নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।
ছবি নেট ।
প্রতিটা গল্প এবং কবিতা লিখার শুরুতে কিছু কথা থাকে আবার শেষেও থাকে। এই কথা গুলি পিছনে থেকে যায়। কেউ প্রকাশ করে কেউ করে না হয়তো বা ইচ্ছে করে লুকিয়ে যায়। আজ যেই কবিতাখানি লিখেছি ইহা ছিল শুধুই অন্য এক খেয়াল আড্ডার ছলে লিখা। খামখেয়ালিতে ভরপুর । হুদাই....
কবিতাটি লিখার আগ মুহুর্তে আমি আমার রুমে চোখ বুজে আরজিত সিং এর রোমান্টিক গান শুনছি " মারিজ এ ইশক হু ম্যা /করদে দাওয়া /হাত রাখ দে তু দিল পে জারা..."
এমন সময় দুয়ারে বার কয়েক টোকা রোমান্টিক গানের সময় মন কত কিছু ভাবতে থাকে। কত মেঘ সরিয়ে সুরুজ উঠে আর সেসময় দুয়ারে টোকা দুই তিন বার ! মানে মেজাজ খারাপ! রীতিমতো বিরক্ত। ভাবছি কে আসতে পারে কে এই অলস দুপুরে আমার রোমান্টিক মুডের ফলনা দলনা করতে আসলো ?
দুয়ার খুলে দেখি বন্ধু চন্দন দাঁড়িয়ে। আমি হাল হকিকত জিগাইয়া ওরে রুমের ভেতরে নিয়া আবার দুয়ার লাগায় দিলাম।
ওরে আমি কাষ্ঠ বলে ডাকি সেই স্কুল থেকে। বললাম, তা কাষ্ঠ! এই ভর দুপুরে আমার বাড়ি ছাড়া আর কারো বাড়ি মনে ধরলো না বুঝি ?
কাষ্ঠ একটা কাষ্ঠ মার্কা হাসি দিয়া কইল দোস্ত আমার নাম চন্দন প্লিজ। আমি কইলাম ওরে বাপরে উনার ইজ্জতে লেগেছে !
সাথে সাথে বললাম, বের হয়ে যা বাড়ি থেকে যা এক্ষুনি। হালার পো তোর বাপ মায়ে দুনিয়ায় এত কিছু থাকতে নাম থুইছে চন্দন ! সোনা থুইলে কি দোষ হইতো ! যদিও ইদানীং সোনার দাম নাকি পানি মানে দাম কমে গেছে!
ও এক মনোযোগ দিয়ে কথা গুলি শুনে গেলো প্রতুত্তরে কোন প্রতিবাদ এমন কি কোন টু শব্দ কিচ্ছু না। একটা হাসি দিল।
আসলে ও এমন ছিল না বদলে গেছে যেদিন থেকে ওর ভাইদের সাথে বিবাদ বেড়ে গেছে গ্রামের সম্পত্তি এবং ওর বাপের দেয়া ব্যবসার অংশ কে কতদূর নিবে এই নিয়া ক্যাঁচাল যখন শুরু হলো তখন থেকে ।এখন সে ক্যাঁচাল কোর্টে ঝুলে আছে । প্রেম ছিল একটা তাও এখন ফুরুত ! একটা বেসরকারি কোম্পানিতে আছে কোন রকম তেলাপোকার মতন টিকে । রাত-দিন যায় বছর যায় বেতন সেই আছে। ইদানীং নাকি দুই শ বেড়েছে। এই হলো চন্দন ।
আমি হাসি দিয়া কইলাম, ভুলেই গেছিলাম তোর নামে বিখ্যাত একটা গান আছে " চন্দন পালংক শুয়ে একা একা কি হবে / জীবনে তোমায় যদি পেলাম না । " হা হা হা...
