নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পর্ক কথা (সম্পর্কের যত্ন নিন)

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:২১


এসো সম্পর্ক গড়ি। তুমি আর আমি আমরা দুজন এখন থেকে একটা সম্পর্কে বাধা পরব। ঠিক আছে? বেশ, তাহলে এসো সবার আগে মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন তৈরি করে নেই। যেখানে লেখা থাকবে এই সম্পর্কের লক্ষ ও কার্যাবলী। লেখা থাকবে বিধি বিধান , সীমারেখা।

আমরা কি এমন করে সম্পর্ক গড়ি? গড়ি না। বিয়ে একটি চুক্তিনামা, লিখিত এবং অলিখিত কিছু বিধি বিধান যার ভিত্তি। আর সম্পর্কের মুল ভিত্তিই হল সম্পর্কযুক্ত মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সহমর্মিতা ও কতৃত্বের স্বিকৃতি। যার পুরোটাই আবার অলিখিত এমনকি অনুচ্চারিতও বটে। এই যে অলিখিত ও অনুচ্চারিত কতগুলি শর্ত যেটা আরোপ করার মত নয়। সেটা যেসব মানুষের মাঝে পুরন হয়ে যায় তাদের মাঝে অলক্ষেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কখনো কখনো সম্পর্কের বাধনে আঁটকে যাওয়ারও অনেক পরে সম্পর্কযুক্ত মানুষগুলো বুঝতে পারেন যে তাঁরা কোন এক সময় বিনি সুতোর বন্ধনে আঁটকে পরে গেছেন। স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রেও বিয়ে নামক চুক্তিটি; সম্পর্কে রুপ নিতে ঐ একই শর্ত পূরণ হতে হয়। যাদের ক্ষেত্রে সেটা হয় তারাই কেবল সুখি দাম্পত্য জীবন লাভে সক্ষম হন। অন্যরা সম্পর্কহীন এক চুক্তিভিত্তিক জীবন যাপন করেন।

জীবনে নানা ক্ষেত্রে একসাথে অনেকের সাথে চলতে চলতে কেউ কেউ কখন যে বিশেষ হয়ে ওঠেন তা টেরই পাওয়া যায় না। স্কুলে, কলেজে, কাজের জায়গায়, পাড়ায় মহল্লায় এভাবেই কিছু বন্ধু জুটে যায়। যাদের সাথে সম্পর্কটা কোন লাভ-ক্ষতির চক্করে পরে ভেঙ্গে যায় না। অলিখিত ও অনুচ্চারিত সেই শর্ত পূরণ হওয়া সাপেক্ষে যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সে সম্পর্ক টিকে থাকে আমৃত্যু। বিপদে-আপদে, সুখে-অসুখে এইসব বন্ধুদের পাওয়া যায় সবার আগে।
এর বাইরেও সারা জীবন ধরে আমরা নানা রকম সম্পর্কে জড়াই। তাঁর যে সবটাই আমাদের পছন্দের ভিত্তিতেই হয় তাও নয়। এমন অনেক সম্পর্কে জড়াতে হয় যা হয়ত চাই না। এক কথায় অপছন্দের মানুষকেও সম্পর্কের খাতিরে মেনে নিতে হয়। সম্মান করতে হয়। যাপিত জীবনে এমন অনেক কিছুই ঘটে। যেটা আমার আলোচ্য বিষয় নয়।

আমার আলোচ্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে। প্রতিটি মানুষ তাঁর ব্যক্তি জীবনে কিছু সম্পর্কে বাধা থাকে যে সম্পর্কগুলোকে লালন করা, যত্ন করা একান্ত জরুরী। কেননা তা ঐ অলিখিত ও অনুচ্চারিত শর্ত মেনে হয় নি। যেমন সন্তানের সাথে পিতা-মাতার, স্বামীর সাথে স্ত্রী’র, ভাই-বোনের সম্পর্ক ইত্যাদি। এই সম্পর্কগুলোকে যদি যথাযথ সম্মান করা হয় তাহলে তাও সেই অমোঘ শর্ত পূরণ করে প্রকৃত সম্পর্কে রুপ নেয়। যাকে আমরা বলি সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক। আর সম্পর্কের এই সুস্থ থাকার উপরে যেমন ব্যক্তি জীবনের সুস্থতা নির্ভর করে ঠিক তেমনি সামাজিক জীবনেও এর প্রভাব অনেক বেশি। কাজেই এই সম্পর্কগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া ভীষণ জরুরী। সমস্যা হল, আমরা এমন একটা সময় পার করছি যখন মানুষ বড় বেশি একমুখি হয়ে পরছে। সম্পদের স্বল্পতা এর জন্য যতটা না দায়ী তাঁর থেকে বেশী দায়ী আমাদের স্বার্থপরতা।

কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমরা বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে অবহেলা করছি। স্বার্থে আঘাত লাগার ভয়ে ভাই-বোনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করছি। ফলে একটা সময় বড় বেশি একাকী হয়ে পড়ছি। সমাজে এই চিত্রটি অনেক আগে থেকেই স্থায়ী হয়ে পড়েছে। এটা নিয়ে এখন আর কারো খুব একটা মাথা ব্যথা নেই। এটা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

