![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অসাধারণের মাঝে অতি সাধারণ একজন
আরবা হারিয়ে গেছে। এই শহরের জ্যামিতিতে, মেট্রোরেলের তলায়, ব্যস্ত মোড়ের ভিড়ে সে মিলিয়ে গেছে। এখানে হারিয়ে যাওয়া মানেই এক রকম থেকে যাওয়া, আর থেকে যাওয়া মানে ধীরে ধীরে মুছে যাওয়া। আরবা হয়তো এই শহরেরই কেউ ছিল, হয়তো ছিল না। আমার পকেটে থাকা পুরোনো ট্রেনের টিকিটের মতো, যার গন্তব্য ভুলে গেছি কিন্তু ফেলে দিইনি।
সেই দিন পৃথিবী ভেসে গিয়েছিল রূপসার জলে। আমাদের হাত, বৃষ্টির ছোঁয়া, বাতাসের নরম হাসি; সব মিলিয়ে এক বেহেশতি শ্যামল সন্ধ্যা। শরীর আর নদীর সীমা যেন মুছে গিয়েছিল সেদিন। তার আঙুলে জল, আমার বুকের ভেতর কাঁপন। যদি সেই মুহূর্তটুকু কাঁচের বোতলে ভরে রাখা যেত! যদি এক আকাশের বিনিময়েও সেই সময়টাকে ধরে রাখা যেত!
প্রায়ই ভাবি, ভালোবাসা কি মুদ্রার মতো? যা হাত বদলায় কিন্তু মান হারায় না। নাকি নদীর মতো? যা ধরা যায় না, শুধু দেখা যায়। নদী যেমন ঘাট বদলায়, তেমনি মানুষও সময়ের সাথে নিজের আশ্রয় বদলায়। হয়তো সে নদী এখন অন্য তীরে আছড়ে পড়ে, অন্য কারো হাতে থামে। শহর তার নিয়মে স্থির। রাস্তা বদলায়, মানুষ বদলায়, হাত বদলায়।
আমার হাতের তালুতেও একসময় একটা নদী ছিল। এখন শুধু শুকনো তীর, বালির নিচে চাপা পড়া কিছু নামহীন কল্পনা। আমি এখন এক পুরোনো ব্রিজের মতো। নিচ দিয়ে সে বয়ে যায়, আর ফিরে তাকায় না। ভাবি, মানুষ আসলে নদীকে ভালোবাসে না, তারা ভালোবাসে তীরকে। কারণ সবাই চায় কোনো এক জায়গায় নোঙর ফেলতে, অথচ নদীর শরীরে কোনো স্থিরতা নেই।
আরবা, তুমি কি বিষাদমাখা নদীর উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া নাবিকের মতো? তোমার চোখ কি এখনো রূপসার জলে ডোবে? নাকি তুমি আমার হাতের রেখার মতোই নিঃশব্দে মুছে গেছো?
©somewhere in net ltd.