![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদিও এখন শীতকাল, তাই বলে কি বসন্ত খুব বেশী দূরে!
আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি।
মনে আছে ছোট বেলায় আমাদের বাসায় মুরগী রান্না হতো কালে ভাদ্রে, বাসায় মেহমান আসলে বা কোন মুরগী হটাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে তখনই কেবল মুরগী জবাই হতো। সেই একটা মুরগী দিয়ে আমরা পুরা পরিবারের লোকজন তৃপ্তি নিয়ে ভাত খেতাম। লাল রঙের বোরো চালের ভাত।
শনিবারে শীবরামপুর হাটে সাপ্তাহের বাজার করতে যেতাম, আমার দাদী ৫ টাকা করে দিতো খরচ করার জন্য। ৩ টাকা দিয়ে এক বাটি হালিম খেতাম আর দুই টাকায় জয়পারা চানাচুর। হালিমের দোকানটাতে দুই ধরনের বাটি ছিল ছোট আর বড়। বড় বাটির দাম ছিল ৫ টাকা, সেই বাটিতে বিশাল একটা নলির হাড় থাকতো। খুব ইচ্ছে করতো ৫ টাকা দিয়ে বড় নলির হাড় খাবো, কিন্তু তাহলে চানাচুর বাদ পরে যায়। তবুও সেই অতৃপ্তি নিয়েই সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতাম কবে শনিবার আসবে?
আমাদের বাসায় একটা ২০ ইঞ্চি ন্যাশনাল টিভি ছিল, ব্যাটারীতে চলতো। সাপ্তাহের দুইটা নাটক আর সিনেমা ছাড়া বাকি অনুষ্ঠান দেখা হতোনা। এমনকি বিজ্ঞাপনের সময় প্লাগ খুলে রাখা হতো। কারন ব্যাটারী চার্জ করাতে হতো অনেক দূরে নিয়ে গিয়ে। ম্যাকগাইভার দেখার জন্য কাদতাম। মাঝে মাঝে হয়তো দেখার সুযোগ মিলতো, বেশীর ভাগ সময়ই পারতাম না।
আমার ছোটবেলার অতৃপ্তি নিয়ে বেড়ে উঠা সেই জীবনটাকেই আজকাল কেনো যেন খুব অর্থপূর্ণ মনে হয় !
আমার এখনকার জীবনটা রোবটের মতো যান্ত্রিক। এখানে সামনে যাওয়ার জন্য বেচে থাকতে হয়। মনের চাওয়াটাকে কখনো প্রাধান্য দিতে পারিনা। দেখতে দেখতে এবারের বর্ষাটাও চলে এলো, অথচ জানি বৃষ্টিতে ভিজে একটা কদমও ছুয়ে দেখা হবেনা ! যেমন পারিনি গত শীতে উনুনের পাশে বসে গরম ভাপা পিঠার ঘ্রাণ নিতে।
অথচ আমার শৈশব জুড়ে ছিল বৃষ্টি বিলাস। বর্ষার পানিতে বিলে গিয়ে মাছ ধরা আর শাপলা তুলা ছিল প্রাত্যহিক কাজ। বৃষ্টিতে কাদায় মাখামাখি হয়ে ফুটবল খেলতাম, নদীতে ঘন্টার পর ঘন্টা গোসল করতাম। সামনে দিগন্ত কিংবা অনন্ত থাকার কথা ছিল অথচ কিছুদুর গিয়ে দেখি কানা গলি তাই আবারও কিছু শৈশব উকি দেয় মনের কোনে, যেখানে শীতের ভারী কুয়াশা ভেদ করে গায়ে নিতাম রোদের আদর আর মাইলের পর মাইল হেটে যেতাম বক ধরার জন্য।
আজ স্মৃতির শুন্যতা জুড়ে দীর্ঘশ্বাস। ঠিক যেন ডিপ ফ্রিজে হিমায়িত কষ্টের পাশেই "টাকিলা"। সুন্দর লুকিয়ে থাকে সব মানুষের নিজেরই আড়ালে, ১৩ বছরের কিশোর সেটা দেখেনা, সে খোজে ভ্রমর কিংবা দিগন্তে, মেঘের সংসারে। আজ ঢাকার রাস্তায় যানজটে আর তীব্র গরমে লোনা ঘাম নিয়ে ছুটে চলা মানুষ গুলো জানেনা, তাদের মনের পকেটে রাখা গোলাপটি, ভালবাসার অভাবে কখন শুকিয়ে গেছে ! এত ভুল কেন হয় যোগ আর বিয়োগে ? চেয়েছিলাম জীবনটা, গোটা একটা জীবন হয়ে, জীবন্ত হোক !
সারাদিন কর্পোরেটে কাজ করা বেস্ত মানুষ গুলোর সামনে শৈশবের সেই সুখ গুলো স্মৃতির ভির ঠেলে সামনে এসে দাড়াতে পারেনা। কফিশপে, সহকর্মীদের সাথে সন্ধাকালীন আড্ডায় তখন জীবনের মানে খুজতে হয়। মাঝ রাতে নির্ঘুম চোখে বারান্দায় বসে থাকি, দেখি চিলেকোঠায় বাস করা গদ্য গুলো আস্তে আস্তে ভোরের আলোকে স্পর্শ করতে চাচ্ছে। আমার দ্বৈত স্বত্তাকে শব্দরা তাদের প্রতিবিম্ব দেখাবে বলেছিল যদিও আমি পাইনি কোনো প্রার্থিত শব্দ, উদ্ব্ভাসিত প্রতিবিম্ব। তবুও আমি আশা করে থাকি প্রেম তার গোপন প্রতিমূর্তি আমাকে দেখাবে ! একটাইতো কবিতা, লিখতে হবে, লিখে যাচ্ছি, সারাজীবন ধরে.......
আজ সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা, কেমন যেন গুমোট একটা ভাব। অফিসে হেটে আসতে আসতে মনে হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয়না অনেকদিন। একসময় মুষল ধারের বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে হেটে যেতাম শহরের রাজ পথ ধরে, গন্তব্য তোমার হলের গেইট । তুমি বারান্দায় দাড়িয়ে মুখ কালো করে বিরক্তি প্রকাশ করতে, পরক্ষনেই ছুটে এসে আমার হাত ধরে বলতে, "চল আমিও ভিজি তোমার সাথে"। তারপর ভিজতে ভিজতে টিএসসি । সময় কি দ্রুত বদলে যায় ! এখন রাতে বৃষ্টি আসলে দ্রুত জানালা বন্ধ করি বৃষ্টির ফোটা গায়ে লাগবে বলে। ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভেজার কথা মাথায় আসেনা। দুজনেরই পরের দিন অফিস, সীমাহীন বেস্ততা, বৃষ্টিতে ভিজে অসুখে পরা চলবেনা। আসলে সময় তার আগের মতই চলে, বৃষ্টিও তার আগের মতই ঝড়ে, বদলে যায় মানুষ। প্রকিতি তার শূন্যস্থান পূরণ করে নতুন কোনো প্রেমিকের হাত ধরে.......
৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭
তানভীর আহমেদ সম্রাট বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করবো।
২| ৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫
আরমিন বলেছেন: সুন্দর , প্রানবন্ত লেখা!
কিছু টাইপো আছে, ঠিক করে নেবেন।
শুভেচ্ছা!
৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০
তানভীর আহমেদ সম্রাট বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, টাইপো গুলি ঠিক করে নেবার চেষ্টা করছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪
সায়ান তানভি বলেছেন: ভালো লিখেছেন ,নিয়মিত লিখুন ।