশুড়ি’দের বিশ্বাস নেই, এরা যেকোনো মুহূর্তে দৈত্যের রূপ ধারণ করতে পারে। আর ‘মা শাশুড়ি’রা মেয়েকে কখনো বিপদে ফেলে দেয় না। বুকের চাদরে আগলে রাখে।

পুনশ্চ— গল্পে বউমার প্রতি নুবিনার শাশুড়ি সুলভ কিছু আচরণের ইঙ্গিত ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু মনে রাখবেন, সবসময় ডাইনির ভূমিকায় শুধু শাশুড়ি-ই থাকে না, বউমাও থাকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এখন নাকি স্ত্রী নির্যাতন ও গর্ভধারণ বেড়ে গিয়েছে। দেব প্রিয়র কথা।

২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:১১

মা.হাসান বলেছেন: প্রতিদিনই এরকম সুন্দর সুন্দর লেখা উপহার দেবেন প্লিজ। এখন থেকে নিয়মিত আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকবো।

৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:০৫

বিভ্রান্ত পাঠক বলেছেন: ডাইনী শব্দটা কেমন যেনো

৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: হুট করে। হুট করে শব্দটা কি আপনার অনেক প্রিয়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.