নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুত্র ধরিয়ে দিতে চাই শুধু, বাকীটা আপনার।

সুত্রধর

অনিয়মিত লেখক। লেখার কোন বিষয় বস্তু নাই, যা ইচ্ছা হয় যখন।

সুত্রধর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইনসেপশনে স্বপ্ন বাস্তবতা অথবা অদৈতবেদান্ত, ACIM প্রসঙ্গ

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৪৭



ইনসেপশন কে চিনিয়ে দেবার কিছু নেই। আর যারা ইনসেপশন সস্পর্কে জানেন না, ভাবেন না – তাদের জন্য এই লেখাও নয়। তাই মুভির পরিচয়ে না গিয়ে সোজাসুজি প্রসঙ্গে আসি।



পুরো ছবিতে আমরা দেখি কব ম্যালকে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে যে ম্যাল আসল পৃথিবীকে স্বপ্ন ভেবে ভুল করছে। ম্যাল তার ধারণায়ই অনড় থাকে সে কারণে ম্যাল আত্মহত্যা করে, তার নিজের আসল পৃথিবীতে ফেরত যাবার জন্য। কব এর অপরাধবোধটা সেখানেই কারণ ম্যালকে সেই শিখিয়েছে স্বপ্নকে বাস্তব ভাবতে শেখা। যেটা সর্বদা তাড়িয়ে বেড়ায় কবকে। যেকারণে কব তার নিজের স্বপ্নের জগতে নিরাপদ না। তার তৈরী করা জগতে ম্যাল এসে পুরো প্ল্যানটা উল্টো পাল্টা করে দেয়। ম্যালকে সত্যিটা বোঝানোই এই ফিশার মিশনের মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।





ম্যাল চরিত্রে Marion Cotillard



ইনসেপশন নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন? গ্র্যাভিটি কেন? সাইতোর বয়স কবের চেয়ে বেশি কেন? ৩য় লেভেলের ড্রিমার কে ইমস না ফিশার? আর্থার কেন প্রথম কিক মিস করলো? লিম্বো থেকে কব আর সাইতো ফিরল কেমন করে? ব্লা ব্লা ব্লা … এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, এসবে না যাই। এগুলোর উত্তর দেখে নিতে পারবেন আইএমডিবি-তে। বরঞ্চ আসি কোন সিনেমা নিয়ে সবচেয়ে বেশিবার জানতে চাওয়া সবচেয়ে দামী প্রশ্নটায়। তাহলো ছবির শেষে কবের স্পিনিং টপ বা কবের টটেম টা পড়ে যায় না তেমনই ঘুড়তে থাকে? প্রশ্নটা জরুরী কারণ টপটা পড়ে গেলে শেষটা রিয়েল আর না পড়ে গেলে শেষটাও ড্রিম। মানে শেষে কি কব আসলেই ফিরে পেলে তার বাচ্চাদের না আটকা পড়ে গেলে লিম্বোর মাঝে? ড্রিম অথবা রিয়েলিটি ‍দুটোরই পক্ষে বিপক্ষে নানা যুক্তি আছে। এইসব প্রশ্ন আর উত্তর সবই পাঠকদের ও ক্রিটিকদের মধ্য থেকে এসেছে, কিছু বলেছে মাইকেল কেইন, দিলীপ রাও যারা ইনসেপশনে অভিনয় করেছিলেন। অঙ্কটা মেলেনি এখনও। শেষটা বাস্তব মনে করা পক্ষ আর স্বপ্ন মনে করা পক্ষ- দু পক্ষই তাদের যুক্তি নিয়ে সোচ্চার। এবার এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটাও পাশ কাটিয়ে যাই, কারণ এটাকে পাশ কাটিয়ে যেতেই আলোচনা। কারণ এই প্রশ্নের ওপারে আছে Ultimate truth বা ব্যাখ্যার একটা লেয়ারের শুরু।



ইনসেপশনের শেষটা অবশ্যই বাস্তব নয়। কিন্তু তাতে বেশি কিছু এসে যায় না। সেকারণে নোলান কখনই শেষটা নিয়ে সরল ব্যাখ্যা দেননি। তিনি চেয়েছেন নানামুখী ব্যাখ্যার পথটা খোলা থাকুক। তারপরে নোলান তার এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে একটি কথা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন “The most important emotional thing about the top spinning at the end is that Cobb is not looking at it. He doesn’t care.” আসলেই, তাই পুরো ছবিটায় স্বপ্ন আর বাস্তবের যে ধাঁধা সেটা বড় ব্যাপার নয়, বড় বিষয় হচ্ছে একটা মানুষ যে অনেকগুলো জীপন যাপন করছে এবং সেটা সে অগ্রাহ্য করছে, সেই বিষয়টা। হিন্দুইজম আর বুদ্ধিজম – দুজায়গাতেই খুব স্পষ্ট করে জীবনকে মায়া বলা হয়েছে মানে Life is not reality, its an illusion.



