![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিউট্রন বিনা হাইড্রোজেন প্রোটন আমি।
মিস্টার স্যুঁ নিকিনিং শহরের দক্ষিণ প্রান্তের গোলাপী বাড়িতে অবস্থান করছে। তার ঘুম ভেঙেছে কিন্তু বিছানা ছাড়ার জন্য হিউমোট্যাক আংটিটা প্রয়োজন। আংটিটা কোথায় যেতে পারে? সে যেভাবে প্যাকেট হয়ে সুয়ে আছে তা থেকে বেড় হতে হলে ডান হাতের মধ্যমা আঙ্গুলের ঐ মাইক্রবায়োলজিক্যাল কোয়ান্টমিক আংটিটার বিকল্প নেই। স্যুঁ হঠাৎ অনুভব করল তার কোমরের নীচে কি যেন একটা। চট করে বাম হাত দিয়ে ডান হাতে আংটিটা পড়ে নিল। স্যুঁ মনে মনে বলল, ‘বিছানা সড়ে যাও’
চি... উ.... ঙ.... করে স্যুঁকে ঘিড়ে থাকা বিছিনার প্যাকের উধাও হয়ে গেল।
আল্ট্রা মডার্ন সভ্যতার খাবার তৈরি হয় পারমানবিক চুল্লিতে, অনেক বৈজ্ঞানিক ধাপ অতিক্রমে খাবার বিশ্লেষ্ট হয়ে মল-মুত্রের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধুমাত্র খাদ্যপ্রাণ গ্রহণের উপযোগী হয়। এ কারণে কোন প্রাতঃক্রিয়ার প্রয়োজন হয় না। স্যুঁ তার ডিজিটাল রুমে বসে ভাবল, ‘খাবার খাওয়া প্রয়োজন’। ভাবা মাত্র তার রুমের ফুট গেইটে নীল আলো জ্বলে উঠল। স্যুঁ নীল আলো স্পর্শ করতেই নিকিনিং শহরের সেন্ট্রাল ফুড সাপ্লাই স্টেশন থেকে তার দেহে খাদ্য প্রবেশ করল।
স্যুঁ সিলিকন চেয়ারে বসে আছে। এই মুহূর্তে তার ভীষণ একা একা লাগছে। আজ তিথালোকে স্বরণ করার কথা না। তবুও তিথালোর কথা স্যুঁর বার বার মনে পড়ে। তিথালো স্যুঁর লাইফ পার্টনার, আরও স্পষ্ট করে বললে তিথালো হল স্যুঁর পৃথিবী কেন্দ্রীক সেক্স পার্টনার। তিথালোর ফিগার লেজার ইমেজের মত অসাধারণ রঙীন। ভার্চুয়াল পারসোনালিটি।
এখানে বিয়ে বলতে কিছু নেই। আছে রোমান্টিক পার্টনারশিপ, সেক্স পার্টনারশিপ, ওয়ার্ক ফেন্ডশিপ ইত্যাদি।
স্যুঁ ভাবে, ‘তিথালো তোমাকে আমার ভিষণ প্রয়োজন’ এবং আংটিটাকে আদের ভঙ্গিতে ছুয়ে দিলো স্যূঁ। ওয়েব গেট দিয়ে তিথালো মিষ্টি হাসি দিয়ে প্রবেশ করল। তিথালো কাছে এসে স্যুঁকে আলতোভাবে চুমু খেল।
-আজকেতো আমাদের দেখা করার কথা না। আমাকে ডাকলে কেন?
স্যুঁ বলল দেখ তিথালো আজ সকাল থেকেই পৃথিবীটাকে বড় সেকেল আর পুরোনো লাগছে। চলো অন্য কোন গ্রহে আমরা চলে যাই।
-মাত্র দু বছরেই অস্থির হয়ে গেলে? ফাজলামো হচ্ছে নাতো স্যূঁ?
