নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব কিছুর উর্ব্ধে উঠা যায় না, তবু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়...
কাজের সুবাদেই একটা সময় অনেক জায়গায় ঘুরেছি; জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা, তারপর গ্রাম থেকে গ্রামে । কথা বলেছি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে । সেটাও আজকের কথা নয় । এরপর দীর্ঘ বছর আর কোথাও যাওয়া হয়নি আমার । আর পুরানো এই বটবৃক্ষের ছায়ায় নিজেকে দেখতে পাওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা । সেটা যতই দু'শ বছরের প্রাচীনই হোক না কেন ।
যাইহোক, তবুও গিয়েছিলাম এক অবসরে । যদিও আমার ইচ্ছাতে নয়, বলা যায় আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কয়েজন মিলে আমার পরিবারের সাথে সেখানে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে বেড়ানোর জন্যে । আর ওখানে গিয়ে প্রাচীন এই বটবৃক্ষটিকে দেখে প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম যে, খোদ ঢাকা জেলার মধ্যেই এত পুরাতন একটা বটগাছ দেখে ।
এবার আসি গাছটির ইতিকথায়, স্থানীয় কয়েকজন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল, গাছটিকে ঘিরে কিছু আজগুবি কাহিনীসহ কিছু তথ্য । গাছটি প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমির উপর অবস্থিত, এর অসংখ্য ঝুড়ি যাকে আমরা বটের ঝুড়ি বলি, তা এতটাই মোটা হয়ে মাটির নিচে পুঁতে গিয়েছে যে, প্রতিটা ঝুড়িকেই মনে হবে এক একটা আলাদা গাছ এবং সব চেয়ে মজার ব্যাপার হল, এসব বটের ঝুড়ির ধাঁধাঁয় আপনি বুঝে উঠতে পারবেন না যে, কোনটি আসলে মূল গাছ ।
গাছটির এক পাশে আছে একটি কালীমন্দির । স্থানীয় লোকজনের ভাষায় এই কালীমন্দিরটির বয়সও প্রায় দেড়'শ বছরের উপরে । যদিও মন্দিরটি নাকি বিভিন্ন সময় সংস্কার করা হয়েছে । কিন্তু এটির বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয়না বড় কোন সংস্কার এটার করা হয়েছে ।
প্রাচীন এই বটবৃক্ষটি সাইট্রা গ্রামে অবস্থিত । যে গ্রামের প্রায় নব্বই ভাগের উপরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস । একটা সময় মৃত কোন মানুষের স্মৃতির উদ্দেশে মাঠের ভিতর কেউ কেউ এরকম মঠ বানিয়ে রাখত, যেটা সম্পর্কে পূর্বে আমার কোন ধারণাই ছিল না এবং এটি দেখার পর মনে হয়েছিল ছোট বেলায় পড়া বঙ্কিম চন্দ্রের 'আনন্দমঠ' উপন্যাসটির কথা ।
যাইহোক, সাইট্রা গ্রামের মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার ভাল হলেও অর্থনৈতিক দিক থেকে তারা ততটা ভাল অবস্থায় যেতে পারেনি । বাংলাদেশের আর দশটা গ্রামের মতই এই গ্রামে সব ধরণের ফসলের চাষ হলেও একটা একেবারে ব্যতিক্রমী ফসলের চাষ করে, আর তা হল লেবু চাষ । মাঠের দিকে তাকালে দেখা যায় প্রচুর লেবুবাগান এবং গ্রামটি ঢাকার পাশে অবস্থিত হওয়ায় কৃষকেরা লেবুর দামও ভাল পায় ।
এ ছাড়াও এই গ্রামের মাঠে পুকুর কেটে করা হয় মাছের চাষ, তবে সেটা করা কিছুটা ব্যায়বহুল । এ ছাড়াও মাঠের ভেতর আছে কয়েকটি ব্রিকফিল্ড, যা কেবল অধিক টাকাওয়ালারাই করতে পারে । সব মিলিয়ে প্রাচীন বটবৃক্ষটি দেখার পাশাপাশি গ্রামটি আমার মন্দ লাগেনি ।
প্রাচীন এই বৃক্ষটিকে দেখতে যাবার লোকেশন হল, প্রথমে ধামরাই বাজার থেকে অটোরিক্সা যোগে ধানতারা যেতে হবে, ওখান থেকে আলাদা অটো রিজার্ভ করে সাইট্রা গ্রামে যাওয়া যায় । ধামরাই বাজার থেকে জনপ্রতি খরচ হবে ৪০/৫০ টাকা । এখানে উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রথ বা রথের মেলা প্রতি বছর ধামরাইতে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা সবাই মোটামুটি ধামরাইকে চিনি । কারণ রথ যাত্রার ইতিহাসটাই নাকি ধামরাই থেকে শুরু । ধামরাই হল, ঢাকা জেলার (পশ্চিমে সাভারের পর) একটি উপজেলা ।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:২৯
সাইন বোর্ড বলেছেন: পড়া ও মন্তব্য রাখার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ।
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগলো ছবি গুলো তবে বট গাছ দুই শ' বছর হবে না। আরো অনেক কম হবে।
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো পোস্ট
৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩১
শেহজাদী১৯ বলেছেন: বটবৃক্ষ যেন বিশালতার প্রতীমা।
৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।
দারুন এই বটবৃক্ষকে কেন্দ্র করে বিশাল পর্যটন সম্ভাবনা কিন্তু আছে।
কিন্তু আমাদের পর্যটন সম্পৃক্তরা এসি রুমের বাইরে বুঝি যাননা খুব একটা।
খুঁজে পেতে সম্ভাবনাকে বাড়ানোর কষ্ট কে করে???
দারুন অভিজ্ঞতা শেয়ারে ধন্যবাদ।
৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৩৬
মা.হাসান বলেছেন: আপনার পোস্টটি খুব ভালো লাগলো। এশিয়ার সব চেয়ে বড় বটগাছ ও কিন্তু আমাদের দেশেই, এই লিংকটি দেখতে পারে--বেথুলি গ্রামের বটবৃক্ষ।
এই ছবিটা গতকাল তোলা, গর্তটা দেখে একটু ভয় ভয় লাগে।
৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৫৬
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
আমি গিয়েছিলাম ২০১০ সালের দিকে এক হিন্দু পরিবারের বিয়ের দাওয়াতে, আমি খুব অবাক হয়েছিলাম ওখানকার লেবু চাষ দেখে, প্রায় উঁচু স্থানে লেবুর বাগান।
আপনার লেখাটি পড়ে কিছুটা স্মৃতির পাতায় চোখ বুলালাম।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:২৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ভ্রমন অভিজ্ঞতা সুন্দর হলে দিনটি সার্থক মনে হয় ।
........................................................................
ধন্যবাদ আপনার ভ্রমন বার্তার জন্য