নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের খোঁজে দেখি তোমায় /বাঁধি সীমাহীন ভালোবাসায়/দাও কিছু সুখের বৃষ্টি / ভিজি আমি /উড়াই দিগন্তের নীলিমায় তোমার নামে / স্বপ্নের এক বিশাল ঘুড়ি।

স্প্যানকড

আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।

স্প্যানকড › বিস্তারিত পোস্টঃ

নক্ষত্রের পতন হয় চুপিসাড়ে !

১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:১৮

ছবি নেট ।

" যে দেশে মরা মানুষ ভোট দিতে পারে অথচ জীবিতরা পারে না! সে দেশে সব সম্ভব! " বাক্যটি রেলগাড়ীর মতন গড়গড় করে বলে গেল শ্যামল। যদিও বন্ধু মহলে বিপ্লবী মাষ্টার দা বলে ও পরিচিত।

এই নামকরণ এর কারণ টিউশনি ওর ইনকাম সোর্স। আর এমন রাজনৈতিক দর্শন এ চলছে বলে বন্ধু মহল এই টাইটেল ওকে দিয়ে রেখেছে। শ্যামল ও কোন টু শব্দ করেনি। মাথা পেতে নিয়েছে।

বন্ধু মহলে এমন দু একটা টাইটেল সবার আছে। যা শুধু ওদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যা আমরা একটু পর জানতে পারব।

রুপ নগর একটা মফস্বল শহর। এর পাশ দিয়ে যে নদী বয়ে গেছে তার পাড়েই রাকিবের মুরগির ফার্ম। ফার্মটি শহর এর এক কোণায় অবস্থিত।সে ফার্মে আজ জলসা বসেছে। ফার্মটির আশ পাশে ধানের জমিন।
রাত তখন প্রায় নয়টা। মফস্বল শহরে শীত কালে এই মেলা রাইত। নদী দিয়ে বালুর ট্রলার যাচ্ছে তার হ্যারিকেনের আলোতে নদীর কুচকুচে কালো পানিতে এক অন্যরকম দৃশ্য তৈরী হচ্ছে। যদিও নদীর পানি এখন অনেক কম তার উপর প্রচুর কচুরিপানা। মাঝে মাঝে ট্রলার ফেঁসে যায়। তখন অনেক কষ্ট করে ট্রলার চালাতে হয়। 

ফার্মের পাশেই একটা টিনের চালের ছোট দুইটা কামরা সম্বলিত একটা ঘর। এর এক কোণে মাটির একটা কলস। যাতে পানি থাকে আর কিছু থালা বাসন, কাঁচের গেলাস, হাঁড়ি পাতিল, একটা চকি আছে আর লেপ কাঁথা। এতে রাকিবের পরিচিত এক গরীব আত্মীয় থাকে যে কিনা ওর ফার্ম দেখাশোনা করে। ওরা এই চকির উপর বসেই তাস খেলে আড্ডা দেয়। জলসা করে।

রাকিব দীর্ঘদিন সৌদি আরব ছিল। কলেজ পড়ার সময় সৌদি আরব চলে গেছে। বছর দু এক হইল বিয়ে করছে। একটা মেয়ে আছে এক বছরের। এখন দেশে এসে এই ফার্ম আর বাজারে রড, ইট, সিমেন্ট এর দোকান দিয়েছে। যার আয় দিয়ে ভালোই চলছে। দোকানের নাম দিছে আল দাম্মাম। রাকিবের নামের সাথেও এই দাম্মাম শব্দটি লেগে গেছে এখন বন্ধু মহল ডাকে দাম্মাম রাকিব!

দাম্মাম রাকিব মাষ্টার দা'র কথা শুনে বলতে শুরু করল ব্যাটা!দুই পাতা কার্ল মার্ক্স, চে, সমরেশ পড়ে এখন বিপ্লবী হতে চাও? এসব ফ্যাঁদা প্যাঁচাল রাইখা কেমনে দুই পয়সা কামান যায় সেই চিন্তা কর কামে দিব। হুদাই রাজনীতি মারায়।

আরে ব্যাটা! দুই পোটলা গাঞ্জা পকেটে দিয়া পুলিশ যখন হোগার ভিতর লাথি দিয়া জেলে ভরব তখন এই রাজনৈতিক আর বিপ্লবী হওয়ার কৃমি বের হয়ে যাবে। খালি বকবক করে।

