![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন অসম্ভব আত্ম অহংকারী, আত্মকেন্দ্রিক বাউণ্ডুলে টাইপের একজন মানব সন্তান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পরিকল্পনা নিয়ে দেয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু যৌক্তিক প্রশ্ন উঠছে, যা খোলাসা করার প্রয়োজন। মির্জা ফখরুল যে ১ কোটি কর্মসংস্থান এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কথা বলেছেন, তা অনেকটা সুমধুর স্বপ্নের মতো শোনালেও বাস্তবে কতটা কার্যকর এবং সঠিক তা নিয়ে অনেক সন্দেহ রয়ে গেছে।
প্রথমত, ১ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি খুবই উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কিন্তু এর বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব? বাংলাদেশে বর্তমানে যে বেকারত্বের পরিস্থিতি বিদ্যমান, তা মাথায় রেখে এমন একটি বিশাল কর্মসংস্থানের লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে প্রচুর সময় এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি প্রয়োজন। তাছাড়া, শুধুমাত্র সরকারি চাকরি সৃষ্টি করে নয়, বেসরকারি খাতে কার্যকর উদ্যোগও নিতে হবে, যেখানে সরকারের ভূমিকা যথেষ্ট সীমিত। তবে সেক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত বা নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাতের উন্নতি সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল, যা খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, ২০৩৪ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা সত্যিই একটি বড় স্বপ্ন। কিন্তু বাস্তবে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অনেক ধীরে হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নানা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে দেশ। বৈশ্বিক মন্দা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যে পৌঁছানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার আগে বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতাকে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের বোঝা কমানোর কথা বলা হলেও, তা বাস্তবে কিভাবে করা হবে তা অস্পষ্ট। কর আহরণ বাড়ানো এবং জনগণের উপর চাপ কমানো প্রায় একে অপরের বিরোধী। কর কমানোর মাধ্যমে রাজস্ব সংকট তৈরি হতে পারে, যা জনগণের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। জনগণের মন থেকে করের ভয় দূর করার উদ্দেশ্য যদি করের হার কমানো হয়, তবে সেটা একধরনের প্রলোভন, যা দেশের আর্থিক সুরক্ষার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
শেষকথা, বিএনপির মহাসচিবের এই ঘোষণাগুলি এমন একটি রাজনৈতিক পর্যায়ে এসেছে যেখানে জনগণের মধ্যে হতাশা এবং অসন্তোষ বাড়ছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন ছাড়া, এসব আশ্বাসের কোনো অর্থ থাকবে না। অতএব, রাজনৈতিক দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং জনগণের প্রতি স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
©somewhere in net ltd.