নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি \'স্মৃতিকাতরতা \' নামক ভীষণ এক রোগগ্রস্ত, সেই সাথে বিষাদগ্রস্থ মানুষ। আমার চিকিৎসার প্রয়োজন।

স্বপ্নবাজ সৌরভ

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......

স্বপ্নবাজ সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইদানিং কিছু স্বপ্ন ঘুরে ফিরে দেখছি .....

০২ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:০৮




দ্বিতীয় বর্ষ শেষের দিকে। আমার এইচ এস সি পরীক্ষা। প্রিপারেশন ভালো না। পড়বো পড়বো করে পড়া হয়নি। ফিজিক্স , কেমিস্ট্রি , বায়োলজি কোনটাই মাথায় ঢুকছে না। সময় একবারেই নাই।

কিছুদিন পর পর স্বপ্নটা ঘুরে ঘুরে দেখছি। স্বপ্নের কথাটা আজ বাসের ভেতর মনে হলো। তখনি নিশ্চিত হলাম এই স্বপ্ন আগেও দেখেছি।
ছাত্রাবস্থায় কমন স্বপ্ন ছিল পড়া আর পরীক্ষার বিষয়ক। ঘুম ভেঙে গেলেই রেশ চলে যেত। কিন্তু এই স্বপ্নটা খুব অস্থির করছে। মাথায় চেপে বসছে। কারণ বুঝছি না। স্কুলে থাকতে প্যান্ট না পরে স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন অনেক দেখেছি। জানি না সেই স্বপ্ন আবার দেখতে হবে কি না। ইন্টারমিডিয়েট সায়েন্স এর সময়কাল আমার জন্য খুব হতাশার ছিল। ওই হতাশার থেকেই এইসব স্বপ্ন হয়তোবা। ইন্টারমিডিয়েট ভালো হলে হয়তো জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো। আমি ছাত্র হিসেবে খুব একটা খারাপ ছিলাম না।


ছোটমামা আমাদের বাসার জন্য একটা কুকুর আনলেন। মানে আমার কুকুর। এর আগে আমাদের বাড়িতে টমি নামের একটা কুকুর ছিল। ও মারা গিয়েছে অনেক আগে। অনেকদিনপর বাড়িতে কুকুর এলো। তাও আবার আমার। আনন্দের শেষ নাই। কালো রঙের একটা ছোট্ট কুকুর ছানা। লেজ কাটা। কাটা লেজের ঘাঁ শুকিয়ে যাবার পথে। দাদা আবার হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়ালেন। কুকুরটার নাম রাখা হলো ভুলু। ভুলুর সাথে আমার দারুন সময় কাটতে লাগলো। আমি তখন ক্লাস টু তে পড়ি। সকালে রুটি টুকরো টুকরো করে ভুলুর দিকে ছুড়ে দেই আর ভুলু দারুন তৎপরতায় রুটির টুকরো শূন্যে থাকতেই মুখে পুড়ে নেয়। দেখার মত একটা ব্যাপার।

দুপুরে খাবার দেয়ার জন্য দুটো মালশা কেনা হলো। একটা ভাতের আরেকটা পানির। বিকালে দেয়া হয় পাউরুটি। মাঝে মধ্যে দুধ। রাতে ভাত /রুটি।
ভুলু ঘেউ ঘেউ করে রাতে চোর তাড়ায়। দিনে অপরিচিত মানুষদের বিনা অনুমুতিতে বাড়িতে ঢুকতে দেয়না। ভুলুর ভয়ে বিড়াল বেল গাছে বসে থাকে। নামে না।

ভুলু তখন একটু বড় হয়েছে। বিকালে আমার সাথে মাঠের ঐপারে চলে যায়। আমার পিছে পিছে দৌড়ে বাড়ি ফেরে।
একদিন সন্ধ্যায় বাড়ির ময়দানে দাঁড়িয়ে দেখি ভুলু মাঠের ঐপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ডাক দিলাম, ভুলুউউউউউ !
ভুলু আমার ডাক শুনে একদৌড় দিলো। আমিও দৌড়ে বাড়ি ফিরছি। ভুলু দৌড়ে এসে আমার পিঠে উঠে পড়লো। সামনের দুপায়ের দাঁড়ালো নখের আঁচড়ে আমার পিঠে ক্ষত সৃষ্টি হলো। রক্ত বের হতে লাগলো। আমি কাঁদতে লাগলাম।

