![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত জেগে পড়ালেখা করছে মন্টু। কালকে ইংরেজি পরীক্ষা। সবাই ঘুমিয়ে গেছে শুধু সে জেগে আছে। গরমে তার গা ঘামছে। খোলা জানালা দিয়ে অল্পঅল্প বাতাস এসে হারিকেনের ভেতর জ্বলন্ত অগ্নিশিখাটাকে দোলাচ্ছে। দেখলে মনে হবে এটা কোন এক ছন্দের সাথে নাচার চেষ্টা করছে।
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে উঠোন দেখা যায়। উঠোনের পরেই একটা বাগান। বাগানের একপাশ দিয়ে গেছে একটা সরু মেটো পথ যেখান দিয়ে মন্টুরা(সে এবং তার মা-বাবা) মূল সড়কে যায়।
সে জানালা দিয়ে উঠোনে তাকাচ্ছে না। বাইরে গুটগুটে অন্ধকারে তাকালেই গা চমচম করে উঠে। মনে হয় অন্ধকার থেকে কালো কিছু একটা এখনি বের হয়ে আসবে।
সে ইংরেজি রাচনা পড়ার দিকে মনোযোগ দেয়। রচনা লেখার একটা কৌশল সে রপ্ত করেছে। রচনা লিখার সময় রচনার শুরু এবং শেষের দিকে কয়েকটা লাইন ঠিকভাবে লিখতে হয়। রচনার মাঝখানে ভুলভাল বানিয়ে লিখলেও স্যার ধরতে পারে না। কার এতো সময় পুরো রচনা পড়ে মার্কস দেয়া? সে এ কৌশলটা আগে জানতো না। সজিব স্যার গতবছর প্রাইমারী সমাপনী আগে এ কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিল।
সে ইংরেজিতে পাশ করেছে এবং ভালো মার্কস পেয়েছে। এটা পরীক্ষিত এবং নিরাপদ পদ্ধতি। নকলের থেকে নিরাপদ পদ্ধতি।
কালকে বার্ষিক পরীক্ষা। রচনা আসবে এইম ইন লাইফ। সে পরীক্ষার পশ্নটা পেয়েছে একটা ভুতের বাচ্চার কাছে। গতকাল রাতে টেবিলে বসে ঝিমোচ্ছিল, তখন একটা ভুতের বাচ্চা এসে হাজির হলো। সে একা আসেনি, তার সাথে এসেছে তার মা-বাবা। ভুতের বাচ্চার নাম কিউমিউ। কিউমিউ নামের দুষ্ট ভুতের বাচ্চাটা জানালা দিয়ে এসে তাকে,' ভাউ' বলে ভয় দেখালো। কিউমিউরকে দেখে সে ভয় পেয়ে চিৎকার দিলো ' মা' বলে।
তার মা এসে বললেন, ' চিৎকার করছিস কেন?'