আমার হাসি যে এত অল্পতে ফুরিয়ে যাবে ভাবিনি। ও আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিল। আমি পুরা ভ্যাবাচেকা ! হালার কি হইলো? জিগাইলাম কিরে কি হইছে রে? কি সমস্যা? ও শুধু বলল, আমি হেরে গেছি। দাদারা সব নিয়ে গেলো কিছুই পাইনি শুধু গ্রামের একটা পতিত জমিন ছাড়া।
আমি অবাক হয়ে গেলাম ও বাচ্চা শিশুর মতন কাঁদছে। একটা ধমক দিয়ে কইলাম, মনে কর তোর কেউ নাই এতিম! রাস্তায় রাত কাটে দিন কাটে। জীবন এমনই।
সরি! না জাইনা তোরে কত কষ্ট দিলাম। আজ থাইকা তুই আমার দোস্ত চন্দন । লেগে থাক হারা চলবে না। চন্দনের মতন দামী কিছু হবি যাতে তোর দাদারা তোর মূল্য বুঝে।
এমন সময় মা ডাক দিল দুপুরের ভাত খাওয়ার জন্য। ওরে কইলাম চোখ মুখ মুছে ফেল। দুই জনে হাত মুখ ধুঁয়ে খেতে বসলাম। পটল ভাজি, ডাল, আলু কুঁচি করে কাটা সাথে ছোট মাছ দেয়া তরকারি আর একটা শুটকি মাছের ভর্তা। এই ছিল ম্যানু । খাওয়া দাওয়া শেষে ওরে নিয়া ছাদে গেলাম। হাতে লাল চা।
এখন ও ঠিক আছে স্বাভাবিক। আমারে জিগাইল কিরে এখন লিখিছ না আগের মতন। আমি কইলাম রোজ লিখি কলমের শরীরে হাত না বুলাইলে ঘুম হয় না অবশ্য ইদানীং টিপি। টিপতে ভালো লাগে। ও হাসতে হাসতে কইল মানে ? আমি প্রতুত্তরে কইলাম, এই যে মোবাইল আসার পর এতেই লিখি মানে কীবোর্ড টিপাটিপি করি ! ও কইল হুম বুঝছি।
চন্দন কইল আজকাল তেমন কিছু পড়তে পারি না আর কবিতা সে তো বুঝে আসে না। আমি কইলাম এটা এখন কার কবিদের দোষ অথবা পাঠকের আলসেমি। অনেকে কবিতা লিখে যার মানে বুঝতে কষ্ট হয় শব্দের মানে বুঝতে ডিকশনারি হাতে লওয়ার দশা !
তাই অনেক পাঠক কবিতার ধারে ঘেঁষতে চায় না। এই বলে ওরে দাঁড়া বলে থামিয়ে খাড়ার উপরে টিপাটিপি শুরু করে দিলাম।
পুকুর জলে পড়লো পাতা
মনে হলো কত কথা
ঘরের পিছনে বৃক্ষ আতা
গোড়া জুড়ে ব্যাঙ এর ছাতা ।
বৃষ্টি নামে
ভিজে ছাতা
ডাকে ব্যাঙ গ্যাংগর গ্যাং
যুবতি বধু ছড়ায় ঠ্যাং !
পুকুর জলে পড়লো পাতা
মনে হলো এত কথা ।
হা হা হা.... এই কবিতাটি চন্দন রে কইলাম পড়। ও পড়ে আর হাসে। কইলাম দেখছত কবিতা কত সোজা। শুধু দৃষ্টি রাখতে হয়। আর যারা খুব উঁচু মানের শব্দ ব্যবহার করতে যেয়ে নিজের অজান্তে কবিতা এবং পাঠকের গলা টিপে ধরছে তাদের কে কি আর বলবো। এটুকুন ডিকশনারি লিখলেই পারেন !
চন্দন হাসে আমি ওর হাসি উপভোগ করছি তখন রোদ কমে আসছে ধীরে ধীরে...
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৩১
স্প্যানকড বলেছেন: হুম, ঘটনা সত্য ! ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন সব সময়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৭
হৃদ_স্পন্দন বলেছেন: বাহ্ দারুন রেখেছেন
আমার মত মধ্যবিত্ত পাঠকের জন্য উঁচু মানের শব্দের অর্থ বুঝতে পারা সত্যি কষ্ট কর