নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
রাজপথ স্বাভাবিক গতি ফিরে পেয়েছে। ধুলো উড়াতে উড়াতে ছুটে চলছে বিভিন্ন রুটের বাস; তাতে গিজগিজ করছে মানুষ। ফুটপাত, রেস্তোরাঁ, টংদোকান, অফিস-আদালত প্রতিটি জায়গায় কর্মচঞ্চল মানুষের পদচারণা। সহপাঠী হারানোর ব্যথা বুকে চাপা দিয়ে স্কুল-কলেজ, ভার্সিটি মুখি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। চায়ের কাপে চুমুক, সিগারেট ফুঁকে কিংবা একগাল পান চিবিয়ে ঝিকঝিক করে চলছে নানা রঙের কথার রেলগাড়ি। হাসি-ঠাট্টায় জমে উঠছে এক একটি বগি। অথচ দুদিন আগের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। সারা দেশ সাক্ষী হয়েছে চরম বর্বরতার। আলো-আঁধারিতে চলেছে যে নির্মমতা, নৃশংসতা, তা যে হায়েনাকেও হার মানায়, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
একটু গভীর শ্বাস নিলেই বাতাসে গোলাবারুদ আর তাজা রক্তের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। কান পাতলে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দের সাথে ভেসে আসা মানুষের বাঁচাও! বাঁচাও! আর্তচিৎকার। চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠছে গুলিখাওয়া নিরপরাধ ছেলেদের ছটফটানি, মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়া নিথর শরীর। বাতাস ভারী করা মায়ের করুণ চিৎকার, ‘আমার তো আর কেউ নাই, আমি কী নিয়ে থাকব?’ ভাইহারা বোনের আহাজারি, ‘সরকার কেন গুলি করার অনুমতি দিল? এক হাত-পা ভেঙে কেন দিল না? তাহলেও তো আমার ভাই বেঁচে থাকত।’ রক্তাক্ত ছাত্রের অসহায় কণ্ঠে জানতে চাওয়া, ‘ভাই, আমি কি মারা যাব?’ আহা, কী হৃদয়বিদারক! এসব দেখে পাষাণ হৃদয়ও কেঁপে ওঠার কথা, কিন্তু...
গলির মুখে কালাম চাচা পান-সিগারেট বিক্রি করতেন। হেসে কথা বলতেন, সারল্যের ঘ্রাণ আসত কথা থেকে। মানুষটি আমাদের মাঝে নেই। শান্তিরক্ষা বাহিনীর এলোপাথাড়ি ছোড়া বুলেটে জীবন প্রদীপ নিভে গেছে তাঁর। আর কোনোদিন তাঁকে গলির মুখে দেখা যাবে না। সামনের দুই গলি পেরিয়ে অটোচালক জামাল ভাড়া বাসায় থাকতেন পরিবার নিয়ে। পেটের দায়ে অটো নিয়ে বের হয়েছিলেন। পরিবার অপেক্ষায় ছিল বাড়ি ফিরবেন আহার্য নিয়ে, কিন্তু ফিরলেন লাশ হয়ে। ফুড পান্ডার ডেলিভারি বয় সুমন প্রতিদিনের মতো খাবার ডেলিভারি করতে বের হয়েছিলেন। বেচারা ভুল করে কিছু হায়েনার সামনে পড়ে যায়, এরপর হয়ে যায় লাশ। আলতাব হোসেন এশার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাচ্ছিলেন; মসজিদে প্রবেশের আগেই প্রাণপাখি উড়ে গেল। মসজিদের সামনের ফুটপাথে কয়েকদিন পর্যন্ত লেগে ছিল তাঁর জমাট বাঁধা রক্তের দাগ। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিল চশমার টুকরো টুকরো কাঁচ। সেদিন বৃষ্টির কান্নায় ধুয়ে গেছে রক্তের দাগ। কিন্তু সবখানে কলঙ্কের যে দাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তা মুছবে কিসে? এরকম নাম না জানা অনেক কালাম, জামাল, সুমন ও আলতাব হোসেন রয়েছে, যারা আর কোনোদিন বাড়ি ফিরবে না।
গোলাবারুদের গন্ধ উবে যাবে, গাড়ির চাকা আর পথচারীদের জুতার ঘষায় মুছে যাবে রাজপথের রক্ত। আমরা এসব বীভৎস স্মৃতি ভুলে নতুন ইস্যুতে গা এলিয়ে দেব। কিন্তু মৃত্যুর মিছিলে শামিল হওয়াদের পরিবার এই ক্ষত আমৃত্যু পুষে রাখবে।
বৃদ্ধ বাবা মনের অজান্তেই মৃত ছেলের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকবে, মাসের শেষে যার পাঠানো অর্থে জোটত পুরো পরিবারের আহার। সন্তানহারা মা খাবার বেড়ে অপেক্ষা করবে, ছেলে ফিরবে কলেজ থেকে। ভাইহারা বোন আকুলি-বিকুলি করবে আপা ডাক শোনার জন্য। বাবাহারা সন্তান অপেক্ষায় থেকে থেকে অভিমানে মুখ ভার করে রাখবে। মনে মনে ভাববে, বাবা বাড়ি ফিরলে আচ্ছা করে বকে দেবে। কিন্তু তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হবে না। এ অপেক্ষা অনন্তকালের। অপেক্ষায় আকাশের দিকে তাকিয়ে অভিশাপের পাহাড় গড়বে তাঁরা। একদিন সেই পাহাড়ের বুক চিরে বেরিয়ে আসবে দ্রোহের আগ্নেয়গিরি; উত্তপ্ত লাভায় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দেবে সব অন্যায়-অশুচি।
ছবিঃ ফেসবুক
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৪
শাওন আহমাদ বলেছেন: অথচ যাদের জন্য এই হত্যাযজ্ঞ তারা ঠিকই মন যা চাইছে তাই বলে বেড়াচ্ছে!
