| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শফিক আলম
মানুষকে বিশ্বাস করতে চাই এবং বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে চাই।বাস্তবের ভিতরে বসবাস করতে ভালবাসি। কল্পনা করতে ভাল লাগে, কিন্তু বাস্তবকে ভুলে নয়। সততা বলতে আংশিক বুঝি না, পুরোটাই বুঝতে চাই। প্রকৃতির মাঝে শান্তি এবং স্বস্তি দু\\\'টোই খুজে পাই। নারীর প্রতি আকর্ষন আছে তবে উন্মাদনা নেই। বয়সকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা মনে করি না। লিখতে ভালবাসি, কবিতা-গল্প, যা কিছু। চারটে বই প্রকাশ করেছি নিজ উদ্যোগে। প্রতিভা নেই, শখ আছে। অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, পারি না কেন বুঝি না।
সম্ভবতঃ ১৯৭৪/৭৫ সালের কথা। একদিন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকা থেকে টাংগাইল নেওয়া হলো সন্তোষে ভাসানী সাহেবের ওখানে। গণ্যমান্যদের পাশাপাশি আরও অনেক মানুষ গেল তাকে দেখতে। আমি যেতে পারিনি, কিন্তু কেন যাইনি তা আজ আর মনে নেই। হয়তো বাড়ির কোনও কাজে ব্যস্ত ছিলাম অথবা যে কবির লেখনি আর সরব চঞ্চলতা দেখে ব্রিটিশ রাজ কেঁপে উঠতো, এখন এক নীরব অচঞ্চল মানুষকে দেখে কি হবে...এই ধারনা থেকেও হয়তো তেমন উৎসাহ পাইনি। যাক, সন্ধ্যায় বন্ধু ফয়জুল এসে বললো, “তুই এটা একটা কাজ করলি? এতো মানুষ কবিকে দেখতে গেল আর তুই গেলি না!” আমি কি বলেছিলাম জানি না। পরে আমার কিছুটা আফসোস হয়েছিল। হয়তো নিজেকে সান্তনা দিতেই ঐ দিনই একটা কবিতা লিখি যার চারটি পংতি এই রকম...
“নজরুলকে আমি দেখিনি
না দেখেও দেখা যায় এই দর্শনতত্ব জেনেই
আমি দেখিনি।
আর সৃষ্টিকে দেখলেই স্রষ্টাকে দেখা হয়ে যায়।“
... আমার তো মনে হয় এটাই দর্শন, এর চেয়ে বড় সত্য কি হয়? আল্লাহ্-খোদা-ভগবানকে কি আমরা দেখতে পাই! কিন্তু জগতের সবকিছুর সৃষ্টি থেকেই বুঝতে পারি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব। আর সৃষ্টিকে ভালবাসলে স্রষ্টাকেও ভালবাসা হয়ে যায়। স্রষ্টাকে অনুভব করি তার সৃষ্টির ভিতর দিয়ে।----
‘বল বীর, বল উন্নত মম শীর,
শির নেহারি আমারি নত শির ঐ শিখর হিমাদ্রির।‘
নজরুল যখন এই জ্বালাময়ী কবিতাটি লিখলেন তখন তার নাম হয়ে গেল বিদ্রোহী কবি।
এর পর লিখলেন...
‘গাহি সাম্যের গান,
মানুষের চেয়ে নাহি কিছু বড়, নহে কিছু মহীয়ান।‘
... এটি লেখার পর তিনি হয়ে গেলেন মানবতার কবি।
তারপর লিখলেন...
“তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সেকি মোর অপরাধ!” ...অথবা
“বলেছিলে তুমি তীর্থে আসিবে আমার তনুর তীরে,
তুমি আসিলে না, আশার সূর্য ডুবিল সাগর নীরে।“
এখন তিনি হয়ে গেলেন প্রেমের কবি, বিরহের কবি।
আসলে তার আশৈশব কঠিন জীবন তাকে বিদ্রোহী করেছে যেমন, তেমনি বিরহীও করেছে।----
যখন স্কুলে পড়ি, এইট/নাইন হবে, তখন আমি শখ করে একটু আধটু আঁকিবুঁকি করি। রবি-নজরুলের ছবি এঁকেছি। গ্রামবাংলার ছবি এঁকেছি। সবগুলো তেমনিই হয়েছিল, যেমনটি হওয়ার কথা। কবিতা লিখে যেমন মনে হতো যেন সুকান্ত কিংবা জীবনানন্দ, তেমনি ছবি এঁকেও আঠা দিয়ে দেয়ালে লাগিয়ে রেখেছি...কিছু একটা হয়ে গেছি মনে করে। সেই স্কুল জীবনেই সব শেষ হয়ে গেছে। গেল চল্লিশ বছর আমি আঁকিই নি, কিচ্ছু না। এখন হঠাৎ এতদিন পর আবার কেন সেই আঁকিবুঁকি করতে ইচ্ছে করে নিজেই বুঝতে পারিনা। একদিন কিসের উন্মাতাল টানে সাদা কাগজে পেন্সিলের আঁচড় কেটে দেখি কিছু একটা হচ্ছে, আর মনে পড়ে যায় সেই কিশোর বেলার কথা।
শুরুতে মনে হয় পারবো, শেষ করে দেখি যা হওয়ার তাই হয়েছে। অর্থাৎ দেখে কেউ বলবে না, বাহ্, এক্কেবারে......! তবে হয়তো বলবে, হুম্, দেখে মনে হয় নজরুল। আমারও তাই মনে হয়।
আজ ১১ই জ্যৈষ্ঠ, কবি’র জন্মদিনে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২২
শফিক আলম বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন শ্রদ্ধাঞ্জলি!
হৃদয়ের গভীর থেকে আঁকা..........
সংকলনে যুক্ত করা হল।