![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যাকাত শব্দটির সাথে নফসের সামগ্রিক পরিশুদ্ধতা জড়িত, যাকাত শব্দটির আক্ষরিক অনুবাদ 'পরিশোধনের উপায়/মাধ্যম'৷ সালাত(নামাজ) এবং সওম(রোজা) করার মাধ্যমে নফস জাগতিক এবং অতিজাগতিক উভয় প্রকারের ধনরাশী সন্ঞ্চয় করতে শুরু করে৷ সালাতের কারনে অসৎ কর্ম দূর হয় আর সওম অপচয় রোধ করে ফলশ্রুতীতে নফস রেজেক/এলেম সন্ঞ্চয় করে৷ সন্ঞ্চয় স্বভাবতই নফসের মোহের উদ্রেক করে আর মোহ নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তি ব্যতীত কিছুই নয়৷অতএব বিভ্রান্তি হতে রক্ষা পেতে সন্ঞ্চিত এলেম/রেজেক হইতে মোহকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে৷ যাকাত আমাদের সেই শিক্ষাই প্রদান করে৷
যাকাত মূলত বাধ্যতামূলক দান, সন্ঞ্চিত জ্ঞান এবং সম্পদ উভয় হতেই নির্দিষ্ট পরিমান দান করাকে জাকাতের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে৷
শরীয়াত: শরীয়তে জাগতিক সম্পদের উপর প্রদেয় যাকাতের পরিমানের সর্বোচ্চ কোনো সীমারেখা নেই, এমনকি আবুবকর রা.একদিনের খাবারের পরিমান রেখে বাকী সকল সম্পদ যাকাত করে দিলে রাসুল করিম সা. এই ঘটনাকে উত্তম যাকাত হিসেবে অভিহিত করেছেন৷ অতএব কে কতখানি যাকাত করবে তার কোনো উর্ধ্বসীমা বেধে দেয়া যাবেনা তবে যারা দান করতে অনিচ্ছুক ফিকহ দ্বারা তাদেরকে জমাকৃত সম্পদের কমপক্ষে আড়াই শতাংশ যাকাত করতে বাধ্য করা হয়েছে৷
কুরআনুল হাকিম অনুসারে সম্পদের মধ্যে যদি গনীমতের অংশ যুক্ত থাকে তবে অবশ্যই সন্ঞ্চিত সম্পদের বিশ শতাংশ যাকাত করতে হবে (গনীমত কেবল যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পদকেই বুঝায় না বরং দলীয়ভাবে অর্জিত সকল সম্পদই গনীমতের অন্তর্ভুক্ত হবে )৷এভাবে জাগতিক সম্পদ হতে নিয়মিত যাকাত করার মাধ্যমে সম্পদের প্রতি মোহকে বিনষ্ট করতে হবে৷
তরিকত: মুর্শিদের তত্বাবধানে তরিক্বতের সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিজের গুণ অথবা বদগুন সমূহকে চিহ্নিত করতে শেখে আর সওম করার মাধ্যমে বদগুন সমূহ দুর্বল হয়ে যায়৷ তারপর যাকাত করার মাধ্যমে সেই বদগুন সমূহকে সমূলে উচ্ছেদ করতে হয়৷
হাক্বিকত: এই পর্যায়ে মানুষ জাগতিক ভাবে দোষত্রুটি মুক্ত হয়ে নিজের জ্ঞানের দিকে মনোনিবেশ করে৷ তরিক্বতের সালাত ও সওমের দ্বারা অর্জিত জ্ঞানকে যাকাতের দ্বারা পরিশিলীত করে সঠিক ভাব যুক্ত করতে হয় এবং জ্ঞানের সাথে সংযুক্ত সকল প্রকারের 'অতি ভাব' সমূহকে যাকাত করার মাধ্যমে জ্ঞানের প্রায়োগিক উপযোগিতা সৃষ্টি করতে হয়৷
মারেফত: এই পর্যায়ে উপনীত হবার পর একজন মানুষ তার নিজস্ব জ্ঞানবারিকে অহংমুক্ত রাখতে সদা সচেষ্ট থাকে৷ফলে নিজের অর্জিত সুক্ষ জ্ঞান সমূহ হতে পাত্র এবং প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত ভাবে বন্টন করতে শুরু করেন৷যদিও তারা কখনোই প্রকাশ্য দাওয়াহ করেন না তথাপি নিজের কাছে আসা সকলকেই তিনি পরম যত্ন সহকারে নিজের এলেম/জ্ঞান যাকাত করতে থাকেন৷
©somewhere in net ltd.