নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
ঈদে মিলাদুন্নবীতে স্কুল ছুটি থাকতো তবে স্কুলে মিলাদ দোয়ার আয়োজন থাকতো। হামদ নাত ক্বেরাত প্রতিযোগিতা শেষে পুরষ্কার বিতরণ হতো। শেষে মোনাজাত সমাপ্তির পর সিন্নি বিতরণ হতো। আমাদের সময় মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে বাৎসিক ১০ টাকা ধার্য করা হতো।
গ্রামে বা এলাকার মধ্যে মসজিদ থেকে চাউল টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বাদ আসর বড় ধরনের মাহফিলের আয়োজন করা হতো। দোয়া দরুদ পাঠ, আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা স্বরূপ আমিন আমিন স্বরে সম্মিলিত এলাকাবাসীর কন্ঠে আলোড়িত হতো পুরো এলাকা।
এই উদযাপন গুলোতে ধর্মের কি কি ক্ষতি সাধিত হয় আমার জানা নেই। আল্লাহ কেন বেজার হবেন তাও জানা নেই। আমার আল্লাহ কে আমি অন্যভাবে চিনি। যেই আল্লাহ শবে বরাতের রাতে রোজা আর নামাজ পড়লে অনেককে মাফ করে দেন। ছোটবেলায় যেমন ভাবতাম তেমনই।
ছোটবেলায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আব্বার সাথে স্কুলে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে যেতাম। হামদ নাত ক্বেরাত সহ বিভিন্ন আয়োজন থাকতো। শৈশবের বিশেষ দিনগুলো আসলেই বিস্ময় ছিল। আগের দিন রাতে পাঞ্জাবী পায়জামা টুপি মাথার কাছে রাখা থাকতো। সকালে রেডি হয়ে আব্বার সাথে যেতাম , মিলাদ শেষে দুই প্যাকেট জিলাপী নিয়ে আব্বার হাত ধরে ফিরতাম।
পুরোনো বাক্স ট্রাঙ্ক খুঁজে ছোটবেলার পাঞ্জাবী পাওয়া গিয়েছিল কিছুদিন আছে । দেখলাম পাঞ্জাবীর সাইজ পরিবর্তন হয়নি। সেই আগের আকারেই আছে। শুধু বড় হয়েছি আমি।
আর বড় হয়েছি বলেই হয়ত ঈদে কিংবা মিলাদুন্নবীতে আব্বার হাত ধরে যাওয়াও হয় না, ফেরাও হয় না।
আব্বাকে গত পরশু হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। মাইল্ড স্ট্রোক করেছিল। সেইসাথে ডেঙ্গু পজেটিভ।
ছোটবেলায় একদিন সকালে কি কারণে যেন কাঁদতে ছিলাম। হয়তো রাগ হয়েছিল। বিছানার উপর বসে বসে কাঁদছি। ঘরের বাইরে আব্বা বসে বসে শেভ করতে ছিলেন।
আব্বা শেভ করতে করতে বললেন , ' দ্যাখো কুল গাছে কেমন একটা পাখি। কি পাখি দেখতো। '
আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম , না দেখবো না।
এরপর আরো তিনবার ডেকে ছিলেন। আমি যায়নি। আব্বা এর পর গোসল করে নাস্তা করে স্কুলে চলে যান। সারাদিন আমার মন খারাপ ছিল। আব্বা ডেকেছিল আমি যায়নি। এখনো খারাপ লাগে।
মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা হয় , আব্বা কুল গাছে ঐটা কি পাখি ছিল ?
