নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
সুমাইয়া আক্তার আক্ষেপ করে বলছেন 'একটা তোষক দিয়া জড়ায়া ধরলে আমার বাচ্চাগুলো তো বাঁচতো' না হয় তোষকটাই পূড়ে যেত। অনেকে হয়ত বলবেন অই সময়ে মানুষ কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে যায়। সাধারন বুদ্ধি লোপ পায়। তা হয়ত ঠিক। তবে সুমাইয়া আক্তারের মর্মস্পর্শী বর্ননায় আমাদের ক্ষমার অযোগ্য নির্লীপ্ততাই ফুটে উঠেছে।
আসুন না একটু কষ্ট করে গ্যাসের আগুনে পূড়ে যাওয়া মৃত শার্লীনের মা সুমাইয়া আক্তারের মর্মস্পর্শি কথাগুলি পড়ি। নিজেদের বোঝার চেষ্টা করি যে কতখানি নিচে আমরা নেমে গেছি। আর সে উপলব্ধি থেকেই নিজেদের পুনরায় মানুষের পর্যায়ে উন্নিত করা যায় কিনা তা চেষ্টা করে দেখি।
উল্লেখ্য গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার উত্তরায় সুমাইয়া আক্তারের বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ আগুন লেগে যায়। ঐ ঘটনায় আগুনে পুড়ে ইতোমধ্যেই মারা গেছেন সুমাইয়া আক্তারের স্বামী মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা শাহীন শাহনেওয়াজ এবং তাদের দু সন্তান পনের বছরের শার্লিন আর ১৬ মাস বয়সী জায়ান। সুমাইয়া এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আর তুলনামূলক কম দগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর এখন স্বজনের বাসায় রয়েছেন শাহীন ও সুমাইয়ার আরেক সন্তান জারিফ।
সুমাইয়ার আপন বড় ভাই নওশাদ জামান তার বোনের কথাগুলো রেকর্ড করেছেন। পরে পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। নিন্মে সেটাই হুবুহু তুলে ধরা হলঃ
স্বজনদের সাথে আলাপকালে সুমাইয়া আক্তার বলেন, " চিৎকার দিয়ে নামতেছি- আগুন লাগছে সাহায্য করেন। বাঁচান বাঁচান। গায়ে তো আগুন। তিন আর চার নম্বর ফ্লোর থেকে দরজা খুলছে। আমাদের দেখে দরজা বন্ধ করে দিছে। স্পষ্ট মনে আছে। সাত তলা থেকে নামছি। তিন তলার লোকেরা একটা তোষক দিয়ে যদি জড়ায়া ধরতো। একটা তোষক না হয় পুড়তো। আমার বাচ্চাগুলো তো বাঁচতো" ।
ফেসবুকে পাওয়া অডিওতে সুমাইয়া বলেন বাসার চুলায় গ্যাসের পাওয়ার কম ছিল।
“ বাসায় ওঠলাম সিলিন্ডার গ্যাস ছিলোনা। তিনদিন কিনে খেয়েছি খাবার। তারপর মিস্ত্রি এসে রাইজার বাড়িয়ে পাওয়ার ঠিক করে দিচ্ছে । তারপরও গ্যাস লিক করতো। গ্যাসের গন্ধ পাইছি। জানালা খোলা রাখতাম”।
তিনি বলেন গ্যাসের গন্ধ পেয়ে রাতেও তার স্বামী মোমবাতি জ্বালিয়ে চেক করেছেন। পরে বললো মনে হয় ওপরে ছাদ থেকে আসতেছে।
“চুলা অল্প জ্বালিয়ে চায়ের পানি দিছি। ওর আব্বু বললো ঘরে গ্যাসের গন্ধ আসছে, ফ্যানটা ছেড়ে দেই। ফ্যান ছেড়ে জানালা খুলে দেয়ার জন্যে”।
“ জায়ান ওর বাবার কোলে। যেই ফ্যানটা ছেড়ে দেবার পরে দাউ দাউ করে আগুন। সেকেন্ডের মধ্যে, এতো আগুন”।
“আসলে ডাইনিং রুমটাই গ্যাস ভরা ছিলো। শার্লিনের রুম ছিল রান্না ঘরের পাশেই। একটা জানালা সম্ভবত বন্ধ ছিল”।
এরপর আরও করুন ঘটনার বর্ণনা দেন সুমাইয়া।
তিনি বলেন, “আমি আর শার্লিনের আব্বু নামছি। আগুন জ্বলতেছে গায়ে। চিৎকার দিয়ে নামতেছি- আগুন লাগছে সাহায্য করেন। বাঁচান বাঁচান। তিন আর চার নম্বর ফ্লোর থেকে দরজা খুলছে। আমাদের দেখে দরজা বন্ধ করে দিছে। একটা তোষক দিয়ে যদি জড়ায়া ধরতো। একটা তোষক না হয় পুড়তো। আমার বাচ্চাগুলো তো বাঁচতো। কত মানুষ সব তাকায়া আছে। কেউ আগায়না”।
" পরে নীচে নেমে, কাপড় তো পুড়ে গেলো। নীচে ছিলো ছালার চট। টাইনা গায়ে দিছি। কত মানুষ, সবাই তাকায়া আছে, কেউ আগায়না"।
তিনি বলেন, “বলছি আমি মহিলা একটা চাদর দেন। কেউ দেয়না। বিল্ডিং এর মহিলারা কেউ দেয়না... আল্লাহ মাফ করুক সবাইকে”।
“পরে নীচে নেমে চিৎকার দিয়ে দারোয়ানকে বললাম আমার দু ছেলে ওপরে আটকা পড়ছে, আপনারা তাড়াতাড়ি যান। তারা যেতে যেতে শালীন পুড়ে গেছে”।
তিনি বলেন, “শার্লিন পুড়েছে বেশি, গায়ে পা থকথক হয়ে গেছে। শার্লিন বলে আমি তো বাঁচবোনা আমাকে মাফ করে দিয়ো আম্মু। আমি বলি বাবা তুই বাঁচিস, আমি মইরা যাই। মানুষ এরকম হয়। একি খারাপ না? কেউ কাউরে একটু সাহায্য করেনা। এটা কি কথা”?