শিষ্যদের সাথে আদি শঙ্কর, আদি শঙ্করের পরমগুরু গৌড়পাদ



প্রায় ৫০০০ বছর আগে ব্রহ্মসূত্র সমূহকে অষ্টম শতকে আদিশঙ্কর সুতোয় গাঁথেন। উপনিষদকে ভিত্তি করে তাঁর পূর্ববর্তী দার্শনিকদের মতবাদকে সমূহকে সূসংহত করেন। উপনিষদের প্রামাণিক দর্শনতত্ত্ব ব্যাখ্যার মাধ্যমে তিনি তাঁর নিজস্ব বেদান্তচর্চার ধারাটি গড়ে তোলেন।শঙ্করের অন্যতম প্রকরণ গ্রন্থ বিবেকচূড়ামণি-র নিম্নোক্ত পংক্তিটি থেকে শঙ্করের অদ্বৈত দর্শনের সারসংক্ষেপ করা যায়:



যা কোটি গ্রন্থে বলা হয়েছে, তা আমি এক পংক্তিতে বলি; ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা (অর্থাৎ, জগতের পৃথক অস্তিত্ব নেই), এবং আত্মা ব্রহ্ম থেকে পৃথক নয়। সংস্কৃতে এটাকে বলা হয়েছে, Brahma Satyam, Jagan Mithya, Jivo Brahmaiva Na Parah-Sri Shankaracharya







মাল্টিভার্স বা মেটাইউনিভার্স বা প্যারালাল ইউনিভার্স থিউরি নিযে অনেক উপন্যাস, গল্প, সিনেমা হয়েছে। হুমায়ুন আহমেদও তার বিভিন্ন উপন্যাসে বিষয়টির অবতারণা করেছেন অনেক বার। মাল্টিভার্স নিয়ে ইউটিউব লিঙ্ক , যদিও এটা আমাদের মূল বিষয় থেকে আলাদা।







একটি বেড়ালের দৈত জীবনের সিম্বলিক প্রেজেন্টেশান, যার একটাতে সে মারা যায়, আরেকটায় বেঁচে থাকে।



আবার নোলানের কথায় আসি, মানুষ কোন জীবনে বাস করছে সেটা বড় বিষয় নয়, সে কেমন আছে, সেটা বড় বিষয়। এমনতো হতেই পারে, সত্য বলে যে জীবনটায় সে ফিরে গেল, সেটিও আসলে ইলুউশন, যা সে জানেই না। এমন কি যে জগতে বসে আমি এই লেখা লিখছি আর নেটের স্পিড উঠানামা নিয়ে চিন্তিত হচ্ছি সেটাও ইলুউশন। আমরা হয়তো ম্যান অব স্টিলে দেখানো জেনেসিস চেম্বারের মত কোন ইউনিভার্সের কোন এক কোণায় শ্বাস নিচ্ছি শুধু। মনে করিয়ে দেই ম্যান অফ স্টিলের চিত্রনাট্য রাইটার কিন্তু নোলানও।





অদ্বৈত বেদান্ত মতে, রাজহংসের প্রতীকতত্ত্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাঁস তার পালক না ভিজিয়ে সারাদিন পানিতে ঘুড়ে বেড়াতে পারে। এই ভাবে একটা জীবন, একটা ভ্রমণের মত। ব্রহ্মান্ড দ্বারা কোন ভাবে প্রভাবিত হয়ে একটি মানুষ তারা সারাটা জীবন পার করে দেয়। প্রত্যেকটা মানুষই যেন একটা হাঁস। তাইতো রামকৃষ্ণকে উপাধি দেয়া হয়েছিল, পরমহংস। ব্রহ্মার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারা শ্রেষ্ঠ মানুষ। ব্রহ্ম ও মানুষ দুটোই এক- একারণে এই মতবাদের নাম অদ্বৈত মতবাদ। এতো গেল, ধর্মের ব্যখ্যা। এখান থেকে চিরচেনা ধর্মের খোলসটা সরিয়ে ফেললে আমরা পাব, এক গভীর দর্শন। মানুষ আদিকাল থেকে ক্রমে ক্রমে যা সঞ্চিত করেছে, সেই সত্যের একটি সূত্র। এই সূত্রটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ইনসেপশন সিনেমাটির জন্য। ইনসেপশন বুঝতে গেলে বিষয়টার আরেকটু গভীরে যাওয়া দরকার। উৎস



দি সুপ্রীম সোয়ান নিয়ে আরো খানিকটা পড়তে চাইলে, তবে মনে রাখতে হবে এসব দর্শণকে ব্যাখা করা হয়েছে সাধারণ মানুষদের জন্য। তাই জাগতিক জীবনের সাথে মেলানোর চেষ্টা সব সময়েই করেছে ধর্মগুরুরা।



অদ্বৈত বেদান্ত মতে, The reality of the world, or jagat, is then relative as opposed to the absolute nature of Brahman. In that sense, and in comparison with Brahman, the world is unreal. By unreal is meant illusory, very much like a dream, which has its own subjective reality but which is illusory compared with the waking state.



অদ্বৈত বেদান্ত মূল সুত্র নিয়ে পড়েতে চাইলে





অদ্বৈত মতবাদ পাশ্চাত্যকে সব সময়ই অনেক প্রভাবিত করেছে।



বেদান্তের আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, “ Brahman is both consciousness and power (shakti). This sakti operates in many ways, including the power or creation. One such power is the veiling power which veils the spiritual truth of the oneness of consciousness. Maya sakti creates the ignorance of perception of separateness and diversity of objects in this world. She makes us believe that we are different from the world and all other beings. She makes us identify with our Upadhis, bodies, which are imperfect and bring pain to our life. এখানে ইনসেপশনের একটি কথা মনে করিয়ে দেই, ম্যাল আর্থারকে পায়ে গুলি মারে, কারণ ব্যথাটা সত্যি, সেটা যে কষ্ট দেয় সেটাও সতি। স্মৃতিই শুধু পারে সেই কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে। তাই কব দ্রুত মেরে ফেলে আর্থারকে।





