![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।
এক
গতকাল ছিলো গায়ে হলুদ ৷
বন্ধু,বান্ধব, শক্রু, মিত্র সকলে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম ওদের বাড়িতে। আমি যাবো না, যাবো না করেও শেষ পর্যন্ত নীরা'র জোড়াজুড়িতে গিয়ে হাজির হলাম।
দুই
আজ সোহিনীর বিয়ে।
সকাল থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে।
সেই সঙ্গে গুরুম গুরুম শব্দে বাজ পড়ছে। আবহাওয়া সংবাদ দেখলাম, সারাদেশে তিন থেকে চার নাম্বার বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে ৷ এমন বৈরি আবহাওয়ার খবর শুনেও মনের কোণে ক্ষীণ একটা আশার আলো জ্বলে উঠলো।
তিন
রাত নটা।
বৃষ্টি একটুও কমেনি। রাস্তায় পানি জমে একাকার অবস্থা৷ কমিউনিটি সেন্টারে পৌছে দেখি বর পক্ষ এখনো আসেনি। অর্ধেক অতিথি খেয়ে দেয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গল্প,গুজব করছে।
সোহিনী লাল বেনারসি পড়ে সেজেগুজে বউ সেজে স্টেজে বসে আছে। আগত অতিথিরা ওর সাথে ছবি তুলছে ৷
আমাকে দেখে সোহিনী হেসে হাতের ইশারায় কাছে যেতে বলল। আমি দেখেও না দেখার ভান করে সরে গেলাম৷ ডাকলেই যেতে হবে নাকি?
সোহিনীর বাবা, ভাই আর মামাদের দেখলাম, গম্ভীর মুখে ইমাম সাহেবকে সাথে নিয়ে বসে আছেন ৷ তাদের চোখে মুখে অজানা উৎকন্ঠা। বর পক্ষ এখনো এসে পৌঁছায়নি দেখে, তারা খুবই বিচলিত হয়ে আছে ।
সকালের খুশিটা আবার ফিরে এলো। স্বার্থপরের মতো খুব করে চাইছি আজ যেনো বিয়েটা না হয় ৷ সব বিয়ে হতে হবে, সবাইকে বিয়ে করতেই হবে । এমন কথা কি কোথাও লেখা আছে?
আমাকে দেখতে পেয়ে নীরা এগিয়ে এলো।
দু'জন চুপচাপ পাশাপাশি বসে সোহিনী'কে দেখতে লাগলাম।
অনেকক্ষণ পর নীরা বলল,"কি অদ্ভুত সুন্দর লাগছে ওকে তাই না রে ? "
- হুম।
- "যা না ওর সাথে একটা ছবি তুলে আয়।" নীরা ফের বলল।
আমি কিছু বললাম না।
- কি রে, চুপ করে আছিস যে?
- ছবি তোলার দরকার কি?
- দরকার আবার কি ; স্মৃতি থাকবে। নীরা বিরক্ত হয়ে বলল।
- তোদের সাথে এমনিতেই অনেক স্মৃতি আছে। নতুন করে আর লাগবে না৷
- এই কি হয়েছে রে তোর? এমন খ্যাচখ্যাচ কথা বলছিস কেন?
আমি কিছু না বলে ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম, "আচ্ছা ধর, আজ ওর বর এলো না, তাহলে কি হবে? "
নীরা বেশ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,"কি আর হবে বিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে৷ এ প্রশ্ন করছিস কেন?"
আমি হেসে বললাম, "এমনি, কোন কারণ নেই। "
নীরা বলল, "এমন অলুক্ষুনে কথা, এমন সময় বলতে হয়?"
আমি অপ্রস্তুত হাসি হেসে বললাম, "বাদ দে।"
নীরা এবার সরাসরি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল," এ্যই বাবন; একটা কথা বল তো। তুই কি সোহিনী'কে ভালবাসিস?"
আমি আবারো অপ্রস্তুত হাসি হেসে বললাম,"কি সব যাতা বলিস? মাথা ঠিক আছে তো? "
নীরা কি বুঝলো জানি না৷ কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে চলে গেলো ।
চার
বর এলো রাত সাড়ে ১১টায়।
ঈমাম সাহেবের বড্ড তাড়া। তিনি দ্রুত বিয়ে পড়িয়ে হাদিয়া নিয়ে চলে গেলেন।
রাত সাড়ে ১২টায় সোহিনীকে বরের গাড়িতে তুলে দিয়ে বের হয়ে এলাম কমিউনিটি সেন্টার থেকে।
মুষুলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফুটপাত ধরে হাটতে লাগলাম। আজ সারারাত হাটবো। দু'গাল বেয়ে নোনা জলের ধারা বৃষ্টির জলের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে । ভালোই হলো, বৃষ্টির জলে, চোখের জল দেখা যায় না৷
বি.দ্র. প্রায় প্রতিটি বিয়ের অনুষ্ঠানে, এমন দু'চারজন বাবন থাকে; যাদের চোখের জল, বৃষ্টির জলের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় ৷
শেষ ।
১৫.০৭.২৫
১৫ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:২৫
শায়মা বলেছেন: যাক বাবা সোহিনীর বিয়ে আমি তো চমকে উঠেছিলাম!!!! সোহানীর বিয়ে পড়ে। হাহাহা মানে ভেবেছিলাম আমাদের সোহানী আপু নাকি!!!!!!!!