নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
বাংলাদেশে দুই দল লোকের বাস একদল নাস্তিক আরেক দল মুসলিম! জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জাতীকে এই অভিনব তথ্য উপহার দিলেন। সোনার অলংকার বানাতে খাদ মেশাতে হয়। রাজনীতি করতেও কি মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয়? হবে হয়ত; নয়ত রাজনৈতিক বক্তব্য-মাঠের বক্তৃতা এ সব কথার উদ্ভবই হত না। যতদূর সম্ভব রাজনৈতিক বক্তব্য-মাঠের বক্তৃতা সত্য-মিথ্যের মিশেলের কিছু একটা; যা চাইলেই উপেক্ষা করা যায়। কিন্তু কথা হল, একে যুক্তিগ্রাহ্য করতে কত ভাগ পর্যন্ত মিথ্যের মিশেল সহনীয়? কেননা নেতৃবৃন্দের কথা তো আর আমাদের মত আম-জনতার কথা নয়। তাদের প্রতিটি কথার গুরুত্ব রয়েছে। তাদের রয়েছে অসংখ্য অনুসারী। যারা তাদের বক্তব্যকে বেদবাক্য মানে।
এই মুহূর্তে ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে জাতীয় পার্টীর কোন নেতা বা সমর্থক ব্লগার কিনা। যদি থাকেন তাহলে তিনি কি নাস্তিক না মুসলিম? সেই সাথে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কি সকল ব্লগারদের তার দলে নিরুৎসাহিত করলেন? যেটা এর পূর্বে বিএনপি নেত্রীও করেছেন। তাহলে ব্লগারদের গন্তব্য কোথায়? তাদেরকে কি আওয়ামী পন্থি বানিয়ে দেয়া হল? যার মানে দাঁড়ালো এই যে, এই দলগুলো মুক্তবুদ্ধি চর্চা করা। সরব সমর্থক চান না। আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য নিশ্চয়ই এটা নতুন ভাবনার খোরাক জোগাবে। নতুন পথের সন্ধানে নামতে বাধ্য করবে। কারণ তাদের কাছে আওয়ামী লীগও দল হিসেবে এমন কোন আদর্শের স্থানে পৌছুতে সক্ষম হয়নি যে তার উপর শতভাগ আস্থা রাখতে পারে। সুতরাং নতুনের আগমন অবশ্যম্ভাবী।
এখন প্রশ্ন হল শাহবাগ চত্বর কার? ব্লগারদের না তরুণদের। আমি যদি ভুল না করে থাকি দেশে প্রায় পাঁচ কোটি তরুণ। এদের সিংহভাগই দলকানার অভিশাপ মুক্ত। তারা মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারের পক্ষে। এরা যে যেখানেই অবস্থান করুণ না কেন শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থক। এই বিশাল জনগোষ্ঠী কি তবে নাস্তিক? সর্বোপরি কে নাস্তিক আর কে আস্তিক তা নির্ণয়ের ভার কার? স্রষ্টার, যার যার নিজের, না নেতার?
বলা হচ্ছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন জাতিকে বিভক্ত করেছে। এটা মোটেই ঠিক নয় বরং শতধা বিভক্ত এ জাতীকে তার শেকড়ের সন্ধান পাইয়ে দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের এই আন্দোলন। নিজ অস্তিত্বকে ভুলতে বসা একটি জাতিকে প্রবল ঝাঁকুনিতে সম্বিত ফিরিয়ে এনেছে এই আন্দোলন। যে চেতনাকে লালন করে একটি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যে আদর্শকে ভিত্তি করে একটি দেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত সেই চেতনাকে ফিরিয়ে আনা এবং সেই আদর্শকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসেই এই আন্দোলন। এখানে কোন দলীয় আদর্শকে স্থান দেয়া হয়নি। আর হয়নি বলেই এই আন্দোলন স্বীকার হয়েছে বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রের। যা প্রতিহত করার ক্ষমতা আদৌ এর উদ্যোক্তাদের নেই। আর তাই যারা আশায় বুক বেধেছিল তারাও সন্দিহান এর সফলতা নিয়ে। তবে এটা ঠিক শাহবাগ চত্বর চোখ খুলে দিয়েছে এ জাতির। তরুণ প্রজন্মের এই আন্দোলন শিখিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে। তাদের দেখানো পথে এখন হাঁটছে শহীদ রুমি স্কোয়াড। এভাবেই হাঁটবে একের পর এক দল। নতুন ব্যানারে উঠবে নতুন দাবী, রাজপথে দেখা যাবে নিত্য নতুন মুখ। যারা ভেঙ্গে দেবে ঘুনে ধরা এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি। থামাবে দুর্নীতিবাজদের উল্লম্ফন, উন্মোচিত করবে মুখোস ধারীদের স্বরূপ। এদেরকে আর থামানোর উপায় নেই। আর তা জেনেই পুরাতনরা প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন।