বৌদ্ধধর্মের মতবাদের অদ্বৈত মতবাদের গুরুত্ব অসীম। হবারই কথা উপনিষদ যে মূলে আছে। এখানে নির্বান লাভের কথা বলা হয়ে থাকে মুক্তির চুড়ান্তরুপ হিসাবে। আবারো বলছি ধর্মের খোলসটা ‍ভুলে মানব সভ্যতার সঞ্চিত জ্ঞান হিসাবে মতবাদ গুলোকে দেখটা খুব জরুরী। রিচুয়ালগুলোকে একটু সচেতন হলেই বাদ দেয়া যায়।





বুদ্ধের ধ্যান, ব্রহ্মার ধ্যান আর জেনেসিস চেম্বারের মধ্যে কোন মিল কি পাচ্ছেন? এখনই না পেলে জোর করার দরকার নেই। আসছি ক্রমে ক্রমে।



বৌদ্ধধর্মের মতবাদও তাই। পাশ্চাত্যেও অদ্বৈত মতবাদ নিয়ে একটা ধারা তৈরী হয়েছে ১৯৭০ সাল থেকে। সেবছর Helen Schucman ও William Thetford মিলে ইনার ভয়েজ লিখলেন। ক্রমশ এই পুস্তকের জনপ্রিয়তা বাড়তে বাড়তে বিশাল আকারে ৩য় সংস্করণে FIP বা ফাউন্ডেশন অব ইনার পিস তৈরী হলো। বইটি ৫টি ভাগ ছিল : the Text, the Workbook for Students, the Manual for Teachers, the Clarification of Terms, and the Supplements. সেখান থেকেই তৈরী হলো ACIM বা A Course in Miracles।







আধ্যাত্বিক উন্নতি সাধনের এই কোর্স সারা বিশ্বে খুব জনপ্রিয় এবং উচ্চবর্গের মানুষের কাছে খুবই সমাদৃত। এই পুস্তক বা পদ্ধতিটি চার্চ দ্বার স্বীকৃত। নোলান খুব সম্ভবত এই কোর্স দ্বারা প্রভাবিত ছিল কারণ হলিউডবাসীদের এই ধরণের বিষয়ের প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি। এমনকি নতুন ধর্ম সাইন্টোলজির কারণে টম ক্রুজ ও কেটি হোমস এর ডিভোর্সও হয়েছিল। A Course in Miracles ও সেখানে গুরুত্ব পেয়েছিল। প্রচুর মানুষ এই কোর্সটি করেছে এবং এখনও করছে। একটি ডকুমেন্টরি সিনেমাও হয়েছে আর উপরে, নাম A Course in Miracles: The Movie ইনসেপশন প্রসঙ্গে ACIM আসার কারণ ACIM এর মূল বক্তব্য “ In ACIM the key idea is that what we think of as reality is in fact a dream – that there is no difference between the dreams we see at night, and what we see with our eyes open. Both are projections of our mind, which is trying to escape a core guilt by projecting guilt outside of itself onto projected ‘dream figures’. ”







AICM মতে মনের বিভিন্ন লেভের ডায়াগ্রাম



ACIM এ মনের ও স্বপ্নের অনেকগুলো লেভেল বা লেয়ারের কথা বলো হয়েছে। মনের বিভিন্ন ভাগগুলোর কথা বলা আছে এই ডায়াগ্রামে:



মনের বিভিন্ন ভাগ- যেমন কনশাস, সাবকনশাস, আনকনশাস, সুপার আন কনশাস, ননকনশাস মাইন্ড





স্বপ্নের বিভিন্ন লেয়ার পাওয়া যাবে নীচের ড্রায়াগ্রামে



ACIM অনুযায়ী ড্রিমের একাধিক লেয়ারের ডায়াগ্রাম







মানুষের মনে আছে বিভিন্ন লেভেল, বিভিন্ন স্তরে মন ভিন্ন ভিন্ন রকম চিন্তা করে। এ শুদ্ধ বিজ্ঞানের স্বীকৃতি। দর্শন বা সঞ্চিত জ্ঞানই বিজ্ঞানের উৎস।







ইনসেপশনের লেভেল অব ড্রিম



উপরের দর্শন গুলোর আলোচনার হেতু বোধহয় এতক্ষনে পরিষ্কার হয়ে গেছে, ইনসেপশনের রিয়েলিটিও আসলে ড্রিম। কব ম্যালকে নয়, ম্যালই আসলে কবকে সত্যিটা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। ইনসেপশনের পুরোটাই স্বপ্ন কিন্তু কার স্বপ্ন ? অবশ্যই কবের স্বপ্ন। কারণ যে লেয়ারে ম্যাল মারা গেল, যে হোটেলের ব্যলকনি থেকে, সেখানে তারা কতদিন ধরে আছে, ম্যাল, কব আর বাচ্চাদের একসাথে পুরো ছবিতে একবারও দেখি না কেন? কারণ বাচ্চাদের কব ফেলে এসেছে তার রিয়েলিটিতে। উপরের মতবাদগুলো অনুযায়ী সেই রিয়েলিটিও একটা স্বপ্ন। এইতো বিষয়টা ক্রমশ জটিলতার দিকে যাচ্ছে না? এই কারণেই ইনসেপশনের সেকেন্ড হাফ ক্রমশ জটিল হয়ে উঠে। আলোচনার স্বার্থে ইনফিনিটিকে থামিয়ে মনে করে নেই, ম্যাল মারা গিয়ে যে লেয়ারে গেল সেটা রিয়েলিটি। আপাত রিয়েলিটি। তাহলেও আরেকটা প্রশ্ন আসে কার রিয়েলিটি কবের না ম্যালের । স্বভাবতই উত্তর আসে কবের। তাই হবার কথা। এবার আসে আরো বড় প্রশ্নটা , সেখানে গিয়ে ম্যাল কি পাবে? ড্রিমের লেয়ারগুলোকি আপাত সম্পৃক্ত না বিভিন্ন লেয়ারে সাবজেক্ট একই থেকে চারপাশটা পুরোটাই বদলে যায়। পাঠককে একটু মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা আলোচনার এই পরযায়ে দেখা ইনসেপশন মুভির তত্ত্বে নাই, ইনসেপশন যে তত্ত্ব থেকে এসেছে বলে মনে করছি, সেখানে আছি। কারণ প্যাচ লাগার একটা সম্ভাবনা আছে।



