![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষকে বিশ্বাস করতে চাই এবং বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে চাই।বাস্তবের ভিতরে বসবাস করতে ভালবাসি। কল্পনা করতে ভাল লাগে, কিন্তু বাস্তবকে ভুলে নয়। সততা বলতে আংশিক বুঝি না, পুরোটাই বুঝতে চাই। প্রকৃতির মাঝে শান্তি এবং স্বস্তি দু\\\'টোই খুজে পাই। নারীর প্রতি আকর্ষন আছে তবে উন্মাদনা নেই। বয়সকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা মনে করি না। লিখতে ভালবাসি, কবিতা-গল্প, যা কিছু। চারটে বই প্রকাশ করেছি নিজ উদ্যোগে। প্রতিভা নেই, শখ আছে। অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, পারি না কেন বুঝি না।
১৭৮৯ সালের ১৪ই জুলাই তারিখে কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গের পতন হয়। ঐটি ছিল স্বৈরাচারী সরকারের নির্যাতন ও জুলুমের প্রতিক। বন্দীদের রাখা হতো ওখানে। একবার তার মধ্যে প্রবেশ করলে জীবৎকালে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকতো না। কারাগারের ভিতরেই মেরে ফেলা হতো বহু বন্দীকে। অত্যাচারে জর্জরিত ফরাসী জনসাধারন উক্ত তারিখে বাস্তিলের দুর্গ ভেংগে বন্দীদের মুক্ত করে। বলা বাহুল্য, বিশেষ একটি দিনে সহসা মানুষ ক্ষুব্ধ হয় না। দিনে দিনে ক্ষোভ পুন্ঞ্জীভুত হয়। তারপর একদিন সেই পুণ্ঞ্জীভুত ক্ষোভ আগ্নেয়গীরির অগ্নুৎপাতের মত ফেটে পড়ে।
ফরাসী দেশের রাজা ষোড়শ লুই এবং তার রানী আঁতনয়র্তী দেশবাসী জনসাধারনের সুখ-দু্ঃখ দুরের কথা, নিজেদের প্রত্যাসন্ন বিপদেরও কোন খোঁজ খবর রাখতেন না। রাজা লুই তার দিনপণ্ঞ্জীর ১৩/০৭/১৭৮৯ তারিখে লিখেন, "কিছু ঘটেনি"। ১৪/০৭/১৭৮৯ তারিখেও লিখেন, "কিছু ঘটেনি"। ১৪-১৫ই জুলাই ১৭৮৯ তারিখ রাত্রে লিয়াঁকোর্টের ডিউক রাজা লুইকে গভীর নিদ্রা থেকে জাগিয়ে বাস্তিল দুর্গের পতনের সংবাদটা দেন। বিস্মিত ষোড়শ লুই বলেন, "এযে বিদ্রোহ"! ডিউক সংশোধন করে বলেন, " No Sir, it is revolution". না হজরত, এটা বিপ্লব।
নানারকমের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর ভার , সামাজিক নিপীড়ন প্রভৃতির চাপে নিষ্পিষ্ট ফরাসী দেশের জনসাধারন স্বাভাবিক জন্মগত মানবাধিকারের দাবী উত্থাপন করেছিল। তাদের শ্লোগান ছিল 'liberty, equality and fraternity'--স্বাধীনতা, সাম্য এবং ভাতৃত্ব। বলা বাহুল্য, সমন্বিত জাতি গঠিত হওয়ার পুর্বশর্ত এই ক'টি বিষয়ের অবস্হিতি। তৎকালীন ফরাসী শাসকশ্রেনী এ বিষয়ে শুধু উদাসীন ছিল না, তারা বিলাস ব্যসনে জীবন যাপন করছিল। রাজপ্রাসাদে স্তাবকের অন্ত ছিল না। রাজা-রানীর নিজস্ব চোখ ছিল না। তারা স্তাবকদের চোখে দেখতেন। স্তাবকরা যা শুনাতো তাই শুনতেন। তারা ছিলেন চোখ থাকতেও অন্ধ এবং কান থাকতেও বধির। তাই বাস্তিলের পতনের মত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে রাজা লুই বিদ্রোহ বলেছিলেন। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, বিশেষ স্থানে বিশেষ একটি কারনে ঘটিত বিদ্রোহ ক্ষাত্র শক্তি প্রয়োগ করে দমন করা যায়।---বিপ্লবে অংশ গ্রহন করে সমগ্র জাতি। বিশেষ একটি স্থানের বা গোষ্ঠির বিদ্রোহ এবং বিপ্লবের মধ্যে এই যে মৌলিক পার্থক্য রাজা ষোড়শ লুই তা বুঝতে পারেন নি, কেননা আগেই বলেছি, তিনি স্তাবকদের চোখ দিয়ে দেখতেন এবং তাদের কান দিয়ে শুনতেন।
সংকলিত: 'অল্পদর্শী', দৈনিক সংবাদ ২৩/১১/১৯৮৭
©somewhere in net ltd.