-হ্যা সত্যি বলছি। তুমি রাজি থাকলে আমি আজই আমার জেনেটিক কোড ও কোষ এই শহরের ক্লোন ব্যাংকে জমা দিতে চাই। তোমার আমার মিলনেতো আর ভভিষ্যৎ প্রজন্ম আসবে না তাই এটা করতে চাই। এ কথা বলে স্যুঁ তিথালো কে জড়িয়ে ধরে আদর করতে থাকে।
-আচ্ছা স্যূঁ আমরা না হয় যাবো, কিন্তু কোন বিশ্বে যাবো তা ভেবেছো?
- আমার মনে হয় এখানে আসার পূর্বে তুমি যে দশটা গ্রহে বাস করেছো এবং আমি যে এগারোটা গ্রহে ছিলাম এগুলো ছাড়া নতুন কোন গ্রহে গেলেইতো ভাল হয়।
-না স্যুঁ আমার মনে হয় স্প্রিটা গ্রহে যাওয়া দরকার। তোমার সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকে কেবল মনে হয় তোমাকে সহ স্প্রিটা গ্রহে দিন যাপনের চেয়ে আনন্দ আর সুখের কিছু হতে পারে না।
স্যুঁ তিথালোর প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল। তারা রুমে বসেই জেনেটিক কোড ও কোষ জমা দিল। নিকিনিং শহরের মেয়রকে জানাল। স্প্রিটা গ্রহের রাজাকে জানাল। উভয়ে একে অপরের আংটির দিকে তাকাল তারা অপেক্ষা করতে লাগলো কখন স্প্রিটা গ্রহে পৌছুঁবে।
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যাওয়ার মাধ্যম হল আলোর কনিকা ফোটনে বিশ্লিষ্ট হয়ে আলোর চেয়ে কয়েকশ কোটি গুন দ্রুত বেগে চলে যাওয়া।
আংটি তাদের হৃদয়ের ইচ্ছার মত কাজ করতে গিয়ে আপারগতার সিগনাল দিল। হায় এখন কি হবে!
স্যুঁ ও তিথালো একে অপরকে শক্তভাবে ধরে আছে। সিগনাল আসলো দুজন একত্রে স্প্রিটায় যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ এই আংটি প্রযুক্তির বিরাট দুর্বলতা রয়েছে। উভয়ের হৃদয়ের কথা শতভাগ একই রকম না হলে উভয়কে একত্রে কোথাও নেয়া যায় না। স্যুঁ ও তিথালো বুঝে উঠতে পারছে না কোথায় তাদের ইচ্ছার অমিল।
আর এক মিনিটের মধ্যে হয়তো উভয়ে একই গ্রহে যাবে নায়তো চিরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। কি হবে বোঝা যাচ্ছে না। অন্য গ্রহে স্যূঁ আরও কয়েক জনকে নিয়ে এভাবে পাড়ি দিতে চেয়েছিল কিন্তু একই সমস্যার জন্য একা চলে আসতে হয়েছে। আজকেও কি তাহলে দুজনকে দু গ্রহে চলে যেতে হবে?
কিন্তু তিথালো কোনভাবেই স্যূঁকে হাড়াতে চায় না। প্রযুক্তির এই সম্যাটি এই সভ্যতার অশান্তির একমাত্র কারণ। এই সমস্যা দূরকরার জন্য হাজার হাজার বিজ্ঞানী নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু হাজারে একটার বেশি সফলতা আসছে না।
হৃদয়ের ইচ্ছা কোভাবেই শতভাগ মিলছে না। আর প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে নেক্সট ওয়াল্ডে যাওয়া যাচ্ছে না। ওরা অপেক্ষা করছে ওদের পরিণতির জন্য। এই একমিনিট যেন হাজার বছর ওদের কাছে।
হঠাৎ সবুজ লাইট জ্বলে উঠলো।স্যূঁ আর তিথালোর মনের বাসনা শতভাগ মিলেছে হয়তো। ওরা এখন স্প্রিটা গ্রহের যাত্রি। যেখানে সুখ আর সুখ কেবলি আনন্দ।
২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৯
শওকত আলী খান হিরণ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ আমার মুক্তালাপে (ব্লগ) আসার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার! ভালো লেগেছে লেখাটা!!