হতেই পারে সেই রিয়েলিটিতে কবের স্ত্রী ম্যাল না, জেমস আর ফিলিপাও তার বাচ্চা না। ইনফিনিটিকে তো থামিয়েছি আলোচনার সুবিধার্থে- তাই একটি হাইপোথিসিস ঠিক করে নিতেই হবে, বিষয়টার একটা আপাত ব্যাখ্যা দাঁড় করানো জরুরী যে ছবিটা যদি ড্রিম দিয়ে শুরু হয় তাহলে সেই ড্রিমের শুরুটা কোথায়? আসল কব ( যে কবকে আমরা সিনেমায় দেখি না) কি কোন একটা ঘটনায় তার স্ত্রীকে হারিয়ে বাচ্চাদের কাছ থেকে দূরে সরে আফসোস করতে করতে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকা কোন বৃদ্ধ, যে কোমায় আছে। কী ইনসেপশনে একাধিকবার ব্যবহৃত একই সংলাপের “Do you want to take a leap of faith, or become an old man, filled with regret, waiting to die alone?” আর লিম্বোর সালে মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে? যাওয়াটাই স্বাভাবিক। নোলানকে তো প্রথমে একটা সহজ ছক বানাতেই হয়েছিল। ফ্রেমটা না হলে গল্প দাঁড়াবে কিসের উপরে? সেই আপাত রিয়েলিটির জগতটা হচ্ছে ফ্রেম। যা কখনো দেখানোই হয়নি, সেটি বাদ কবের স্বপ্ন দিয়ে সাজানো প্রথম জগতটা থেকেই ইনসেপশনের গল্পের শুরু। এখন প্রশ্ন আসতে পারে বাকী সব ক্যারেক্টারগুলো – ইমস, সাইতো, ইউসুফরা কি কবের আসল জগতের। হতে পারে , না হলেও কিছু আসে যায় না। কারণ “we will live together” (কি আবার ম্যালের মুখে বলা একই সংলাপের একাধিক ব্যবহার মনে পড়ে গেল। হবেই, স্বপ্ন যে কবের।) কোথায় আছি কিভাবে আছি সেটা ব্যাপার না, ব্যাপার হচ্ছে একসাথে থাকা। তবে মূল তত্ত্ব অনুয়ায়ী এই ক্যারেক্টার গুলো আপাত রিয়েলিটি থেকে হবারই সম্ভাবনা বেশি। সেখানেও নিশ্চই ইমস আর্থারকে খোঁচায়। তারা একসোথেই থাকে। তবে নিশ্চই যেমনটা দেখেছি তেমনটা করে নয়। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় রিয়েলিটির কব – এর জীবন জটিল, কমপ্লেক্সে ভরা ছিল তাই ইনসেপশনের কবের জীবনের আছে জটিলতা।











ছবিতে আমরা বাচ্চা দুটির চরিতে দুটো সেট পারফরমার পেয়েছি যাদের বয়সের পার্থক্য প্রায় দুবছর করে। কব ফাইনালি আমেরিকায় এসে প্রথম দেখা বাচ্চা গুলোকে জড়িয়ে ধরেছে।



ছবিটাযে রিয়েলিটি আর ড্রিমের মধ্যে পার্থক্যের উর্ধে সেই বিষয়টি আরেকটি যৌক্তিক করা যাক। নোলান কিন্তু সিনেমার কোথায় সময়টা উল্লেখ করে নাই। অথচ এক্সট্র্যাকটর, মিলিটারি ট্রেইনড প্রটেক্টর এসব ব্যবহৃত হয়েছে ছবিতে, সাধারণ মানুষরাও স্বপ্নের জগতে থাকতে ইউসুফের কাছে আসে তেমনটা দেখানো হয়েছে, মানে বিষয়টি চলছে অনেকদিন থেকেই। কিন্তু সিনেমার কোথায় ভবিষ্যতের সময়কাল দেখানোও হয়নি, সে রকম বাড়ী বা ভেহিকেলও দেখানো হয়নি। নোলান এক ইন্টারভিউতে কব বিষয়ে বলেছেন, “This gives Cobb a base-line reality. But he’s an untrustworthy narrator.” untrustworthy narrator শব্দটার মধ্যে অনেক কিছু আছে। কব তো নোলানের সৃষ্টি , তাহলে নোলানই তো তাকে এভাবে বানিয়েছে। কেন বানিয়েছে? নোলানকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল লিপ অব ফেইথ বিষয়ক সংলাপটি বারবার ব্যবহারের কি কারণ? নোলান বলেছিল “I don’t think I’m going to tell you about this.” আরেক জায়গায় নোলান বলেছেন “For the ambiguity at the end to work, you need to see that Cobb’s world and the dream world are very similar. And you need to doubt Cobb.” নোলান ইচ্ছে করেই কবকে সন্দেহজনক করতে চেযেছে। মেকার যখন প্রধান চরিত্রকে সন্দেহজনক বানায় এবং সেই মিস্ট্রি দিয়েই শেষ করে তখন তখন বুঝতে হবে মেকার একই সাথে কিছু বলতে চায় আবার বলতে চায় না। এই দ্বিধাটাই ইনসেপশনের বিউটি।



