![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। এই দিবস নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের অনুভূতি কাজ করে। কারও কাছে এটা বিজয়ের এক চরম আনন্দদায়ক মুহূর্ত; স্বাধীন দেশে নিজস্ব পতাকা নিয়ে বেঁচে থাকার এক গর্বের দিন। কারও কাছে এটা চরম আত্মত্যাগ থেকে পাওয়া এক মুহূর্ত; যা সে স্বজনের রক্ত আর ইজ্জতের দামে কিনেছে। আবার কারও কাছে এই দিবসটাই এক চরমতম পরাজয়ের মুহূর্ত, নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে যুদ্ধে হেরে যাওয়ার চিরকালীন এক সাক্ষী।
ছোটবেলায় দেখতাম এদিন আসার দুই-তিন দিন আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে শুরু হয়ে যেত পতাকা ওড়ানোর তোড়জোড়, পড়ত একটা বড় বাঁশের খোঁজ। সাথে চলত বাড়ীর সব জায়গায় ঝাড়পোছ। ঢেঁকি ঘরে মা’রা ব্যস্ত হয়ে পড়ত পিঠা বানানোর আতব চাল ভাঙানোতে। বিজয় দিবসের খুব সকালেই বাবা-জেঠা সবাইকে ডেকে নিয়ে বাড়ীর বৈঠক ঘরের বারান্দার খুঁটির সাথে বাঁশ বেধে তাতে পতাকা ওড়ানো দিয়ে দিনটা শুরু করত। তারপর হত বাড়ীতে পুজো; প্রসাদে থাকতো খেজুর গুড়ের চাল পায়েসের সাথে পিঠা, পুলি আর গড়মাগরম দইলা। পরে হত এগুলো দিয়েই ভুঁড়িভোজ, উৎসব। অপরদিকে, আমাদের গ্রামেরই কয়েকটা বাড়ী- যারা ছিল আমাদের আত্মীয়ও; এইদিনে থাকতো দুঃখে আচ্ছন্ন কারণ তাদের পরিবারের প্রায় সব কর্মক্ষম পুরুষই নিহত হয়েছে এইদিনটা অর্জনে। শিকার হয়েছে গণহত্যার একসাথে লাইনে দাঁড়িয়ে, একই দিনে।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের মধ্য থেকে বিস্বাদের সেই ছায়া ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রাধান্য পাচ্ছে উৎসব, আনন্দ। আমাদের বিজয় অর্জনের ৪৩ বছর পর, আজও আমার আনন্দ বেদনার একই অনুভূতি হচ্ছে, পাচ্ছি সেই ফ্লেভার, যা পেতাম ছেলেবেলায়!
১৫/১২/২০১৪
©somewhere in net ltd.