নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাতসাগর

সাতসাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘নারী’/ ‘সামাজিক’ “মাতা”

৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯

অনলাইন পত্রিকায় ২ টা খবর দেখলাম। দেশের দুই প্রান্তে ঘটা ঘটনা দুটি একটি বিন্দুতে এসে মিলেছে বলে আমার ধারণা।

ঘটনা ১: মেয়েকে উত্ত্যক্ত করায় অভিযোগে যশোরে মফিজ (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে ওই স্কুলছাত্রীর মা। মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে আগেই জানানো হয়। কয়েকদিন আগে তিনি এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় একটা জিডিও করেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি।পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মফিজের লাশ উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে খাদিজাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনা ২: সাভার পৌর এলাকার ভাটপাড়ায় আল্পনা আক্তার (২২) নামে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় ওই পোশাক কর্মীর মা বাধা দিতে গেলে তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে তারা। নিহত আল্পনার মাকেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, নিহত পোশাককর্মীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করেছে বলে আমরা ধারণা করছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

নিত্যদিনের খবরের পাতায় এই ঘটনা কোন দ্যোতনা তৈরী না করলেও আমার নিজ মগজে একটু ভাবনার উদ্রেক করেছে বটে। বিষয়টা হলো মেয়ের জন্য মায়ের প্রতিরোধ দুই ঘটনাতে দৃশ্যমান ও সহজাত। সেই প্রতিবাদে একজন মেয়েকে বাচাতে পারলেও অন্যজন পারেননি, একজন মা জেলে অন্য একজন মা হাসপাতালে, দুইজন মা-ই কিন্তু দোষী। একজন মা সামাজিকভাবে দোষী (কারণ রাষ্ট্র নামক পরিসরে মানুষ হত্যা অপরাধ), অন্য মা মানসিকভাবে দোষী (কারণ মেয়েকে বাচাতে পারেননি)। আবার সামাজিক মূল্যবোধের বিচারে সহানুভূতি প্রাপ্তিতে হাসপতোলে অবস্থিত মা জেলে থাকা মায়ের চেয়ে ঢের এগিয়ে (কারণ সে যে খুনি, সামাজিক অপরাধী)। আমার দিক থেকে কিন্তু জেলে থাকা মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা হাসপতোলে অবস্থিত মা এর থেকে কোন অংশে কম নয় (আমি অন্য মাকে এখানে কোনভাবেই ছোট করছি না কারণ পৃথিবীর সব মা-ই হয়ত নিজের জীবণ দিয়ে সন্তানকে বাচাতে চাইবেন)। আমার মগজীয় ভাবনার জায়গা হলো, এই ঘটনা দুইটির হয়ত ভিন্ন সামাজিক সহানুভূতির প্রকাশ দেখতে পাব। একটা হলো হাসপাতালে থাকা মায়ের জন্য; সেটা হলো বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা এমনকি রাষ্ট্রপক্ষও হয়ত সমবেদনামূলক বাণী শোনাবেন এই মায়ের প্রতি, অন্যদিকে জেলে থাকা মায়ের প্রতি সমবেদনামূলক এই জায়গাটি খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। এমনকি আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারাও কিন্তু হাসপাতালে থাকা মায়ের জন্য আফসোস করবো, হয়ত এটাই স্বাভাবিক মনোপ্রবৃত্তি। কিন্তু আমার ধারণা হাসপাতালে থাকা মা অবশ্যই সহানুভূতির ধার না ধেরে একজন জেলে থাকা মা হতে চাইবেন। আর হিসাবটা যদি তাই হয় তাহলে কেন ঐ মা আজ জেলে আর ধরষণকারী খুনীরা তদন্তের হিমঘরে? এবার আমি অন্যভাবে বিষয়টিকে দেখতে চাই; সেটা হলো নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধের কথা আমরা প্রতিনিয়ত বলছি কিন্তু প্রতিরোধী পরবর্তী অবস্থাকে চিরায়িত আইনের আওতায় আনছি। তাহলে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধের ফাকা বুলির জরুরত্ব কোথায়? শেষ করবো একটা বিষয় বলে সেটা হলো এটাকে আমি নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধী ব্যবস্থা হিসেবে পাঠ করতে চাই, তাই মফিজদের মত পুরুষের মৃত্যুতে প্রতিরোধী নারীকে সামাজিক শৃঙ্খলে নয় বরং সামাজিকভাবে সম্মানীত করা উচিত ছিল। আর তাহলে হয়ত এবারের নারী দিবসের বিভিন্ন শ্লোগানের মধ্যে আসল প্রাপ্তি আসত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.