সেলুলয়েডার কে দেয়া নোলানের সাক্ষাৎকার



নোলানকে যখন প্রশ্ন করা হয় তাহরে কি ইনসেপশনের কোন একটি আনসার নেই। নোলান কিন্ত জোর গলায় বলেছে, তার কাছে উত্তর আছে। তার কারণ হিসাবে নোলান বলেছেন, Yeah. I’ve always believed that if you make a film with ambiguity, it needs to be based on a true interpretation. If it’s not, then it will contradict itself, or it will be somehow insubstantial and end up making the audience feel cheated. Ambiguity has to come from the inability of the character to know — and the alignment of the audience with that character. কি সেই উত্তর? যা সযত্নে গোপন করে গেছেন নোলান? হাইপোথেসিসটাকে এবার কি কিছুটা যৌক্তিক লাগছে?





উইয়ার্ড.কো. ইউকে কে দেয়া নোলানের সাক্ষাৎকার



বিবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মাইকেল কেইন শেষটাকে রিয়েলিটি বলে খানিক বিভ্রান্তও করেছেন “The spinning top drops at the end, that’s when I come back on. If I’m there it’s real, because I’m never in the dream. I’m the guy who invented the dream.” তবে কেইনের কথা কিন্তু একদিক দিয়ে সত্যিও। কারণ ড্রিমের প্রত্যেক লেয়ারের কাছে তো আগের লেয়ারটাই সত্যি, যেখান থেকে সে ড্রিমে এসেছে। সে হিসাবে তো সব লেয়ারই সত্যি। এটাই আসল কথা। আবার বলছি গুরুত্ব বাড়ানো জন্য। এটাই আসল কথা। আসলে সবগুলো লেয়ারই যখন সত্যি, যখন আর সত্যিকারের লেয়ার বলতে কিছু থাকেনা। তার কিন্তু ইঙ্গিত নোলান কিন্তু দিয়েছেন। সবাই তার নিজের টোটেম ব্যবহার করছে বা তৈরী করেছে, কিন্তু কব ম্যালের টোটেমটাই ব্যবহার করছে, যদিও ছবিতে স্পষ্ট করে বলা আছে একজনের টোটেম আরেকজনের কাছে কাজ করে না।





ছবির শুরুর প্রসঙ্গে আসি। ছবিটা হঠাৎ করেই শুরু হয়ে যায়না? ছবিতে কব যখন সাইতো কে বোঝায় সে স্বপ্নে আছে, সেটাও তো কবের তৈরী করা লেয়ার। কবের বারবার বলা একটি কথা মনে পড়ে, স্বপ্নে তুমি মনে করতে পারনা তুমি কোথা থেকে এসেছো? তেমনি এই সিনেমার শুরুতে কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনা, ছবিটা কোত্থেকে শুরু হলো, কোবল গ্রুপ বা মুম্বাসা বিষয়ক ঝামেলাটা কি? নোলান এই প্রশ্ন থেকে কোন রকম চাতুরি না করেই দর্শককে সরিয়ে নিয়ে গেছে অন্য জায়গায়। কারণ ছবির শুরুর জায়গাও আসলে ড্রিম। ছবিটিতে বিভিন্ন দেশের ক্যারেক্টারকে আনার কারণটা কি বোঝা যায়? নোলানকে যতটা বুদ্ধিমান রাইটার , ডিরেকটার মনে করা হয়, নোলান তার চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান। ড্রিম আর লিম্বোর পার্থক্য কিন্তু আরো ইঙ্গিত বহন করে আরো জটিল কিছুর।



মাইকেল কেইন তার এক সাক্ষাৎকারে কবের টোটেম এর লাস্ট শট এর ছবির নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, যা মূল জায়গাটা ধরার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো:





Now you’re looking for the secret. But you won’t find it because of course, you’re not really looking. You don’t really want to work it out. You want to be fooled.





নোলানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তার ইনসেপশন নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা হচ্ছে, সেগুলো ঠিক আছে কিনা, নোলান বলেছিল, “People seem to be noticing the things they’re meant to notice, the things that are meant to either create ambiguities or push you in one direction or another.”



কব বাস্তবে ফিরল কি ফিরল না প্রশ্নটা মোটেও মূল প্রশ্ন হতে পারেনা। বিষয়টা হচ্ছে কব তার সন্তানের কাছে ফিরল। নোলান বলেছেন, তার সন্তান আছে, সে বোঝে বিষয়টা। সন্তান নেই এমন মানুষ কখনোই অনেকদিন পরে সন্তানের কাছে ফেরার আনন্দটা অনুভব করতে পারবে না। যেকারণে কব কেয়ারই করে না টপের দিকে। যে রিয়েলিটিতে আমার বাঁচছি, সেটা সত্যি না মিথ্যা , তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমি যে সেটা কেয়ার করছি না, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।







