নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুত্র ধরিয়ে দিতে চাই শুধু, বাকীটা আপনার।

সুত্রধর

অনিয়মিত লেখক। লেখার কোন বিষয় বস্তু নাই, যা ইচ্ছা হয় যখন।

সুত্রধর › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগের প্রতিবাদ ও নব যুদ্ধ চত্ত্বর

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩। যুদ্ধপরাধী কাদের মোল্লার যুদ্ধাপরাধ ( খুন-ধর্ষণ-গনহত্যা) নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ হবার পরেও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে রায় ফাঁসি না হয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড হবার পরে প্রথম ও সবচেয়ে দ্রুত প্রতিবাদ আসে সম্ভবত ফেসবুক থেকেই। অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারী তাদের স্ট্যাটাসে তীব্র ঘৃণা জানায়। এই ঘৃণা ও নিন্দা ফেসবুকেই সীমিত থাকেনা। সেদিন বিকালে চারটায় ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে শাহবাগ চত্বরে সমবেত হন মূলত ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই এই প্রতিবাদ সমাবেশ আর তাদের মধ্যে সীমিত থাকেনা। এই চত্বর হয়ে উঠে সব দল-মতের তরুণদের প্রতিবাদ মঞ্চ। ক্রমে ক্রমে তাতে সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন দল ও পেশাজীবি সংগঠনরা। সেদিন সারা রাত শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নেবার পর পরদিনও চলতে থাকে ট্রাইবুনালের রায় প্রত্যাখান করে ফাঁসির দাবীতে গণঅবস্থান। সেই প্রতিবাদে প্রতিনিয়ত সংহতি প্রকাশের তালিকা যুক্ত হচ্ছে অনেক নাম। উপন্যাসিক মাসুদা ভাট্টি এই গণসমাবেশের নামকরণ করেন নব যুদ্ধ স্কয়ার বা নব যুদ্ধ চত্বর। প্রকৃত অর্থেই এই আন্দোলন যেন তরুন সমাজের কাছে আজকের মুক্তিযুদ্ধ। অন্তত এই প্রতিবাদে উপস্থিত তরুণ তরুণীদের কাছে তো বটেই। অবশ্য উপস্থিত থাকার সুযোগ সত্বেও উপস্থিত থাকছেন না এমন অসংখ্য তরুন- তরুনী যেমন আছে আবার সময়-সুযোগের অভাবে এখানে আসতে না পেরে আফসোস করছে এদের সংখ্যাও অনেক। তারা তাদের সমর্থন জানানো অব্যাহত রাখছে অনলাইনের মাধ্যমে। এবং প্রতিমূহূর্তেই ভিড় সামলাতে হিমশিম খাওয়া তরুণদের মেখে স্পষ্ট বোঝা যায়- যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে একাত্ম হওয়া এইসব মানুষদের অংশগ্রহণ ক্রমশ বাড়ছেই আর বাড়ছেই।



এই নব যুদ্ধের কিছু মূহূর্ত পাওয়া যাবে এই ছবিগুলোতে। ছবিগুলো ৬ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর দেড়টার মধ্যে তোলা।





শাহবাগ চত্বরের অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি





তৈরী হয়েছে ফাঁসির মঞ্চ।





সকাল থেকেই বসে আছেন প্রতিবাদী তরুন-তরনীরা।





শিল্পীরা প্রতিবাদলিপি আর চিত্রে রাজপথ রাঙিয়ে দিচ্ছেন।





বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো দেশ বিষয়ক গান, নাচ ও নাটকের মাধ্যমে সমাবেশকে প্রাণচাঞ্চল্য জুগিয়ে যাচ্ছেন।





কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে প্রতিনিয়তই যুক্ত হচ্ছেন বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। টেলিভিশনে এই সমাবেশ গুরুত্বসহকারে প্রচারিত হবার কারণে সংগঠিত ভাবে বা অসংগঠিত ভাবে যোগদান চলছেই।





