নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন দেখতে ভালবাসি তবে তা ঘুমের মধ্যে নয় বাস্তবে ।

ছদ্দবেশি লৌকিক

ছদ্দবেশি লৌকিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদভূত মেয়ে

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৬


বিষাদপুর... গ্রামটির নাম। খুব সাধারণ গ্রাম ও মানুষ গুলিও খুব সাধারণ.. কিন্তু, গ্রামের একটি মেয়ে ছাড়া কেউ সুখী ছিল না। সবার মাঝে দুঃখ ছিলো।.....
:
---- বাবা অামি অাসছি একটু নদীর পাড় থেকে।
---- আরে! দেখো দেখি.. সারাদিন ঘুরে বেড়াস আমার গরুটাকে একটু খাবার দে তারপর যা..... এইই এই খুশী.... দেখো, কে শোনে কার কথা! গেছে মেয়ে...
:
খুশী.. গ্রামের সবচেয়ে হাসিখুশী থাকা একজন। গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখছিল...
---- চাচা মিয়া?? তোমার মন খারাপ কেন?
---- আর বলিস নে! তুই কি বুঝবি এই দুর্দশা.. এবার ধান ফলেনি ভালো। আবাদ না হলে খাবো কি?
---- অন্যকিছু করে দেখো। ঠিক ফলবে.. আর সব সময় মন মরা থাকলে কাজ ও ভালো হবে না চাচা!
:
বলেই খুশী চলল আরো বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখল, সকলেই মন মরা হয়ে বসে আছে। সবার কাজেও মন নেই। খুশীর আনন্দিত মুখ দেখে সকলেই ওর ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
:
গ্রামের সবচেয়ে সুখী মেয়ে খুশী.. নামের মতো সেও সবসময় খুশী থাকে। সে কখনো কাঁদে নাহ... দুঃখ কে দুখ না ভেবে সে খুশী হয়ে আপন করে নেয়। আবার আনন্দের সময় সকল কে নিয়ে সুখী হতে চায়! কিন্তু গ্রামের একটি মানুষ ও তার কাজ গুলি পছন্দ করতো নাহ। তাদের জন্য গ্রামটিই বিষাদময় হয়ে গিয়েছে।.... খুশী সব সময় হাসতো... কি যেন ভাবে আর হাসে! তার বাবা ঘরে এসে বলে,
---- এবার থামবি??? লোকে পাগল বলে তোকে! তবুও এতো হাসি কই পাস তুই??
---- বাবা! তুমি শুনবে?? জানো আমি ঘুমিয়ে গেলে এক রাজ্যে যাই। রাজ্যটা শুধু আমার। কি আনন্দ.. আর কি হয়েছে শুনবে?
---- হয়েছে! তোর পাগলামি বন্ধ কর! বড় হচ্ছিস তোকে বিয়ে দিতে হবে! এবার থেমে যা....
:
কিছু না বলে খুশী দৌড় দিয়ে চলল ঘাটে.. সই দের সাথে দেখা করবার জন্য।
--- তোরা কে কি করছিস??
--- আমরা তোর কথাই বলছিলাম! তোর যাদুর কথা চলছিল... আজ শুনবো। বল?
___ বলছি তবে শোন...
আমার একটি রাজ্য আছে। আমি সেখানে একেবারে একা...কেউ নেই। সেখানে বিশাল একটা গাছ ও আছে। আর ওখানে এক বুড়ি থাকে। আমার কাছে যে যাদু আছে? সেই যাদুর বুড়ি..রোজ অনেক গল্প শোনায়। শহরের,আমাদের গ্রামের মতো গ্রামগুলির গল্প শোনায়..... আর আমার রাজ্যে কোন কষ্ট নেই। আমি অনেক খুশী। কারণ আমার রাজ্যে এ ছাড়া কিছুই নাই। তোরা সকলেই শুধু চাস আর চাস! এটা চাই ওটা চাই! নেই! দুখ,বেদনা!.... কিন্তু আমার রাজ্যে? ওসব কিছুই নেই। শুধু সুখ রা এসে আমার কাছে জ্বল জ্বল করে বলে,
--- এই খুশী! আমরা এসেছি..আমাদের তোমার সঙ্গী করে নাও।
