নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার নিজস্ব কিছু মন খারাপের গল্প থাকে :( আবার সময়ে মন খারাপের গল্পের ভুমিকা বদলায়, গল্প বদলায় কিন্তু মন খারাপের গল্প না থাকলেও কেমন যেনো অপূর্ন ভাব থেকে যায়, তাই আমি চাই মন খারাপের গল্প লিখে যেতে :) সময়ে-অসময়ে :( শেষ কবে কেঁদেছি সে কথা মনে থাকলেও শে

তাই-ফি

আমি বাংলাদেশের একজন দালাল বলছি !!

তাই-ফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতে ওঠা আর হইলো না আমার – ৩

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪৫

আগেই কইসি আমার বহুদিনের শখ জাতে উঠার কিন্তু কোন ভাবেই আমি জাতে উঠতে পারছিলাম না। বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলাম। সাদাগো দেখতাম কি সুন্দর চামচ দিয়া খায়। বাঙ্গালীর পোলা আমি। হাতে খেয়ে বড় হইসি, চামচ আমাকে কোন দিনই শান্তি দিতে পারে নাই। শুধু সাদা কেন আফ্রিকান কৃষ্ণ বর্নদের ও দেখতাম চামচ দিয়া খাইতে কিন্তু আমার হাত ধুইয়া না খাইলে কোন দিন শান্তি লাগে নাই। তাদের খাওয়া ও শৌচকর্ম এই দুইটা জিনিসের সাথে আমি কোনদিন নিজেকে মানাইয়া নিতে পারি নাই। টয়লেট পেপার নামক ওই পাতলা, ফ্যারফ্যারা কাগজ দিয়া পশ্চাতদেশ ঘইসা তারা কোন শান্তি পায়, এইটা কোন দিন আমার মগজে এর সুদুত্তর পাই নাই ।
সে যাক, বলছিলাম খাবার কথা। ‘খাবার কথার সাথে শৌচ কর্মের কথা না মিলানোই ভালো’ এই কথা জানি কিন্তু ঐ যে জাতে উঠতে পারি নাই, এজন্যই নানা কারনে মানতে পারি না অনেক সময়। না চাওয়া সত্বেও আমি কেমনে জানি কাটা, চামচ, ইত্যাদি দিয়া খাওয়া শিখা গেছিলাম !! কেমনে তা বলতে গেলে সাত খন্ড রামায়ন হইয়া যাবে।তাই এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো, জাতে উঠবার পরে ধারনা হইসিল কাটা, চামচ, ছুরি ইত্যাদি দিয়ে খাইতে হবে নিয়ম কইরা দুই বেলা কিন্তু সব ভাবেই দেখছিলাম আমার জাতে উঠা কোনদিন হবে না তাই আর চেষ্টাও করি নাই। আমার কর্মক্ষেত্রে এক ভদ্র লোক ছিলেন। একবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ভাই তুমি কাটা, চামচ, ছুরি ইত্যাদি দিয়া খাইতে পারো? লজ্জা পাইয়া বললাম, তা অল্প-সল্প পারি আর কি। তিনি আমারে প্রায় মিনতিয়া মতো কইরা বার বার বললেন তাকে শিখায়া দিবার জন্যে। এমন অনুরোধে একটু অবাক হয়ে গেলাম। মানুষ একমাস না খায়া থাকলেও, খাবারের জন্যও এমন ভাবে মিনতি করবে বলে আমার মনে হয়না। এমনেতেই আমার জাত পাত হীন হিসাবে অনেক সুনাম আছে। কাট খোট্টা, বদমেজাজি, ঠোটকাটা হিসাবেই সবাই আমাকে চিনে। তারে না জিগায়া থাকতে পারলাম না যে, সে এটা শিখে কি করবে? আমি জাতে উঠতে পারলাম না কিন্তু উনি জাতে উঠবার কোন খোজ যদি পায়া থাকেন তাহলে তার থেকে তা জাইনা নিবো। কারন জানা গেলো যে, সে আমাদের কোম্পানীতে রাশিয়া থেকে যে নতুন সাদা পাখিটি আসছে তাকে বগলদাবা করতে চান। তিনি যেন হৈমন্তি গল্পের অপু হয়া গিয়েছিলেন। পাইলাম, তাকে পাইলাম এই রূপ ভাব তার। আমারও জাতে উঠবার আরো একবার দুর্মতি হলো। আমি ঠিক করলাম আমি তাকে কাটা, চামচ, ছুরি ইত্যাদির ব্যাবহার শিখাবো।