এমন সময় পাশ থেকে একটা বিশ্রী হাসি দিয়ে সহমত জানিয়ে দিল রকি উরফে লুইচ্চা রকি। এর নামকরণ এর কারণ ওর প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেছে এখন সেই মেয়ের সনে পরকীয়া করছে। মেয়েটির স্বামী বিদেশ। বন্ধু মহল এসব ছাড়তে বলে বিয়ে করার কথা বলে। লুইচ্চা রকির মতামত হলো, রাখ ব্যাটা! বিয়ে তো করতে চাইছিলাম ওরে। কি করল বেকার বলে মা, বাবার কথায় বিদেশি পাত্র দেইখা চলে গেল। এখন যখন ঠ্যাং ছড়ায় দিছে আমার ঠাকুর ভরতে অসুবিধা কি! রকি এখন একটা ঔষধ কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার। প্রতি শুক্রবারে ওদের এই জলসা বসে।

তবে আজকের টা একটু স্পেশাল কারণ আজ শরবত পার্টি! মানে মাল খাওয়ার পার্টি। এমনিতে গাঞ্জা টেনে টেনে একেকজন এর চোখ লাল!

দাম্মাম রাকিব ওর আত্মীয় কে বাজার থেকে গরম গরম পরোটা আনতে পাঠিয়েছে। বিকেলের দিকে মুরগির তরকারি রান্না করা হয়েছে। যদিও লুইচ্চা রকি বলছিল গ্রিলের কথা। পরে আর হয়নি।

দাম্মাম রাকিব বলতে লাগল এই মাদারচোদ!  পলাশ আইব কখন? হালায় নয়টার দিকে মাল নিয়া আসার কথা।এখন সাড়ে নয় বাজে। মাল আইছে ইউরোপ থেকে। পলাশ ইটালি থাকে আসার সময় বন্ধুদের অনুরোধে দুই বোতল চিভাস নিয়ে আসছে। যদিও অনেকে বলছিল ভোদকার কথা। পলাশ শুনে বলেছিল, উহা পান করিলে ন্যাংটো হইয়া পানিতে নামিতে হইবে। আমাগো দেশের ওয়েদারে যায় না। আবার নিয়া আসমুনে। মাগনা মাল খাইবা আবার পছন্দ *দাও! তিনদিন হইছে দেশে আসছে।

কিছুক্ষণ পর পলাশ, মিথুন, ইকবাল তিন জন এক সাথে প্রবেশ করল সেই ফার্মে। দাম্মাম রাকিব " আহলান সাহলান! মারহাবা, মেরা ইয়ার আগায়া "! এই বলে চিৎকার করতে লাগলো।

পলাশ এর আরেক নাম পিলাশ। আর মিথুন কে ডাকে মৈথুন! ইকবাল কে ডাকে এক বাল! মিথুন উরফে মৈথুন আবার গান টান করতে জানে। এক বাল সিলভার এর হাঁড়িতে আংগুলের আংটি দিয়ে তবলার মতন বাজাতে পারে যা কিনা একটা অন্যমাত্রা যোগ করে দেয়। জলসা পুরা জমায় দেয়।

পিলাশ, মৈথুন, এক বাল এসে দাম্মাম রাকিবের সাথে গলাগলি করল। লুইচ্চা রকি হাসি দিয়া হাত মিলাইয়া বলতে লাগলো বহুদিন পর আবার এক হচ্ছি সব! এক বাল বলতে লাগলো এ ক'জন? দাম্মাম রাকিব বলতে লাগলো আরে না বিপ্লবী মাষ্টার দা আছে না। পিলাশ কইল কই ও? লুইচ্চা রকি বলতে লাগলো, হোগার পুতে চিন্তায় আছে দেশ উদ্ধার করবে, সমাজে সমতা আনবে। এদিকে যে টেবিলের তলা দিয়ে ছাত্রীর পা ঘঁষে রান ঘঁষে স্তনের সাইজ টিলা থেকে পাহাড় করে ফেলছে সে খেয়াল নাই! কিসের টিউশনি করে হালায় কাম সুত্র শিখায়! পাঁচ জনে এক সাথে হাসতে লাগলো।

