![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর বিখ্যাত সব রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আলোচনা কিংবা সমালোচনা একটি চলমান পক্রিয়ার অংশ মনে হয়। মহাত্না গান্ধী'কে আমি যে ভাবে আবিষ্কার করেছিলম তার সম্পর্কে পড়ে ও যেনে আমার সেই সব চিন্তায় আমুল পরিবর্তন এসেছে সম্প্রতিক অরুন্ধতী রায়ের, “এক ডাক্তার আর এক সন্ন্যাসী (The Doctor and the Saint)” শীর্ষক একটি প্রবন্ধ পড়ে। অরুন্ধতী রায় সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাঁর এই প্রবন্ধ সম্পর্কে সবিস্তারে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সাবা নাকভী। সাক্ষাৎকারটি ১০ মার্চ ২০১৪ তারিখে আউটলুক ম্যাগাজিনে ছাপা হয়। তার কিছুটা;
নাকভী: আপনি বলেছেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা অবস্থায় কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি তাঁর মনোভাব দিয়েই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, গান্ধী কতোটা বর্ণ-বিদ্বেষী ছিলেন, আপনি তাঁর অবস্থানকে ভ্রান্ত ও দ্বিচারী হিসাবে দেখতে চেয়েছেন। আপনি কি এর সাথে সহমত?
অরুন্ধতী: আমি ওইসব বিশেষণ ব্যবহার করিনি। আমার ধারণা, আমার লেখা ভূমিকায়, গান্ধী-র যে বক্তব্য এবং লেখাগুলোকে অনুলিপি করেছি, তার থেকে আপনি ওইসব অনুমান করে নিয়েছেন, সেটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে। আসলে গান্ধী দ্বিচারী ছিলেন, এটা আমি মনে করি না। এর ঠিক বিপরীত দিক হলো, তিনি বিস্ময়করভাবে অকপট আর আমি এটা দ্বারা প্রভাবিত যে, সংগৃহীত রচনাবলীতে তাঁর সমস্ত লেখার কয়েকটিতে - অন্তত পক্ষে আমার দৃষ্টিতে - তিনি নিজেকে দোষারোপ করেছেন।
এটা নিঃসন্দেহে একটা সাহসী বিষয়। আমি গান্ধী-র দক্ষিণ আফ্রিকায় কাটানো বছরগুলির দীর্ঘ বর্ণনা দিয়েছি। আমি এখানে সেই পর্যায়ের মাত্র দুটো বিষয়ের উল্লেখ করবো। প্রথমত, গান্ধী-র সাম্রাজ্যবাদ ও বর্ণপ্রথার বিরুদ্ধে জাগরণের সেই বিখ্যাত গল্পটা, যেখানে পিটারমারিতজবার্গ-এ ‘কেবল শ্বেতাঙ্গদের জন্য’ সংরক্ষিত রেলগাড়ির কামরা থেকে তাঁকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল; সেটা আসলে অর্ধেক গল্প। গল্পের দ্বিতীয় ভাগ হলো, গান্ধী বর্ণ বৈষম্যের বিরোধিতা করেননি। দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর প্রচারের বেশিরভাগটাই ভারতীয়দের সাথে আলাদা আচরণের দাবীতে। তিনি আসলে বিরোধিতা করেছিলেন ‘স্বভাবগত কাফিরদের’ অর্থাৎ কালো আফ্রিকানদের তুল্য আচরণ ভারতীয়দের সাথে করার বিরুদ্ধে। তাঁর প্রথম দিকের একটি রাজনৈতিক বিজয় আসে - ডারবান পোস্ট অফিস ‘সমস্যা’-র ‘সমাধান’ করে। যাতে ভারতীয়দের সেখানে ‘কাফির’-দের সাথে এক দরজা না ব্যবহার করতে হয়, তাই তৃতীয় একটা দরজার দাবীতে তিনি সফলভাবে প্রচারণা চালান। ‘অ্যাংলো-বুয়র’ যুদ্ধে এবং বাম্বাথা বিদ্রোহের সময় তিনি ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে যৌথভাবে কাজ করেন। তাঁর বক্তব্যে তিনি বলেন, তাঁর উদ্দেশ্য একটা ‘সাম্রাজ্যিক ভ্রাতৃত্ব’ গড়ে তোলা। আর এটাই হলো পুরো গল্প। ১৯১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মিলিটারি নেতা জান স্মাটস-এর সঙ্গে একটা মীমাংসা চুক্তি সই করার পর, গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়েন। ভারতে ফেরার আগে তিনি লন্ডনে যান, সেখানে তাঁকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের জনসেবা (public service) করার জন্য ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ অভিধায় পুরস্কৃত করা হয়। সাম্রাজ্যবাদ এবং বর্ণবাদ-বিরোধী সংগ্রাম করলে কিভাবে তিনি এগুলো পেতে পারতেন?
নাকভী: কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তাই নয় কি? তিনি আমাদের দেশেকে স্বাধীনতার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন...