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা।
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সত্যিই দিন দিন আমরা বড় বেশি নিচে নেমে যাচ্ছি!
২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: মানুষ এমনই আসলে। ভীতু, সুযোগ সন্ধানী আর কাপুরুষ।
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আমরা যেদিন থেকে ইন্ডিভিজ্যুয়াল হতে শিখেছি সেদিন থেকেই আমাদের সর্বনাশের শুরু।
৩| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮
বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: ডিজুস জেনেরেশন এর পর এখন চলছে ফেসবুক জেনেরেশন। দিনে দিনে মানুষ এতো যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে!!! অসহ্য!! কেউ যে এই দৃশ্য ফেসবুকে পোস্টের জন্য ধারন করে নাই তার কি গ্যারান্টি।
বহুতল ভবন গুলতে কম্যুনিটি গড়ে উঠা খুবই জরুরী। সমাজ গড়ে উঠুক প্রতিবেশীদের নিয়ে। মানুষ এখন ফেসবুক আর ব্লগ দিয়ে সামাজিক বন্ধন রক্ষা করে, যেখানে দায়িত্ব পালনের কোন গরজ নাই।
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: "বহুতল ভবন গুলতে কম্যুনিটি গড়ে উঠা খুবই জরুরী। সমাজ গড়ে উঠুক প্রতিবেশীদের নিয়ে"।
খুবই ভাল কথা। পারস্পরিক সম্পর্ক বিনির্মান অনেকটাই জরুরী।
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪
খোলা মনের কথা বলেছেন: আসলে কত নির্মম আমরা। খুব খারাপ লাগলো। সবাইকে বুঝা উচিৎ আমি হয়তো আগামী দিনে এমন বিপদে পড়তে পারি।
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সবাইকে বুঝা উচিৎ আমি হয়তো আগামী দিনে এমন বিপদে পড়তে পারি।
৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৯
এম সিয়াম বলেছেন: " শার্লিন বলল আমিত বাচবোনা আমাকে মাফ করে দিয় আম্মু। আমি বলি তুই বেচে থাক বাবা আমি মরে যাই " খুব আর্তনাত জড়িয়ে আছে ভাই। পারলাম না আবেগকে দরে রাখতে।
খুব জানতে ইচ্ছে করে আর কত শার্লিন পৃথীবি থেকে চলে গেলে মানুষের ভিতর মমতাবোধ সৃষ্টি হবে।
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৬
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আবেগ ধরে রাখার প্রয়োজন নেই। আমাদের আবেক তাড়িত হওয়াটা এখন বেশি জরুরী।
৬| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
বিপরীত বাক বলেছেন: ঢাকাবাসী বলেছেন:
দুনিয়াতে সবচাইতে অসভ্য
অশিক্ষিত অদক্ষ স্বার্থপর
লোভী দুর্ণীতিবাজ নিষ্ঠুর
মানুষ হল বাং..!.......
রাবেয়া রব্বানি
বলেছেন: মানুষ এমনই আসলে।
ভীতু, সুযোগ সন্ধানী আর
কাপুরুষ।...
আরও বলবো??
০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২৭
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: বলবো এবং একই সাথে শোধরাবো।
৭| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: আমাদের মতো স্বার্থপর জাতি আর আছে কিনা জানা নাই ।
৮| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩৫
ইসমাইলহোসেন০০৭ বলেছেন: মানুষ এর মধ্যে বিরাট পরিবর্তন আসছে। মানুষ বোঝা কঠিন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫২
ঢাকাবাসী বলেছেন: দুনিয়াতে সবচাইতে অসভ্য অশিক্ষিত অদক্ষ স্বার্থপর লোভী দুর্ণীতিবাজ নিষ্ঠুর মানুষ হল বাং ....।