সে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ' একটা মেয়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। ' মন্টুর মা এসে দেখল জানালার সামনে কোন মেয়ে নেই। মন্টুর মা রেগে গেল। তিনি মনে করলেন পরীক্ষার পড়া থেকে বাঁচার জন্য সে ছুতো ধরেছে। তার মা মেঘ-গর্জন দিয়ে বলে, ' খুব মিথ্যা বলা শিখেছ, না? না পড়ার জন্য ছুতো দেখাচ্ছ। আজ পিটিয়ে তোমার ছাল তুলে ফেলবো।'
সে আর কথা বাড়ায় না। কি প্রয়োজন রাতে মায়ের হাতে মার খাওয়ার? শব্দ করে দুলে দুলে আবার পড়া শুরু করে। তার মা মেঘ-গর্জন দিতে দিতে চলে যায় এবং অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে যায়। কিউমিউ আবার কোথা থেকে তার জানালার সমনে উদয় হয়। সে চিৎকার করলো না। ভুতে তাকে খেয়ে ফেললে তার কোন দোষ নেই। মা তাকে বিশ্বাস করেনি। তাকে খেয়ে ফেললেও তার আর দুঃখ থাকবে না। ইংরেজিতে রচনা মুখস্থ করার চেয়ে সেটা কি ভালো নয়? এ বয়সে এতো কষ্ট আর সহ্য হয় না।
তার পা কাঁপচে। সে ভয়ে ভয়ে কিউমিউর দিকে তাকালো, দেখলো কিউমিউ তার বাবা-মার হাত ধরে জানালার সমনে দাঁড়িয়ে আছে। কিউমিউর মা-বাবার মাথা দেখা যাচ্ছে না। তাদের পাগুলো শুধু দেখা যাচ্ছে। তার বাবা অনেক লম্বা। মা তার বাবার থেকে একটু খাটো। তার বাবা মন্টুকে কুজো হয়ে একবার দেখে নিলো। মন্টু লোকটার চেহারা দেখে বুঝতে পেরেছে লোকটা অনেক বৃদ্ধ। কারণ তার মুখে ছাগলের মতো একহাত লম্বা সাদা দাড়ি। তাকে বৃদ্ধ চাইনিজদের মতো দেখাচ্ছিল।
কিউমিউর মা কুঁজো হয়ে তার দিয়ে তাকিয়ে বলল,' এটা আমার মেয়ে। সে ভ্যাকেশনে করতে এসেছে তার দাদুর বাসায়। তার দাদু মানে আমার শ্বশুরের বাসা নদীর দ্বারে পোড়া বাড়িটা। আমার মেয়েটা বড় পাজি। সে আমাকে বলেছে, মা চলো মন্টুদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি, তোমাকে প্রমিস করলাম তাকে ভয় দেখাবে না। কিন্তু দেখ, সে তোমাকে ভয় দেখাল। তুমি কিছু মনে করো না। '
মন্টুর ভয় অনেকটা চলে গেছে। ভুতের সম্পর্কে এতো দিন যা জেনেছিল তা মনে হচ্ছে মিথ্যা। কিউমিউ এবং তার মা-বাবাকে তার ভালো ভুত বলে মনে হলো। কিউমিউর মায়ের দিকে এতক্ষণ ভালো করে লক্ষ করেনি। করবে কিভাবে? সেতো ভয়েই অস্থির। সে দেখলো কিউমিউর মাও চাইনিজ মহিলাদের মতো। সে কিউমিউর মায়ের দিকে একটু হাসলো।
কিউমিউর মা কিউমিউকে বলল, ' মা তুমি মন্টুর সাথে গল্প কর। তোমার দাদু মেঘের উপর অপেক্ষা করছে, আমরা তার সাথে দেখে করে আসি।'
কিউমিউর মা-বাবা চোখের সামনে অদৃশ্য হয়ে গেল। মন্টু কিউমিউর দিকে লাজুক দৃষ্টিতে তাকালো। সে হারিকেনের মৃদু আলোতে দেখলে মেয়েটা তাদের পাশের বাড়ির বাচ্চা মেয়েটার মতো একটা ফ্রক পড়ে আছে। তার চুলগুলো ছেলেদের মত ছোটছোট করে ছাটা। সে সাহস করে কিউমিউকে একটা প্রশ্ন করে বাসল,' তোমরা কি আমাদের মতো জামা পড়ো?