বিপ্লবী মাষ্টার দা তখন অন্য চিন্তা করছে। ওদের কথা শুনতে পারছে না এদিকে রাত মেলা হচ্ছে। অন্যদিকে ওর মা অসুস্থ। চলে যাবে? না, থাকবে? বুঝতে পারছে না। দোটানায় আছে। অবশ্য ও বুঝতে পারেনি এসব হবে। দাম্মাম রাকিব ফোন করে বলছে পিলাশ আসছে আড্ডা হবে চলে আয়। টিউশনি শেষ করেই এখানে এসেছে।

ঘরের ভিতরে ঢুকেই বিপ্লবী মাষ্টার দা কে পিলাশ, মৈথুন, এক বাল হাল হকিকত জিগ্যেস করল। শরীর ঠিক আছে কি না। তারপর চকির উপর গোল করে সবাই বসল। পিলাশ মালের ব্যাগটা চকির তলে রেখে দিল যতনে। লুইচ্চা রকি একবার ব্যাগটা ধইরা চুমু খেল। বিপ্লবী বাদে সবাই চিৎকার দিয়ে উঠলো আরে ব্যাটা! চকির নীচে রাখ।

দাম্মাম রকিব বলতে লাগলো যেকোনো সময় তোরাব মিয়া চলে আসবে। পিলাশ সবাইরে বিদেশি সিগারেট দিল। লুইচ্চা রকি দুই টান দিয়া কইল ধুর! বাল! কিমুন জানি পোতাইননা।

ছেড়িগো মাল দিছত নাকি! পিলাশ খিস্তি দিয়া কইল হো*র পোলা! কুত্তার পেটে ঘি হজম হয়?  সবাই হাসতে শুরু করল। এমন সময় তোরাব মিয়া হাজির। দাম্মাম রাকিব তারে বলতে লাগলো সবাইরে পরোটা ভাজি আর তরকারি দাও। খিদা লাগছে। সবাই যার যার প্লেট নিয়ে নিল হাসি তামাশা চলছে খাওয়া দাওয়া চলছে। বিপ্লবী মাষ্টার দার মায়ের কথা মাথায় ঘুরছে। মা কি খেয়েছে? না, না খেয়ে বসে আছে কে জানে? এসব ভাবছে আর পরোটা ছিঁড়ছে একটু একটু করে খাচ্ছে। গলা দিয়ে নামছে না।

খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হতেই দাম্মাম বলতে লাগলো এই হালার পুতেরা যার যার থালা বাসন ধুঁয়ে রাখ। তোরাব মিয়া বাঁধা দিল। থাক আমি ধুঁইয়া থুমুনে। আপনারা রাহেন তো! সবাই যেন একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।

দাম্মাম রাকিব তোরাব রে কিছু টাকা দিয়ে কইল যাও ঘন্টা খানেক পড়ে আইস যাও সিনেমা দেইখা আসো। তোরাব মিয়া কইল এখন বাজে কয়টা? দাম্মাম রাকিব হুম, আচ্ছা,এক কাম কর বাকী পরোটা আর তরকারি তুমি বাটিতে তুলে বাইরে থেকে ঘুরে আস। তোরাব আলি মাথা ঝুঁকিয়ে চলে গেল।

এমন সময় লুইচ্চা রকি বলতে লাগলো আরে ব্যাটা! মাল ঢাল জলদি দাঁত কিড়মিড় করছে। সবার চোখে মুখে হাসি। বিপ্লবী মাষ্টার দা হাসেও না কাঁদেও না। মনমরা ভাব!

দাম্মাম রাকিব সবার গেলাসে ঢালতে লাগলো বিপ্লবী কে জিগ্যেস করল কিরে কি হইছে? এমন পোতাইয়া রইছত ক্যা? লুইচ্চা রকি বলতে লাগলো, এই হালারে ক্যান খবর দিছত মহল খারাপ করতে আইছে। বালের রাজনীতি মারায়! আরে ব্যাটা তোর নেতারা আছে না সব হালায় মালখোর! মাগী বাজ! ধান্ধাবাজ! এত সাধু কোন চু*র পুত! একটা দেখা আমারে। যদি দেখাতে পারছ পুরা জিন্দেগী কাপড় ছাড়া থাকমু এ বলেই এক পেগ কাঁচা মেরে দিল। মাল খা দেখবি জীবন রঙিন!