অরুন্ধতী: কারো কারো কাছে যেটা ‘স্বাধীনতা’, সেটা অন্যদের কাছে নিছক ক্ষমতার হস্তান্তর। আবারও আমি বলবো যে, গান্ধী-আম্বেদকার-এর বিতর্ক আমাদের কাছে ‘সাম্রাজ্যবাদ’, ‘স্বাধীনতা’ এই ধরণের শব্দগুলি সম্পর্কে ধারণা গভীর এবং জটিল করেছে। ১৯৩১ সালে আম্বেদকার যখন প্রথমবার গান্ধী-র সাথে সাক্ষাৎ করেন, গান্ধী তাঁকে কংগ্রেসের প্রতি তাঁর তীক্ষ্ণ সমালোচনার কারণ জিজ্ঞাসা করেন, যেটা সেই সময়ে স্বদেশের জন্য চলমান সংগ্রামের সমালোচনা করারই তুল্য ছিল। আম্বেদকার-এর বিখ্যাত এবং হৃদয় বিদীর্ণ করা উত্তর ছিল - “গান্ধীজী, আমার কোন স্বদেশ নাই। নাম নির্বিশেষে কোন অচ্ছুৎ এই ভূমির জন্য গর্ববোধ করবে না।”
এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে আসার পর, গান্ধী নিজেকে তখনও সাম্রাজ্যের এক দায়িত্ববান প্রতিনিধি হিসেবে ভাবছিলেন। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে, প্রথম জাতীয় অসহযোগ আন্দোলনের সময়, গান্ধী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর ডাকে সাড়া দিল, আর যদিও এটা বলা ভুল হবে যে, তিনি একাই ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করেছিলেন, অবশ্যই তিনি অগ্রণীদের মধ্যে একজন। হ্যাঁ সংগ্রামের মধ্যে যদিও গান্ধী সমানতার কথা বলেছিলেন এবং কখনও কখনও এমনকি সমাজতান্ত্রিকদের মতোই বলতেন, তবু তিনি কখনও চিরাচরিত বর্ণ কাঠামো বা জমিদারদের বিরোধিতা করেননি।
গান্ধী-র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে টাকার জোগান দিতো বিড়লা, টাটা এবং বাজাজের মত বড় বড় শিল্পপতিরা, আর তিনি কখনও তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে সচেষ্ট হননি। তাদের অনেকেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপক টাকা কামিয়েছিল, আর এরপর তারা সকলে কাচের সিলিং ভাঙতে এগিয়ে এলেন।
প্রেক্ষিত বাংলাদেশ;
যদি ২০১৪ সালে কোন বাংলাদেশির মনে হয়; এ স্বাধীনতা নামের শব্দ শুধুই ক্ষমতার হস্তান্তর মাত্র, যদি আলোচনা করতে চায় শেখ মুজিবের রাজনৈতিক চিন্তার ও কর্মের তা কি অপরাধ হবে ? যদি কেউ তুমুল সমালোচনা করেন শেখ মুজিবের নেতৃত্বের গুণাবলীর এক্সট্রিম জাতীয়তাবাদিতার ? প্রশ্ন উঠেছে জনাব এ কে খন্দকার যুদ্ধের সিধান্তের সময় কাল বিবেচনায় বলেছেন সুচিন্তিত হলে হয়তো অনেক জীবন বাঁচানো যেত।
বিষয়টি নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দেখতে চাই নিয়মিত জাতীয় পত্রিকায়, আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আমাদের প্রশ্ন করার অধিকার খর্ব করে কাউকে মহান করা যাবে কি ? যারা শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দর্শনের চর্চা করেন এমনি কি শেখ মুজিবের পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে আসতে পারে পক্ষে বিপক্ষের যুক্তি।
একজন রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে প্রশ্ন স্বাভাবিক, পৃথিবীর এহেন কোন রাজনীতিবিদ আছে কি যার রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে প্রশ্ন আসে নাই ?
গান্ধী'র রাজনৈতিক দর্শনের আলোচনার ফলে কি গান্ধিবাদীরা নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ বলে হাঁক দিয়েছে না কি অরুন্ধতী কি এজেন্ট বলে ধিক্কার দিয়েছেন। আওয়ামিলীগ শেখ মুজিব কে পেশী শক্তি দিয়ে মহান আসনে বসাতে চায় কেন ? রাষ্ট্র ক্ষমতার বলে কেন নিষিদ্ধ করতে চায় তারা এ কে খন্দকারের বই ?
শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সহকর্মীরা কি নতুন কোন বইয়ে এ কে খন্দকার কে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না ? মিঃ খন্দকার কোন কোন জায়গায় ইতিহাস বিকৃতি করেছে তার তথ্য প্রমান নিয়ে একটা বই চাই, আছে কি আওয়ামীলিগে এমন কেউ ?
©somewhere in net ltd.