প্রত্যেকের কাছে আছে নিজের টোটেম। সেটা ইনসেপশনের টপ বা ছক্কার গুটির মত য়। সেটা প্রত্যেকের চেতনার বা শরীরের সাথে ইন বিল্ট। সেই টোটেম কিন্তু এটা বোঝায় না যেএটা রিয়েলিটি না স্বপ্ন, বোঝায় যখন আমরা লেয়ার ক্রস করি। স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে অনেক সময় এমন হয়েছে না, বুঝতে সময় লেগেছে, ওটা স্বপ্ন না বাস্তব ছিল? টোটেমটা তখনই কাজ করে। ইনপেসশনের টোটেম ও তাই রিয়েলিটি ও বাস্তবের পার্থক্য বোঝায় , আবার বোঝায় না। দুটোই সত্যি। কারণ প্রতিটা স্বপ্নের কাছে আগের লেয়ারটাই তো সত্যি। এবং সেই সত্যিটাই সব, কারণ মানুষ সেই লেয়ারেই বাস করে। আসল সত্যি লেয়ার বা জীবন কোনটা ? এটাই তো খুঁজে গেছেন বেদ, উপনিষদ, ত্রিপিটক। ধর্ম যাকে মোক্ষ, নির্বাণ মুক্তির মোড়কে মানুষকে চিনিয়েছে। ইনসেপশনের একটি টোটেম যদি একটা লেয়ারেই কাজ, অন্য লেয়ারে নয়, তাহলে বিষয়টা আরো বোঝা যেত। এতটা বোঝাতে বোধহয় নোলান নিজেও চাননি। সবকিছু পরিষ্কার হলে অসীমতার ধর্মটা নষ্ট হয়। অসীমতা ইনসেপশনের একদম শেকড়ে আছে। সাবজেক্ট যদি ড্রিম তৈরী করে , করতে পারে তাহলে- মানুষের অসীম ক্ষমতাকে স্বীকার করে নেয়া হয়। যার কথা বলা হয়েছে পৃথিবীর বেশিরভাগ ধর্মগ্রন্থে, বেশির ভাগ দর্শনে। কারণ সেই তৈরী করা জগতটা তার রিয়েলিটি যেমনটা ইনসেপশনের শুরু।





আর রিয়েলিটি নিয়ে প্রশ্নে আরেকটা বড় প্রশ্ন সামনে চলে আসে রিয়েলিটি কি? প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ, অন্তত এই উপমহাদেশের মানুষরা সত্যি ও মায়ার পার্থক্য নিয়ে অনেক গভীর আলোচনা করেছে। সত্যিকারের জগতকে দেখার জন্য মোক্ষ লাভের চেস্টা করেছে। ACIM বা অন্য কোন উপায়ে তা পাশ্চাত্যেও পৌঁছে গেছে। ইনসেপশনে Dream within dream এর আড়ালে কিন্তু আমরা Life within life দেখে ফেলেছি। তাই দেখাতে চেয়েছেন নোলান। পোস্টারের লেখাটা মনে পড়ে Dream is real , তাই নোলানের কাছে কবের ফেরা জগতকি বাস্তব না স্বপ্ন সেটা গুরুত্ববহন করে না, এমনকি যে জগত থেকে কব এসেছে, তাও কি বাস্তব বা স্বপ্ন সেটাও। অসীমতা তো মানবসৃষ্টির সাথে সাথেই পিছে লেগে আছে মানুষের, যদিও মানুষকে অসীমতা ধারণের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। সেই কারণেই অসীমতার প্রতি গুরুত্বও নাই মানুষের। মানুষ তার নিজের জগতে বাস করে, সেটাই তার কাছে বড়। তার চেয়েও বড় বিষয় এই জগত তার তৈরী করা বা তাদের তৈরী করা। তারাও তো মানুষ- তাই বিষয়টা আসলে মানুষের বা প্রাণের। সে কারণে বোধহয় খুব হেলাফেলা করে মানব জীবনের সবচেয়ে বড় কথাটি বলে ফেলা হয় হামেশাই..





আগের প্যারায় “তার তৈরী করা বা তাদের তৈরী করা” লাইনটা ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যক্তিক অথবা সমষ্ঠিক। যাপিত পৃথিবী যদি স্বপ্ন হয়, তাহলে সেটা কার দেখা? এককের না অনেকের। সম্ভাবনা বেশি সমষ্ঠির। কারণ সৃষ্টিতো হয় কল্পনা থেকে, কল্পনার ভিত্তি কিন্তু অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান। অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানের বাইরেও তো অনেক কিছু আছে পৃথিবীতে আর পৃথিবীতো এককের নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। সমষ্ঠিক স্বপ্নের রুপটা কি রকম? নোলানই বেস্ট ম্যান, এটা ব্যাখ্যা করার জন্য। ইনসেপশনের সিকুয়ালের ক্লুটা কিন্তু এখানে। নোলান, আপনি আমার লেখা পড়ছেন তো?



---



ইনসেশনের স্ক্রিনপ্লে



উপরের ব্যাখাটা পড়ার পরে ইনসেপশনের স্পয়লার দেখুন, হাসি হাসবে .. হা হা হা

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:২২

সুস্মিতা শ্যামা বলেছেন: Oshadharon! Etto chomotkar, etto well organized review, tai abar inception niye! Khub bhalo laglo.