পিলাশ চিল্লান দিয়া কইল সাবাস! চু*র পুত! তুই জিতছত। পাশ থেকে এক বাল বলতে লাগলো হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে! হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে। সবাই এক সাথে হেসে উঠলো।

দাম্মাম রাকিব আরো সবাই কোকের সাথে চিভাস মিলিয়ে নিল। আস্তে আস্তে সবার নেশা একটু একটু করে চড়ছে। মাষ্টার দা চুপচাপ গেলাস নাড়ছে একটু চুমুক দিয়েছে। লুইচ্চা রাকিব দুই পেগ মেরে দিয়েছে এখন তিন নাম্বার চলছে। পিলাশ বলতে লাগলো এই চু*র পুত আস্তে খা। এইডা কি শরবত!

এমন সময় এক বাল মৈথুন রে কইল, কিরে কোন গান টান ধরবি না?সবাই তখন এক সাথে হইহই করে উঠল। দাম্মাম রাকিব সিলভার এর পাতিল টা এনে দিল এক বাল উহাতে তাল তুলতে লাগলো। মৈথুন বলল, কোনটা ধরমু? সবাই বলল, হিন্দি মিকা শিং! বলে দুই আংগুল গরুর শিং এর মতন করল।

মৈথুন শুরু করে দিল গান আর এর পুর্বে কয়েকটা অশ্লীল লাইন বলে দিল। বলল ঐ জায়গায় আসলে সবাই গাইতে থাকবি ওকে। সবাই হুম বলল একসাথে।

শুরু হলো গান
" ও শাওয়ান ম্যাঁ লাগ গায়ি আগ
  দিল মেরা হায়
  শুনলে এ হাসিনা
  পাগল চু*না।।
  শুনলে এ হাসিনা
  পাগল চু*না।।
( কোরাস )
আজ না শোয়া সারি রাত
দিল মেরা হায় "!

গানের তাল হাসাহাসি ঢলাঢলি লুইচ্চা রকি গায়ের সোয়েটার খুলে ফেলেছে। এখন চকি থেকে নেমে মাফলার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নাচছে। বিপ্লবী মাষ্টার দা এখন খুব হাসছে বেবাক হতাশা দূরে চলে গেছে যেন বরফ গলা কোন নদী! ছুটে চলছে তো চলছে।

গান শেষ হওয়ার পর সবাই একটু থামল। বোম্বাই চানাচুর খেতে লাগলো, আলুর চিপস খেতে লাগলো। লুইচ্চা রকি ঘেমে পুরা অস্থির!

এইবার বিপ্লবী মাষ্টার দা কে সবাই দেখল লাইনে আসছে। মানে হাসছে। বিপ্লবী মাষ্টার দা বলতে লাগলো,আইচ্ছা মৈথুন, ভালো গান গুলিরে এমনে *প না দিলে হয় না। মৈথুন চিল্লান দিয়া কইল মামা ইহাকে বলে রেইপ! সবার সে কি হাসি!

এরপর পিলাশ কইল আর কারে রেইপ করছত? গুরু নাই তো লিস্টে?

মৈথুন বীরের মতন হাসি দিয়া কইল কাউরে ছাড়ি নাই! এইবার পাশ থাইকা লুইচ্চা রকি বলতে লাগলো তাইলে গুরুর টা ধর। দেখি তোর মেধা!

মৈথুন এক বালকে ইশারা দিল। এক বাল আবার তাল তুলতে লাগলো সবাই এখন প্রায় মাতাল! কি হচ্ছে। কি করছে সে খেয়াল নাই। এক বোতল শেষ আরেক বোতল এর অর্ধেক বাকি আছে। মৈথুন গান ধরল,

( বাকি অংশ পরে ) 




মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আপনার গল্পের চেয়ে কবিতা সুন্দর।

১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৬

স্প্যানকড বলেছেন: তাই নাকি ! এগুলা জীবনের কথা । ভালো থাকবেন।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৫০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কিছু অশ্লীল কান্ড না বর্ণনা করলেই পারেন :(

১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

স্প্যানকড বলেছেন: আপু যা দেখছি তাই বর্ননা করি। সমাজে এমন চরিত্রের মানুষ বেড়ে গেছে তাছাড়া বন্ধু মহলে এগুলা ডাইল ভাত! খারাপ লাগলে দুঃখিত। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.