নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি ছোট্ট দেশলাইয়ের কাঠি

মোঃ তানভীর রহমান

মোঃ তানভীর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ মুজিবুর রহমান কীভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হলেন!

১৫ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:২৮

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান

জাতির সোনালী অতীত:

পৃথিবীর মানচিত্রে ছোট্ট একটি দেশ এই পদ্মা, মেঘনা, যমুনার তীরভূমি বাংলাদেশ। এদেশের আদি বাসিন্দা বাঙালি জাতি। এই জাতির রয়েছে সমৃদ্ধ ও গর্বের অসংখ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য। তেমনি রয়েছে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়। হাজার বছরের বাঙালি জাতি উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। অর্জন করেছে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র – বাংলাদেশ।

প্রাচীন যুগে সমগ্র বাংলাদেশের কোন একক বিশিষ্ট নাম ছিলো না। মুসলিম যুগে সর্বপ্রথম সমগ্র বঙ্গভুমি 'বাঙ্গালা’ নামে পরিচিত হয়। তার আগে এই অঞ্চল রাঢ়, বরেন্দ্র, গৌড় প্রভৃতি নামে পরিচিত ছিল। রাজা শশাঙ্ক হলেন প্রথম বাঙালি নরপতি যিনি গৌড়ে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এছাড়া, তিনিই প্রথম আর্য্যাবর্তে বাঙালির সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন এবং আংশিকভাবে সফল হন। ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর গৌড় রাজ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় ইতিহাসে যাকে ‘মাৎস্যন্যায়’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। এই অবস্থা প্রায় একশত বছর স্থায়ী হয়েছিল। একশ বছর পর অষ্টম শতকের মধ্যভাগে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে বাঙালি জাতি ও বঙ্গভুমির স্বার্থে সামাজিক চুক্তির (Social Contract) মধ্য দিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বরেন্দ্রের অধিবাসী গোপাল কে রাজা নির্বাচন করেন। তিনি দেশে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা দূর করেন এবং একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

বাঙালি জাতির ইতিহাসে রাজা গোপালের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেসময় সমগ্র বিশ্বে রাজাদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও আক্রমণ- প্রতিআক্রমণে সাধারণ জনগণের জীবন অতিষ্ঠ ছিলো, সেসময় বঙ্গভুমিতে জনগণের সম্মতিতে শাসক নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘রাজনৈতিক উন্নয়ন’ এর দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সময় বিবেচনায় যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

গোপালের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ধর্মপাল বাংলা থেকে পাঞ্জাবের প্রান্ত পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। ধর্মপালের পুত্র দেবপাল এই সাম্রাজ্য দক্ষিণের বিন্ধ্য পর্বত ও পশ্চিমে কাশ্মীর পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। ধর্মপাল ও দেবপালের শাসনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি আর্য্যাবর্তে বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এটি বাঙালি জাতির অসাধারণ বীরত্বের ও নেতৃত্বের পরিচয় বহন করে।

পাল আমলে শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি সকল দিক থেকেই বাঙালি জাতি ছিলো অন্য জাতির তুলনায় এগিয়ে। পাল সাম্রাজ্য পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার ক্ষমতা দখল করে কর্ণাটক থেকে আগত সেন রাজবংশ।

বাঙালির পরাধীনতা:

সেনরাজ বংশের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাঙালি জাতির উপর বিদেশী শক্তির শাসন ও প্রভুত্ব। সেন রাজাদের পরে তাদের হারিয়ে বাংলার ক্ষমতা দখল করে তুর্কি বিজেতাগণ। ১২০৪ সালে বখতিয়ার খলজী কর্তৃক লক্ষণসেনের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলার শাসনক্ষমতা চলে যায় মুসলিম শাসকদের হাতে। তারপর থেকে ইংরেজদের ক্ষমতা দখলের আগ পর্যন্ত মুসলিম শাসকগণ কর্তৃক শাসিত হয় বাংলা। এসমস্ত বিদেশী শাসকগণ নিজেদের স্বার্থে বাংলার বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সম্পদ ধ্বংস করে। নির্যাতনের শিকার হয়ে বাঙালি বৌদ্ধগণ বাংলা ভাষায় লিখিত বইপুস্তক নিয়ে বাংলা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং অনেকে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হন।