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮

সুত্রধর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। এই রকম কমেন্টস লেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়।

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৩

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: অনেকদিন পর একটা কমেন্ট করতে ব্লগে লগ ইন করলাম, মনে হয় বছর খানেক পরে।

লেখা ভাল হয়েছে, সেই দিনগুলোকে মিস করি যখন ব্লগে ভরাই অর্থপুর্ন পোস্ট ছিল, এখনকার মত কপি পেস্ট গোবর নয়।

আপনার পুরনো লেখাও পড়লাম, লেখা চালিয়ে যান, এবং যত দ্রুত সম্ভব শক্ত স্টেবল কোন প্লাটফর্মে ( সচল বা ফেসবুক নোট) এ যান, এই ব্লগে ভাল পোস্ট এবং পাঠক এর সেই সোনালী দিন আর নাই

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০

সুত্রধর বলেছেন: আমিও সেই কারণে অনেক দিন গুটিয়ে ছিলাম। লিখি তো মনের শান্তির জন্য, তাই আর কোথায় বা লিখবো। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৩

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অসাধারণ তাৎপর্যপূর্ণ একটা লেখা। প্লাস এবং প্রিয়তে নিয়েও আশ মিটছে না, আশা করি কমেন্টে আসা হবে আবারো।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১

সুত্রধর বলেছেন: ধন্যবাদ , এটা লিখতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে, সেগুলো সফল হয়েছে মনে হচ্ছে।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

তামিম ইবনে আমান বলেছেন:
অসাধারন! আউটস্ট্যান্ডীং পোস্ট। ইন্সেপশন দেখার পর এ নিয়ে বেশ ঘাটাঘাটি করেছিলাম। আপনি এক পোস্টেই বাজিমাত করে দিলেন। এ পোস্ট কমপক্ষে ১ সপ্তাহ স্টিকি রাখা দরকার।


যাহোক, আপনি কি ইউটিউবে সিনেমাসিন ফলো করেন নাকি? আমি ফলো করি। এই চ্যানেলের লোক দুইটার হিউমার বেশ প্রবল।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬

সুত্রধর বলেছেন: ইনসেপশন নিয়ে মাথায় একটা যন্ত্রণা ছিল দেখার পর থেকেই। এটা লিখতে পারার পর সেটা কমেছে। মাইকেল কেইনের কমেন্টস টাই কিন্তু পথ দেখিয়েছে। ধন্যবাদ।

৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯

ত্রিভকাল বলেছেন: পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: অনেকদিন পর একটা কমেন্ট করতে ব্লগে লগ ইন করলাম, মনে হয় বছর খানেক পরে।

অস্থির রকমের ভালো লিখেছেন আপনি। আমিও শুধুমাত্র কমেন্ট করার জন্য লগইন করলাম। এতো ভালো লিখেছেন যে, আমি কি এখন ড্রিমের মধ্যে লিখছি না বাস্তবে লিখছি তা নিয়েই কিছুটা সন্দিহীন :#)

আপনার আরো পোষ্ট চাই। নাইলে ড্রিমের মধ্যেই গুলি করমু আপনাকে B-))

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

সুত্রধর বলেছেন: হা হা হা ড্রিমের মধ্যে গুলি মারলে আমি মরুম না, কারণ সেই টা আমার ড্রিম না। বাইচা গেলাম, এই চান্সে।

৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: অসাধারন একটা পোষ্ট!। দীর্ঘদিন পর ব্লগে এত চমৎকার একটা, পরিপূর্ন একটা রিভিউ পেলাম! পোষ্ট প্রিয়তে। শেয়ার করলাম।

এই মুভিটা দেখার পর অনেক দ্বিধা ছিল, অনেক কিছুই সহজ ভাবে বুঝতে পারছিলাম না, তাই নিঃসন্দেহে লেখাটা অনেক ভালো লাগল।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮

সুত্রধর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

জেমস বন্ড বলেছেন: চমৎকার রিভিউ । অসাধারন বলতে গেলে

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮

সুত্রধর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

গগণজয় বলেছেন: এই মুভি নিয়ে অনেক তর্ক আলচনা হয়েছে। তবে আপ্ নার টা নতুন করে ভাল লাগল।চমতকার পোস্ট।সবচেয়ে ভাল লাগলো যে কব আর কেয়ার করে না বাস্তবতা আর সপ্ন নিয়ে।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০০

সুত্রধর বলেছেন: আসলেই তাই, আমি বাস্তবে আছি না ড্রিমে আছি সেটা মোটেও গুরুত্বপূর্ণ না। আমি যে বাস্তব মনে করছি এটাই আসল কথা। অদ্বৈত বেদান্তও কিন্তু তাই বলে। ধন্যবাদ।

৯| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অসাম পোষ্ট ! এই সংক্রান্ত পরিপুর্ন একটি পোষ্ট বলা যায় !
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য !
পোষ্ট প্রিয়তে নিলাম!

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

সুত্রধর বলেছেন: ধন্যবাদ। প্রিয়তে নেবার জন্য আরেকবার।

১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫১

বোকামন বলেছেন:





একেই বলে কোয়ালিটি ব্লগিং !
যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন । তাই খুব ভালো একটা পোস্ট পড়ার সুযোগ হলো।
কৃতজ্ঞতা জানাই ।

আপনার পোস্টটি পড়তে পড়তে এডগ্যর এলানের কবিতার লাইন মনে পড়ে গেলো-

In a night, or in a day,
In a vision, or in none,
Is it therefore the less gone?
All that we see or seem
Is but a dream within a dream.


জানতে থাকুন, জানাতে থাকুন । নিয়মিত লিখুন
সাধারণ পাঠকের পক্ষ থেকে অনেক শুভকামনা রইলো ।।

+

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৬

সুত্রধর বলেছেন: বাহ.

In a night, or in a day,
In a vision, or in none,
Is it therefore the less gone?
All that we see or seem
Is but a dream within a dream.
কবিতাটি ব্যবহার করি লেখায়, কি বলেন?

