নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
সব কথাতেই যে কান দিতে হবে এমন কোন কথা নেই। আবার সব কথাকেই যে উড়িয়ে দেয়া যায় তাও নয়। নির্ভর করছে কথাটি কে বলছেন। কোথায় বসে বলছেন এবং কি প্রসঙ্গেই বা বলছেন তার উপর। বলছিলাম জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে দেয়া হুসিয়ারীর কথা। যেখানে তিনি বলেছেন, “আবদুল কাদের মোল্লার রায় নিয়ে যদি নাড়াচাড়া করা হয়, তা হলে ৫৬ হাজার বর্গমাইলে আগুন জ্বলবে”
প্রথমেই বলেছি কথাটি কে কখন কোথায় দাঁড়িয়ে এবং কোন প্রসঙ্গে বলেন তার উপরেই সে কথার গুরুত্ব নির্ভর করে। যেহেতু এটা ছিল ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ। কাজেই কথাটিকে শুধুমাত্র তাহেরের বা জামায়াতের বলে ধরে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ এটা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটেরই কথা। কারণ এ কথা বলা থেকে বিএনপি তাকে নিবৃত্ত করেনি বা এর প্রতিবাদও করেননি।
তাহের নমুনা হিসেবে দেখিয়েছেন সীতাকুণ্ডকে। তিনি বলেছেন “সীতাকুণ্ডের ঘটনা কেবল একটি 'নমুনা'"।
তার মানে হল সীতাকুণ্ডের ঘটনার দায়ও জামাত প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমেই স্বীকার করে নিলো। পত্রিকায় প্রকাশিত তার ভাষ্য অনুযায়ী তিনি তাদের এই দেশকে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘোষণায় সাধারণ মানুষকে সাথে নেয়ার কথাও বলেন নি। এখানে তিনি সত্যের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের আন্দোলনে যে জন সম্পৃক্ততা নেই। আর তা যে তাদের প্রয়োজনও হয়না এই বক্তব্যে তাহের এটাও স্পষ্ট করেছেন।
এখন কথা হল ৫৬ হাজার বর্গমাইল কি জামাতকে ইজারা দেয়া হয়েছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রশ্ন, সীতাকুণ্ড কি বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে অবস্থানরত আরেকটি স্বাধীন ভূখণ্ড, যে আমাদের প্রশাসন সেখানে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে? আজ সীতাকুণ্ডকে তারা আমাদের সামনে “নমুনা” হিসেবে পেশ করছে। এত সাহস তারা পায় কোথায়?
তাহেরের কথা অনুযায়ী “আবদুল কাদের মোল্লার রায় নিয়ে যদি নাড়াচাড়া করা হয়, তা হলে ৫৬ হাজার বর্গমাইলে আগুন জ্বলবে” তার মানে কি আদালত যে রায় দিয়েছে তাকে বস্তাবন্দী করে রাখতে হবে?
এ ক্ষেত্রে মহামান্য আদালত তাহেরের ব্যাপারে কি ভূমিকা নেন আমরা তাও দেখতে চাই।
আওয়ামী সরকার যদি জামাত জুজু’তে এই রায় বাস্তবায়ন না করে তাহলে কি আমরা ধরে নেব বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় এলে কাদের মোল্লারা বেঁচে যাবেন? তাহেরের বক্তব্য কি তাই ইংগিত করছে না? এ ব্যাপারে বিএনপি সরাসরি কিছু না বললেও যেভাবে মৌনব্রত পালন করছে তাকেও শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরে নেয়ার সুযোগ নেই।
যে আওয়ামী লীগকে আশ্রয় করে একটি দেশ স্বাধীন হতে পেরেছে। সেই আওয়ামী লীগের শাসনামলেই স্বাধীনতার পাদপীঠে দাড়িয়েই যখন একাত্তরের পরাজিত শক্তি সরকারকে একজন মানবতা বিরোধী অপরাধীকে দেয়া আদালতের রায়কে নাড়াচাড়া না করার জন্য শাসায়! হুমকি দেয় পুরো দেশকে জ্বালিয়ে দেয়ার। তখন এই সরকারের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা টলে উঠতে বাধ্য। আর সে দায়টিও অন্য কারও নয় এই সরকারেরই।
এ অবস্থায় বর্তমান বিরোধী দল বিএনপি যে পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে তার সর্বশেষ প্রমাণ তারা রাখল জামাতের এই ঔদ্ধত্যকে প্রশ্রয় দিয়ে। আর জাতীয় পার্টিকে তো আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়া কেউ গোনায়ই ধরেনা আস্থা রাখা তো দুরের কথা। তাহলে আর বাকি থাকল কে? আমরা এখন কি তবে জামাতের পতাকা তলে গিয়ে আশ্রয় নেব?
তাইতো করা উচিৎ! বশ্যতা স্বীকার করতে হলে বীর্যবানের বশ্যতা স্বীকারই বুদ্ধিমানের কাজ নির্বীর্যের নয়।
আর যদি তা নিতেই হয় তাহলে তার আগে মাননীয় নেত্রী দ্বয় আপনারা অপারগতা প্রকাশ করুন। আমরা পরাজিত শক্তিকেই এদেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হিসেবে মেনে নেই!
আমরা ভুলে যাব স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি বলে এ দেশে কোন শক্তি আছে। আমরা এও ভুলে যাব যে, একদা আমাদের এ দেশটি একটি অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। আমরা আর কখনোই কোন যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাইব না। সুশাসনের আশায় হা পিত্যেশ করেও মরবো না। শুধু এটুকুই মেনে নেব আমরা এতদিন ধরে যাদের দেবতার আসনে বসিয়ে ছিলাম আসলে তারা কেউই তা ছিলেন না। আমরা এতদিন ধরে অযোগ্যকেই অর্ঘ্য দিয়ে এসেছি, যা পাওয়ার যোগ্যই আসলে তারা নন।
[email protected]
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮
মুশে হক বলেছেন: পাপীরা সর্বদা চীৎকার করে তাদের দুর্বলতা ঢাকতে। সরকার বা অন্য কেও কিছু করছে না বলে হতাশা প্রকাশের দরকার নেই। নিজের জায়গা থেকে রুখে দাড়ান রাজাকাররা পলাবে।