বর্তমানে যে বিষয়টা মানুষ উৎকণ্ঠিত তা হল, সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে, একের পর এক সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে। শুধু মাত্র ঢাকাতেই প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। যার মধ্যে তালাক দেয়া পুরুষ ৩০ শতাংশ, আর নারী ৭০ শতাংশ৷ খুব সহজেই অনুমেয়, বিষয়টা কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এই হিসেবটা করোনা কালীন সময়ের আগের। করোনা কালীন এই সময়ের হিসেবটা যে আরও ভয়াবহ তা বলাই বাহুল্য।
আমার জানামতে এ পর্যন্ত এই বিষয়টা নিয়ে তেমন কোন গবেষণা চালনা হয় নি। পত্রিকা রিপোর্টাররা তাদের প্রতিবেদনের স্বার্থে যে সামান্য মতামত গ্রহণের চেষ্টা করেছেন তাতে বার বারই উঠে এসেছে: শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, পরকীয়া, আত্ননির্ভরশীলতা, অর্থাভাব, যৌতুক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবের কথা।
অথচ আমরা এই সমস্যাগুলোর প্রায় সবগুলোর সমাধানই খুঁজতে পারি কেবল সম্পর্কন্নয়নের মাধ্যমে। আমরা প্রেম প্রেম নামক এক খেলায় মত্ত হচ্ছি মনের গভীরে স্থান করে নেয়ার চেষ্টা করছি না। আমরা কাগজে কলমে সম্পর্ক তৈরি করছি কিন্তু মনের বন্ধনের দিকে নজর দিচ্ছি না। একে অপরকে সম্মান করছি না, একে অপরকে বুঝতে চেষ্টা করছি না, সর্বোপরি একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছি না।
অথচ এর থেকে খুব সহজেই বেড়িয়ে আসা যেত যদি আমরা প্রথম দিনের সম্পর্কটাকে প্রতিদিন নবায়ন করে নিতে পারতাম। শরীরের যেমন যত্ন নিতে হয় ঠিক তেমনি সম্পর্কের যত্ন নিতে হয়। প্রতিদিন আমরা শরীরকে ঝকঝকে রাখি অথচ সম্পর্ক অবহেলায় পরে থাকে তাতে সময়ের ধুলো জমে। সম্পর্কের ধার নষ্ট হয়ে যায়, তাতে মরিচা পরে। অযত্ন অবহেলায় এক সময় সম্পর্কের জোর কমে আসে তখন সামান্য আঘাতেই তা ভেঙ্গে যায়। আমরা তখন আফসোস করি। ভবিতব্য বলে মেনে নেই। অথচ চাইলেই তাকে ভাল রাখা যেত। সুন্দর রাখা যেত। জীবনটাও সুন্দর হত। সম্পর্ক ভাল রাখতে সম্পর্ককে সম্মান করুন, সম্পর্কের যত্ন নিন। নিত্য নতুন ভাবে সম্পর্কের উদযাপন করুন। আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক সুস্থ থাকার সাথে আপনার আশেপাশের অনেকগুলো মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। কাজেই নিজেদের সম্পর্ক ভাল রাখুন নিজেরা ভাল থাকুন। ভাল রাখুন আপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৫১

সোহানী বলেছেন: চমৎকার কিছু কথামালা। ভালোলাগলো।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৩৩

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সোহানী অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন,




উৎকন্ঠিত হওয়ার মতো একটি বিষয় নিয়ে লেখা।

ঠিকই বলেছেন, প্রতিটি মানুষ তাঁর ব্যক্তি জীবনে কিছু সম্পর্কে বাধা থাকে যে সম্পর্কগুলোকে লালন করা, যত্ন করা একান্ত জরুরী। সম্পর্কগুলোকে যদি যথাযথ সম্মান করা হয় তাহলে ব্যক্তি জীবনের সুস্থতা যেমন ঠিক থাকে তেমনি সামাজিক জীবনেও এর প্রভাব পড়ে।

এটাও সত্য যে, আমরা এমন একটা সময় পার করছি যখন মানুষ বড় বেশি একমুখি হয়ে পরছে। সম্পদের স্বল্পতা এর জন্য যতটা না দায়ী তাঁর থেকে বেশী দায়ী আমাদের স্বার্থপরতা।

সম্পর্ক কেন যে টেকেনা তা নিয়ে ভালো বলেছেন - আমরা প্রেম প্রেম নামক এক খেলায় মত্ত হচ্ছি মনের গভীরে স্থান করে নেয়ার চেষ্টা করছি না। আমরা কাগজে কলমে সম্পর্ক তৈরি করছি কিন্তু মনের বন্ধনের দিকে নজর দিচ্ছি না। একে অপরকে সম্মান করছি না, একে অপরকে বুঝতে চেষ্টা করছি না, সর্বোপরি একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছি না।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৩৪

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আহমেদ জী এস অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.