১১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৩

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:

অর্ধেকটা পড়েছি । আলোচনা করার মত একটা পোস্ট । আপাতত প্রিয়তে থাক । বাকিটা পরে সময় করে আরো মনোযোগে পড়তে হবে ।

১২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৩

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:

অর্ধেকটা পড়েছি । আলোচনা করার মত একটা পোস্ট । আপাতত প্রিয়তে থাক । বাকিটা পরে সময় করে আরো মনোযোগে পড়তে হবে ।

১৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: অনেক দিন আগেকার কথা ,মুম্বাই এয়ারপোর্ট এ স্টিফেন হকিং কে সাংবাদিক পথিক গুহ প্রশ্ন করেন -
আপনি স্ট্রিং থেওরি মানেন ?
যান্ত্রিক গলায় উত্তর আসে অবশ্যই ।
তবে স্ট্রিং তৈরির ক্রিয়েটর কে ?
জবাবে হকিং স্মিত হাস্য ছাড়া কিছু দেয় নি ।


একদা ইন্সেপ্সান দেখার পর আমার ঠাকুমার কাছ থেকে শোনা একটা অদ্ভুত কথা মনে পরে গিয়েছিল ।

"অনন্ত কালের উপর শুয়ে আছে বিষ্ণু আর এই জগত টা হলো তার স্বপ্ন "

পরে একটু ঘেটে দেখলাম অদ্বৈত্ব বাদ -সেখানে বলা আছে "জগৎ মিথ্যা ,ব্রাম্হ সত্য "

এইবার কথা হলো -ব্রাম্হ টা কি জিনিস ?

সেখানে বলা আছে পরম সত্য ।

ওকে ।তবে পরম সত্য টা কি ?

এই ব্যাপারে উপনিষদ কোনো উত্তর দেয় না ।

তবে এটা কিভাবে জানব ?
উপনিষদ তিন টে উপায় দিল -

১)নিস্কাম ভাবে কাজ কর (আমার পক্ষে সম্ভব না )
২)হিমালয়ে নির্জনে গিয়ে আত্ম উপলব্ধি কর (এটাও এখন আর সম্ভব নয় )

৩)জ্ঞান অর্জন কর (এইটা বেশ ভালো ,বিজ্ঞান ভালো জিনিস )


বেদান্ত দর্শন এ আমি এখন পুরোপুরি প্রভাবিত ।আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ,তাই হয়ত কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে ফেল্লাম ।

আপনাকে একটি পোস্ট পড়বার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি -
Click This Link

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৩

সুত্রধর বলেছেন: সিদ্ধার্থ, খুশী করে দিলেন ভাই, নির্জন পথে সহযাত্রি পেলাম মনে হচ্ছে।

১৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৯

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

দুর্দান্ত রিভিউ!!
অনেক অনেক ভাললাগা।
পোষ্ট প্রিয়তে....

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

সুত্রধর বলেছেন: :)

১৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৪

তানভীর এফ আখতার বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৫

সুত্রধর বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১২

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: অসাধারণের উপরে একটি পোস্ট!!!


দুর্দান্ত রিভিউ !!!

১৭| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৫

মুম রহমান বলেছেন: অসাধারণ লেখা স্যালুট।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২১

সুত্রধর বলেছেন: মুম দা, কেমন আছেন। হরতাল মানেই তো আপনার ছুটি। সিনেমা দেখার সময় পাওয়া গেল অনেক, তাই না?

১৮| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: এত দূর্দান্ত একটা পোষ্টে এত কম লাইক? আমি হতাশ। দিলাম ঠেলা।

১৯| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৯

আহমেদ সাব্বির পল্লব বলেছেন:

২০| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯

সাদরিল বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা।গতকাল রাত্রে একবার পড়েছি, এখন এসে আরেকবার পড়ে গেলাম।

২১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

মশিকুর বলেছেন:
উপায় নাই ++++


এইটারে বলে রিভিউ।

২২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:

যে রিয়েলিটিতে আমার বাঁচছি, সেটা সত্যি না মিথ্যা , তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমি যে সেটা কেয়ার করছি না, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।

এটাই হল আসল কথা। অত প্যাচের মধ্যে না যাওয়াই ভালো। নইলে বৌদ্ধ ভীক্ষুদের মত সন্ন্যাসী হইতে হবে... ;) ;)

২৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১০

অন্ধ আগন্তুক বলেছেন: স্যালুট ! শোকেসড ! অনেকদিন পর !

২৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩

সন্দীপ হালদার বলেছেন: অনেক দিন পরে আমার প্রিয় বিষয় নিয়ে কেউ লিখল। পুরো লেখা পরে পড়ব। আগে ধন্যবাদ জানায় গেলাম।

২৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩১

ইমু আনোয়ার বলেছেন: খুব সুন্দর একটা লেখা । পরিশ্রম হয়েছে প্রচুর বোঝাই যাচ্ছে । এত জটিল বিষয়কে গুছিয়ে চমৎকার করে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । আরো লিখুন শুভকামনা রইল ।

২৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০৩

শাহরিয়ার নীল বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন. সাটার আইলেনড নিয়ে লিখেন ভাই

২৭| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৩৪

মষ্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলেছেন: পৃথিবীতে বোধহয় শুধু একটা মুভি নিয়েই স্পয়লার পোষ্ট দিলেও আগ্রহ কমে না, বরং বেশ বাড়ে- তা হ'ল ইনসেপশন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.