শাহবাগের তরুন সমাজের আন্দোলন তরুন সমাজের মধ্যে সীমিত থাকছে। ছোট শিশুটিকে এই নবমুক্তি যুদ্ধের অভিজ্ঞতা দিতে নিয়ে আসছেন মা-বাবা।





বেলা বেড়ে যায়। তবুও কমেনা ভীড়। তা যেন আরো বেড়ে চলে।



যেখানে দাবীটি মানুষের প্রাণের সেখানে বাড়তি কিছু করতে হয়না ভীড় সচল রাখবার জন্য। আমি কিছুদিন পূর্বে ধর্ষন বিরোধী অ্যাকটিভিটিজ নিয়ে মানুষের কাগজে কলমে দ্বায়িত্ব পালন করার প্রবণতা নিয়ে হতাশ হয়ে করা একটি মন্তব্যে একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের রেফারেন্স টেনেছিলাম। সেই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন- ভাগ্যিস একাত্তরে ফেসবুক ছিলনা, তাহলে আমরা ফেসবুকের মাধ্যমেই যেন আমরা দেশ স্বাধীন করে ফেলতাম। এখন বুঝতে পারছি আমার রেফারেন্স ও হতাশা অহেতুক ছিল। আজ মনে হচ্ছে সে সময় ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ব্লগ থাকলে পরে আমাদের ৪৭ থেকে ৭১ অবধি অপেক্ষা করতে হতো না দেশ স্বাধীন করার জন্য। নিজের নিরাপত্তা ও প্রাণের মায়া ত্যাগ করে দেশের জন্য রাস্তায় নামতে ভোলেনি বাঙ্গালি। শুধু ঠিক কারণে ঠিক মত ডাকটা দিতে হবে। কারণ অনেক কিছু হারিয়ে ফেললেও দেশের প্রতি ভালবাসাটি বুকের কোথায় যেন স্বযত্নে লালন করে রেখেছি আমরা। এই সাহস- এই ভালবাসা- এই ত্যাগ - এই প্রতিবাদ প্রমাণ করে মূলত তারুন্য সংগঠিত এই সমাবেশ যেন প্রকৃত অর্থেই নব যুদ্ধ।







একটা চরম হিসাবের কথা বলে লেখাটা শেষ করি। হিসাবটা খুব সহজ মারতে হবে নয় মরতে হবে। ওদের ফাঁসি, নয় আমাদের ফাঁসি। এখানে একটা আকুল অনুরোধ, রাজনীতিবিদদের প্রতি। আমাদের দেশে সাধারণত মানুষের প্ল্যাটফর্ম খুব বেশি একটা হয় না। যাও হয়, তা আবার বামপন্থীদের নয়তো ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। একদল একাত্ম হবার মাধ্যমে, হয় মিষ্টি কথায় না হয় ভয় দেখিয়ে আন্দোলনটাকে নিজেদের বানিয়ে গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করে। অনুরোধ এই জায়গাটাতেই, এবারের আন্দোলনটাকে অন্তত ছেড়ে দিন প্লীজ। রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এই সব অ্যাকটিভিটিস্টরা টেকনিকাল বুদ্ধির কাছে পারবে না। আপনারা তা জানেনও। তাই এই আন্দোলনটাকে ছেড়ে দিন কারণ এই আন্দোলনের মধ্যে রাজনীতি ঢুকে পড়লে আন্দোলনটি ক্ষমতা হারাবে। ওদের কুবুদ্ধি, অর্থ, অস্ত্র, অভিজ্ঞতা বিরদ্ধে লড়তে চাইলে একমাত্র হাতিয়ার মনের জোর। সেটা নষ্ট করবেন না প্লীজ। আন্দোলনটা আসলেই মারা অথবা মরার আন্দোলন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এখন বুঝতে পারছি আমার রেফারেন্স ও হতাশা অহেতুক ছিল। আজ মনে হচ্ছে সে সময় ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ব্লগ থাকলে পরে আমাদের ৪৭ থেকে ৭১ অবধি অপেক্ষা করতে হতো না দেশ স্বাধীন করার জন্য।

