নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
ছবিঃ ইন্টারনেট
উত্তরা থেকে ফেরার পথে প্রায়ই আন্তঃজেলা বাস গুলোতে উঠি। এই বাসে উঠলে একটা জিনিস লক্ষ্য করি। এয়ারপোর্ট থেকে কয়েকজন যুবক ওঠে। ওরা মৃত মানুষের দাফনের জন্য সাহায্য চায়। আপনি যদি এই রুটে ৭ দিন চলাচল করেন তবে অন্তত ২ দিন এইসব স্বেচ্ছাসেবী , দরদীদের সাক্ষাৎ পাবেন।
লোকাল বাসে এরা সচরাচর উঠে না। দেখেই বোঝা যায় নেশাখোর , তারপরেও কিছু মানুষ ১০ টাকা ২০ টাকা দিয়ে লাশ দাফনে সামিল হয়। মোটামুটি ৮০-১০০ টাকা গুছিয়ে ওরা বাস থেকে নেমে যায়।
আমি একদিন বললাম , লাশ কি প্রতিদিনই দাফন করেন ?
একজন উদাস হয়ে বললো , মানুষের মরনের কি কোন ঠিক আছে ?
আমি তেমন কথা বাড়ালাম না। এই এলাকায় এদের ভয়ংকর চক্র।
আব্দুল্লাপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত প্রতিদিনই ৩ /৪ মোবাইল জানাল দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। লোকজন তাকিয়ে দেখে। লাফ দিয়ে নিতে না পারলে দাঁড়িয়ে থাকে। কোন ভয় ডর নাই।
আব্দুল্লাপুর আর এয়ারপোর্টের মাঝে আজমপুরে উত্তরা পূর্ব থানা। ওদের কাছে কেউ হয়তো অভিযোগ করে না। তাই ওরাও নিশ্চুপ।
উত্তরা আজমপুর ব্রিজে এক মহিলা একটা ছোট্ট বাচ্চা কোলে নিয়ে বসে থাকে ওজন মাপার মেশিন নিয়ে। পাশে লেখা - "এক ছেলে কওমী মাদ্রাসায় পড়ে"। ওজন মাপার টাকায় সম্ভব উনি সংসার চালান , মাদ্রাসার খরচ দেন।
মাদ্রাসার পোশাক পরা একটা ছেলে পাশেই মাস্ক বিক্রি করে। ১০ টাকায় এক প্যাকেট। এই ছেলেটাই হয়তো ওই মহিলার ছেলে। এরা কেউই এমনি এমনি টাকা নিতে চায় না। আমি একদিন কলা , কেক আর বনরুটি কিনে দিয়েছিলাম।
বেশ কিছুদিন আগে এই ব্রীজের উপর এক 'দুই পা নষ্ট' এক ভিক্ষুক বসতো। ইদানিং আর দেখি না। শুনলাম লোকজন নাকি কয়েক দিন আগে 'দুই পা নষ্ট' ভিক্ষুক কে ব্রিজ থেকে হাঁটিয়ে নিচে নামিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। 'দুই পা নষ্ট' ভিক্ষুক এখন সম্ভবত অন্য জায়গাতে ভিক্ষা করে।
এই রুটে হিজড়ার দল বেশ ঝামেলা করে । এরা আন্তঃজেলা বাসে উঠে না। আজিমপুরগামী ভিআইপি , বিকাশ পরিবহনে উঠলেই এদের দেখা পাওয়া যায়। বাসের গেট না খুললে গালিগালাজ করে। দুইতিনজনের দল বাসে উঠে মোটামুটি জোর করেই টাকা আদায় করে। গায়ে হাত রাখে অশালীন ভাবে , কোলের উপর বসে , কথা বার্তা কুরুচিপূর্ণ , টাকা না দিলে আরো বাজে আচরণ করে। আমি সাধারণত ঘাঁটাই না। টাকা দিয়ে দিই নিরুপায় হয়ে। আতংকে থাকি। কে কি বলবে ? কেউ কিছু বলেও না।
হিজড়াদের ভয়াবহ চক্র আছে। চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। শোনা যায় এদের অনেকেই নাকি হিজড়া না।
এমইএস বনানী কাকলির থেকে মাঝে মাঝে একজন হিজড়া ওঠে। কয়েক বছর ধরে দেখি। ভালো ব্যবহার , জোর করে না , কথা বার্তা পোশাক শালীন। দেখতে দেখতে পরিচিত হয়ে গেছে। আমাকে দেখলে সালাম দেয় , কুশলাদি বিনিময় করে। এক ঈদে উনাকে ১০০ টাকা বকশিশ দিয়েছিলাম। উনাকে অনেকেই দেন , মন থেকেই দেন।
ভালো খারাপ সবখানেই আছে।
উত্তরাতে যেদিন এক মহিলা বাস এক্সিডেন্ট করলো। রক্তাক্ত দেহটাকে টেনে তুললো দুজন হিজড়া। পাঁজাকোলা করে তুলে ছুটতে ছুটতে বলতে থাকলো - '' মা কে বাঁচাও , আমার মা কে বাঁচাও।"
২০১৫ সালের ৩০ মার্চ ব্লগার ওয়াশিকুরকে হত্যার পর পালাতে থাকা দুই জঙ্গি আরিফুল ইসলাম ও জিকরুল্লাহকে আটকে দিয়েছিলেন লাবণ্য হিজড়া। কোন পুরুষ সাহস করে নি। সাহস করেছিল একজন হিজড়া। শোনা যায় নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি এলাকা ছেড়ে ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি দেশ ছাড়তেই বাধ্য হয়েছেন।
