নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু করে বিমানবন্দর রোড হয়ে একেবারে হাতিরঝিল পর্যন্ত পুরো রাস্তার দুই ধারে সারি সারি লাল-হলুদ কৃষ্ণচূড়া গাছ। আবার মহাখালী থেকে বিজয় স্মরণী হয়ে একেবারে সংসদ ভবন পর্যন্ত সোনালু গাছের সারি। শাহবাগ থেকে মতিঝিল রাস্তার যেখানেই একটু জায়গা পাওয়া গেছে সেখানেই অশোক, শিমুল, পলাশ লাগানো। পুরো মিরপুর রোড জুড়ে বার্মিজ পিংক সরণী। যখন গাছগুলো লাগানো হচ্ছিল তখন ঢাকাবাসী একেও অন্যান্য আর পাঁচটা সাধারণ প্রকল্প বলেই মনে করেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই তখন এর প্রতি কারো কোন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু বছর ঘুরতেই ঢাকাবাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করল চির চেনা ইট-পাথরের ঢাকা প্রকৃতির নিপুণ হাতে বর্ণিল সাজে সেজেছে।
সমগ্র বিমান বন্দর রোড লাল-হলুদ কৃষ্ণচূড়ায় ঢেকে গেছে। মহাখালী থেকে বিজয় স্মরণী হয়ে সংসদ ভবন রাস্তার দু’ধারে থোকা থোকা আগুন রঙা সোনালী ফুলে বিমোহিত নগরবাসী। সুন্দরের এই ঘোর কাটতে না কাটতেই দেখতে পেল মিরপুর রোড জুরে কেবলই স্নিগ্ধতার পসরা সাজিয়ে বসেছে প্রকৃতি। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে মানুষ প্রাণভরে এই সৌন্দর্য উপভোগ করছে। উধাও হয়ে গেছে রোড ডিভাইডারের সেই রুগ্ন চিত্র। সবগুলো রোড ডিভাইডার ঢেকে আছে দারুণ সব লতাগুল্মের দেয়ালে।
পাঠকের বোঝার সুবিধার্তে প্রিয় এই ফুলগুলো এবং লতাগুল্মের দেয়ালের চিত্র দেয়া হলঃ
হ্যাঁ পাঠক, এতক্ষণ ধরে আমি আমার স্বপ্নের ঢাকার চিত্রটি আঁকার চেষ্টা করছিলাম। সম্ভবত আমার এ স্বপ্ন নগরবাসী প্রত্যেকে সন্তুষ্টচিত্তে এঁকে নিবেন। একে আমি স্বপ্ন বলছি এ জন্য যে, এর বাস্তব রূপ দিতে হলে প্রয়োজন প্রকৃতি প্রেম, ফুলের প্রতি ভালবাসা আর একটি স্বাপ্নিক হৃদয়। বলা বাহুল্য এখানে বাণিজ্য প্রায় নেই বললেই চলে। কেবল মাত্র বাণিজ্যের জন্যে যারা শয়ে শয়ে কিম্ভূত আকৃতির বনসাইকে জায়গা করে দিতে ভীষণ যত্ন রাস্তার দুই ধারের গাছগুলোর গোঁড়া কেটে দেয়; যাতে সহজেই সেগুলো মরে যায়। তাদের কাছ থেকে আর যাই হোক প্রকৃতি প্রেম আশা করা যায় না। এরা বেশ জোড় দিয়েই বলে চলেছেন তাদের ঐ কিম্ভূত আকৃতির বনসাই লাগাতে একটি গাছও কাটতে হয়নি। এই গাছগুলো যদি কথা বলতে পারত তাহলে হয়ত জানতে চাইত। কাটা যাতে না লাগে সে জন্যে আগেই মেরে ফেলার বন্দোবস্ত কারা করেছে?