আব্বার সে কথা মনে থাকার কথা না । কোকিল , বুলবুলি , বৌ কথা কও ... না আসলে পাখি নিয়েও আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই।
বলবো, "ঐযে একদিন ছোটবেলায় তুমি একদিন ডেকেছিলা , আমি গেছিলাম না। কি পাখি মনে করার দরকার নাই। আমি কল্পনায় পাখি ভেবে নিতে পারবো। "
প্রতিবছর আমাদের কুল বড়ই গাছে প্রচুর কুল ধরে। পাখিদের কিচিরমিচির আর কুল ঝরে পরার টুপটাপ শব্দ হয়। লাল নীল কিংবা হলুদ রঙের সেই অদ্ভুত পাখিটাও হয়তো আসে ! আমার কল্পনার পাখি।
ছেলেটা মাঝে মাঝে রাগে কাঁদে। আমি বলি, 'আব্বু বারান্দায় আসো দেখো রাস্তায় কি? '
ও রেগে গিয়ে বলে, ' না দেখবো না। '
আমি দুই তিনবার ডাকার পর আর ডাকি না। চুপচাপ হয়তো বিছানায় বসে থাকি।
কিছুক্ষণ পর গা ঘেঁষতে ঘেঁষতে বলে, 'বাবা সলি.. বাবা সলি'।
দীর্ঘদিন রাতে ঘুম হয় না । পাশে বাচ্চাটার ঘুমানো দেখি । শান্তি লাগে। স্বপ্ন দেখে মিটমিট করে হাসে। ফজরের নামাজ শেষ করে প্রায়ই আমি বারান্দায় দাঁড়ায়। রাস্তায় কুকুরের আনাগোনা আর ঝাপসা আলোয় কিছু পাখি উড়তে দেখি। লাল নীল কিংবা হলুদ ঠিক বোঝা যায় না।
ছবিঃ ইন্টারনেট। শৈশবের বইয়ের একটা ছবি।
১০ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ভালো না। পাখির কথাটা বলা হলো না এখনো।
২| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮
সোনাগাজী বলেছেন:
গার্মেন্টস'এর শ্রমিকদের অবস্হা কেমন?
১০ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আমাদের কোম্পানিতে সময় মত নির্ধারিত বেতন পাচ্ছে। তবে সেই বেতনে এখন আর তাদের চলে না এটা তারাও জানে , মালিক পক্ষও জানে। আমরাও জানি, কারণ আমাদেরো চলে না।
অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে, যাবে।
অনেক গার্মেন্টস শ্রমিক পাচ্ছে না। অনেক শ্রমিক গ্রামে ফিরে কিছু করছে, অনেকে বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করেছে, পেশা বদলেছে।
৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:০৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: স্বপ্নবাজ সৌরভ,
সুন্দর লিখেছেন ।
স্মৃতির দর্পণে নিজের মুখ ...................
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক দেরিতে মন্তব্য এর উত্তর দিলাম। সাধারণত এমন হয় না।
ভালো থাকবেন।
৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:১১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
আপনার বাবার জন্য শুভকামনা রইলো।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আব্বার শরীর একেবারেই খারাপ।
৫| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:০৪
অপ্সরা বলেছেন: এই বইটা আমার ছিলো।
সুন্দর বলে এই পাখিটার অনেক অহংকার ছিলো তাই না?
১০ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৩৯
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
হু। সুন্দর বলে অহংকার ছিল। বড় বড় দেখতো কিন্তু অলস বলে পারতো না।
আরো কয়েকটা বই ছিল যেমন- অহংকারী বেড়ালের। শজারুর বাড়ি বাড়ি বানানো। লেজ প্রতিযোগিতার। ছোট ঘোড়ার নদী পাড় হওয়া।
৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:৪৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাবা মাকে নিয়ে এমন লেখাগুলো আমার ভীষণ ভালো লাগে। বাবার কাছ থেকে শেখা অনুভূতিগুলোকে নিজ সন্তানের মধ্যেও ফুটিয়ে তুলে একজন আদর্শ বাবা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে সন্তানকে পৌঁছে দিন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এই কামনাই করি।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক দেরিতে মন্তব্য এর উত্তর দিলাম। সাধারণত এমন হয় না।
আবেগপ্রবণ মন থেকে লেখা। ভুলভাল হতে পারে কিন্তু মিথ্যা নয়।
ভালো থাকবেন।
৭| ১১ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৮:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার আব্বার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আব্বার শরীর একেবারেই খারাপ।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বাবার স্মৃতি নিজের জীবনে প্রতিফলিত হচ্ছে 'সলি বাবা,সলি।
আপনার বাবার এখন কি কন্ডিশন শরীরের?