নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অতঃপর আমিও একদিন মারা যাবো...

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ

আমি অভদ্র; কারন.......................................... ভদ্রতার মুখোশ কেনার টাকা আমার নেই!

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সিলেট অঞ্চলের লোক সংস্কৃতি ‘ধামাইল গান’

০৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৩:০৩



সিলেট অঞ্চলের অন্যতম প্রচলিত এক লোক সাংস্কৃতি ধামাইল গান। বিশেষ ধরনের এই সঙ্গীতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশেষ ভঙ্গিমার নৃত্য পরিবেশনের রীতি রয়েছে সিলেট অঞ্চলে।

বাংলাদেশের সিলেট এলাকার পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তরাঞ্চল, আসামের কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিসহ দক্ষিণ আসাম ও উজান আসামের যে সব অঞ্চলে সিলেটি মানুষের বসবাস সেসব এলাকায় ধামাইলের প্রচলন রয়েছে।

ধামাইলের ইতিহাস নিয়ে নানা জনের নানা মত। অনেকের মতে ধামা শব্দ থেকে ধামাইল কথাটির উৎপত্তি, আবার আসামের কাছাড়ের দিকে হাসি-ঠাট্টাকে ধেমালি বলা হয়। আবার ধামাইলের অনেক গানে মজা কৌতুকের কথা থাকে, গান গাওয়ার সময় এক দল অন্য দলকে কৌতুকের ছলে গান গেয়ে ব্যাঙ্গ করে তখন অপর দল আবার গান গেয়ে পাল্টা উত্তর দেয়। এ থেকে ধামাইল নামের উৎপত্তি বলে অনেকে মনে করেন। আবার অনেকের মতে বাড়ির উঠানে এর আয়োজন করা হয় বলে একে ধামাইল বলে।

ধামাইলের প্রায় গানের কলিতে ‘বাইবে রাধারমণ’ শব্দবন্দের উল্লেখ রয়েছে। তাই রাধারমণ দত্তকে ধামাইল গানের মূল রচয়িতা বা জনক বলা হয়।

বিশেষ অঙ্গভঙ্গিতে বৃত্তাকারভাবে নেচে নেচে ধামাইল গান গাওয়া হয়। আবার গানের তালের সঙ্গে সঙ্গে নৃত্যের ভঙ্গিমা ও গতি বদল হয়। ধামাইল গানের ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ বাদ্যযন্ত্র ঢোল। প্রথমে একজন গানের কলি গেয়ে শুরু করেন তারপর সঙ্গী অন্যান্য নারীরা গেয়ে ওঠেন। প্রথমে গান কিছুটা ধীর গতিতে শুরু হলেও আস্তে আস্তে নৃত্যগীতের গতি বাড়তে থাকে।

অনেক সময় দেখা যায় বয়স্ক মহিলা বা শিশুকে মধ্যে বসিয়ে মহিলারা ঘুরে ঘুরে ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন। এর কারণ, যে সব বয়স্ক মহিলা অন্য মহিলাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নৃত্য করতে পারেন না তারা বসে বসে গান করেন। দীর্ঘকাল এভাবে চলে আসায় তা এক প্রকার রীতিতে দাঁড়িয়েছে।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধামাইল গান তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। একটা সময় ছিল সিলেটি মানুষের বাড়িতে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে ধামাইল গান হবে না তা ভাবাই যেতো না।

আগে যেখানে ধামাইল গানে শুধু হাত তালি, ঢোল ও কাসা বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হত, এখন সেখানে অন্যান্য যন্ত্রও ব্যবহৃত হচ্ছে। পাল্টে দেওয়া হচ্ছে গানের সুর ও কথা, এই সব কারণে ধামাইল গান তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারাচ্ছে এবং দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে সিলেটের গ্রামীণ বা হাওরাঞ্চলের এই লোক সংস্কৃতিটি।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: স্থানীয়ভাবে এগুলো ধরে রাখতে হবে।

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৯

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: হুমম, এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৫০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধামাইল গান সম্পর্কে বেশ তথ্যপুর্ণ লেখা । ধামাইল গানগুলি সিলেট ও ভারতের বাঙ্গালীদের কাছে পরম আদরের ধন। ধামাইল গান প্রসঙ্গে রাধারমনের অবদান তুলে ধরায় পোষ্টটি সমৃদ্ধ হয়েছে । বিয়ে পার্বনের জন্য ধামাইল গান রচনা করা ছাড়াও রাধারমন দেহতত্ত্ব, ভক্তিমূলক, অনুরাগ, প্রেম, ভজনসহ নানা ধরণের কয়েক হাজার গান রচনা করেছেন বলে জানা যায় । ধামাইল গানগুলি সিলেট অঞ্চল ছাড়াও কাছাড়, ত্রিপুরা ও ময়মসিংহ অঞ্চলেও বেশ গীত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে । ধামাইল গানগুলি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিদগ্ধ সংগ্রাহকদের হাতে সংগৃহীত ও প্রকাশিত হয়েছে। তাই এই গানগুলি সহজে হারিয়ে যাবেনা ।
শুভেচ্ছা রইল

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০২

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: অসাধারণ মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: এভাবে সবকিছুই একদিন নিঃশেষ হয়ে যাবে।

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:১১

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: এগুলো বাচিয়ে রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ভালোবাসা নিরন্তর।

৪| ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৬

সংগ্রামী_জীবন বলেছেন: এখেবারে হাছা কথা খইছইন ;)


ভায়া,

আসলে আজকাল এগুলো চোখেই পড়ে না। যাও চোখে পড়ে সেটা অনেক খোঁজ-খবর নেয়ার পর দেখা যায়, বদ্ধ ঘরে আবিদ্ধ হয়ে কোন মতে বাঁচিয়ে রাখা।

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০৫

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: জী অয় ভাইসাব, এগুলো বাঁচাইয়া রাখতে অইলে আমরা হখলই আগগুইয়া আওয়া লাগবো, ভালোবাসা রইলো।

৫| ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:২৫

মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী বলেছেন: এই গান সম্পর্কে বেশি ধারনা ছিল না, জেনে ভালো লাগলো। শুভ কামনা যেন।।

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০৬

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: ভালোবাসা নিরন্তর

৬| ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৩৬

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: ধামাইল গান বাংলাদেশ ও ভারত উভয় পার্শ্বের সিলেটিদের খুবই প্রিয়। টরোন্টোতে গত বছর বিশ্বসিলেট সম্মেলনে ধামাইল গান শুনার সৌভাগ্য হয়েছিল । বৃত্তাকারে নেচে নেচে পরিবেশন করা গানগুলো খুব উপভোগ্য।

রাজীব নূরের সাথে সহমত : স্থানীয়ভাবে এগুলো ধরে রাখতে হবে।

০৭ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ভালোবাসা রইলো।

৭| ০৯ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:১৪

হাসান রাজু বলেছেন: ছোটবেলা এই গানের আসর বেশ কয়েকবার দেখেছি। এখন সাউনড সিস্টেমের যুগে ধামাইল গান হারাবার পথে। কিন্তু ইদানিং বেশ আলোচনা ও মানুষদের নস্টালজিক হতে দেখি। মনেহয় এটা আবার ফিরবে ।

কখনো টিউবওয়েল বসানোর কর্মীদের একধরনের রসাত্মক গান গাইতে দেখেছেন ? সিলেট অঞ্চলে বেশ দেখা যায়। এই গান বেশ মজার, এবং বাড়ির কর্তার ইজ্জতের দফারফা করে দেয়। এমন একটা গানের ইউটিউব লিংক । দেখতে পারেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.