আগেও বলছি যেহেতু জাতে উঠতে পারি নাই সেহেতু জাঙ্ক ফুড খাইয়াই আমার ভালো কাটতো আর থাকতাম সাদাদের সাথে তাই সবসময় রান্নাও করা হত না। মাঝে মদ্ধে রান্না করতাম। যাই হোক, সেই ভদ্র লোকের কাটা, ছুরির ব্যাবহারিক শিক্ষাও শেষ হইয়া গেলো কয়েক দিনের ভিতর আর ঘটনাক্রমে সেই সুন্দরি তরুনী আমার সাথেই, মানে আমার ঠিক পরের পোস্টেই কাজ করতে আসলো। কেমনে জানি আমার সাথে প্রথম দিন থেকেই তার অতিব খাতির হইয়া গেলো। সে একদিন আমাকে বঙ্গদেশিয় খাদ্যের কথা জিজ্ঞেস করলো, আমি তাকে ভুলে কিছু খাবারের সম্পর্কে বাড়াবাড়ি রকমের সুনাম করিয়া ফেলিয়াছিলাম। শুনে তাহার খুব শখ হলো সে আমার স্বহস্তে রান্না করা কিছু খাবে। সুন্দরী ললনাদের কথায় মৈনাক পর্বত নাকি টইলা উঠে, ঋষি মুনিদের ধ্যান ভাইঙ্গা যায়, সেইখানে আমি আবার কোন ছার। অনুরোধে আমি শুধু ঢেকি না পুরা রাইস মিল গিলা নিলাম চিন্তা করলাম তাকে কম কষ্টে কি খাওয়ান যায়। বহু চিন্তা কইরা তার জন্যে খিচুড়ি রাইধা নিয়া গেলাম।
কর্ম বিরতিতে দুই জন এক সাথে খাইতে বসলাম। তাকে দেখায়া দিলাম আমরা বঙ্গদেশিরা কি করে হাত দিয়া খাইয়া থাকি। ললনা খুব মজা পাইল। সে বললো আমার কাছ থেকে বঙ্গদেশের খাদ্যর সুনাম শুইনা, সে এটা ইউ টিউবে দেখেছে। আহা!!! মনটা ভালো হয়া গেলো। সে অল্প খাইয়া আমার সাথে গল্প করতে লাগলো। এমন সময় আমার সেই ভদ্র লোকের আগমন ঘটলো। সে তার পক্ষীকে আমার সাথে দেইখা কি চিন্তা করলেো আল্লাহ্‌ মালুম। তিনি ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে তার পরানের পাখিকে পুতু পুতু করে জিজ্ঞেস করলো ‘কি করো’? পাখি কইল সে “কেসরি” খাইতেছে। আমার দেখা দেখি সেও হাত দিয়াই খাইতেছিলো। ভদ্র মহোদয় মনেহয় ঈর্ষা কাতর হইয়া পড়লেন। তিনি বললেন, এই ভাবে কোন ভদ্র লোক খায়? খেতে হবে কাটা, ছুরি, চামচ দিয়া। ললনা আমাকে দেখায়া বলল “ও যে খাচ্ছে”। তখন ভদ্রলোক যা বলল তাহার মর্মার্থ দাড়ালো কোন ভদ্রলোকে, জাতে উঠা মানুষ এই ভাবে খায় না। একমাত্র ছোট জাতের মানুষেরাই হাত দিয়া খাইয়া থাকে। আমি কিছুক্ষন তার দিকে তাকায়া রইলাম। এরপরে মনযোগ দিয়া খাইতে খাইতে চিন্তা করলাম জাত তো আমার এমনিতেই নাই এতো ছোট খাটো ব্যাপারে মাথা ঘামাইয়া কি হবে। তার চেয়ে বরং খিচুড়িটা ভালো হইসে। তাই উপভোগ করা শ্রেয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.