নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এ আকাশ এমন আকাশ, কখনো ছায় মেঘে- সে আবার সুখেই ভাসে, দখিন হাওয়া লেগে

কে আই তাজ

মানুষ পুরো খাঁটি হয় না, হলে সে ফেরেশতা। তবুও কারণে- অকারণে নিজেকে নিত্য মনে হয়, বিশুদ্ধতার প্রতীক।

কে আই তাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

থ্রিজি ভালোবাসা, হায় রে ভালোবাসা!- প্রেক্ষিত ২০১৪ এপিক

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২৪

আজকের গ্যাংনাম প্রজন্মের ভালোবাসা শুরু হয় 'দোস, প্রেম করুম, একটা ফোন নম্বর দিস' এর মাধ্যমে। ক'দিন পরে ফেসবুকের স্ট্যাটাসে ভেসে ওঠে, মনের মানুষটি চলে যেতে চাইলে তাকে চলে যেতে দাও, সে যদি ফিরে আসে, বুঝবে সে তোমার ছিল, আর যদি না আসে বুঝবে সে কখনও তোমার ছিল না। অন্তমিলহীন উরাধুরা শুরু আর ট্র্যাজিক শেষ!



ডুবি আর ভাসি, ডুবি আর ভাসি

এই মনেতে যতন করে, আড়াল করে রাখি

ভালোবাসি,ভালোবাসি



ভালোবাসা দিবস', বছর ঘুরে ঘুরে আসে। এ দিন রাস্তার ফুটপাত আর পার্কের বেঞ্চ দখল করে একেকজন হয়ে উঠি ভালোবাসার সওদাগর। দিনভর দেদারসে বেচাকেনা চলে ভালোবাসার। ভালোবাসার তোড়ে বাবা-মার দেওয়া সুন্দর নামগুলো ময়নাপাখি, টিয়া, জান, জান্টু, বেবি, হানি ইত্যাদি শব্দের মাঝে হারিয়ে যায়। আমরা যেন হয়ে উঠি ভালোবাসার জীবন্ত কিংবদন্তি।



পাছে তারা কষ্ট পাবে, তাই বন্ধু, ক্লাসমেট আর অফিসের কলিগদের সঙ্গে কত সুন্দর করে কথা বলছি; অথচ দায়ে পড়ে নিজের মায়ের সঙ্গে কথা বলছি অত্যন্ত রূঢ় ভাষায়। যেন সব বিরক্তির কারণ এই 'মা'; ছুটির দিনেও ছোট বোনটির আবদার মেটাতে তাকে নিয়ে একটু বাইরে বেরোনোর ফুরসত মেলে না, ওকে- তাকে নিয়ে ক্লাস আর অফিস ফাঁকি দিতে আমাদের মোটেও লজ্জা করে না। ঘরের সব ভালোবাসা বাইরে রফতানি করে দিয়েছি, তাই ঘরে আমরা রিক্ত, শূন্য, নিঃস্ব। পথে, ঘাটে, পার্কে, রেস্তোরায় ভালোবাসা বিলি করে বেড়াই, অথচ ঘরে ভালোবাসার দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। এসবই বুঝি আজকের থ্রিজি (থার্ড জেনারেশন) ভালোবাসার নমুনা!



রাসায় চলতে গিয়ে প্রেমিকের কান ফাটানো আর্তনাদ শোনা যায়- 'এর বেশি ভালোবাসা যায় না, ও আমার প্রাণপাখি ময়না'; প্রেমিক ভালোবাসার সর্বোচ্চ স্কেল আবিষ্কার করে সেটা অতিক্রম করে ফেলেছেন। কী অদ্ভুত! অথচ দু'দিন পর ভালোবাসার ভাষা বদলায়। তখন আর ভালোবাসা নয়, আর্তনাদ শোনা যায়, 'পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই'; যে ভালোবাসা বহুগামীতার অপর নাম, সে ভালোবাসা তো উড়াল দেবে আকাশে। সেটা উড়াল দেওয়ার জন্যই উড়ে এসে জুড়ে বসে। যে ভালোবাসার পরতে পরতে কৃত্রিমতা, সেটি আর যাই হোক না কেন জীবনকে প্রশান্ত করতে পারে না।



এবার একটু ইতিহাস থেকে চক্কর দিলে বুঝব ভালোবাসা কতটা মহৎ হতে পারে। ২৬৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রোমে 'সেন্ট ভ্যালেন্টাইন' ভালোবাসার দৃষ্টান্ত রাখতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন। আর এখন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা দূরে থাক, ভালোবাসাকে বিয়ে পর্যন্ত টেনে নিতে আমাদের অনেকেরই প্রকাশ্য অনীহা। আরেক কদম এগিয়ে অনেকে দুটোকে একদম আলাদা করে ফেলেন! আর এখনকার ভালোবাসায় স্বর্গীয় মনন স্থান পায় না। কোনো নির্লোভ, নিঃস্বার্থ মহত্তের জন্য আমাদের মনে ভালোবাসার জন্ম নেয় না। আমরা গভীর ভালোবাসায় নিমজ্জিত হয়েও লাভ-লোকসানের গরল অঙ্ক মেলাতে ব্যস থাকি। ছেলের স্ট্যাটাস আর মেয়ের বাবার সম্পদ আমাদের ভালোবাসার গভীরতা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। ছেলে মেয়েকে শিকারের ফাঁদে ফেলেই বীর পুরুষ, মেয়ে ছেলেকে নাটাই সমেত ঘুরিয়ে, অপদস্থ করে, পকেট কে গড়ের মাঠ বানিয়েই বিশ্ব বিজয়ী।



প্রমিথিউসের বিপ্লবের- “হায় রে ভালোবাসা, হায় রে ভালোবাসা” গানের চরণযুগলই যেন আকাশ বাতাস ভারী করে আছে বহু বছর, হয়তো থাকবে আরও কিছু অনাগত কাল!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.