![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
যোহরের নামাজের ইকামাত দিচ্ছেন মুয়াজ্জিন সাহেব। মুসল্লিরা রবের হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সহসা খেয়াল করলাম, আমার সামনের সারির এক ভদ্রলোক দুহাত তুলে বিড়বিড় করছেন। তার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছেন আশে পাশের মুসল্লিরা। আমি প্রথমে অবাক হলেও পরক্ষণে খেয়াল হলো, আজান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময় দুআ কবুল হয় (আবু দাউদ, ১/১৪১, তারগীব, ১/১৮০, মাজমাউয যাওয়াইদ, ১/৩৩৪)। ভদ্রলোক বোধহয় সেই আশায় হাত তুলে ধরেছেন, তার রবের দরবারে।
নামাজ শেষ হলো। ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে প্রথমে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন। বললেন, ‘আমি শিক্ষিত মানুষ, দেশের বাইরে থেকে বেশ অর্থ-সম্পদ উপার্জন করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। সব ঠিকঠাকই চলছিল কিন্তু হঠাৎ করে বিজনেসে ধ্বস নামে। শেষ হয়ে যায় সমস্ত কিছু। এই অবস্থায় পরিবার নিয়ে অবর্ণনীয় বিপদে পড়েছি। অনুগ্রহ করে আপনারা আমাকে কিছুটা সাহায্য করবেন।’ মানুষটি যখন কথাগুলো বলছিলেন, তার চোখ-মুখ লজ্জায় লাল হয়েছিল। মনে হচ্ছিল এখনি কেঁদে ফেলবেন।
বাকি নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় খেয়াল করলাম, ভদ্রলোক সিঁড়ির এক কোণে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। অথচ বাকি সাহায্যপ্রার্থীরা হাত বাড়িয়ে চাইছেন, ডাকাডাকি করছেন, নিজেদের নানাবিদ সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। কিন্তু সেই ভদ্রলোক একভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন। উনাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এক মুসল্লি বলেন, ‘এভাবে এক কোণে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলে কি আপনাকে কেউ সাহায্য দেবে? মাঝখানে এসে দাঁড়ান, হাত বাড়িয়ে চান।’ ভদ্রলোক তবুও মাথা তুলে তাকাতে পারলেন না। লজ্জা আর আত্মসম্মানবোধের ভারে নুইয়েই রইলেন।
একটা মানুষ ঠিক কতটা বিপদগ্রস্ত হলে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়—তা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়া আর কারো পক্ষে অনুমান করা সম্ভব নয়। নিশ্চয় বাড়িতে আদরের বাচ্চারা না খেয়ে আছে। দুদিন আগেও যার ঘর ভরা খাবার ছিল। যে বাবা বাচ্চারা না চাইতেও ডুবিয়ে রাখত নানা মজাদার খাবারে। আজ তারই ঘর খাবার শূন্য। আদরের সন্তানের ক্ষুধার্ত মুখ অসহায় বাবাকে রাস্তায় নামিয়েছে। মানুষটির জন্য ব্যথায় দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছিলাম। সাধ্যানুযায়ী তাকে কিছু সাহায্য করার চেষ্টা করলাম কিন্তু মনে হচ্ছিল উনি এর চেয়ে অধিক সাহায্য পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
অফিসের পথে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম, পৃথিবীর সব চেয়ে খারাপ মানুষকেও যেন সৃষ্টিকর্তা এমন পরিস্থিতে না ফেলেন। আর যারা এমন পরিস্থিতে আছেন তাদের যেন শীঘ্রই আজাদ করে দেন। পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ ভালো থাকুক, শান্তিতে থাকুক। কারো গায়ে না লাগুক দুঃখের কোন আঁচ। পৃথিবী হয়ে উঠুক শান্তির স্বর্গরাজ্য…।
ছবিঃ গুগল
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩০
শাওন আহমাদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন আপু। আল্লাহ উনাকে সাহায্য করুন।
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:২৯
নাহল তরকারি বলেছেন: আহারে....। কত কষ্ট।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৫৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: আসলেই ভীষণ কষ্ট।
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৪৬
ঊণকৌটী বলেছেন: অর্থ সাহায্য না করে যদি উনাকে যেকোন কাজে নিযুক্ত করতেন তাহলে উনি স্বস্তি বোধ করতেন এবং উনার প্রকৃত উপকার হতো, ভিক্ষা কোন সমাধান নয় |
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:০০
শাওন আহমাদ বলেছেন: ভেবেছিলাম কিন্তু আমার সে সুযোগ নেই। সুযোগ থাকলে অবশ্যই করতাম এবং দিনশেষে এটাই আমার আনন্দের কারণ হতো।
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি সৃষ্টিকর্তা কে দোষ দিচ্ছেন কেন?
আল্লাহ কাউকে বিপদে ফেলেন না। মানুষ তার কর্মের জন্য ভালো থাকে। কর্ম না করলে খারাপ থাকে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করনি। অবশ্যই মানুষ তার কর্মফল ভোগ করে। আমি বলতে চেয়েছি পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ ভালো থাকুক।
৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: শখের ভিক্ষুকদের কারনে আমরা আসল অভাবিদের চিনতে ব্যর্থ হই।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৬
শাওন আহমাদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
৬| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভদ্রলোকের ভেতরের কষ্টের তীব্রতাটা অনুভব করার চেষ্টা করলাম। মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো। নিজেকে তার জায়গায় দাঁড় করালাম। শিউরে উঠলাম। আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন, খয়রুর রাযেকীন পৃথিবীর সকল মানুষকে খাদ্যকষ্ট থেকে হেফাযত করুন, সকলের অভাব অনটন, দুঃখ কষ্টের অবসান করে দিন!
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমীন, আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য দুআ ও শুভ কামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:১২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কষ্ট লাগলো শুনে। এমন বিপদে অনেকেই পড়ে অথচ যারা ইচ্ছে করেই এই ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিয়েছে তাদের জন্য অসহায়রা সাহায্য পায় না। আল্লাহ উনার বিপদ দূর করে দিন।