![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“স্যার নিয়ে যান। খুব ভালো প্রোডাক্ট। ইন্ডিয়ান। ইউজ করে আরাম পাবেন।” দোকানী কথাগুলোবলছিল আমার সহকর্মী ............কে। কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ দেখেই গেলাম কি ঘটে তা বোঝার জন্য। শেষমেশ আমাকে ভুল প্রমান করে সহকর্মী কিনে ফেললেন পণ্যটি। অথচ পাশেই ছিল তারচেয়েও ভালো দেশী একটি পণ্য। সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই চোখ এড়িয়ে গেলো তার। এতোক্ষণ নিশ্চই নাক সিটকানো শুরু করেছেন? ভাবছেন “একটা প্রোডাক্ট কিনবো। এখানে এতো দেশপ্রেম দেখাচ্ছেন কেন?” কিন্তু, আপনাকে একটু হতাশ করে বলতে চাইছি ব্যপারটা দেশপ্রেমের নয়। কথা হচ্ছে যুক্তির এবং এর পেছনের কারণ নিয়ে।
মনে মনে হয়তো বলছেন “আরে ভাই, যুক্তির কিছু তো আপনি বললেনই না!” হ্যা, যুক্তিতে এখনো প্রবেশ করিনি। একটা ছোটগল্প দিয়ে মূল ঘটনায় আসি-
“এক বিদেশী গেলেন দোকানে। একের পর এক বিদেশী পণ্য দেখানো শুরু করলেন বিদেশীকে। ধৈর্য নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে দোকানীর সব পণ্য খারিজ করে বললেন “মশাই, আমার দেশ কি আপনার অপছন্দ?” দোকান সামান্য ইতস্তত হয়ে বললো “দুঃখিত, তবে আমি আসলে আপনার কথার অভ্যন্তরীন সারমর্ম বুঝতে পারছিনা।”
বিদেশীর হাসসি প্রসারিত হলো এবং তার জবাব এলো – “আমার দেশের সেরা পণ্যটি আপনার পাশে। অথচ পণ্যের কথা আপনার মুখে একবারও শুনলাম না।”
এখনো যারা গল্পের সারমর্ম ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকে একটু পরিষ্কার করে বোঝাই। ক্ষুদ্র পরিসরে উপরের ঘটনাটি হয়তো কিছুই না, কিন্তু বৃহৎ পরিসরে খুবই গুরুত্ববহ। জাতি হিসেবে আমরা অনুকরণ দেখে অভ্যস্ত। নিজেদের সংস্কৃতিতে মনের অজান্তেই ঠাই দিয়েছি ভারতীয় সংস্কৃতিকে। এর ফলে অজান্তেই ভারতীয় পণ্যটিই সবার আগে চলে আসে পছন্দের তালিকায়। অথচ দেশী পণ্যের ব্যপারে খোঁজ রাখিনা আমরা। বোকাবাক্সে ২৪ঘন্টা ভারতীয় চ্যানেল আড়াল করে দিয়েছে দেশী পণ্যকে। এর পেছনে ভালো পণ্যের অভাব দায়ী নয়, দায়ী আমাদের চেতনা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতা। দেশী পণ্য খারাপ ভেবেই ধরে নিয়েছে আমরা। আর, ভারতীয় পণ্যের চাহিদা, চ্যানেলগুলোর দৌরাত্ম্য এবং চাটুকার বিজ্ঞাপন দোকানীদের মনে সহজেই আচড় কেটে যায়। এই কারণেই দোকানী দেশী পণ্য থাকা সত্বেও ভারতীয় পণ্যটি সবার আগে মাথায় আনে। সেই হিসেব করেই সে তার বিজ্ঞাপনী ভাষা সাজায়। সেক্ষেত্রে একজন ঘোর দেশপ্রেমিকও দোকানীর চাটুকারিতায় সহজে প্রলুব্ধ হয়ে যায়। এভাবেই শেকড় থেকে শিখড় পর্যন্ত সবাই দেশী পণ্যকে অবহেলা করে চলেছে।
সমাধান কি? অনেকেই বলবেন যেই পণ্য ভারত রপ্তানী করে তারচেয়ে ভালো পণ্য কি আদৌ বাংলাদেশ উৎপাদন হয়? উত্তরটা আপনিই খুঁজে দেখুন? সব না পেলেও অন্ততঃ ৬০ শতাংশ দেশী পণ্য আছে যা গুনগত মানের দিক থেকে ভারতীয় পণ্যের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যদি এই ব্যপারে নিজে থেকেই পদক্ষেপ নেয় দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে ভারতীয় পণ্যের দোরাত্ম্য অনেক হারেই কমে যায়। কোন ভালো বিকল্প না পেলে ভারতীয় পণ্য ছাড়া গতি নেই তা আমিও জানি, আপনিও জানেন। কিন্তু যেখানে দেশী পণ্যের মান ভারতীয় পণ্যের থেকে ভালো হয় তা মুখে মুখে ছড়িয়ে দেয়াটা তো আমাদেরই দায়িত্ব।
যখন দোকানীকে আপনি বোঝাবেন যতো যাই হোক, আপনি দেশী পণ্যই নিবেন তখন দোকানীও তার ব্যবসার খাতিরে আগে দেশী পণ্যকেই প্রাধাণ্য দেবেন।
ভারতীয়রা তাদের নিজেদের পণ্য ব্যবহার করে, দেশের টাকা দেশে রাখার জন্য নয়। বরং, তারা তাদের পণ্যের মান নিয়ে সচেতন। পাশের দেশই যখন নিজেদের পণ্য নিয়ে সচেতন, সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে কি আমাদের উচিত নয় আমাদের পণ্যকেই প্রাধান্য দেয়া? তারা যদি দেশী পণ্য ব্যবহার করে বিশ্বের চোখে সচেতন ভারতীয় হতে পারে আমরা কি অন্ততঃ সচেতন বাংলাদেশী হতে পারবোনা? এখন সময় ভেবে দেখার।
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৭
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অামরা সবকিছুতেই বিদেশী খুঁজি, শুধু মুরগি কেনার সময় দেশি খুঁজি । এই প্রবণতাটা পরিহার করা উচিত ।
৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২০
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল বলেছেন| তবে আমরা যদি পন্যের প্রচার করতে পারি ভালভাবে, তবে এমনটা হবে না| দেশি পন্যই কিনবে লোকে
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল বলেছেন| তবে আমরা যদি পন্যের প্রচার করতে পারি ভালভাবে, তবে এমনটা হবে না| দেশি পন্যই কিনবে লোকে