নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ: জঙ্গিবাদ বিরোধী ফতোয়া

১২ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৮



আলোচনা শুরুর পূর্বেই জেনে নেয়া ভাল যে ফতোয়া কি? ইসলামে ফতোয়া বা ফাতওয়া হোল বিধান ও সমাধান, যা কোনও ঘটনা বা অবস্থার প্রেক্ষিতে ইসলামী শরীয়তের দলীলের আলোকে মুফতি বা ইসলামী আইন-বিশেষজ্ঞ প্রদান করে থাকেন। যখন কোন ব্যক্তি সরাসরি কুরআন ও হাদিস কিংবা ফিকহের আলোকে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান বের করতে অপারগ হন তখন তিনি মুফতির কাছে এই বিষয়ের সমাধান চান। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় ইসতিফতা বলে। মুফতি তখন ইসলামী শরিআতের আলোকে স সমস্যার সমাধান জানিয়ে দেন। এই সমাধান প্রদান করাকে ইসলামের পরিভাষায় ইফতা বলে এবং প্রদত্ত সমাধান বা বিধানটিকে ফতোয়া বলে।

সারা বিশ্বেই ইসলাম যখন জঙ্গিবাদ দ্বারা আক্রান্ত তখন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সর্ববৃহৎ ঐক্যমত্য গঠন করা হয়। যেখানে ভারতের ১,০৬০ জন আলেম একত্রে ''আই এস'' এর কার্যক্রম কে জঙ্গিবাদ আখ্যায়িত করে হারাম ঘোষণা করেন। আর ২০১৬ এর জুন মাসে একই ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মানব কল্যাণে শান্তির ফতোয়া প্রদানের উদ্দেশ্যে শোলাকিয়ার ইমাম ফরীদ উদ্দিন মাসুদ এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জমিয় তুল ওলামা নামক একটি সংগঠন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১ হাজার ৮৫০ জন মুফতি, আলেম-ওলামার স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে এদের মধ্যে ৯ হাজার ৩২০ জন নারী আলেম রয়েছেন। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে এই স্বাক্ষর নেওয়া শুরু হয়ে গত ৩১ মে শেষ হয়। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ইসলাম ও জঙ্গিবাদকে সমার্থক করে তোলার যে চেষ্টা চলছে তার থেকে রেহাই পেতে এমন ফতওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিশ্বের প্রতিটি কোনেই সমানভাবে অনুভূত হচ্ছিল। সে জন্যেই এ উদ্যোগ।

ইসলামের কোন ফতোয়াই নির্দিষ্ট কোন স্থান কাল বিশেষের জন্য নয়, সেটা সমগ্র বিশ্ব মুসলিমের উপরেই বর্তায়। শর্ত হচ্ছে সেই ফতোয়া হতে হবে সঠিক। আর এই ফতোয়াটির ন্যায্যতা প্রমাণ তো আরও অনেক বেশি জরুরী। কেননা এর সাথে ইসলামের মুল নীতির সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি ইসলাম শান্তির ধর্ম। মহানবী(সঃ) শান্তির পথেই ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রশ্ন হল, জঙ্গিবাদ বিরোধী এই ফতোয়া কি এ পর্যন্ত বিশ্ব মুসলিমের কাছে তুলে ধরা হয়েছে?

যদি এই ফতোয়া নিয়ে কোথাও কোন প্রতিবাদ উঠে তাহলে তা যেমন আলোচনার দাবী রাখবে অপরদিকে যদি ফতোয়াটি নির্বিবাদে গ্রহণ যোগ্যতা লাভ করে তাহলে এটি বিশ্ব মুসলিমের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা বলেই বিবেচিত হবে। কিন্তু কাজটি এককভাবে কোন সংগঠনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ। আমরা এখন পর্যন্ত সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে দেখিনি।
শুধুমাত্র কোন সংগঠন বা ব্যক্তি উদ্যোগে যে এত বড় একটি কাজ করা সম্ভব নয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যে দেশেই ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ এই ফতোয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, ইসলামী আইনে বিশেষজ্ঞ মুফতিরাই শুধু ফতোয়া ঘোষণা করতে পারেন। সেখানে এক লাখ স্বাক্ষরকারীর বড় অংশ মুফতি না হওয়ায় এই ফতোয়া গ্রহণযোগ্য হবে না।সূত্র: বিবিসি ২২/৬/১৬ যদিও ফতোয়া দেয়ার ব্যাপারে ২০১১ সালে আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছিল, তাতে বলা হয়, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দিতে পারবেন যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তিরা। সেখানে বিশেষ কোন শ্রেণীর ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
মুফতি ফয়জুল্লাহর এই বিতর্কের জবাবে ফতোয়া ঘোষণাকারী শোলাকিয়া মসজিদের ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেছেন, নেহাতই রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে জঙ্গি বিরোধী ফতোয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
“আলেম, মুফতি এবং ইমামদের স্বাক্ষর আমরা নিয়েছি। আমাদের দেশে নামের আগে মুফতি নেই, এমন অনেক আলেম আছেন। এখন যদি শ্রদ্ধেয় আলেম আহমেদ শফি ইসলাম নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেন আমি কি বলবো, সেটা বিশেষজ্ঞ মত হয়নি। আসলে বিতর্ক সৃষ্টির জন্য কিছু বক্তব্য তোলা হচ্ছে।” সূত্র: বিবিসি ২২/৬/১৬