........আমি ও তাই বলি । কাদের মোল্লা সহ অন্য যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির আদেশ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না ।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আমাদের এই চেতনায় যেনো কোন রাজনৈতিক কালিমা না লাগে তার প্রতি বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে ।

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪

সুত্রধর বলেছেন: সাদা মনের মানুষ, এই তো চেতনা। এই আমাদের আসল সম্পদ।

৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

সুত্রধর বলেছেন: ঠিক বলেছেন, আমি সেখানে আমার এক বন্ধু স্থানীয়কে বলছিলাম, এই সমাবেশ যত সফল হবে এটাকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানোর প্রবণতা তত বেড়ে যাবে, আয়োজনদের ততই শক্ত সময় পার করতে হবে।

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯

মৃন্ময় বলেছেন: ek chagu bolce gutikoyek manus lafalafi kortece..........ami reply korlam hala baincut jonmer poricoyta ekbar hataia dek......sokol echa capa diya bobakannai aj bolci ami nei tobe amar mon pore ace sekane jekane hahakare donito manobotar joygan......sokol judhooporadir fasi cai....

৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০

নন্দিত নন্দন বলেছেন: আর কোন দাবী নাই
রাজাকারের ফাঁসী চাই

৭| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যেই দেশে স্বাধীনতার পরপর শুধু সাধারন ক্ষমা নয় সিমলা চুক্তি করে যুদ্ধাপরাধিদের বিনিময় হয়েছিল, ৭৩এ ভুট্রোর সাথে হাতে হাত দিয়ে বঙ্গবন্ধু সহাস্যে ছবি তুলেছিলেন, ৭৫এ নেতার লাশ সিড়িতে রেখে যারা ক্ষমতার স্বাদ নিয়েছিল!!

স্বৈরাচারের সাথে যাঁর মেয়ে আতাত করে ৮৬তে; রাজাকারের সাথে আতাত করে ৯৬ তে!!!!!

২০১৩তে তার কাছ থেকে এই রায় ছাড়া আর কি আশা করা যায়!!!!!!

পালানোরতো উপায় নেই;

তবে উপায়!!!!!

প্রায়ই তসমাবেশ গুলোতে শেখ হাসিনা যে ভাষায় বলেন সেই ভাষায়ই বলতে হয়- "যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে তারাও সমান অপরাধী। তাদেরও বিচার হবে।"

আপনার বক্তব্য এবং আপনার সরকারের দেয়া রায় অনুসারে আপনি কি রেন্টুর মতো নিজের ফাসি নিজে চাইবেন মাননীয় নেত্রী!!!!!!

৮| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: শাহবাগ চত্বরের এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ুক সারা বাংলাদেশে। আন্দোলন ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি নিশ্চিত করা যাবে না। কিন্তু সাপের লেজে পা দিয়ে লাভ নাই। জামাত শিবিরের পুনরুজ্জীবন বিএনপির হাতে, তাদের বিকাশ বিএনপির হাতে, তাদের উত্থান বিএনপির হাতে, তাদের ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ বিএনপির হাত ধরে, আজ তাদের বিরুদ্ধে যখন জাগ্রত জনতা তখনও তাদের পাশে বিএনপি। বিএনপির শক্তিতেই বলিয়ান জামাত শিবির। জামাত শিবিরের যত প্রতিষ্ঠান আছে, তার প্রায় সবই বিএনপির সহায়তায় গড়ে তোলা। সুতরাং সাপকে বিনাশ করতে হলে সাপের মাথাটাকেই আগে বিনাশ করতে হবে। নইলে বার বার ছোবল খেতেই হবে।

৯| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬

নতুন বাঙ্গাল বলেছেন: দাবী একটাই - রাজাকারদের ফাসি চাই।

শাহবাগ আসছি

১০| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন:

১১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১৭

সুত্রধর বলেছেন: সাদা মনের মানুষ একটি ভাল ছবি দিয়েছেন, ইন্সপায়ার করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.