নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শফিক২৩ফেব্রু

খুব সাধারন মানুষ

শফিক23

খুব সাধারন মানুষ

শফিক23 › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রজন্ম চত্বর আন্দোলনের একটি বিষয়ে আমার মতবিরোধঃ

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০

পৃথিবীতে এক খণ্ড স্বাধীন দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে তা বিরল না হলেও ভাষার জন্য রক্ত দেয়া পৃথিবীতে সত্যিই বিরল। আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলার একটি ঐতিহাসিক ইতিহাস আছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলনে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা। মাতৃ ভাষা সব জাতির কাছেই একটি পবিত্র মাধ্যম। এর পবিত্রতা রক্ষা ও এর মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা প্রতিটি মানুষ এরই পবিত্র দায়িত্ব। হয়তো এটা সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যেও পরে। আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে লিখতে চাচ্ছি তা লেখার পরে হয়ত অনেকেই আমাকে “রাজাকার” বলবেন কিন্তু এই রাজাকারদের বিরুদ্ধে আমি গত ১৫ বছর ধরেই বাকযুদ্ধ করে আসছি।



গত ০৫ ফেব্রুয়ারী কাদের মোল্লার রায় ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল । রায়ে স্তব্দ হয়ে যায় পুরো দেশ। শুরু হয় তারুন্যের আন্দোলন। হাজার হাজার মানুষ যোগ দেয় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর এ। দলে দলে যোগ দিতে থাকেন তরুণ প্রজন্ম, বিভিন্ন রাজনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এর নেতা কর্মীরা ও সাধারণ মানুষ। শুরু হয়ে নুতুন প্রজম্মের আন্দোলন। শুরু থেকে আমিও আছি এই আন্দোলনের সাথে।



যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই...যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই...রাজাকারের ফাঁসি চাই...রাজাকারের ফাঁসি চাই...তুই রাজাকার...তুই রাজাকার...সব রাজাকার বাংলা ছাড়। এ রকম হাজারো শ্লোগানে কাপছে শাহবাগ...কাপছে বাংলাদেশ । সবার একটাই দাবি সব রাজাকারের ফাঁসি চাই। এটা আমারও প্রানের দাবি।



কিন্তু আমি এই আন্দোলনের একটি বিষয়ে মতবিরোধ করচ্ছি। আর আমার মতবিরোধ এর জায়গাটি হলঃ ক-তে কাদের মোল্লার, ম-তে মুজাহিদ, ব-তে বাচ্চু এরকম আরও কয়েকটি বর্ণমালা দিয়ে রাজাকারদের নামের প্রতিনিধিত্ব করাটা। আমার মতবিরোধের কারন এই ৩ টি বর্ণমালা দিয়ে বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে।



আমি আগেই বলেছি মাতৃ ভাষা সব জাতির কাছেই একটি পবিত্র মাধ্যম। এর পবিত্রতা রক্ষা ও এর মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা প্রতিটি মানুষ এরই পবিত্র দায়িত্ব। আর সেই মাতৃ ভাষা যদি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় তাহলে এর পবিত্রতা ও মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার দায়িত্বটা আরও বেরে যাবে।



এবার আমার মূল কথতে আসা যাক, ভাষার এই মাসে যদি ভাষা শহীদরা ক-তে কাদের মোল্লার, ম-তে মুজাহিদ, ব-তে বাচ্চু রাজাকার এই শ্লোগান গুল শুনতেন তাহলে হয়ত ক্ষোভ এর সাথেই বলতেন আমরা রক্তের বিনিময়ে যে বর্ণমালা তোমাদের এনে দিয়েছি সেই পবিত্র বর্ণমালা দিয়ে তোমরা এই নিকৃষ্ট রাজাকারদের নামের প্রতিনিধিত্ব করোনা। আমাদের রক্তের বিনিময়ে তোমরা যে বর্ণমালা পেয়েছ তা আনেক পবিত্র। এই বর্ণমালা দিয়ে নিকৃষ্ট রাজাকারদের নামের প্রতিনিধিত্ব মানায় না। এই বর্ণমালা দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করা হবে সব মহান মানুষের ও মহান সৃষ্টির। ম-কেন মুজাহিদ এর মত “নিকৃষ্ট রাজাকারের” প্রতিনিধিত্ব করবে ? “ম”-প্রতিনিধিত্ব করবে “মা” কে। ম-তে মুজাহিদ না ম-তে “মা”। ব-কেন বাচ্চু রাজাকার কে প্রতিনিধিত্ব করবে ? “ব”-প্রতিনিধিত্ব করবে “বাংলাদেশ” কে। ব-তে বাচ্চু রাজাকার না ব-তে “বাংলাদেশ”।



কারণটা আগেই বলেছি আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলার একটি ঐতিহাসিক ইতিহাস আছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলনে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা। আর অল্প কিছু দিন পরেই সেই সব ভাষা শহীদের প্রতি স্মমান জানানো হবে যাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা। যে বর্ণমালা কে আমরা এত স্মমান জানাতে পারি সেই বর্ণমালা কেই আবার জাতির “নিকৃষ্ট রাজাকারদের” নামের প্রতিনিধিত্ব করে তার স্মমানকে ছোট করাই কি হচ্ছে না?



আমাদের প্রিয় আহমেদ রাজীব হায়দার সময় টেলিভিশন –এ তার শেষ সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন বাংলা ভাষাকে অনলাইনে জনপ্রিয় করার জন্য ব্লগ এর ভূমিকাই বেশি । আমাদের প্রিয় ভাষাকে অনলাইনে জনপ্রিয় করার জন্য তিনি নিয়মিত ব্লগে লিখে গেছেন । তাই আমি বলব আমাদের প্রিয় আহমেদ রাজীব হায়দার এর সম্মানে আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষার বর্ণমালা দিয়ে কোন জানোয়ার রাজাকারের নামের প্রতিনিধিত্ব না করে বাংলা ভাষার বর্ণমালার সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে ।





আমার লেখাটা কাউকে সমালোচনা করার জন্য না। এটা পুরটাই আমার নিজস্ব মতামত। কারন আমি জানি যখন কোন কিছু মহান ইতিহাস এর জন্ম দেয় তখন তার কিছুটা ভুল থাকলে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করাও একটি অন্যায় কিন্তু আমাদেরকে হয়তো এসব বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।



Shafiq

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.