প্রথম থেকেই রাজনীতিবিদগণ স্বীয় স্বার্থে শাহবাগ চত্বরকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। কেউ কিছুটা সফল হয়েছেন কেউবা পুরোপুরি ব্যর্থ। তবে কোন দলই যে একে রক্ষার্থে বুক পেতে দেবেনা তা নিশ্চিত। রাজনীতিবিদগণ একে প্রশ্নবিদ্ধও করেছেন তাদের নিজেদের স্বার্থেই। এরশাদের চোখে “১৯৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া এদেশে আর কখনও গণজাগরণ হয়নি।“ অর্থাৎ ৯০এর গন অভ্যুত্থানকেও তিনি অস্বীকার করছেন। শুধুমাত্র নিজের গায়ে লাগবে বলে। এরশাদ সাহেব প্রকারান্তরে এ দেশের রাজনীতিবিদদেরই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সত্যিই নিজেদের গা বাঁচিয়ে অন্যের পিছু লাগতে এরা সিদ্ধহস্ত। আওয়ামী লীগের মোহভঙ্গ হয়েছে যখন তারা দেখেছে ‘জয়বাংলা’ হাতছাড়া হয়ে গেছে। এটা এখন সার্বজনীন শ্লোগান। তারা যখন দেখেছে প্রজন্ম চত্বর তাদের এক কালের মিত্রকে নিষিদ্ধের দাবী তুলেছে। আর তাই শহীদ রুমী স্কোয়াডের অনশন তাদের মনে অনুকম্পা জাগাতে ব্যর্থ। সরকারের ভাবখানা এমন যে এরা মরলেই কি আর বাঁচলেই কি। জামাত নিষিদ্ধ করলে যে, তাদের ভোট বিরোধী পক্ষের পকেটে যাবে সে হিসেব-নিকেশে তারা এখন মহা ব্যস্ত।
নিষিদ্ধ না করলে কি এই ভোটগুলি আওয়ামী লীগের পকেটে যাবে?
এ প্রশ্নের উত্তরটিও আসবে রাজনীতিবিদদের মতই ঘুরিয়ে পেচিয়ে। তা হল-
রাজনীতির হিসেব বড় জটিল। এখানে অন্তরালে চলে ভাঙ্গা গড়া, সমঝোতার খেলা। বাইরে থেকে যা বুঝার উপায় নেই।
এই আঁতাত স্বীকৃত সত্য বলেই, তারা বলেন। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তবে তারা যা বলেন না তা হল; তাদের নীতি বলে কিছু নেই। তাদের এই নীতি বর্জিত হিসেবের দাম জাতি আর কত দিবে?
এরশাদ বলেন, 'প্রথমদিকে গণজাগরণ মঞ্চকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে ব্লগারদের নবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের কারণে তা প্রত্যাহার করেছি”।
গণজাগরণ মঞ্চ থেকে আদৌ কি কেউ নবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন? নাকি তারা ব্লগে করেছেন? তিনি তাও স্পষ্ট করেননি। যদি কেউ নবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকে তার বিরুদ্ধে একজন মুসলমান হিসেবে তিনি অবস্থান নিতেই পারেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও তাঁর বিরুদ্ধেই অবস্থান গ্রহণ করব। কারণ আমি নিজে মনে প্রাণে একজন গর্বিত মুসলমান।
কিন্তু তাই বলে একটি মহতী উদ্যোগের বিরুদ্ধে কেন অবস্থান নিতে হবে? একজন বা কয়েকজন যদি দোষী হয় আমরা তাদের যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে বিচার চাইতে পারি। কিন্তু তাই বলে কি একটি প্রজন্মকেই কলঙ্ক তিলক পড়িয়ে দিতে পারি? দেশের পক্ষে গড়ে ওঠা একটি আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে পারি? তাই যদি হয় তবে এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যদি কোন নাস্তিক অংশগ্রহণ করে থাকে। তাহলে কি এই স্বাধীনতাকেও আমি অস্বীকার করব? আগে এমন ফতোয়াও শোনা গেছে মুসলমানের আবিষ্কার নয় বলে মসজিদে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে যে, হুজুরের ঘরের ইলেকট্রিক ফ্যান, এসি ব্যবহারও নাজায়েজ হয়ে যাবে!! আল্লামা(জ্ঞানী) সুফি সাহেব নিশ্চয়ই সে ফতোয়া জারি করবেন না?