বিষ যাতে না লাগে দাদা কি সব ঔষধ দিলেন। ডেটল দিয়ে পিঠ পরিষ্কার করে দিলো কেউ। কেউ আবার ভুলুর পেটে লাথিও মারলো। ভুলু কুই কুই করতে করে বাড়ির এক কোণে বসে থাকলো।
ভুলু বাড়ির ওই কোণা থেকে আর নড়তো না। ওকে পানি আর খাবার দেয়া হতো। আমি যে কয়দিন অসুস্থ ছিলাম ভুলু পানি ছাড়া কিছুই খেতো না।

আমি সুস্থ হলাম। বিকালে আব্বা টোস্ট বিস্কুট নিয়ে আসলো। দুইখানা বিস্কুট নিয়ে আমি বাড়ির বাইরে গিয়ে দেখি ভুলু মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ডাকলাম , ভুলুউউউ !!
ভুলু তিড়িং বিড়িং করে লাফাতে লাফাতে দৌড়োলো আমার দিকে। এবার আর গায়ে উঠলোনা না। আমার সামনে লাফাতে লাফাতে লেজ নাড়াতে লাগলো। আমি টোস্ট বিস্কুট ছুড়ে দিলাম। দারুন কসরতে লুফে নিলো। করমড় শব্দে খেতে লাগল।


ভুলু মাঝে মাঝে আমার সাথে স্কুল গেট পর্যন্ত যেত। স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তায় বসে থাকতে দেখতাম। ঢাকা আসলে কোচস্ট্যান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দিতো। কোচ ছাড়লে পিছে পিছে দৌড়াতো।


ভুলু বেশ কয়েক বছর বেঁচে ছিল। একদিন সকাল থেকে ভুলুকে পাওয়া গেলো না। অনেক খোঁজার পর মাঠের ওই পাশে ভুলুকে পড়ে থাকতে দেখা গেলো। আমরা গিয়ে দেখলাম মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। বিষ খাওয়ানো হয়ে ছিল ওকে।
আসরের নামাজের পর ভুলুকে কবর দেয়া হলো বড় ফুফুর নারিকেল আর লেবু বাগানের একপাশে। প্রিয়জন হারানোর কষ্ট পেলাম খুব। কাঁদলাম।
কাঁদতে কাঁদতে আব্বা কে বললাম , বেহেশতে কি ভুলুকে পাওয়া যাবে ?
আব্বা কিছু বললেন না। শুধু পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন।


স্বপ্ন দিয়ে শুরু করেছিলাম। আমি ইদানিং আরেকটা স্বপ্ন খুব দেখছি।
বাড়ির বাইরে এসে দেখি ভুলু মাঠের ঐপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চিৎকার করে ডাক দেই , ভুলুউউউউ।
ভুলু আমার ডাক শুনে দৌড়ে ছুটে আসছে। আমিও দৌড়াচ্ছি , ভুলুও দৌড়াচ্ছে।





*জলদস্যুর আশ্রমের কুকুর গুলো হারিয়ে গিয়েছে। আশ্রমের একটা কুকুরের নাম ছিল ভুলু।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৫৪

সোনাগাজী বলেছেন:



এগুলোকে বলে "nightmare", এগুলো জীবনের কোন ঘটনার সাথে যুক্ত; মনে হয়, আপনি প্রতিদিন পড়ালেখা না'করে, পরীক্ষার আগে দিনরাত পড়তেন ও ভয়ে ভয়ে থাকতেন।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
নাহ। পরীক্ষাভীতি ছিল। পরীক্ষার আগে টেনশনে বমি করতাম। পরীক্ষার আগে একেবারেই পড়া হতো না।

আপনি চাঁদগাজী বিষয়ক পোস্টটা ড্রাফটে নিয়েছেন ?

২| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:২৬

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


কুকুর প্রীতি ছিলো,স্বপ্নেও এসেছে। এখন কি খবর, পালন করা হয়?

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বাড়িতে থাকা হয়না। কুকুর পোষা হয়না। এবার বাড়িতে খড়ি রাখার ঘরে কুকুর বাচ্চা তুলেছিল। বাড়িতে গিয়ে দেখলাম ছয়টা বাচ্চাই বেঁচে আছে। বড় হয়েছে। ছবিটা ওদের।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৩১

সোনাগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন: নাহ। পরীক্ষাভীতি ছিল। পরীক্ষার আগে টেনশনে বমি করতাম। পরীক্ষার আগে একেবারেই পড়া হতো না।

আপনি চাঁদগাজী বিষয়ক পোস্টটা ড্রাফটে নিয়েছেন ?