আমার একরুটের বাসটা চলতেই থাকে। সবুজ সিগন্যালে থামে। আবার চলতে থাকে। চলতে চলতে জীবনকে দেখায় , জীবনের গল্প বলে। গন্তব্যে পৌঁছনোর আগে আরো একটি গল্প তৈরী করে হয় ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৯
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ঢাকা নিশ্চয় আপনাকে ভয়ঙ্কর কিছু দেখিয়েছে , জানিয়েছে।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৫৫
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
ঢাকার ওভারঅলচিত্র আপনাকে মানবিক হতে সহায়তা করতে চাইবে না।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
মাঝে মাঝে অনেক ঘটনা মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:০০
নীল-দর্পণ বলেছেন: ঢাকা-মাদারীপুর রুটে রাজৈর এর দিকে সেদিন একলোক বাসে উঠে বললেন, "এইখানে এক শ্রমিক কাজ করতে গিয়া স্টোক করে মারা যা, গোসল করানো হইতেছে, দাফন করতে বাড়ী নিতে খরচে সাহায্য করেন।" ওনার বলার ভংগীতে খটকা লাগল কারন যার গোসল দেওয়া হচ্ছে তার জন্যে হুট করে টাকা তুলতে কেউ আসলে হকারের মত এমন অভিজ্ঞ সুর হবে না! একটা স্টপেজ পরেই দেখি সেই লোক আবার বাসে এবং একই কথা!! বুঝতে বাকী রইল না যে মিথ্যা বলে ব্যবসা এটা ওনার। মনটা এমন বিষিয় উঠেছিল!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
এদের অনেক ইনকাম। মানুষ বোঝে কিন্তু কিছু বলে না।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা শহরের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।
আমাদের দুই মেয়র কি এসব জানেন না? বুঝেন না?
শুধু ঢাকায় না। পুরো বাংলাদেশেই মৃত ব্যাক্তির জন্য চাঁদা তোলা হয় বাস থেকে।
প্রতিদিন বাসের জানালা দিয়ে অসংখ্য মানুষের মোবাইল নিয়ে যাচ্ছে। যে জায়গা গুলোতে মোবাইল নিয়ে যায় সেখানে কোনো পুলিশ থাকে না। পুলিশ গুলো গলির ভেতর বসে মোবাইল টিপাটিপিতে ব্যস্ত।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৬
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
কচুক্ষেতে এক মুরুব্বীকে তিন দিন ঔষুধ কিনে দিয়েছিলাম।
পরে জানলাম মুরুব্বি ওই ঔষুধ বিক্রি করে। পরে একদিন ওষুধ না কিনে বনরুটি দিয়েছিলাম।
৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: সত্যি ঢাকা শহর দূষিত শহর হিসেবে নিজেকে তুলে ধরছে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
দূষণে ঢাকা প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৪
কামাল১৮ বলেছেন: জীবিত মানুষের চেয়ে মৃত মানুষের প্রতি দয়া বেশি।এরা অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৩০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
মানুষ সম্ভবত নিজের দাফনের কথা চিন্তা করে।
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- লেখাটি চমৎকার হয়েছে। পোস্টে + রইলো।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৩২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। দুই পা নষ্ট ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়বে।
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: যদি বউ বাচ্চা নিয়ে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে চান, উন্নত জীবন চান তাহলে এই দেশ ছেড়ে উন্নত কোনো দেশে চলে যান। দিন দিন এই দেশের আরো গজব অবস্থা হবে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: উত্তর দেশে যাওয়ার মত কোন অবস্থা এখনো হয়নি।
সুযোগ বোধহয় হবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ঢাকাতে যেতে আমার এখনও ভয় করে।