আরেকটি প্রশ্ন হল শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ও খতিব আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদ তো জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন ‘‘জামায়াত শুধু যুদ্ধাপরাধীই নয়, এরা ইসলামেরও শত্রু”। তাহলে আসলে নাস্তিক কে বা কারা ? সাধারন মানুষ যে মহা গো্লমেলে অবস্থায় পড়ে গেল।
দেশে আরেকটি ওয়ান ইলেভেন আসবে কিনা আর তা রোধ কল্পে নেত্রীরা আলোচনায় বসে, সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা করবেন কিনা বা-এরশাদের ভাষায় দেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে যাবে কিনা সেটা ক্ষমতার মোহে মত্তদের বিষয়। সাধারণের নয়। তবে হ্যাঁ “দেশের মানুষ এ ধরণের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়” এটা সত্য। আর তা যে কবে পাবে তা স্বয়ং আল্লাহ বৈ আর কেউ জানে না। কেননা হায়াত-মউত তো আল্লাহরই হাতে।
জাতীয় পার্টি আগামীতে এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় খুবই ভাল কথা। কিন্তু তাই বলে দেশ আস্তিক-নাস্তিক দুই ভাগে বিভক্ত এই ধরনের একটি তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করে বৈতরণী পাড় হতে চাওয়া নিশ্চয়ই শোভন নয়। আর তা ছাড়া দিন বদলাইছে এটাও তো বুঝতে হবে। সবাইকে এখনো এতটা বেকুব মনে করাটাও বুদ্ধিমানের লক্ষণ নয়। সুবিধাবাদী এরশাদ সাহেব গাছেরটা খান তলারটাও কুড়ান। তিনি সরকারে থেকেও ব্যর্থতার ভাগীদার হন না। তিনি সবার সাথেই থাকেন। কোথায় নেই তিনি? মহাজোটেও আছেন হেফাজতে ইসলামেও আছেন। জোটে নেই তাই বা বলি কি করে। বিষয়টা যেন এমন-
ও হে তুমি কার?
যখন যাকে প্রয়োজন তখন আমি তার।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শের-এ বাংলা, মজলুম জননেতা, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমানদের যেমন এ দেশের মানুষ শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে। বিশেষ বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত করে। তেমনি সুবিধাবাদীদেরও মানুষ চিরদিন মনে রাখে। যুগে যুগে বর্তমানদের সাথে চলে পূর্ববর্তীদের তুলনা। সে তুলনায় আজকের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বার বার ফিরে আসবেন সন্দেহ নেই। কেননা এই ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত মহামানবদের আবির্ভাব সব যুগে সর্বদাই ঘটে। আর তারা থাকেনও বহাল তবিয়তে।
[email protected]
সূত্র: শাহবাগে গণজাগরণ হয়নি; এই আন্দোলন বন্ধের দাবি এরশাদের http://www.priyo.com/2013/03/30/14385.html
জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে শুরু হচ্ছে আলেমদের সংঘবদ্ধ আন্দোলন Click This Link.
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:২১
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সব ভোটের হিসাব বাকি সব আই ওয়াশ .
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:২৩
দিশার বলেছেন: ভালো কথা বলে লাভ নাই ভাই , যতদিন মাদ্রাসার ভোট, সাহাবাগ এর জনসংখ্যার চেয়ে বেশি তো দিন , BAL , আর দল দুইটাই জামাত, হেপাজত,কওমী আকড়ে ধরে থাকবে। জামাত এর মত ৫০লাখ রেজিস্তার্দ কর্মী দেন, আপনার পিসে ধরনা দিবে দুই দল . বা কওমী মাদ্রাসার মত অন্ধ কয়েক লক্ষ্য হাফ শিক্ষিত তেলেবুল আলেম দেন দেখেন BAL , দল কি করে .
সব ভোটের হিসাব ভাই . বাকি সব আই ওয়াশ .