লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন সুমনের হামলায় স্থানীয় একটি মন্দিরের পাহারাদারসহ দুজন মারাত্মক আহত হয়েছেন

২০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন সুমনের হামলায় স্থানীয় একটি মন্দিরের পাহারাদারসহ দুজন মারাত্মক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাহারাদার লিটন দেবনাথের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রামগতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যজন বিজন ভৌমিককে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, সম্প্রতি দেশের কয়েকটি স্থানে মন্দিরে হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতার জন্য স্থানীয় আলেকজান্ডার বাজারের মহাপ্রভু সেবাশ্রম মন্দিরটিতে রাতে পাহারা বসায় কর্তৃপক্ষ। রাতভর পাহারা শেষে ভোরে লিটন দেবনাথ বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার প্রতিবেশী ও যুবলীগের নেতা (রামগতি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক) জহির উদ্দিন সুমন তার ওপর হামলা করেন। এ সময় সুমন লিটনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। লিটনের চিত্কারে প্রতিবেশী বিজন ভৌমিক এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করেন সুমন।

অভিযুক্ত সুমনের মুঠোফান বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন হেলাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি এক হামলায় আহত হয়ে সুমন অনেকটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য কয়েক দিন আগে সুমনের মাও ছেলের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে মেজবাহ উদ্দিন হেলাল জানান।

উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর অপরূপ দাস জানান, এ ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আশপাশের মন্দিরের উত্সব অনুষ্ঠানসহ নিরীহ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল নাথ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

প্রসঙ্গত, মার্চের প্রথম দিকে বগুড়ার শেরপুরে শহীদ মিনার ভাঙার সময় যুবলীগের এক নেতাকে জনতা হাতেনাতে ধরে পুলিশে দেয়। পরে স্থানীয় সরকারদলীয় মহল তাকে ‘পাগল’ বলে থানা থেকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যায়। এতে জনমনে ক্ষোভ দেখা দেয়



উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যায়। এতে বারবার সরকারপক্ষ জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করছে।



জামায়াত-শিবির বলছে, সরকারি লোকজন এসব করে তাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। এ ব্যাপারে দলটির পক্ষ থেকে এসব ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

০ টি +০/-০