নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অতঃপর আমিও একদিন মারা যাবো...

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ

আমি অভদ্র; কারন.......................................... ভদ্রতার মুখোশ কেনার টাকা আমার নেই!

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাউল কামাল পাশা

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০৫


মরমী সাহিত্যে সুনামগঞ্জের অবদান সর্বজনস্বীকৃত এবং সর্বজনবিদিত। সুনামগঞ্জের রাধারমণ, দেওয়ান হাছনরাজা, শাহ আব্দুল করিম ও দুর্ব্বীণ শাহ তাঁদের অবদানের জন্য কালজয়ী হয়েছেন। তাঁরা দেশ বিদেশে সমাদৃত স্মরণীয় ও বরণীয়। সুনামগঞ্জে আরো অসংখ্য মরমী সাধক জন্ম নিয়েছেন এবং জীবনভর মরমী সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রেখেছেন। তেমনি একজন সাধকের নাম কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) । ১৯০১ ইংরেজী সনের ৬ই ডিসেম্বর তিনি দিরাই থানার ভাটিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৫ইং সনের ৬ই মে মৃত্যুবরণ করেন। তার পিতার নাম আজিজ উদ্দিন (টিয়ার বাপ), মায়ের নাম আমেনা খাতুন (ঠান্ডার মা)। তিনি সুনামগঞ্জের সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্কুলে পড়াশুনা করেছেন। সিলেট মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজ থেকে তিনি স্মাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। কামাল পাশা মরমী সাধনা ছাড়াও দেশের চলমান রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে তিনি নানকার আন্দোলন, সিলেটের গণভোট আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর রচিত ‘কামালগীতি’ সর্বমহলে সমাদৃত হয়েছে। ইতোমধ্যে '‘কামাল পাশা গীতি সমগ্র'’ এবং ‘'বাউল কামালের গান'’ নামক বই বেরিয়েছে।
সিলেট বিভাগের পাঁচশ মরমী কবি এবং মরমী গানে সুনামগঞ্জ পুস্তিকায় তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সৃষ্টিকে স্রষ্টার কাছে সমর্পনের মধ্য দিয়ে তিনি বাউল গানের মূল বার্তা প্রচার করেন। এছাড়া রোমান্টিক কথায় ভিন্নমাত্রায় বিষয়বস্তুকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের বৈচিত্রময় পান্ডিত্য তাঁর গানেই পাওয়া যায়। কলকাতা গ্রামোফোন কোম্পানীর তালিকাভূক্ত শিল্পী ছিলেন তিনি। তার রচিত সৃষ্টিতত্ত্ব গান ‘'দ্বীন দুনিয়ার মালিক তুমি তোমার দ্বীলকি দয়া হয় না’' ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রকে করেছে সমৃদ্ধ।
ওস্তাদ কামাল পাশা রচিত ‘'তোর কি রূপও দেখাইয়া কি যাদু করিয়া/পাগল হইয়া বন্ধু পাগল বানাইলে'’ এবং ‘'পান খাইয়া যাও ও মাঝি ভাই/ঐ ঘাটে ভিরাইয়া তোমার নাও'’ শীর্ষক ভাটিয়ালী গান সর্বপ্রথম কলকাতা গ্রামোফোন রেকর্ডে পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করে উপমহাদেশের বিখ্যাত ভাটিয়ালী গানের শিল্পী নির্মলেন্দু চৌধুরী। অনুরূপভাবে ভাটিয়ালী গানের বিখ্যাত শিল্পী আব্দুল আলিম পরিবেশিত ‘'প্রেমের মরা জলে ডুবে না ও প্রেম করতে দুদিন ভাংতে একদিন এমন প্রেম আর কইরোনা দরদী'’ গানটির গীতিকারও কামাল পাশা।
১৯২৮ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সিলেট শুভাগমন উপলক্ষে শ্রীহট্ট মুসলিম ছাত্র সম্মেলনে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেন। একুশে পদকে ভূষিত নিজ উপজেলার প্রখ্যাত মরমী সাধক বাউল শাহ আব্দুল করিম ও ওস্তাদ রামকানাই দাসের অগ্রজ মরমী কবি ছিলেন তিনি। মরহুম কামাল পাশা দেশের স্বাধীনতা, স্বায়ত্বশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণসঙ্গীত রচনা ও পরিবেশন করে আজীবন শুধু ত্যাগ ও সাধনাই করে গেছেন। কিন্তু কামাল পাশার যতটুকু মূল্যায়ন হওয়ার প্রয়োজন ততটুকু মূল্যায়ন হয়নি। ফলে কামাল পাশা উপেক্ষিতই রয়ে গেছেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: কামাল পাশার জন্য শ্রদ্ধা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.