২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৪৪
করুণাধারা বলেছেন: হৃদয় কেঁপে উঠলো, কী ভীষণ একটা অবস্থা! আজকে পত্রিকা খুলে দেখলাম ৫ বছরের একটা মেয়ে চারতলা বাড়ির ছাদে খেলতে গিয়েছিল সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। চারতলায় কিভাবে গুলি যায় যায়! যায়, যদি বন্দুক আনুভূমিক না করে ভূমির সাথে কোন করে গুলি ছোঁড়া হয়। সেক্ষেত্রে একটা ট্রেজেকটরি ধরে গুলি নেমে আসবে, উপরে অবস্থিত কারো গায়ে লাগবে, যে হয়তো জানেই না গুলি কাকে বলে!! পুলিশ বলছে আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুঁড়েছে!!
খুব খারাপ লাগছে। ওদের কি একটু খারাপ লাগে না। অভিশাপ দিচ্ছি ওদের।
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: যেভাবে পেরেছে সেভাবে তারা নিরপরাধ মানুষ মেরেছে। ছাদে উঠে, হেলিকপ্টার থেকে, বাসা থেকে ডেকে নিয়ে, যেন উৎসব লেগেছিল মানুষ মারার।
৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৫৩
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কিছুই বলার ভাষা নাই
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: অথচ যাদের জন্য এই হত্যাযজ্ঞ তারা ঠিকই মন যা চাইছে তাই বলে বেড়াচ্ছে!
৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:০১
নাহল তরকারি বলেছেন: ওরা খারাপ মানুষ।
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: ধ্বংস হোক।
৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: নিরপরাধ মানুষ হত্যাকারীদের উপর অভিশাপ।
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: অভিশাপগুলো দ্রুত ফলে যাক।
৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৪৫
ফারহানা শারমিন বলেছেন: সবকিছুরই হিসেব দিতে হয়। একটু সময় লাগে। সব আহাজারিরই হিসেব দিতে হবে। এই পারে না হয় ঐ পারে।এই পারে হিসেব হলে সবার পোড়া ক্ষত যে একটু হলেও মলম পরবে।
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫
শাওন আহমাদ বলেছেন: সেই দিনের অপেক্ষায়..
৭| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:১৬
হাসিব শান্ত বলেছেন: চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না ভাই।
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬
শাওন আহমাদ বলেছেন: আসলেই চোখের পানি ধরে রাখা যায় না।
৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৫৬
মিথমেকার বলেছেন: এত এত মানুষের কান্না, এত এত মায়ের আত্মচিৎকার, এত এত বন্ধুর প্রাণপণ চেষ্টা গুলিবিদ্ধ বন্ধুকে রক্ষা করার। এত মানুষের আর্তনাধ বৃথা যাবে না ওদের বিচার হবেই এই মাটিতে!
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: সেই দিনের অপেক্ষায়..
৯| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০
সোনাগাজী বলেছেন:
ব্লগার অর্ক বলছেন যে, তিনি নিজে উপস্হিত থেকে সব দেখেছেন, ইহা ছিলো শিবিরের আক্রমণ! আপনি কি দেখেছেন?
২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি শিবির, জামায়াত, বিএনপি, আওয়ামিলীগ কিছুই বুঝি না। যারাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সকলের প্রতি অভিশাপ আর ঘৃণা। কে কী বলেছেন তা জানার ইচ্ছে আমার নাই। মানুষের বিবেক হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আদালত অবশ্য যদি তা জাগ্রত থাকে। তাছাড়া আপনি, আমি বা অন্যকেউ যাচ্ছেতাই বললেই সত্য নিশ্চয়ই পরিবর্তন হয়ে যাবে না
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৩৫
সামরিন হক বলেছেন: শব্দ আসছে না।