আর আমি না চাইতেই আমাকে সেই যাদুর বুড়ি অনেক কিছু দিয়েছে। যা দিয়ে আমি সব সময় খুশী খাকতে পারবো,ভালো ভাবে কাজ করতে পারবো, সফলতালাভ করবো। আমি রাণী সেখানকার বুঝেছিস?? সে জন্যই আমি এতো খুশী থাকি।
:
:
খুশীর সঙ্গী রা জানতে পেরে পুরো গ্রাম কে বলে বেড়ায়... সকলে ভাবে রাজ্যের রাণী তবে ওর কাছে অনেক খাজানা ও থাকবে। তবেই ও ঢের খুশী থাকে। আর ওর বাপ দিব্যি অসুখী থাকার ভান করে! যেন কেউ না বুঝতে পারে... তবেরে! এবার মজা বুঝবি! গ্রামের লোকেরা সমালোচনা করে সব্বাই মিলে খুশীর বাবা কে ধরে ফেলে!! বেধে রাখে... আর খুশীর রাজ্য থেকে খাজানা দিতে বলে। খুশী হাসতে হাসতে বলে,
---- আমি খাজানা কোথায় পাবো? যে তোমাদের দেবো???
---- এবার তো থাম! আর কতো কি করবি? তবুও হাসছিস?? (খুশীর বাবা)
---- ও মিথ্যে বলছে! আমাদের কাছে ও নিজে বলেছে ওর রাজ্য আছে,যাদু আছে। তা দেখাক.... আমাদের ও যাদু দিয়ে কিছু দিক। শুধু ও একাই হাসবে কেন! (খুশীর সাথী রা)
----- তোমরা ঈর্ষা করছ! তোমাদের ভালো হবে না! ভালো হবে না!
:
এমন সময় এক আগন্তুক এলো... কি বেশ ভঙ্গী তার! খুশী অবাক হয়ে বলল, এ মা! তুমি না একদম আমার স্বপ্নের বুড়ির মতো!
তুমি কি সত্যিকার আছো???
.
বুড়িটা বলল, তা ঠিক বুঝিনে মেয়ে তোমার কথা! তবে আমি অনেক আগের মানুষ! বুঝছি, এখেনে কিছু ভালো হচ্ছে না ভুল হচ্ছে! বলে খুটখুটি করে হেটে চলে যায় বুড়িটি....
:
সকলে অবাক হয়। সেকেলে মানুষের কথা আবার নাকি সত্য হয় বলে মানে সবাই। তবুও খুশী কে সকলে জোর দেয় খাজানা,যাদু সম্পর্কে বলতে।......
_____ শোনো সকলে। আমার বাবাকে ছেড়ে দাও... আমি সত্য বলছি আমার কাছে কোন খাজানা নেই। আর রাজ্য?? সে তো এক কল্পনার জগত!! বাস্তব নয়..আমি সারাক্ষণ ভেবে ভেবেই পুকুর ঘাটে কাটাই! আর রোজ স্বপ্ন দেখি। এক বুড়ি এসে আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়!!
# ন্যায়পরায়ণতা # বুদ্ধি # ক্ষমতা
# সহ্যশক্তি # বিবেকবুদ্ধি এসব বুঝিয়ে দিয়েছিল। যা দিয়ে সঠিক ভাবে কাজ করে সাফল্যলাভ করে খুশী থাকা যায়! আমার যা আছে তাতেই আমি খুশী। হেরে গেলেও দুঃখ করতে নেই। ""নেই নেই করলে শূন্যতা তোমার দুয়ারেই হানা দিবে", "দুঃখ দুঃখ করলে চারদিকের বেদনা তোমার দুয়ারেই হানা দিবে"
ঈর্ষা তোমাকে ধ্বংস করে দিবে। যা তোমরা করেছ আর করো ও! তোমাদের এসব কাজের জন্যই এতো অবনতি হয় তোমাদের। আর গ্রামটিও তমাদের দোষে বিষাদময় হয়ে উঠেছে।....
:
:
অতঃপর গ্রামের সকলের ভুল ভাঙলো। সবাই খুশী ও তার বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। আর খুশী কেও বলে এখন থেকে তারা খুশীর কাছ থেকে শিক্ষা নিবে।
:
খুশী সকল কে প্রকৃত শিক্ষা ও বুদ্ধি দিয়ে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে। সবাই ধীরে ধীরে কাজে সফলতালাভ করে। আর সকলের মুখেই হাসি ফুটতে থাকে.... বিষাদপুর গ্রামটি শেষমেষ আনন্দপুর নামে পরিচিতি লাভ করে..... খুশীর চেষ্টায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.