ঢাকার রাস্তায় সৌন্দর্যবর্ধনের নামে ঝিনুককে দেখতে পাই রাস্তার পাশে বিশাল আকৃতির ডিম পেরে বসে থাকতে। ডলফিনকে দেখতে পাই ঝর্নার পানিতে স্নান করতে! আমরা দেখতে পাই এক ফিট আকৃতির গাছের নিচে তিন ফিট আকৃতির টব বানাতে। আমরা দেখতে পাই বাথরুম টাইলস কী করে রোড ডিভাইডারের সৌন্দর্যবর্ধনের নামে কিছু লোককে টাকার কুমির বানিয়ে দিচ্ছে।
এখন আর আশা করি না যে নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাঝে প্রকৃত সৌন্দর্য বোধ জাগ্রত হবে। তথাপিও একজন সাধারণ নগরবাসী হিসেবে ঢাকার দুই সুযোগ্য নগর প্রধানের কাছে আমার একটি আবেদন জানাতে চাই। রমনা, সোহরাওয়ার্দী, হাতিরঝিল, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ ঢাকার সবগুলো বড় পার্কে আলাদা আলাদা করে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল গাছ লাগিয়ে আলাদা আলাদা কর্নার করুন এবং ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলির দুই পাশে নির্দিষ্ট ভাবে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল গাছ লাগিয়ে দিন। যখন এই গাছগুলো ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে তখন আপনিও কম বিস্মিত হবেন না। আপনিও আনন্দে আপ্লুত হবেন।
বিশ্বের সব থেকে জনবহুল এই শহরে গাছ চাই, অনেক-অনেক গাছ। প্রাণহীন শুষ্ক এই নগরে চাই স্ফুরণ। আর তা এনে দিতে পারে এই সব গাছ-ফুল। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে চাই পত্র-পল্লবে ভরপুর ভরা যৌবনা প্রকৃতি। ঢাকা বাসি বাঁচুক আনন্দে, বাঁচুক স্বস্তিতে, বাঁচুক অনাবিল প্রশান্তিতে। আমাদের এই ছোট্ট চাওয়াটি পূরণে আপনাদের দুজন নগরপ্রধানের সহৃদয় সহানুভূতিই যথেষ্ট।
এমন আধা গাছ লাগানো প্রকৃতির সাথে চরম রসিকতা ছাড়া আর কিছু না। যার মূল্যও হয়ত একদিন চড়া সুদে এই নগরবাসীকেই চুকাতে হবে। দয়া করে ঢাকাকে আর নিষ্প্রাণ করে তুলবেন না। থাইল্যান্ডের রাস্তায় এমন বনসাই লাগানো আছে বলেই যে সেটা ঢাকার রাস্তায়ও লাগাতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।
আপনারা দুই নগরপ্রধানই পারেন এই ঢাকাকে পুনরায় প্রকৃতির কোলে ফিরিয়ে নিতে। আপনারা কি দয়া করে আমাদের এই আর্তিটুকু বিবেচনায় নেবেন?
২৭ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৩
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: বিকলাঙ্গমুক্ত হোক প্রিয় ঢাকা!
২| ২৫ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১২
গারোপাহাড় বলেছেন: আপনি সর্বশেষ যে বনসাঁই এর ছবি টা দিলেন, কদিন আগে এই ব্লগেই কে যেন এই ছবিটা দিয়ে আক্ষেপ করেছিল। আসলে আমরা এমন কেন? আমরা বাইরের সৌন্দর্য্য অবশ্যই আনবো তবে নিজের সৌন্দর্য্যকে অবহেলা কেন করবো?
২৭ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: যেখানে সর্বত্রই বানিজ্যের ধান্দা থাকে সেখানে আর যাই হোক সৌন্দর্য্যবোধ থাকে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:৩৬
বিবর্ন সভ্যতা বলেছেন: সত্যিই ভাই, বড়ই মূল্যবান কথা। এমন হাত পা কাটা গাছদের দেখে মনে হয় তারা বিকলাঙ্গ এবং তাদের যারা লবিং করে এনছে তারাও যে মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ এতে কোন সন্দেহ নাই।