নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।
ছবি নেট ।
মিরপুর শ্যাওড়াপাড়ার ৮৬/ ১ ক এই বাড়ির বর্তমান মালিক শাহেদ৷ বয়স চল্লিশের ঘরে। বিয়ে-শাদি করে নাই। শাহেদের দাদা কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসে ব্যবসার খাতিরে তারপর এখানেই থেকে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এক হিন্দু পরিবার একেবারে দেশ ছেড়ে কলকাতায় চলে যায়। যাদের ছিল মুদি দোকান আর চাউলের আড়ত। তার সাথেই শাহেদের দাদার ছিল কাপড় এর দোকান। অন্য ধর্মের হলেও এদের ভেতর দ্বন্ধ ছিল না। সৎভাব ছিল। দীর্ঘদিনের ছিল বন্ধুত্ব। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শাহেদের দাদা এদের আগলে রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা করতে পারেন নি। রাজাকাররা এদের বাড়িতে হানা দেয়। সদ্য বিবাহিত হরিদর এর ছেলের যুবতী বউকে তুলে নিয়ে যায়। ছেলে দিবাকর কে উঠোনে জবাই করে উল্লাস করেছিল রাজাকার ইনায়েত মুন্সি। নামে মুন্সি থাকলে কি হবে ছিল পুরা জল্লাদ ! মুন্সি হাসতে হাসতে মানুষ জবাই করতো আর বলতো, " মালাউন মারলে আল্লাহ এবং রাসুল খুশী। এরা ইসলামের দুশমন ! "
হরিদর তখন উপায় অন্তর না পেয়ে দোতলা বাড়িটা জলের দামে শাহেদের দাদার কাছে বিক্রি করে যায়। শাহদের দাদা অবশ্য বলেছিলেন " হরিদর এ বাড়ি তোমার। যখন খুশী আসবে থাকবে আমার কোন আপত্তি নেই। চাইলে তুমি নিয়ে নিতে পারবে "।
হরিদর কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, যে দেশে জীবন এর এত সময় ব্যয় করলাম, যার আলো বাতাসে এত বড় হইলাম। সে দেশটা কি হইয়া গেল। ধর্ম ধর্ম কইরা মানুষ জানোয়ার হইয়া গেল। আচ্ছা, লতিফ ভাই ( শাহেদের দাদার নাম ) ধর্ম তো এসেছে মানুষ কে অমানুষ থেকে মানুষ বানাতে কিন্তু মানুষ তো ধর্ম করতে করতে অমানুষ হচ্ছে ! "
হরিদর প্রচন্ড ঘৃণা আর ক্ষোভ থেকে কথা গুলি বলেছিল। ওর সারা শরীরে তা প্রকাশ পেয়েছিল। শাহেদের দাদা শুধু বলেছিল, হায়েনার কোন ধর্ম নাই। ও শুধু জানে ছিনিয়ে নিতে, ও শুধু রক্ত ভালোবাসে । " হরিদর কে গলায় জড়িয়ে শাহদের দাদা আরও বলেছিল, সময় আসছে হরিদর প্রতিটা খুন, ধর্ষণ আর অত্যাচার এর বিচার করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। "
হরিদর চোখ মুছতে মুছতে সেই যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল আর একবারও ফিরে তাকায়নি। শাহেদের দাদা পিছন থেকে বলেছিল, " সাবধানে যেও হরিদর! আল্লাহ তোমার সহায় হোন । " হরিদর চোখ মুছে আর একাত্তরের রক্তাক্ত বাংলার জমিন, আসমান দেখে। খোদারে এত খুঁজে তাঁর দেখা মিলে না !
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১১
স্প্যানকড বলেছেন: একদম সত্যি আপু। খুব ছোটবেলায় কখনো এত ভেদাভেদ দেখি নাই অথবা ছোট ছিলাম বলে বুঝি নাই হতে পারে। তবে মিলেমিশে থাকার অনেক গল্প বলতে পারি যখন নানু বাড়ি বা দাদা বাড়িতে যেতাম দেখতাম হিন্দু, মুসলিম বা অন্য ধর্মের তেমন ভেদাভেদ চোখে পড়েনি। এখন চোখে পড়ার মতন ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়ে গেছে। এর পিছনে মৌলোভী আর রাজনীতি অনেক অংশে দায়ী। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন সব সময়।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৪
সোবুজ বলেছেন: ধর্মের এই ভাইরাস কখন যে মানুষের মনে দল বেঁধে জেগে উঠে মানুষ তা নিজেও জানে না।শান্ত জনপদ অশান্ত হয়ে উঠে,মানুষ অমানুষে পরিনত হয় ধর্মের কারনে।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১৩
স্প্যানকড বলেছেন: এসব ফালতু দের কারণে বাসযোগ্য পৃথিবী অবাসযোগ্য হয়ে উঠছে। ভয়ের বিষয় সামনে আরও বেড়ে যাবে। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৩৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের সময়কার খুব নির্মম কিন্তু কমন ঘটনা ছিলো এগুলো। আপনি শাহেদকে নিয়ে শুরুক করেছিলেন; শাহেদ এর কোন ঘটনা দিয়ে শেষ করলে পরের প্যারাগুলোর সাথে শাহেদের একটা যোগসূত্র তৈরী হতো। যাই হোক, শিরোনাম দেখে আগ্রহী হয়ে পরপর তিনটা পর্ব পড়লাম, কিন্তু কিছুটা আশাহত হলাম।
কোন ভণিতা না করে নিজের পাঠ পরবর্তী মতামত ব্যক্ত করে গেলাম। আশা করি পজেটিভলি নিবেন।
ভালো থাকুন সবসময়। শুভকামনা সতত।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫৩
স্প্যানকড বলেছেন: আমি ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছি না সেজন্য দুঃখিত। আসলে অনেক গুলি চরিত্র আছে তাই একেক সময় একেকজন আসে। শাহেদের কথা হবে অবশ্যই । না না আমি কিছু মনে করেনি। ধন্যবাদ, সব সময় ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:১৭
শায়মা বলেছেন: মানুষের মাঝে ভেদাভেদগুলি মনে হয় আগের দিনে কম ছিলো।
দিনে দিনে বেড়েছে।