আমাদের মত সাধারণ মুসলমানের কথা হচ্ছে বিতর্ক যখন উঠেছে তখন তার অবসানও প্রয়োজন। এই সব বিতর্ক কাটিয়ে উঠতেও এই ফতোয়াকে বিশ্ব মুসলিমের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং তাদের মতামত গ্রহণ জরুরী।
বর্তমান বিশ্বে ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ একটি ভয়াবহ সমস্যা কাজেই আলোচিত ফতোয়াটি খুবই গুরুত্ব বহন করে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে সরকার দ্রুতই একে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবেন একে একটি স্থায়ী ফতোয়ায় রূপদানে সচেষ্ট হবেন। আমরা সেটাই কামনা করি।

[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৫

মহা সমন্বয় বলেছেন: কিন্তু এই মুফতিরাই জখন জঙ্গি হয়ে উঠে তখন তো বলতেই হয়ে যে সরষের মধ্যই ভূত।

১২ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২২

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আমি শিক্ষাকে দেখি তপস্যা হিসেবে যেখানে ঠোটস্ত বা মুখস্থ বলে কিছু নেই। যেখানে থাকে অন্তর্নিহিত ভাবের সন্ধানের নিরবিচ্ছিন্ন তাড়া। আমি শিক্ষাকে দেখি অর্জিত জ্ঞান দানের অপ্রতিরোধ্য চেষ্টা্র মধ্যে। শিক্ষিত তিনিই যিনি জ্ঞান অর্জন এবং জ্ঞান দান উভয়ের মধ্যে তৃপ্তি খুঁজে পান। জ্ঞানী ব্যক্তি কখনোই তার অর্জিত জ্ঞান বিক্রি করে পেট চালান না। আপনি যাদেরকে নির্দেশ করছেন খোঁজ নিয়ে দেখুন তো তাড়া যা বলেন তা ঘন্টা প্রতি কত টাকায় বিক্রি করেন? যেখানে শিক্ষার উদ্দেশ্য থাকে উপার্জন সেখানে শিক্ষিত হয়ে ওঠার সুযোগই থাকে না।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:৪৮

হানিফঢাকা বলেছেন: ফতোয়া ? হুম, ইন্টারেস্টিং। ভাইজান ফতোয়া ইউনিভার্সেল কোন বিষয় না। কারন পৃথিবীতে লাখ লাখ ফতোয়া আছে যা একটা আরেকটার বিপরীত। আল আযহারের ফতোয়া আর সৌদির ফতোয়া এক না, আবার এদের নিজেদের ফতোয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। যাই হোক দেশের কথায় আসি---

পেপারেও দেখেছিলাম, আপনার লেখা পড়েও জানতে পারলাম উনারা ফতোয়া দিয়েছেন। এই ফতোয়ার মুল কপি আমি দেখেনি, যোগাড় করা যাবে- এইটা কোন সমস্যা না। আপনি কি জানেন এই ফতোয়া এরা কিসের ভিত্তিতে এবং কি জন্য দিয়েছে? কি জন্য দিয়েছে সেইটা বলি- নিজেদের পিঠ বাচানোর জন্য।

কিসের ভিত্তিতে দিছে সেইটা একটা কোশ্চেন। তবে কি তারা তাঁদের সহি হাদিস অস্বীকার করে? তারা কি নাকে খত দিয়ে বলেছে যে সহি হাদিসে যে সব উপাদান আছে সেইগুলি তারা বিশ্বাস করে না? এইটা হল ভণ্ডামি।

পৃথিবীর সব দেশেই ফতোয়া কিনতে পাওয়া যায়। আবার প্রেশার দিয়েও ফতোয়া আদায় করা যায়। ভিন্ন দলের ফতোয়াও ভিন্ন।
আপনার কোন ফতোয়া লাগব? টাকা দিবেন লিখে সাইন করে দিবে। বিশ্বাস হয় না?

আপনি একটা কমেন্টে বলেছেন "আপনি যাদেরকে নির্দেশ করছেন খোঁজ নিয়ে দেখুন তো তাড়া যা বলেন তা ঘন্টা প্রতি কত টাকায় বিক্রি করেন?" - যারা এই ফতোয়া দিয়েছেন তারাও এইভাবেই পেট চালায়। কারো রেট বেশী কারো কম। খালি ইনকামের পার্থক্য। বেশ্যার মত।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৩৪

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ফতোয়া ইউনিভার্সেল কোন বিষয় না। কারন পৃথিবীতে লাখ লাখ ফতোয়া আছে যা একটা আরেকটার বিপরীত। আল আযহারের ফতোয়া আর সৌদির ফতোয়া এক না, আবার এদের নিজেদের ফতোয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।
এই কারনেই বলেছি এই ফতোয়াটিকে ইউনিভার্সেল করার প্রয়োজনিয়তা রয়েছে। জঙ্গীবাদ সমস্যাটি বৈশ্বিক এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ঐকমত্যও জরুরী।
তবে এটাও তো ঠিক যে, ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান না করে জাগতিক লাভের আসায় প্রয়োজন অনুযায়ী কাট ছাঁট করে ব্যাখ্যা দান একটি অতি পুড়াতন প্রক্রিয়া। যা সংখ্যাগরিষ্ঠ অনেক ধর্মেই দেখা যায়। মহান আল্লাহ কিন্তু পবিত্র কুরআনেই এ ব্যপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। এর থেকে বের হওয়ার একটি প্রধান উপায় হতে পারে ধর্মের সঠিক জ্ঞান দান। যেটা আমরা আমাদের সন্তানদের বেলায় একেবারেই করছি না। আত্মার খোঁড়াক যখন না যোগাবেন তখন আত্মা সহজেই অখাদ্যে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এটাই স্বাভাবিক।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারা আয়াত ৮৫ বলেন,-
অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। [সুরা বাকারা: ৮৫]

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.