নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার নিজস্ব কিছু মন খারাপের গল্প থাকে :( আবার সময়ে মন খারাপের গল্পের ভুমিকা বদলায়, গল্প বদলায় কিন্তু মন খারাপের গল্প না থাকলেও কেমন যেনো অপূর্ন ভাব থেকে যায়, তাই আমি চাই মন খারাপের গল্প লিখে যেতে :) সময়ে-অসময়ে :( শেষ কবে কেঁদেছি সে কথা মনে থাকলেও শে

তাই-ফি

আমি বাংলাদেশের একজন দালাল বলছি !!

তাই-ফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার অতীত .. ভবিষ্যত নেই

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:০৬

কোনো একদিন কোথাও থেকে জানি ফিরছিলাম। দিন ভুলে গেছি, ঠিক মনে করতে পারছিনা ! তবে,আসলে কি ফিরছিলাম ? কোথায় ফিরে আসি ? ফিরে কি আসি আসলে ? তা কি কখনো বাধ্যতামূলক হয় বরং ইচ্ছাকৃত হবার কথা। ধরে নিলাম আমি ফিরি না। তাহলে যারা ফেরে, সে মানুষগুলো কোথায় ফেরে? তারা কি কোনো পদার্থের পার্থিব টানে ফিরতে থাকে ? নাকি সত্যিকারেই কোনো অপদার্থ কিছুর প্রতি অপার্থিব টানে তাদের এই ফিরে যাওয়া ? আশলেই কি তারা মনের খুশিতে তারা ফেরে?

তাহলে, আমি কেন ফিরিনা কোথাও?

মাঝে মাঝে মনে হয় বেশি প্রশ্ন করে ফেলছি। একেকটা ‘কেন’র ওপর নতুন করে চড়াও হয়ে বলতে ইচ্ছা করে – আমি এতো কেন? কেন? করি কেন!?! যাই হোক প্রশ্নদের ওপর চড়াও হয়ে ফের প্রশ্ন করা আপাততঃ বন্ধ করি। চলে যাই কোথাও না কোথাও ফিরে যাওয়াতে অথবা না-ফিরে যাওয়াতে। কিন্তু আমিতো কোনদিনও ফিরিনা। শুধু যাই। যেতে থাকি। ফেরা প্রসঙ্গেও আবার যাই-ই ই ই ই বরং।

সেদিন বিকেল বেলা। বিকেল বলতে ঠিক বিকেল বোঝাচ্ছিনা অবশ্য। মানে, সে একদম বিকেল বা দুপুর নয়! সন্ধ্যাও নয় আবার প্রায়-সন্ধ্যাও নয়। বরং দুপুরের ঠিক শেষ অংশের কোণা থেকে যে মুহূর্ত, দুপুরের আঁচলের একেবারে শেষ সূতোটা ধরে বা ছেড়ে যার শুরু আর শুরু হতে হতে পরিণত হওয়া এক বিকেল। তেমনি ঘোর এক বিকেলে একই রকম ঘোরতর একা আমি!! কোথাও থেকে কোথাও চলেছি। রিকশাঅলা ভিআইপি রাস্তা, মেইন রাস্তা, অলি-গলি করে কোথাও চলেছে। তার আর আমার গন্তব্য একই। তবে, তার বেছে নেয়া পথ আমার পরিচিত নয়। তবু, পথ বেছে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবার ভার ছেড়ে দিয়েছি তার ওপরেই। সে সেই দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকুক
নিজের মতোন। আমি শুধু তার বেছে নেয়া পথেদের চারপাশের দৃশ্যে ডুবে যেতে ব্যস্ত থাকি নিজের মতোন।