পরাধীনতার ইতিহাস একটি জাতির অপমান, অবমাননা, শোষণ-বঞ্চনা ও নির্যাতিত হবার ইতিহাস। পরাধীন জাতি কখনো আত্মগরিমায় বিকশিত হতে পারেনা। বরং, ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হবার পথে অগ্রসর হয়। হিন্দুযুগ, মুসলিম যুগ এবং সর্বশেষ ইংরেজ আমল – এই বিশাল সময়কাল ধরে বাঙালি জাতি বিদেশী শক্তির ইচ্ছায় পরিচালিত হয়েছে। বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি, শিল্প স্বাভাবিকের পরিবর্তে বিদেশী শক্তির ইচ্ছে অনুযায়ী বিকশিত হয়েছে। হিন্দু শাসনামলে বাঙালি বৌদ্ধদের উপর নির্যাতন, মুসলিম শাসনামলে বাঙালি মুসলিমদের নিম্নশ্রেণীর ‘আতরাফ’ আখ্যায়িত করা বিদেশী শক্তির শোষণ – নির্যাতন ও অবমাননার ইতিহাস বহন করে।

শোষণ-নির্যাতন ব্রিটিশ শাসনামলে চরম আকার ধারণ করে। ১৯০ বছর ধরে তারা বাংলার অর্থনীতি, শিল্প ধ্বংস করে। নির্যাতিত হয় সকল শ্রেণীর মানুষ। ইংরেজদের ‘ভাগ করো, শাসন করো’ নীতির ফলে বাঙালি জাতির হিন্দু সম্প্রদায় ও মুসলিম সম্প্রদায় পরস্পর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ও বিভক্ত হয়ে যায়। বাঙালি জাতিকে বিভক্তকরণের মধ্য দিয়ে তাদের দুর্বল করে তোলার লক্ষ্যে ইংরেজ সরকার ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করে। ফলে শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন। এটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। কারণ, হিন্দু স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হলেও এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রথম বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের উন্মেষ ঘটে।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রথম ঢেউ ও নেতৃত্বে অদূরদর্শীতা:

বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট প্রথম বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন মূলত কলকাতার শিক্ষিত হিন্দুদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিলো। হিন্দু স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকায় এই জাতীয়তাবাদী ঢেউ ধর্মনিরেপক্ষ হতে ব্যর্থ হয়। ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান, রবীন্দ্রনাথ প্রবর্তিত ‘রাখীবন্ধন’ উৎসব ইত্যাদি হিন্দুধর্মীয় উপাদান মুসলিম সম্প্রদায়কে এই জাতীয়তাবাদী আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ফলে এটি রুপান্তরিত হয় হিন্দু বাঙালি জাতীয়তাবাদে। এর প্রতিক্রিয়ায় মুসলিম সম্প্রদায় মুসলিম জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হতে শুরু করে। বাঙালির বিভেদ পাকাপোক্ত হয়। এর ফলস্বরূপ ১৯৪৭ সালে বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরে। এক অংশ হিন্দু ধর্ম পরিচয়ে ভারত ও অপর অংশ মুসলিম ধর্ম পরিচয়ে পাকিস্তানে যুক্ত হয়। কোন জাতির বিভক্ত হওয়া মানে বিশ্ব রাজনীতিতে সেই জাতির দুর্বল হয়ে পডা়। ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদের নেতৃত্ব দিয়ে বাঙালি জাতির বিভক্তি রোধ করতে না পারা বাঙালি জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি ও তখনকার বাঙালি নেতৃবৃন্দের চরম ব্যর্থতা। যদিও শরৎ বসু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাসেম সহ কয়েকজন নেতা যুক্ত ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন, কংগ্রেস ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অসমর্থনে তারা সেটি করতে ব্যর্থ হন।