-না, আমি ড্রাফট করিনি; সামুটিম ড্রাফট করেছে ও বলেছে, উহা আবার পোষ্ট করলে, ব্যবস্হা নেয়া হবে।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

আপনি তাহলে সোনাগাজীতেই লিখুন। আমরা আপনাকে চাঁদগাজী বলেই সম্বোধন করবো।
যদি সম্ভব হয় চাঁদ-গাজী নিক খুলতে পারেন। সোনাগাজী নিকটা পছন্দ হয়না।

৪| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১০

চারাগাছ বলেছেন:
শুধু ভুলুর কথা লিখলে মনে হয় ভালো হতো। প্রথম স্বপ্নের কথা আলাদা কোন পোস্টে দিতে পারতেন।
হয়তো আপনি স্বপ্ন গুলো মিলিয়ে একটা পোস্ট দিতে চেয়েছেন , দিয়েছেন।


যারা কুকুর ভক্ত তাদের অনেকেই বিড়াল পছন্দ করে না। আপনার কি মনোভাব ?
ভুলুর পরে আর কোন কুকুরের জন্য কেঁদেছেন ?

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:২৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
চারাগাছ বলেছেন:
শুধু ভুলুর কথা লিখলে মনে হয় ভালো হতো।


আমরা তাই মনে হচ্ছে। তবে এখন আর শিরোনাম বদলাতে ইচ্ছা করছে না।

বিড়াল আগে ঘৃণা করতাম। এখন অপছন্দ করি।
ভুলুর পরে আরেকটা কুকুর ছিল। কলেজে থাকতে।
ওটাকেও মেরে ফেলেছে বিষ খাইয়ে। কেঁদে ছিলাম।
ওই গল্প আরেকদিন বলবো।

৫| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: মায়াময় একটি লেখা লিখেছেন।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:২৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আরো সুন্দর করে লেখা যেত। স্বপ্ন দেখা নিয়ে লেখা শুরু করে ভুলুতে এসে শেষ করলাম। পরিকল্পনাহীন লেখা।

ধন্যবাদ মন্তব্য আর মায়ায়।

৬| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:০৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
একেক জন একেকটা স্বপ্ন কমন দেখে।

কুকুর ও বিড়াল পালার শখ আমার কোনদিন ছিলনা। কুকুর যে প্রভু ভক্ত হয় সেটার আরেকটা প্রমাণ পেলাম লেকায়।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:১৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমার আরেকটা কুকুর ছিল কলেজ লাইফে। দোকানে চা খেতে গিয়ে দেখা হয়ে ছিল। একটা বিস্কুট খেতে দিয়েছিলাম। এরপর সাথে বাসায় চলে এসেছিলো। মরা পর্যন্ত সাথেই ছিল। আর যায়নি।

সেই গল্প আরেকদিন বলবো।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:১০

সোনাগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন:
আপনি তাহলে সোনাগাজীতেই লিখুন। আমরা আপনাকে চাঁদগাজী বলেই সম্বোধন করবো।
যদি সম্ভব হয় চাঁদ-গাজী নিক খুলতে পারেন। সোনাগাজী নিকটা পছন্দ হয়না।

-নোয়াখালীর সোনাগাজীও আমার জীবনের উক্সপর প্রভাব রেখেছে।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:১৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
তাহলে সোনাগাজীতেই থাকুন। তবে চাঁদগাজী ফিরে না এলেও থাকবে।

৮| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:২৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ছত্রজীবন শেষ হয়ে যাওয়ার অনেক বছর পরেও আমি পরীক্ষা নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম।

০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৩৩

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

ইদানীং খুব দেখছি।

৯| ০৩ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:০৪

সোহানী বলেছেন: কোন কারনে তোমার মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে......।

আমাদের কুকুরের নাম ছিল টমি। লিখবো ওকে নিয়ে।

০৩ রা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:১৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। অনেক মাস ধরেই বিক্ষিপ্ত।



আমার আরেকটা কুকুর ছিল। সেই গল্প লিখবো। এটা যতটা ভালো লেখা উচিত ছিল লিখতে পারিনি।

১০| ০৩ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

০৩ রা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বিশেষ কিছু নেই পোস্টে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.