নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভীরু, লোভী, বর্বর, অসভ্য, নির্গুণ, কৃপণ, অশ্লীল, রগচটা, স্বার্থপর, বেআদব, প্রতারক, দুরাচারী, অকৃতজ্ঞ,স্বার্থাণ্বেষী,পরনিন্দুক, মিথ্যাবাদী, উচ্চাভিলাষী, ইঁচড়ে পাকা, অসামাজিক, অবমূল্যায়নকারী ও ভাল মানুষের ভান ধরা আদ্যোপান্ত একটি খারাপ ছেলে...

মিহাল রাহওয়ান

মাঝে মাঝে কিছু কিছু অনুভূতি অব্যক্ত থাকে। কারন এই অনুভূতিগুলো প্রকাশের ভঙ্গি আমাদের জানা নেই। এই অনুভূতিগুলো সারাজীবন অপ্রকাশিতই থেকে যায়!!!

মিহাল রাহওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাদা মেঘ আর চশমার ফ্রেম

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৬

ছেলেটিকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় তার মা। চিকন ফ্রেমের ভেতর দিয়ে মলিন চোখে শীতের সাদা মেঘগুলো দেখেই ছেলের নাম শুভ্র রেখেছিলো ছেলেটির বাবা। বাবার কোলে বড় হয়েছে শুভ্র নামের ফুটফুটে ছেলেটি।

মধ্যবিত্ত সংসারের টানাপোড়নের মাঝেও একমাত্র ছেলের কোনো আবদারই অপূর্ণ রাখেনি শফিকুল ইসলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকে ছাপোষা একটা চাকুরি শফিক সাহেবের। বয়সের ভারে মোটা ফ্রেমের চশমার নিচে চিকন কালো গোঁফ।

-বাবা প্লেন লাগবে..
-ঠিক আছে বাবা দিবো

-আজকেই লাগবে
-আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু সেদিনও না কিনে দিলাম একটা !

-সেটাও আছে, আরেকটা লাগবে।
-প্লেন খুব পছন্দ ?

-হুম
-তাহলে বড় হয়ে পাইলট হোস

-তুমিও কি তাই চাও ?
-তুই যেটা হবি সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট। একসময় আমারও ইচ্ছা ছিলো পাইলট হবার কিন্তু তোর দাদার নাকি খুব ভয় করতো। তাই সেদিকে আর এগুইনি

-আচ্ছা বাবা আমি পাইলটই হবো
-বাসায় থাকিস। আমি অফিস থেকে ফেরার সময় নিয়ে আসবো নে...


শুভ্র পাইলট হিসেবে গতকাল বাংলাদেশ বিমানে জয়েন করেছে। পথ অতটা মসৃন ছিলো না। এমনিতে মোটামুটি একটা স্কোর করেছে টেস্টে কিন্তু শেষে ডোনেশনটার জন্য....

শফিক সাহেব সেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন যাতে পেনশনের টাকাটা হাতে পান আর সাথে গ্রামের টুকরো কিছু জায়গা জমিও বিক্রি করতে হয়েছে তাকে। শেষ পর্যন্ত শুভ্র চাকরিটা যে পেয়েছে তাতেই তৃপ্তির হাসি শফিক সাহেবের মুখে।

তবে চাকরিটা যখন হয়েছে তখন টাকা পয়সা নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই। হোক তারা এখন পথের ফকির কিন্তু শুভ্র চাকরিটা করতে পারলে আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় যেতে পারবে কিছুদিনের মধ্যেই।
মোটা ফ্রেমের নিচে মোটা গোঁফটা সাদা হযে শুরু করেছে। চুলগুলোও ফ্যাকাসে হয়ে আসছে।

বছরখানেক পরঃ
হাসপাতালের বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে আছে শফিক সাহেব। বিড়বিড় করছেন আর দুহাতে শক্ত করে ধরে রেখেছেন একটা দুবছর আগের পুরোনো পেপার কাটিং আর একটা রঙিন ছবি। তাকে দেখতে এসেছে তার ছোটো ভাই সালামত। প্রায় প্রতিসপ্তাহেই এসে দেখে যায় সে। হাসপাতালের গেট দিয়ে বের হয়ে ফিরে তাকায় সালামত...
'পাবনা মানসিক হাসপাতাল'...

শফিক সাহেবের আঙুলের ফাঁক দিয়ে পেপার কাটিংটা দেখা যাচ্ছে।
'যশোরে প্রশিক্ষন বিমান বিদ্ধস্তঃ পাইলট সহ মৃত ২'

জোড়াতালি দেওয়া ভাঙা চশমার পেছনে ঘোলাটে চোখে শুভ্রর বাবা আজও তাকিয়ে থাকে সাদা মেঘগুলোর পানে ছুটে চলা ক্যাপ্টেন শুভ্রর উড়োজাহাজের দিকে...


-বিশ্বাসঘাতক

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫২

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এই ঘটনাগুলি প্রতিবছরই ঘটে।

খুব কষ্ট লাগে একজন এভাবে চলে যায় না ফেরার দেশে।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


চমৎকার একটা ছোট গল্প পড়লাম +++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.