নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাওর

আমার চুল আেছ

সাওর

আিম আম খাই

সাওর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্দেহভাজনরা নজরদারিতে- আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘোষণা শামীম ওসমানের

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

সন্দেহভাজনরা নজরদারিতে- আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘোষণা শামীম ওসমানের

****************************************************

বিল্লাল হোসেন রবিন, নারায়ণগঞ্জ থেকে: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত চাঞ্চল্যকর মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাকাণ্ডের

ঘটনা নিয়ে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জ। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে একে অপরকে দোষী করে নাসিক মেয়র ডা. আইভী ও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে তোলপাড় চলছে সর্বত্র। ইতিমধ্যে আইভীর বিরুদ্ধে শামীম ওসমান জিডি ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ডা. আইভীও বলেছেন, তার বিরুদ্ধে মামলা বা জিডি যা-ই করা হোক নারায়ণগঞ্জবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি তা মোকাবিলা করবেন। এ দিকে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ১২ দিনেও পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার এবং হত্যার কোন ক্লু উদ্ধার করতে না পারায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কিছু লোককে সন্দেহের তালিকায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। তবে সন্দেহভাজনদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তারা। গতকাল রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নরুল ইসলাম। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান জানিয়েছেন, এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের আগ পর্যন্ত প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ রাখা হবে।

তিনি বলেন, তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেই আলোকে কিছু লোককে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়েছে এবং তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তদন্তের চূড়ান্ত পর্যায়ে সবকিছু গুছিয়ে আনার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। হত্যাকারী কারা বা এই হত্যার কারণ কি জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা এখনও তদন্তের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাইনি। তাই তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইছি না।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কয়েকজনকে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়ে থাকলে কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, তারা নজরদারির মধ্যে রয়েছে। পুলিশের বেশ কয়েকটি দল মাঠে কাজ করছে। তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছালেই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

দেশে ছেড়েছে ১২ জন

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, ইতিমধ্যে অন্তত দুই যুবক দেশ ছেড়েছে, যারা ত্বকী হত্যায় জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেত। পুলিশের কাছে দুজন পালিয়ে যাওয়ার তথ্য থাকলেও ত্বকীর বাবা বলছেন, ত্বকীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্তত ১২ জন দেশ ছেড়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার বেনাপোল হয়ে দেশ ছাড়ে ক্যাঙ্গারু পারভেজের ঘনিষ্ঠ রামু সাহা। পালিয়ে যাওয়া অন্যদের নাম জানাতে রাজি হননি ত্বকীর বাবা। তার দাবি, ওসমান পরিবারের এক ভাইয়ের সহায়তায় খুনিরা পালিয়েছে।

ত্বকী হত্যার ঘটনায় শামীমপুত্র অয়ন ওসমানকে আসামি করে দু-একদিনের মধ্যে সম্পূরক এজাহার দাখিল করবেন রফিউর রাব্বি। এজাহারে ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজনের নাম থাকছে। ত্বকীর বাবা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর এ পর্যায়ে তার হাতে বেশ কিছু ক্লু রয়েছে। সম্পূরক এজাহারে শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানকে আসামি করা হবে। হত্যার পরপরই সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম উল্লেখ করে মামলা করার মতো বাস্তবতা ছিল না।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভাগ্য। ব্যবসায়ী আশিক ইসলাম, মিঠু, তরুণ নাট্য শিল্পী চঞ্চলসহ এতগুলো হত্যাকাণ্ড হলো। একটারও সুরাহা হলো না। পুলিশ রহস্য উন্মোচিত করতে পারেনি। বরং হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এমন কিছু লোকের নাম চলে আসে তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে ওপরের পারমিশন লাগবে বলে পুলিশ দোহাই দেয়। আমার ছেলের বেলায়ও তা-ই করা হচ্ছে। কিন্তু আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। ঘাতক যে-ই হোক, তাদের গ্রেপ্তার করে এই হত্যার রহস্য উন্মোচিত করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘোষণা: এ দিকে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জাড়ানোর প্রতিবাদে শামীম ওসমান শনিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন, রাতে আইভীর বিরুদ্ধে জিডি করার পর গতকাল রোববার বিকালে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এ সময় শামীম ওসমান বলেন, ত্বকী হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভিন্ন একটা রাজনীতি হচ্ছে। আমি নিজের চেয়ে দল এবং দলের চেয়ে নেত্রী (শেখ হাসিনা)কে দেখি। ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেভাবে আমাকে জড়ানো হচ্ছে, আর তা-ই যদি হয়, তাহলে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের আগ পর্যন্ত প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখা হবে আর ওই সময় যদি স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান ঘটে তাহলেই বোঝা যাবে এর থেকে কারা সুবিধা নিচ্ছে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার বিকালে মেয়র আইভী শহরের চাষাঢ়ার শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হিংস্র ভঙ্গীতে শামীম ওসমানকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী গডফাদার, অস্ত্রবাজ, টর্চার সেল লালনকারী হিসেবে আখ্যা দেয়াসহ তাদের ঐতিহ্যবাহী গোটা পরিবারকে ত্বকী হত্যায় সরাসরি অভিযুক্ত করেছেন। পাশাপাশি শামীম ওসমানের হাত-পা ভেঙে কবর দেয়াসহ নারায়ণগঞ্জে বহিরাগত বলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পরিবারের সদস্যদের প্রতি চরম হুমকি প্রদান করেছেন। তাই সুনির্দিষ্ট কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকলে শামীম ওসমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক। নতুবা মিথ্যা, বানোয়াট, উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানকারীদের সাক্ষ্য প্রমান না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। এবং ত্বকী হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপিতে জেলা আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা স্বাক্ষর করেন।

আইভীর বক্তব্য: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ত্বকীর বাবা সরাসরি শামীম ওসমান ও তার পরিবারকে দায়ী করেছেন তার ছেলের হত্যাকাণ্ডের জন্য। আমিও বলেছি, শামীম ওসমানই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিগত দিনের হত্যাকাণ্ডগুলোর রহস্য উন্মোচিত হলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, ত্বকী হত্যার পরপরই যারা বিদেশ পালিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা পালাতে সহায়তা করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। কাপুরুষের মতো একটি মেধাবী ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই খুনিদের গ্রেপ্তারের দায়িত্ব নিতে হবে। ত্বকীর বাবা আমাদের জানিয়েছেন, কেন কারা তার ছেলেকে হত্যা করতে পারে। যারা ত্বকী হত্যার সঙ্গে জড়িত, তারা অনেকদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জের অনেক অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তাদের সবাই চেনে।

আইভী আরও বলেন, শামীম ওসমানরা আওয়ামী লীগের নামের ওপর ভর করে জুজুর ভয় দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর ওপর ছড়ি ঘুরাচ্ছে আর ফায়দা লুটেছে। দলের দুঃসময়ে তারা রাতের অন্ধকারে পালিয়ে চাঁদাবাজির টাকায় স্বর্গরাজ্যে বসবাস করে, আর আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা ধুকে ধুকে কষ্ঠ করে। তিনি বলেন, ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন অনেক বাঘ আর সিংহ দেশে ছিল না। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যখন বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের কারণে আওয়ামী লীগের করুণ দশা ছিল তখন এক সময়ে নারায়ণগঞ্জে রাজত্বকারীরা প্রবাসে আলিসান জীবনযাপন করেছে।

উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে নারায়ণগঞ্জে গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী (১৭) ৬ই মার্চ বিকালে নিখোঁজ হয়। ৪০ ঘণ্টা পর ৮ই মার্চ সকালে শহরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়

Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.