নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভীরু, লোভী, বর্বর, অসভ্য, নির্গুণ, কৃপণ, অশ্লীল, রগচটা, স্বার্থপর, বেআদব, প্রতারক, দুরাচারী, অকৃতজ্ঞ,স্বার্থাণ্বেষী,পরনিন্দুক, মিথ্যাবাদী, উচ্চাভিলাষী, ইঁচড়ে পাকা, অসামাজিক, অবমূল্যায়নকারী ও ভাল মানুষের ভান ধরা আদ্যোপান্ত একটি খারাপ ছেলে...

মিহাল রাহওয়ান

মাঝে মাঝে কিছু কিছু অনুভূতি অব্যক্ত থাকে। কারন এই অনুভূতিগুলো প্রকাশের ভঙ্গি আমাদের জানা নেই। এই অনুভূতিগুলো সারাজীবন অপ্রকাশিতই থেকে যায়!!!

মিহাল রাহওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাস্টার্ড ২

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৪

বাজারে মামার চায়ের দোকানটা আজ বন্ধ। হঠাত্‍ হঠাত্‍ ব্যাটা কই যে চলে যায় ! সকাল সকাল মেজাজটা খারাপ করে দিলো। প্রায় দশটা বেজে গেছে কিন্তু চা খাওয়া হয় নি এখনো। শুধু একটা গোল্ডলিফে দুটান দিয়েছিলাম তাও বন্ধুরা কেড়ে নিয়ে গেছে...

-বাজান চা খাইবা ?
-হুম দাও..

-রং চা দেই ?
-দুধ চা নাই ? গরুর দুধ দিয়া চিনি বেশি...

-বাবা আমার তো খালি রং চা আছে। দেই এক কাপ ? আদা বেশি দিয়া ?
-ধুর বা*

-দেই না বাবা এক কাপ? পাঁচ টাকা লই। সকাল বেলা আপনে এক ট্যাকা কম দিয়েন !
-আচ্ছা দাও চিনি ছাড়া দাও...

-উহ্ হুউউ
-কি হইছে ?

-এতো কড়া লিকার দিসো ক্যান ? পুরাই তিতা হয়া গেছে। এই চা বেচো কেমনে ? কবে থিকা চা বেচো ? ধ্যাত মুখটাই নষ্ট...

প্রায় সত্তোর্ধ্ব লোকটা হঠাত্‍ই যেন মাথা নিচু করে চুপ হয়ে গেলো। খসখসে গালের ঝুলে পরা চামড়াটা যেন আরো মলিন হয়ে গেলো মুহূর্তেই। লোকটা এভাবে ভেঙে পরায় একটু বিব্রত হয়ে পরলাম। নিজেরই লজ্জা লাগছিলো লোকটাকে দেখে।

নিচুকন্ঠে লোকটা বললো
-বাজান পরশু রাত থেকে এই কামে নামছি। নতুন তো তাই একটু... মাপ কইরা দিয়ো বাবা...
-চাচা আগে কি করতেন ?

-কিছু না বাজান আগে আমার পুতে খাওয়াইতো। সকালে আর রাইতে ভাত আর ডাইল দিয়া যাইতো..
-আপনি কাজ করতেন না কেন ?

-করতাম বাজান। শেষে পুতের মুখেয় দিকে তাকায়া আর করতে পারলাম না। কইলো বাজান তুমি খালি ঘরে শুইয়া থাকবা আর খাইবা, কোনো কামই তোমার করা লাগতো না। আমিই তোমারে খাওয়ামু
-ছেলে কি করে ?

-কিছু না ...
-তাইলে ?

-ঐ কথার পর একদিন সকালে কইলো বাজান লও তোমারে চেকআপ করায়া আনি বড় ডাক্তারের থিকা। তারপর সেইখানে জোর কইরাই পুতে কি একটা অপারেশন করায়া দিলো।
-কিসের অপারেশন ?

-একটা কিডনির অপারেশন।পুতে কইলো না কাটলে নাকি বাঁচুম না তাই... জানো বাজান সেই রাইতে পোলা আমারে মুরগির ঝোল দিয়া সাদা রুটি খাওয়া দিছিলো আর কইছিলো বাজান ট্যাকার আর কোনো চিন্তা নাই
-তারপর

-তারপর ? চাচা এর পরে কি হইলো ?
-অঁ ও তারপর কয়েকদিন আমারে বাসায়ই রাখলো। খাবার দিয়া যাইতো সকাল বিকাল। একদিন দেখি একটা বড় ব্যাগ কিনা আনছে, জিনিসপত্র আর কাপড়চোপড় গুছাইতেছে। গুছানোর সময় দুইটা পাঁচশ ট্যাকার বান্ডেল দেখছিলাম। কই পাইছে জিগাইতে কইলো ব্যাবসার ট্যাকা আর কইলো একটা কামে কয়দিন শহরের বাইরে যাইবো। পাঁচশটা টাকার একটা নোট দিয়া বিদায় নিলো।

-ছেলের কি হলো ?
-পোলা আমার যে এতোবড় হয়া গেছিলো মনেই আছিলো না। পাশের বাড়ির সাত্তার কইলো সেদিন নাকি বাইরে একটা মাইয়্যা লাল শাড়ি পইরা দাড়ায়া আছিলো। তারপর দুইজনে নাকি রিকশায় কইরা ঘাটের দিকে গেলো

-ছেলে ফিরে আসে নি ?

..... কোনো উত্তর পেলাম না। পাশে থেকে ফোঁপানোর শব্দ শুনতে পেলাম। সাহস হলো না ভদ্রলোকটার দিকে তাকানোর।

বাঁ হাতে ধরা ক্রিস্টাল কাপের লাল তরলটুকু ঠান্ডা হয়ে এসেছে...


-বিশ্বাসঘাতক

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভাষাহীন!

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

এক্স সাগা মিউটেন্ট নেক্সট জেনারেশন বলেছেন: পাষন্ড

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৮

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এমন সন্তান যেন কারো ঘরেই জন্ম না নেয়।

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

মহামতি আইভান বলেছেন: কিছু বলার নেই। এই ছেলেটাই একদিন বাবা হবে।

৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৯

রুহুল আমিন রাজ বলেছেন: তবে নিজ চোখে না দেখলে অবিশ্বাস্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.