'
কিউমিউ হি হি হি করে বাচ্চা মেয়ের মতো হাসলো। তুমি অনেক হাসির প্রশ্ন করে, কিউমিউ হাসতে হাতে বলল।
মন্টু চিন্তা করছে আর কি বলা যায়। তার মথায় কিচ্ছু নেই। পরীক্ষার আগে তার মাথায় কিছুই থাকে না। তার কিছু বলতে হয়নি।
কিউমিউ তার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল,' আমি জানি তোমার ইংরেজি পরীক্ষা আগামী পরশু। '
মন্টুর রাগ হলো। পরীক্ষার কথা মনে করিয়ে দিল। সে কত সুন্দর একটা সময় কাটাচ্ছিল। তার ইচ্ছে করছে জানালার কাছে গিয়ে কিউমিউকে ঠাস করে একটা চড় দিতে। সে রাগ প্রকাশ করলো না। ভুতের বাচ্চা--- কখন কি করে বসে বলা যায় না।
' আমি তোমাকে পরীক্ষার প্রশ্ন বলে দিব। তবে একটা শর্ত আছে,' মেয়েটা হিহিহি করে হাসতে হাসতে বলল।
'কি শর্ত।'
' আমার সাথে পরীক্ষার পর পোড়া বাড়িতে দেখা করতে যেতে হবে।'
পোড়া বাড়ির কথা শুনে তার গা চমচম করে উঠলো। সে তার দাদুর কাছে শুনেছে পোড়া বাড়িতে ভুত আছে।
' এ বাড়িতে সব দুষ্ট ভুতেরা বাস করে। আমি যেতে পারবো না। '
' কে বলেছে দুষ্ট ভুতেরা বাস করে? আমার দাদু থাকেন সেখানে। আমার ছোট চাচা যখন ছিল তখন ভয় দেখাতো, কিন্তু দাদু তাকে নিষেধ করতেন। তোমার ভয় কিসের, আমি আছি না?'
মন্টু কিউমিউকে বিশ্বাস করতে পারলো না। পোড়া বাড়িতে গেলে যদি তাকে খেয়ে ফেলে? ভুতদের বিশ্বাস করা যায় না। আর এ মেয়েটাকেও বিশ্বাস করা উচিৎ না। বড্ড পাজি ভুতের ছানা। সে কি মেয়ে ভুতটাকে মিথ্যা বলে নিয়ে নিবে? ভুতের ছানাটা কি মিথ্যা কথা ধরতে পারবে?
সে মিথ্যা বলল,' আচ্ছা যাবো প্রশ্নটা দাও।'
কিউকিউ তার মিথ্যা কথা ধরতে পারলো না। সে পরীক্ষার পশ্ন দিয়ে মা-বাবার সাথে চলে গেল। কিন্তু প্রশ্ন পেয়ে লাভ কি হয়েছে? সেতো আজ কিছুই মাথায় রাখতে পারছে না। আজ কিউমিউকে তার মনে পড়ছে। যাবে নাকি পোড়া বাড়িতে? গেলে কিউমিউকে দেখতে পাবে? তার কাছে কি অনেগুলো খেলনা আছে? কিউমিউকে রিকোয়েস্ট করলে তাকে আকাশ দেখাতে নিয়ে যাবে?
মন্টু আজেবাজে চিন্তা ছেড়ে রচনা পড়ায় মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করে। মাথায় এতো চিন্তা নিয়ে পড়া যায়? ইংরেজি কঠিন বিষয়। ঠাণ্ডা মাথায় পড়তে হয়। আজ ঘুমিয়ে গিয়ে কাল সকাল সকাল ঠাণ্ডা মাথায় পড়লে কেমন হয়? হ্যাঁ তাই করা উচিত। সে ঘুমাতে যায়।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩১
অন্যদৃষ্টি বলেছেন: ভবিষ্যতে ভালো করে লেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ!
২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩৩
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মোটামুটি চলে।
৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩৬
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: খুব সুন্দর স্টার্টিং ছিলো। শুভকামনা।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮
অন্যদৃষ্টি বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পটা পড়তে ভালই লাগলো, তবে গল্পে কী বলতে চেয়েছেন, সেটা বুঝতে পারলাম না।
৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: বাহ !!কিউমিউ'র একটা ছবি দিতেন। খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭
অন্যদৃষ্টি বলেছেন: I wish i could!
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩
কালীদাস বলেছেন: হা হা
আশা করি এই গল্প পড়ার উপযুক্ত বয়সী ব্লগার আছে এখনও এই ব্লগে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৩
অন্যদৃষ্টি বলেছেন: আমার মনে হয় নাই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
পড়েছি, গল্প জমেনি