![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদিও এখন শীতকাল, তাই বলে কি বসন্ত খুব বেশী দূরে!
আগে আত্মীয় স্বজনের কারো বিয়ে ঠিক হলে, ছোট-বড় সকলের মধ্যেই একটা ঈদের খুশী চলে আসতো। শুধু কার্ড পাঠিয়ে নিয়ম রক্ষা না, বাসায় এসে সবাইকে দাওয়াত দিতে হতো। উপস্থিত থাকতে হবে বিয়ের দুই দিন আগে থেকে।
সকল বউদের মধ্যে শুরু হয়ে যেতো শাড়ী আর গয়না নিয়ে অলিখিত প্রতিযোগিতা। গায়ে হলুদের দিন আবিস্কার হতে থাকতো নতুন নতুন নিয়ম। মেয়েরা কেউ যে কারো চেয়ে কম জানেনা এটা প্রমান করাই একমাত্র লক্ষ !
সব বিয়ে বাড়িতেই কিছু মামা আর দুলাভাই থাকে যারা সকলের পছন্দের। এরা আসর জমিয়ে রাখে। মহিলাদের পরনিন্দা, তরুণীদের অহেতুক ছোঁটাছুটি, বাচ্চাদের হৈচৈ আর বয়স্কদের উপদেশ সব মিলিয়ে জমে উঠে বিয়ে বাড়ী। কিছু ভাবী থাকে যাদের মুখ খুবই আলগা, তাদের উঁচু গলার অশ্লীন রসিকতা সবার মাঝেই উত্তাপ ছড়ায়। শুরু হয় বয়স ভুলে কাদা মাখামাখি আর রঙ ছোড়াছুঁড়ির খেলা। সে এক ভয়ংকর দৃশ্য ! তত্ত্ব নিয়ে আসা অন্য পক্ষের লোকজনও তা থেকে রেহাই পেতো না। এর মধ্যে পরিবারের সবচেয়ে গরীব আত্মীয়টি, হীনমন্যতায় ভুগে নিজের উপর ফোকাস আনার জন্য শুরু করতো তুচ্ছ কারনে ঝগড়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে হতো দুলাভাই বা মামাকে।
সব পরিবারেই কিছু ছেলে-মেয়ে থাকে যারা মামাতো-চাচাতো বা একটু দূরের আত্মীয়ের সাথে প্রেম করে বেরায়। আসলে দোষটা বয়সের। তাদের এই কয়টা দিন সুবর্ণ সুযোগ কিছুক্ষন পর পর গোপন জায়গায় গিয়ে প্রিয় মানুষটির সাথে দেখা করার, তা সে দিনে হোক বা রাতে। মেয়ের মায়েরাও এই সময়ে মেয়েদের খুব বেশী চোখে চোখে রাখতে পারতো না।
যুবকদের কাজ বিয়ে বা বউভাতের অনুষ্ঠানের আগে সারা রাত জেগে বাবুর্চিদের সাথে রান্নার যোগারযন্ত্র করা। বিয়ের খাবার দুই ধরনের, অতিথিদের রোষ্টের জন্য রানের পিস আলাদা করে রাখা। একটা করে কোকের বোতল সেটাও তাদের জন্য। ঘরে পাতা দই থেকে মেহামানদাড়ির বাকি কাজ সবই নিজেদের দাড়িয়ে থেকে করতে হবে।
এখন বিয়ের অনুষ্ঠান মানে আত্মীয়তা রক্ষা করতে যাওয়া। হিন্দি সিরিয়ালের অনুকরনে হলুদের আগে মেহেদী। কাওয়ালী, ঠুংরি আর গজলে মোড়া অনুষ্ঠান ! হলুদের দিন রঙ-কাদা ছোড়াছুড়ি, কল্পনাও করা যায়না ! ঢাকা শহরে কাদা কই, চারদিকে শুধু ধুলা। বর-কনে সকালে চলে যায় প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করতে। বাকিদের পার্লারে বসে থেকেই সময় কাটে, পেডিকিউর মেনিকিউর কিছুই বাদ রাখা যাবেনা। কি করলে স্টিল ক্যামেরায় ছবি আরো ভালো আসবে চলে তার সাধনা। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর কনসার্ট, ডিজে পার্টি। স্টলে স্টলে সাজানো ফুচকা-পিঠা-কফি।
বিয়ে-বউভাতে ৭টার অনুষ্ঠান শুরু হবে ১০টায়। আত্মীয়রা যে যত দেরি করে আসে তার তত ভাব ! দামী শাড়ী গয়নায় ছিটানো পারফিউমের সুবাসে কনভেশন সেন্টার ভরে উঠে। অনুষ্ঠানের ভার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির হাতে। তাই দামী ফোনে সেলফি তুলে আপলোড দেয়াতেই সবাই বেস্ত থাকে। বাচ্চারা গোমড়া মুখে ঘুরে বেড়ায়। তরুন তরুনীরা এক কোনায় বসে যার যার সার্কেলের সাথে অনলাইনে চ্যাট করে। খাবার টেবিলে অনেক ধরনের রাশী রাশী খাবার কিন্তু কাউকে আকর্ষণ করেনা। ভদ্রলোকরা জানে রিচ ফুড ক্ষতিকর। শুধু পানের সময় হিসেবটা ঠিক রাখা যায় না।
সানাইয়ের করুণ সুর কেন যেন পরিবেশটাকে সত্যি সত্যি বিষণ্ণ করে তুলে...
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৭
তানভীর আহমেদ সম্রাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪
নকীব কম্পিউটার বলেছেন: নাইস