একেকটা দৃশ্যে কতোকিছু থাকে। মানুষ আর পাখি। বিশ্রামরত কুকুর। গুরুত্বপূর্ণ ভাবনায় কাক। বিকেলের গা ঘেঁষে হঠাৎ উড়ে যাওয়া কবুতরের ঝাঁক। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া, ছুটে যাওয়া মুখেরা। কিছু মুখ নিশ্চুপ দাগ কেটে যায়, কিছু আবার স্পর্শও করেনা। কতো কতো পদার্থ আর অপদার্থ। রাস্তা আর বাঁক। টুং টাং। শব্দ, গন্ধ, রঙ। কতো কন্ঠের বকবকানি মিলেমিশে তৈরি হয় অদ্ভুত গুঞ্জন। বিভিন্ন চেহারার ভিন্নভিন্ন ভাবের প্রকাশ ফুটে ওঠা অথবা একেবারেই ভাবলেশহীন। সেই না-ফুটে ওঠার আড়ালেও রয়ে যায় হয়তো কতো অজানা গল্প বা ভাব। অপ্রকাশিত সমস্ত রঙে আর গন্ধে, প্রকাশের আর অপ্রকাশের মেলা মেশার সুঁইয়ের খোঁচায় সুতোর বুননে তৈরি হতে থাকে দৃশ্যেরা। বিস্ময়ে অবাক হয়ে চেয়ে থাকি। নিজের মুখের বিস্ময়দের লুকিয়ে রেখে দেখে যেতে থাকি শুধু। এক মুহূর্তের দৃষ্টির সীমায় যতোটুকু ধরে রাখা সম্ভব, যতোটুকু পারা যায়।

একেকটা দৃশ্য থেকে মনের কোণে যা দাগকাটে বা যা দাগ কাটেনা তাদেরও কোনো সীমা থাকে না। কখন যে কী দাগ কেটে যায় কেউ কি বলতে পারে? কিংবা কে দাগ কাটে? কোন সুর হঠাৎ বৃষ্টির মতো স্মৃতির পশলা ঝরিয়ে দেয়। কোন গন্ধে একনিমেষে চলে যাওয়া যায় সম্পূর্ণ অন্য এক নিমেষের কাছে। যেন টাইম মেশিন। বৈজ্ঞানিক কোনো সূত্রে যাকে ধরে বেঁধে রাখা যায়না। যার কোনো নির্দিষ্ট সুইচ নেই। হঠাৎ যে কোনো কোথাও স্থানান্তর হয়ে যেতে পারো । স্মৃতির প্রকান্ড ক্যানভাসের যে কারো কাছে। মনের ক্যানভাসটাও ভীষণ প্রকান্ড বা অদ্ভুত। একেক সময় একেক রঙ তাকে টানে। কোন সুর পায়ের ছাপ রেখে যাবে চিরতরে তার কাছে – কে বলতে পারে? সেদিনের ছুটে যাওয়া দৃশ্যেদের মধ্যে ডুবে যেতে যেতে আর ভেসে যেতে যেতে হঠাৎ দাগ রেখে যাওয়া তার কথাই বা কে বলতে পারতো !?!

বাঁকা ত্যাড়া গাছের মতো নিজেকেও বেশ উদ্দেশ্যহীন মনে হয়। বাঁকা এবং ত্যাড়াও বটে। যদিও আমাকে নিয়ে ছুটে চলা রিকশাটার গন্তব্য বেঁধে দেয়া। আপাতঃদৃষ্টিতে তাই আমার উদ্দেশ্য আছে বৈকি! তবু, আপাতঃর দৃষ্টি এড়িয়ে, দৃশ্যমানের আড়ালের অদৃশ্যকে সামনে আনতে গেলেই দৃষ্টিগোচর হয় ভেতরের কতো গল্প। যে গল্পে আমার উদ্দেশ্য বিধেয় আর বেঁধে দেয়া নেই। একবার ডানে মোড় নিচ্ছি আবার বাঁয়ে বাঁক। ফের মোচড় খাচ্ছি। কই যাচ্ছি? কিংবা যাচ্ছিই না। তবে তা-ই বা খারাপ কী? সবাই কে দেখি খুব তাড়াহুড়ো করে কোথায় যেন যায় কিংবা হয়তো ফেরে। তাদের বড় তাড়া। দীর্ঘ পদক্ষেপে নির্দিষ্ট গন্তব্য থাকবার প্রমাণ সুস্পষ্ট। ওয়াক উইথ আ পারপাস! গন্তব্য থাকলে তো পৌঁছানোর তাড়া থাকবেই। সেতো অকারণ নয়। তারা ফিরে যেতে চায়। আমি ফেরার জায়গা নেই তাই তাড়াও নেই।
আমার কোনো কারণ নেই, গন্তব্য নেই বা তাড়াও নেই। আমি মন চাইলেই রিকশাটেকে বলতে পারি আস্তে চালাও কিংবা ফুটপাতে আরো দু’দন্ড বসে থাকতে পারি। মানুষ দেখতে পারি। শুধু মানুষ কেন – গাছ, পাখি কিংবা ম্যানহোলের ঢাকনাহীন গর্তের দিকেও তাকিয়ে থাকতে পারি। ইচ্ছে করলে পাশের টং থেকে আরো এক কাপ চা খেতে পারি। দুই কাপও। যদি পাশের টং পছন্দ না হয়? আমি ধীর পায়ে হেঁটে হেঁটে চষে বেড়াতে পারি অন্য টং এর খোঁজে। এক কাপ চায়ের জন্যে।