পাকিস্তান রাষ্ট্রে যোগ দেবার অল্পকাল পরেই বাঙালি নেতৃবৃন্দ পশ্চিম পাকিস্তানের বিমাতাসুলভ আচরণ অনুধাবন করতে শুরু করেন। ধর্মীয় বিভেদ পূর্ববাংলার জনগণকে যে মুসলিম জাতিয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ ও পাকিস্তান গঠনে অনুপ্রানিত করেছিল শীঘ্রই তা ম্লান হতে শুরু করে। পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ যত প্রকট হতে শুরু করে, বাঙালি জনগণ পাকিস্তান রাষ্ট্রের উপর ততো বেশি আস্থা হারাতে শুরু করে এবং উন্মেষ ঘটতে থাকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের দ্বিতীয় ঢেউয়ের।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের দ্বিতীয় ঢেউ - স্বাধীন বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাওয়া:

বাঙালি জাতির উপর পাকিস্তানি শাসকদের প্রথম আঘাত আসে ভাষার উপর। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সেই আন্দোলনের একজন অন্যতম সংগঠক। বাঙালি জনগণ তথাকথিত মুসলিমদের ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়া উর্দুকে প্রত্যাখ্যান করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি জানায়। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে উন্মেষ ঘটে তার একজন অগ্রসৈনিক ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের গঠন ও মুসলিম জাতীয়তাবাদের পতাকাবহনকারী দল মুসলিমলীগের বিপক্ষে জনগণের ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদের পতাকা বহনকারী আওয়ামী মুসলিম লীগের আশ্রয় গ্রহণ বাঙালি জাতিয়তাবাদকে রাজনৈতিক শক্তি প্রদান করে। মুসলিম লীগ ছিল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে আওয়ামী (জনগণের) মুসলিম লীগ শুরু থেকেই ছিল ধর্মনিরপেক্ষ একটি দল। পরবর্তীতে মুসলিম শব্দটিও বাদ দেওয়া হয়। এই দল প্রতিষ্ঠায় শেখ মুজিবুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের জয়, মুসলিম লীগের ‘পাকিস্তান বিপন্ন’, ‘ইসলাম বিপন্ন’ স্লোগানগুলোকে প্রত্যাখ্যান ইত্যাদি বিষয়গুলো বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দ্রুত বিকাশ নিশ্চিত করে। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা যা ছিল নদীমাতৃক বাংলার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ছিলোনা, ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া ও রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন ইত্যাদি কার্যক্রম ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদকে আরও বেগবান করে।

শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়ে ওঠা:

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রস্তাবিত ছয়দফা দাবী ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এরপূর্বে চরম জনপ্রিয়তা থাকলেও, ছয় দফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে উঠেন বাঙ্গালির একমাত্র আশার আলো এবং ভরসার কেন্দ্রস্থল যার প্রকাশ ঘটেছিল তাঁর ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রাপ্তির মাঝে। কারণ, তিনি বাঙালি জাতির স্পন্দন অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিলন। ছয়দফায় তাই জনসাধারণের স্বার্থ যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন। ছয়দফা কেন্দ্রিক আন্দোলন ১৯৬৯ সালে গনঅভ্যুত্থানে রুপ নেয়। মুজিব হয়ে ওঠেন বাংলার জনগণের একমাত্র কণ্ঠস্বর এবং জাতীয়তাবাদের মূর্ত প্রতীক। এর চূড়ান্তরুপ প্রকাশিত হয় ৭০’এর নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

তথাপি ক্ষমতায় যেতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বরং পশ্চিম পাকিস্তান ঝাঁপিয়ে পরে বাঙ্গালির উপর। তখন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন শেখ মুজিবুর রহমান। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। রচিত হয় হাজার বছরের বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ইতিহাস। এই ইতিহাস রচনার মহানায়ক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এবং তিনি হয়ে উঠলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। কারণ তিনি যে গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস রচনা করেছেন - বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র তা বাঙ্গালির অন্য যেকোনো অর্জনকে ছাপিয়ে গিয়েছে। শত শত বছরের শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বাদ এনে দিয়ে তিনি হয়েছেন জাতির মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.