রিকশায় থাকলেও ক্ষতি নেই। অকারণ জ্যামে পড়লে বার বার ঘড়ি দেখার প্রয়োজন নেই। বরং কানে হেড ফোনে গুঁজে দিয়ে নির্বিকার তারাহীন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে পারি, এমনো দিনে তারে বলা যায়..! যদিও সেই ‘দিন’ সেই ‘তারে’ বাসেই ‘বলার মতো কথা’ – কিছুই আমার নেই। তবু ভাবতে কী দোষ? আমার তো তাড়া নেই। আমি ভাবতে পারি যে কোনো কথা। যে কারো কথা। কিছুই করার প্রয়োজন যে নেই। ইচ্ছেমতো তাই ভাবে যেতে পারি। ইচ্ছেমতো হেঁটে যেতে পারি যে কোনো দিকে। ডানে মোড় নিয়ে আবার বাঁয়ে বাঁক নিয়ে ফের মোচড় খেতে পারি কোথাও। আমার উদ্দেশ্য নেই। গন্তব্যও নেই কোনোখানে।

কখনো অনেকখানি থমকে যাই। আমি থামি। সাথে চিন্তা ভাবনার চেতনারাও থামে। সে সাথে আমার সময়ও থমকায়। তার ছায়া লম্বা হতে থাকে আর চারপাশে সবকিছু বড় দ্রুত চলে যায়। টেনে দেয়া গানের মতো। ছবির মতো। মাঝখানে আমি। সাথে অনেক অনেক বাক্স আর প্যাঁটরা আর সেইসব প্রকান্ড স্মৃতিদের বোঝা। সেইসব আপাতঃ দৃষ্টিদের। সেইসব দৃশ্যমান দৃশ্যদের। সবকিছু নিয়ে দ্রুত বয়ে যাওয়া গতিদের মাঝখানে থেমে যাওয়া আমি। বসে থাকি। দেখতে থাকি। শুধুই দেখে যাওয়া। হঠাৎ কখনো ইচ্ছে হয় খুব তাড়া থাকুক। প্ল্যান থাকুক। প্রতিমুহূর্তে ঘড়ির কাঁটা আমাকে তাড়া করুক। ভ্রুঁ কুঁচকে, বকতে বকতে, ঝাড়ু হাতে, কি লাঠি হাতে। টিক টিক। কিন্তু তারাও নিঃশব্দ বড়। তাদেরও পদচারণা সন্তর্পণে। বড়বেশি সাবধানে। আমাকে তাড়া না দিয়েই তারা ছুটতে থাকে। আমি বসে থাকি। বসে থাকি, চেয়ে থাকি আর চাইতে থাকি। চেয়ে থাকার চাইতে থাকার মধ্য দিয়ে রিকশাটাও ছুটে চলে না-ফেরার গন্তব্যে। আমার স্মৃতিদের ভীষণ ক্যানভাসে আরেকটা সুতো যোগ হয়, বাঁকা আর ত্যাঁড়া গাছের মতো। আমার মতো। উদ্দেশ্যহীন, তাড়াহীন। শুধু, স্মৃতিহীন নয়।
____________________________________________________
আশরাফুল মাহমুদ,
ফিল্মমেকার, বি,বি,সি ওয়ার্ল্ড
ঢাকা, বাংলাদেশ।
০৮/০৬/২০১৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ফ্লিম মেকার?? !!!

গুড ভেরি গুড।

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৩০

তাই-ফি বলেছেন: এই আর কি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.